মুহব্বতকে বলা হয় নিম্নগামী। ছেলে বাবাকে যতই মুহব্বত করুক না কেন, বাবা ছেলেকে যত মুহব্বত করেন ছেলের পক্ষে তা কোনদিনই সম্ভব নয়। মুরীদ পীর ছাহেবকে যতই মুহব্বত করুন কিন্তু পীর ছাহেব মুরীদকে যত মুহব্বত করেন সেরূপ করা মুরীদের পক্ষে কখনই সম্ভব হয়না। পিতা-মাতা জন্ম থেকেই সন্তানকে নিজ হাতে লালন-পালন করেন। তাদের শরীরের এমন কোন অঙ্গ-প্রতঙ্গ নেই যা পিতা-মাতার অন্তরালে থাকতে পারে। এছাড়া পিতা-মাতার পক্ষে সম্ভব হয় সন্তানের জন্ম থেকে বেড়ে উঠা, তার প্রকৃতি ও প্রবৃত্তি লক্ষ্য করা। তার স্বভাব ও সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা। বিপরীত দিকে সন্তানের পক্ষে পিতা-মাতার ক্ষেত্রে তেমনটি সম্ভব হয়না। এ কারণে সূরা বাক্বারা-এর ১৪৬নং আয়াত শরীফে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে চিনার ক্ষেত্রে সন্তানদের চিনার উদাহরণ দেয়া হয়েছে। আয়াত শরীফে বলা হয়েছে, “আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি তারা তাঁকে চিনে, যেমন করে চিনে নিজেদের সন্তানদেরকে। আর নিশ্চয়ই তাদের একটি সম্প্রদায় জেনে শুনে সত্যকে গোপন করে।”(সূরা বাক্বারা/১৪৬) একইভাবে সূরা আনআম-এর ২০নং আয়াত শরীফে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “যাদেরকে আমি কিতাব দান করেছি, তারা তাঁকে (রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) চিনে, যেমন তাদের সন্তানদের চিনে। যারা নিজেদেরকে ক্ষতির মধ্যে ফেলেছে, তারা বিশ্বাস স্থাপন করবেনা।” ‘তাফসীরে মাযহারীতে’ বর্ণিত রয়েছে, একবার কাফির সর্দার আখনাস ইবনে শরীক ও আবু জাহেলের মধ্যে সাক্ষাত হলে আখনাস আবু জাহেলকে বললো, ‘আমরা এখানে একান্তে আছি। আমাদের কথাবার্তা কেউ শুনবে না। মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে তোমার সঠিক ধারণা কি? আমাকে সত্য সত্য বলো? তাঁকে সত্যবাদী মনে করো, না মিথ্যাবাদী।” আবু জাহেল আল্লাহ পাক-এর কছম খেয়ে বললো, “নিঃসন্দেহে মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্যবাদী। তিনি সারাজীবন মিথ্যা বলেননি। কিন্তু ব্যাপার এই যে, কুরাঈশ গোত্রের এই শাখা ‘বণী কুসাই’ এ সব গৌরব ও মহত্বের সমাবেশ ঘটাবে। আমরা বঞ্চিত হবো- তা কিভাবে সহ্য করা যায়? পতাকা বনী কুসাইয়ের হাতে রয়েছে। হেরেম শরীফে হাজীদের পানি পান করানোর গৌরবজনক কাজটিও তাঁদের। খানায়ে কা’বার পাহারা ও চাবি তাদের হাতে। এখন যদি আমরা নুবুওওয়াত তাদের হাতে ছেড়ে দেই তবে আমাদের জন্য কি থাকবে?” মূলতঃ এ স্বীকারোক্তি থেকে এই বুঝা যায় যে, কাফির সর্দার আবু জাহেল তথা কিতাবীরা ঠিকই আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে চিনতো, জানতো ও বুঝতো। কিন্তু তারা মানতো না শুধুমাত্র দুনিয়াবী স্বার্থের জন্য। অর্থ আর নেতৃত্বের লোভের জন্য। মূলতঃ এ কাহিনী আজকের যুগেও আমাদের জন্য নছীহত