যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ اللهَ وَمَلٰٓئِكَتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِـىِّ یٰۤـاَیهُّا الَّذِيْنَ اٰمَـنُـوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِـيْمًا
অর্থ: “নিশ্চয়ই যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার সকল হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক অথার্ৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করে যাচ্ছেন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারক করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! হে ঈমানদাররা! তোমরাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক পাঠ করো অথার্ৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করো, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারক করো এবং অত্যন্ত আদবের সাথে উনার প্রতি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সালাম মুবারক পেশ করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক পাঠ করা অথার্ৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করা মূলত মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আমল মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করার কতো বেমেছাল ফযীলত মুবারক, সেটা সমস্ত সৃষ্টির চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! নিম্নে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি দৈনিক মাত্র ১০ বার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠকারীর জন্য বিশেষ ৪টি সুসংবাদ মুবারক সংশ্লিষ্ট বর্ণনাখানা তুলে ধরা হলো-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
هَبَطَ الْمَلَائِكَةُ الْاَرْبَـعَةُ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ حَضْرَتْ جِـبْـرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ مِيْكَائِـيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ اِسْرَافِـيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ عَزْرَائِـيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَـقَالَ حَضْرَتْ عَزْرَائِـيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَا حَبِـيْـبِـىْ يَا سَيِّدَنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ نَـعَمْ يَا حَضْرَتْ عَزْرَائِـيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ مَنْ صَلَّ عَلَيْكَ عَشَرَةً صَبَاحًا وَمَسَاءً اَخَذْتُ رُوْحَهٗ كَمَا تُـأْخَذُ الشَّعْرَةُ مِنَ الْعَجِـيْـنِ وَفِـىْ رِوَايَةٍ اُخْرٰى اَقْبِضُ رُوْحَهٗ كَمَا قَـبَضْتُّ اَرْوَاحَ الْاَنْۢبِيَاءِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ وَقَالَ حَضْرَتْ اِسْرَافِـيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَا حَبِـيْـبِـىْ يَا سَيِّدَنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ نَـعَمْ يَا حَضْرَتْ اِسْرَافِـيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ مَنْ صَلَّ عَلَيْكَ عَشَرَةً صَبَاحًا وَمَسَاءً سَجَدْتُّ سَجْدَةً تَـحْتَ الْعَرْشِ لَمْ اَرْفَعْ رَأْسِىْ مِنْـهَا حَتّٰـى يُـغْفَرَ لَهٗ وَقَالَ حَضْرَتْ مِيْكَائِـيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَا حَبِـيْـبِـىْ يَا سَيِّدَنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ نَـعَمْ يَا حَضْرَتْ مِيْكَائِـيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ مَنْ صَلَّ عَلَيْكَ عَشَرَةً صَبَاحًا وَمَسَاءً اَعْطَيْـتُهٗ شَرْبَةً لَا يَظْمَاُ بَـعْدَهَا اَبَدًا وَقَالَ حَضْرَتْ جِـبْـرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَا حَبِـيْـبِـىْ يَا سَيِّدَنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ نَـعَمْ يَا حَضْرَتْ جِـبْـرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ مَنْ صَلَّ عَلَيْكَ عَشَرَةً صَبَاحًا وَمَسَاءً خَطَفْتُهٗ مَنْ عَلَى الصِّرَاطِ كَالْبَـرْقِ
অর্থ: “(একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার লক্ষ্যে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ) হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি, হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম তিনি, হযরত ইসরাফীল আলাইহিস সালাম তিনি এবং হযরত আযরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা এই চারজন প্রধান ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা আসলেন। (উনারা এসে উনাদের আরজী পেশ করলেন। প্রথমে) হযরত আযরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন- ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- হ্যাঁ; হে হযরত আযরাঈল আলাইহিস সালাম! (আপনি বলুন)। তিনি বললেন- ‘আপনার যেই উম্মত সকাল এবং সন্ধ্যায় অর্থাৎ দৈনিক মাত্র ১০ বার আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক পেশ করবেন অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করবেন, আমি ঐ ব্যক্তি উনার রূহ এমনভাবে কবজ করবো যেভাবে ময়দার তাল (তৈলাক্ত খামির) থেকে একটি চুল বা পশম আলাদা করা হয়। অর্থাৎ বীনা কষ্টে উনার রূহ কবজ করা হবে।’ সুবহানাল্লাহ! অন্য বর্ণনায় রয়েছেন, ‘হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত রূহ মুবারক যেভাবে কবজ করা হয়, আমি সেভাবে উনার রূহ কবজ করবো’। সুবহানাল্লাহ! আর হযরত ইসরাফীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন- ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- হঁ্যা; হে হযরত ইসরাফীল আলাইহিস সালাম! (আপনি বলুন)। তিনি বললেন- ‘আপনার যেই উম্মত সকাল এবং সন্ধ্যায় অর্থাৎ দৈনিক মাত্র ১০ বার আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক পেশ করবেন অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করবেন, (ক্বিয়ামতের দিন) ঐ ব্যক্তি উনার জন্য আমি সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার নীচে এমনভাবে সিজদাহ্ দিবো যে, ঐ ব্যক্তি উনাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত আমি আমার মাথা উঠাবো না।’ সুবহানাল্লাহ! আর হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন- ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- হ্যাঁ; হে হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম! (আপনি বলুন)। তিনি বললেন- ‘আপনার যেই উম্মত সকাল এবং সন্ধ্যায় অর্থাৎ দৈনিক মাত্র ১০ বার আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক পেশ করবেন অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করবেন, ঐ ব্যক্তি উনাকে আমি (নিজ হাতে) হাউযে কাউছারের পানি পান করাবো, যা পান করার পর তিনি আর কখনই পিপাসার্ত হবেন না।’ সুবহানাল্লাহ! আর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন- ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- হ্যাঁ; হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! (আপনি বলুন)। তিনি বললেন- ‘আপনার যেই উম্মত সকাল এবং সন্ধ্যায় অর্থাৎ দৈনিক মাত্র ১০ বার আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক পেশ করবেন অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করবেন, ঐ ব্যক্তি উনাকে আমি নিজে বিদ্যুতের ন্যায় দ্রুত গতিতে পুলছিরাত পার করে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ নিয়ে যাবো’।” সুবহানাল্লাহ!
তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাক্বীক্বীভাবে উপলদ্ধি করে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক-এ বেশি বেশি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ ছালিহুদ্দীন।