খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি কাউকে সাধ্যের বাইরে কষ্ট দেন না। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لَا يُكَلِّفُ اللَّـهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি কোন ব্যক্তিকে সাধ্যের বাইরে কষ্ট দেন না। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮৬)
ছহীহ বুখারী শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
إِنَّ الدِّينَ يُسْرٌ
অর্থ: নিশ্চয়ই দ্বীন হচ্ছে সহজ।
অর্থাৎ আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উনার উম্মতের জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার হুকুম-আহকাম বা বিধানসমূহ সহজতর করে দিয়েছেন। যার কারণে সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ মাসে কেউ অসুস্থ হলে সে তখন রোযা না রেখে পরবর্তীতে সুস্থ হওয়ার পর রোযা রাখবে। এ মর্মে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلٰى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۗ
অর্থ: যে অসুস্থ হবে অথবা মুসাফির হবে সে পরবর্তীকালে রোযা পূর্ণ করবে। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮৪)
কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার দেয়া উক্ত সহজ বিধান না মেনে অসুস্থ অবস্থায় যে বা যারা মনগড়াভাবে ইঞ্জেকশান, ইনসুলিন, ইনহেলার ইত্যাদি নিয়ে রোযা রাখবে তাদের রোযা কখনোই আদায় ও কবুল হবে না।
একইভাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি নামাযের বিধান সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَأَقِمِ الصَّلٰوةَ لِذِكْرِى
অর্থ: আমার যিকির বা স্মরণের উদ্দেশ্যে নামায পড়ো। (পবিত্র সূরা ত্ব-হা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪)
এখন মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির কোন কোন অবস্থায় করবে সে সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَاذْكُرُوا اللهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلٰى جُنُوْبِكُمْ ۚ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির করো দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে। (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৩)
অর্থাৎ যে দাঁড়িয়ে নামায পড়তে পারে সে যমীনে, ফ্লোরে বা বিছানায় দাঁড়িয়ে নামায পড়বে, যে অসুস্থতার কারণে দাঁড়াতে পারে না, সে যমীনে, ফ্লোরে বা বিছানায় বসে নামায পড়বে এবং অসুস্থতার কারণে যে বসতেও পারে না, সে উত্তরে মাথা ও দক্ষিণে পা রেখে ডানপাশে ক্বিবলামুখী হয়ে শুয়ে ইশারায় নামায পড়বে।
কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার দেয়া উক্ত সহজ বিধান বাদ দিয়ে বা উপেক্ষা করে যে বা যারা মনগড়াভাবে চেয়ারে বা টুলে নামায পড়বে তাদের নামায কস্মিনকালেও আদায় ও কবুল হবে না।
বিশেষভাবে স্মরণীয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র নূরুল ইহসান মুবারক বা মারীদ্বি শান মুবারক প্রকাশকালে অর্থাৎ অসুস্থতাবস্থায় টুলের ন্যয় চারপায়া বিশিষ্ট আসন থাকা সত্বেও তাতে না বসে, ফ্লোরে ও বিছানা মুবারকে বসে নামায আদায় করেন। অতঃপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
صَلُّوْا كَمَا رَأَيْتُمُوْنِـيْ أُصَلِّيْ
অর্থ: তোমরা নামায পড় যেভাবে আমাকে নামায পড়তে দেখেছ। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ ইত্যাদি)
অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা দ্বারা প্রতিভাত যে, অসুস্থতার অজুহাতে চেয়ারে বা টুলে বসে নামায পড়া নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহানতম আদর্শ ও সুন্নাহ মুবারক উনার খিলাফ বা পরিপন্থী। শুধু তাই নয়, নামায আদায়ের প্রবর্তিত এ তরীক্বাহ নিঃসন্দেহে বিদয়াতে সাইয়িয়াহ। পাশাপাশি ইহুদী-নাছারাদের সাথে সাদৃশ্য হওয়ার কারণে কাট্টা কুফরীর শামিল। নাউযুবিল্লাহ! তাই যে বা যারা চেয়ারে অথবা টুলে বসে নামায পড়বে তাদের কারো নামায হবে না। উপরন্তু বিদয়াত ও কুফরীর অনুসারী হওয়ার কারণে জাহান্নামী হতে হবে।
-মুফতী আল্লামা আবূ খুবাইব।