স্বরূপ। প্রসঙ্গতঃ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বংশধর তথা আওলাদ বর্তমান যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবে আ’যম, ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী এর ক্ষেত্রেও প্রায় একই রীতির পূনঃ প্রয়োগ হচ্ছে। হক্ব গ্রহণ ও তাক্বওয়া পালনের বিপরীতে বিরোধিরা অর্থ ও প্রতিপত্তি হাছিলের জন্যই তাঁর বিরোধিতা করে নাহক্বে লিপ্ত থাকছে। বিজাতীয় ও বিদয়াতীয় তথা বেদ্বীনী মাযহাব এবং হারাম ও নাজায়িয আক্বীদা ও কর্মসূচী গ্রহণ করছে। কিন্তু রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলীই যে হক্ব মত ও পথের উপর কায়েম রয়েছেন, অন্তরে তারা অনুক্ষণই উপলব্ধি করছে। এর একটি জ্বলন্ত প্রমাণ হলো যে, আমলে বা কাজে তারা যাই করেন কিন্তু মুখে যখন তারা ইসলামের কথা বলেন তখন ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর কথাগুলো, তাঁর তাজদীদগুলো পুনঃ উচ্চারণ করেন মাত্র। এবং এরও প্রমাণ একটি নয় বরং বহু বহু। এ প্রসঙ্গে মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর ১২৯ তম সংখ্যায় “অবশেষে তথাকথিত ইসলামী জামাতের আমীর নিজামী ও বায়তুল মোকাররামের তথাকথিত খতীব উবায়দুল হক রাজারবাগ শরীফের তাজদীদ মানতে বাধ্য হলেন (!)” শিরোনামের মতামতে বলা হয়েছিলো, “…. কিন্তু সত্য চাপা পড়ে থাকে না। অথবা মিথ্যা ঢাকা থাকেনা। কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “সত্য এসেছে, মিথ্যা দূরীভূত হয়েছে। নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই মিথ্যা দূরীভূত হওয়ার যোগ্য।” ঠিক তারই প্রতিধ্বনি দেখা গেলো একটি তথাকথিত ইসলামী জামায়াতের আমীর তথা তথাকথিত খতীবের স্বীকারোক্তিতে। পত্রিকান্তরে প্রকাশ তথাকথিত খতীব বলেছেন, “… আমরা মুশরিকদের অনুসরণ করবো না। অন্যের কালচার, খ্রীষ্টানদের কালচার, সংস্কৃতি অনুসরণ করবো না। মুসলমান হিসেবে ইসলামের অনুসারী হতে হবে। .. ইসলামে ৩টি নববর্ষের কথা উল্লেখ আছে। এর একটি হলো, ঈসায়ী বর্ষ, যেটা খ্রীষ্টাব্দ হিসেবে চালু আছে।…” (দৈনিক মানবজমিন ১০-০৪-০৪) পাশাপাশি তথাকথিত ইসলামী জামায়াতের মাওলানা আমীর বলেছেন, … “কিন্তু ইংরেজী যুগ থেকেই আমাদের দেশে শুরু হয়েছে ইসলাম বিরোধী, বিজাতীয় পৌত্তলিক সংস্কৃতির অন্ধ অনুসরণ ও অনুকরণ। আল্লাহ পাক আমাদের তাওফিক দান করুন যাতে বিজাতীয় পদ্ধতি থেকে আমরা আত্মরক্ষা করতে পারি। …” (দৈনিক সংগ্রাম ১৪-০৪-০৪) বিজাতীয়-বিধর্মীয় অনুকরণ, অনুসরণ থেকে বেঁচে কুরআন-সুন্নাহ্র পথে চলাই মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফের লেখালেখি তথা ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর আহবান। আর সে আহবানে আজকে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নতি স্বীকার করেছে, ইসলামের নামে বিজাতীয়, বিধর্মীয় রীতি অনুসরণকারী, হরতালকারী নির্বাচনকারী, কুশপুত্তলিকা দাহ্কারী তথাকথিত মাওলানা আমীর এবং তার সাথে ইহুদী-নাছারার আইন ব্লাসফেমী তলবকারী তথাকথিত খতীব। অর্থাৎ অবশেষে তারা রাজারবাগ শরীফেরই অনিবার্যতা প্রতীয়মান করলেন। আল বাইয়্যিনাত শরীফের ফতওয়ারই সত্যতা প্রতিপাদন করলেন। আল বাইয়্যিনাত শরীফের কথাই উচ্চারণ করলেন। ” ঠিক একইভাবে এই লাইনে আরো ধরা পড়লেন তথাকথিত ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান মুফতে আমিনী। সাম্প্রতিক কালে পত্র-পত্রিকায় তার কয়েকটি বিবৃতি-এর বিশেষ প্রমাণ। (ক) তিনি বলেছেন, “মুসলমান হয়ে আল্লাহ পাক-এর আইন বাদ দিয়ে কুফরি আইনে শান্তি তালাশ করা আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে গাদ্দারির শামিল। এই গাদ্দারির কারণেই আজ সারাবিশ্বে মুসলমানরা লাঞ্ছিত, অপমানিত।” (যুগান্তর/ ২৭-৯-০৪) অথচ তিনিই বর্তমানে আল্লাহ পাক-এর আইন বাদ দিয়ে, ইসলামের নামে গণতন্ত্র করছেন। দলভিত্তিক রাজনীতি করছেন। নির্বাচন করছেন, জোট করছেন যা তারই ভাষ্য মতে কুফরীর পর্যায়ভুক্ত। কারণ, ইতোপূর্বে তিনিও বহুবার বলেছেন যে, “গণতন্ত্র পাশ্চত্য রীতি বা পাশাত্যদের প্রবর্তিত আইন-কানুন যা কুফরীর শামিল।” অথচ তার বিবৃত এই কুফরী প্রথার মাধ্যমেই তিনি শান্তি খুঁজছেন। পাশাপাশি তিনি ইহুদী-নাছারাদের ধর্ম রক্ষার আইন ব্লাসফেমী আইন প্রবর্তনের মাধ্যমে ইসলাম রক্ষার উপায় খুঁজছেন। তাহলে বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, তার ভাষ্যমতে তিনিও কুফরী আইনে শান্তি তালাশ করে আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে কঠিন গাদ্দারী করছেন। (খ) তিনি আরো বলেছেন, “রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদর্শের বাইরে অন্য আদর্শ গ্রহণের নামই মুনাফিকী। রসূল (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদর্শ আমাদের সামনে পরিপূর্ণভাবে সংরক্ষিত আছে। এ আদর্শে ফিরে আসা ছাড়া মুক্তির কোন পথ নেই।” (ইনকিলাব/১১-৯-০৪) অথচ বাস্তবতা এই যে, মুফতে ছাহেব হরতাল করছেন যা রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদর্শন নয়। বরং কট্টর হিন্দু গান্ধীর আদর্শ। তিনি লংমার্চ করেছেন। অথচ যা কট্টর কমুনিষ্ট মাওসেতুং-এর আদর্শ। তিনি মৌলবাদ সমর্থন করছেন। যা খ্রীষ্টান প্রোটেষ্ট্যান্টদের আদর্শ। তিনি কুশপুত্তলিকা দাহ সংস্কৃতি পালন করছেন। যা হিন্দু খ্রীষ্টানদের আদর্শ। তিনি ছবি তুলছেন। যা ইসলামের হারাম হলেও সব বিধর্মীদের সংস্কৃতি। অতএব, প্রতিভাত হচ্ছে যে, মুফতে আমিনী ছাহেব একটি নয় বরং অনেক বিজাতীয় আদর্শ গ্রহণের ফলে তার নিজস্ব মন্তব্য অনুযায়ীই শক্ত মুনাফিক। (গ) মুফতে ছাহেব অতঃপর বলেছেন, “কুফর, শেরেক, বেদাতের সাথে কম্প্রোমাইজ করে টিকে থাকার জন্য ইসলাম আসেনি।” (ইত্তেফাক/২-১০-০৪) কিন্তু কথা হলো, মুফতে ছাহেবের এ বক্তব্যের বিপরীতে তার আমলটা কি? আজকে মুফতে ছাহেব কুরআন শরীফে ঘোষিত ফরজ পর্দার সাথে কম্প্রোমাইজ করেছেন। তিনি আজ পর্দা করছেন না। নারী নেতৃত্বের সাথে দেখা-সাক্ষাত করছেন। তার দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মাহিউদ্দীন খান তার মদীনা পত্রিকায় হাদীছ শরীফের উদ্বৃতি দিয়েছেন যে, “তোমাদের শাসনভার যখন গিয়ে পড়বে নারীদের উপর তখন জমিনের উপরিভাগ অপেক্ষা নিম্নভাগই তোমাদের জন্য ভাল হবে। ‘যে জাতির শাসনভার গিয়ে পড়ে নারীর উপর তাদের প্রতি লা’নত।’ (মাসিক মদীনা, জানুয়ারী/’৮৯ অথচ একই দলের চেয়ারম্যান হয়ে তিনি নারী নেতৃত্বের সাথে কম্প্রোমাইজ করেছন। মূলতঃ বর্তমান দেশের চালু সব অনৈসলামী আইনের সাথে তিনি কম্প্রোমাইজ করছেন। দেশে বিরাজমান সুদ-ঘুষ শরাব, জুয়া, অশ্লীলতার দুর্ণীতির সাথে কম্প্রোমাইজ করছেন। এক কথায় জোট সরকারের সব অনৈসলামী আইনও তৎপরতার সাথে কম্প্রোমাইজ করে তিনি এম.পি হিসেবে টিকে আছেন, জোট সরকারের সুবিধাদী ভোগ করছেন। মুফতে ছাহেব মুনাফিকীর কথা বলেছেন। এখন কথা আর কাজের মাঝে আকাশ-পাতাল ফারাক হওয়ার প্রেক্ষিতে তিনি কোন্ ধরণের মুনাফিক সাব্যস্ত হন? তা বিচারের ভার উম্মাহ্র প্রতি রইলো। তিনি আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে গাদ্দারীর কথা বলেছেন। সেক্ষেত্রে স্বয়ং মুফতে ছাহেব মহান আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আইন বাদ দিয়ে নিজে কত বড় গাদ্দর হিসেব গণ্য হলেন তা একবার ভেবে দেখবেন কি? মূলতঃ এরূপ মুনাফেকী আর গাদ্দারীর ক্ষেত্রে কেবল মুফতে আমিনী ছাহেবেরই একক অবস্থান নয়। বরং ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে যতজনই হালুয়া-রুটি কামাইয়ের রাজনীতি করছেন সবারই এক অবস্থা। যদিও তারা মুফতী, মাওলানা, মুফাস্সিরে কুরআন, শাইখুল হাদীছ, খতীব ইত্যাদি যে ধরনের খোলসে বা লেবাসেই নিজেকে ধরে রাখেন না কেন সবার হাক্বীক্বত মূলতঃ একই। অনেকটা রসূনের মত। রসূন কোয়া কোয়া হলেও গোড়া যেমন এক জায়গায়, তেমনি এরা আলাদা আলাদা হলেও ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে ক্ষমতা হাছিলের প্রবণতায় এক। তথাকথিত ইসলামের জামাতকে বিগত প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে বিদ্য়াতী, ফাসিকী ও কুফরী আক্বীদার দল সাব্যস্ত করে আসলেও এখন ক্ষমতার প্রশ্নে তারা এক হয়েছে। আবার কে মন্ত্রী হবে এ প্রতিযোগিতায় তাদের ইসলামী ঐক্যজোটের ঐক্যই আজ ভেঙ্গে গেছে। কাজেই একথা তারাও ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারেন যে, আসলে ইসলাম তারা করেন না। ইসলাম তারা চান না। আর ইসলামের নামে রাজনীতি করতে গিয়ে গণতান্ত্রিক আবহের গ্যাড়াকলে তারা যা করছেন তাও ইসলাম সম্মত নয়। বিশেষতঃ তারা খুব ভালভাবেই অন্তরে অনুধাবন করেন যে, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামে আ’যম, ইমামুল আইম্মা, কুতুবুল আলম, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুলআলী-এর তাজদীদ সব ঠিকই আছে। ছবি তোলা, হরতাল, লংমার্চ, মৌলবাদ, ব্লাসফেমী আইন, ইসলামের নামে দল করা, নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা প্রসঙ্গে নাজায়িয ফতওয়া ঠিকই আছে। কারণ, এগুলো সবই বিজাতীয়, বিধর্মীয় আদর্শ। এগুলো করা মুনাফিকী। এগুলো করা আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে গাদ্দারীর শামিল। হ্যাঁ, কোন কোন সময় সে কথাও তাদের মুখ থেকে বেরিয়ে যায়। যেহেতু তারা ইসলামের লেবাসে আছেন সেহেতু ইসলাম প্রসঙ্গে বলতে গেলে অনিবার্যভাবে তাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঐসব কথা বেরিয়ে যায়। আর ইমামুল আইম্মা, মুহইস্ সুন্নাহ্, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ-নছীহত দুই/একবারও যারা শুনেছেন, তাঁর তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ দুই/এক সংখ্যাও যারা পড়েছেন তারা সবাই জানেন যে, সে মুবারক ওয়াজ ও পত্রিকার লেখনীর একটি মৌলিক কথা হচ্ছে, “বিধর্মী আদর্শ পরিত্যাগ করা।” অর্থাৎ তথাকথিত ইসলামী জামাতের আমীর নিজামী ও তথাকথিত খতীব উবায়দুল হক্বের পরে তথাকথিত মুফতী আমিনীও মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর মুজাদ্দিদীয়াতের প্রতিই অবনত হলেন। তারই তাজদীদ স্বীকারে বাধ্য হলেন। বাইরে তারা রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর অপপ্রচার করেন। অপবাদ রটনা করেন। কিন্তু হাক্বীক্বত তারাও দিল থেকে স্বীকার করেন যে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মা, কুতুবুল আলম, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, আওলাদে রসূল রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা সত্যিকারভাবেই বর্তমান যামানার আল্লাহ পাক-এর লক্ষস্থল ওলীআল্লাহ। আল্লাহ পাক-এর সাথে তাঁর তায়াল্লুক এত বেশী, তাঁর রূহানিয়তের ব্যাপকতা এত তীব্র যে যামানার আবহ তাকে পরাস্ত করতে পারেনা। তিনিই বর্তমান যামানার একমাত্র ব্যক্তিত্ব যাঁর ওসীলায় আল্লাহ পাক সত্যিকার ইসলাম জীবিত রেখেছেন। প্রকাশ করেছেন। তিনি না হলে বর্তমান যুগে সত্যিকার ইসলাম তুলে ধরার মত দোসরা কেউ ছিলনা। মূলতঃ একথা তারা তেমনই অন্তরে মানেন, তারা তাঁকে এমনই চিনেন যেমনটি চিনেন নিজেদের সন্তানদের। যে প্রসঙ্গে এ লিখার প্রথমেই বলা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও তারা তাঁকে মূল্যায়ন করেছেননা। জেনে শুনেই তাঁর তাজদীদকে মানছেননা। যা উক্ত আয়াত শরীফে বলা হয়েছে “আর নিশ্চয়ই তাদের একটি সম্প্রদায় জেনে শুনে সত্যকে গোপন করে।”
-মুহম্মদ তারীফুর রহমান, ঢাকা।
‘ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাণীর ছবি তোলা, রাখা, আঁকা, দেখা হারাম’ মুজাদ্দিদে আ’যমের অনবদ্য তাজদীদ