মুহম্মদ সাদী
ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ফখ্রুল আওলিয়া, লিসানুল হক্ব, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি আজমীর শরীফ থেকে দেশে ফিরে এলেন। অবশেষে তিনি ঢাকাস্থ ৫নং আউটার সার্কুলার রোড, রাজারবাগ শরীফে তাঁর বাসায় পৌঁছলেন। বেশ কিছুদিন পর সকলের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় হলো। মুজাদ্দিদে আ’যম মুদ্দা জিল্লুহুল আলী- এর সঙ্গেও সাক্ষাৎ হলো। যে মুবারক আওলাদকে কেন্দ্র করে কামিয়াবীর শীর্ষ ধাপে যোগ হয়েছে নবতর মাত্রা এবং অন্তরে জমে উঠেছে মধুর অনুভূতি, তা’ প্রকাশের কী ব্যাকুলতা! কিন্তু কুশল বিনিময় ছাড়া বলা গেলোনা তেমন কিছুই। নির্বাক পিতা-আওলাদের অতলান্ত ভাব বিনিময়ে কেবল পরিতৃপ্তির পরম প্রশান্তি। বুযুর্গ পিতার জন্য মুজাদ্দিদে আ’যম-এর এবং মুজাদ্দিদে আ’যম-এর জন্য বুযুর্গ পিতার অতুলনীয় কামিয়াবী আল্লাহ পাক-এর মহান দান এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, মাশুকে মাওলা, রউফুর রহীম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ বখ্শিশ।
নৈকট্যপ্রাপ্ত ওলীআল্লাহগণের শীর্ষ মাক্বামতের নির্যাস তাঁদের মুবারক জীবনাচরণের সামগ্রিকতায় আবশ্যিকভাবে সম্পৃক্ত থাকলেও তার প্রচ্ছন্ন প্রকাশমানতা সাধারণের দৃষ্টিগোচর হয় না। প্রাপ্ত নিয়ামতের প্রতিভাস অলক্ষ্যে থাকায় মাহবুব ওলীগণের সাথে সীমাহীন ব্যবধান সাধারণ মানুষ খুঁজে পায় না। দুনিয়ায় ওলীআল্লাহগণের বিরোধিতা এবং যখন-তখন তাঁদের কারামত দেখতে চাওয়ার এটি মূল কারণ। ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, কুতুবুয্যামান, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ক্ষেত্রেও তাঁর মাক্বামের সূক্ষ্ম নির্যাস অন্তরালেই থেকে যায়। এ কারণে তাঁর অসংখ্য লক্ববের মধ্যে “ছূফীয়ে বাতিন” এবং ছাহিবে “ইসমে আ’যম” অন্যতম।
কেবল ওলীআল্লাহগণেরই নয়। নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণের প্রতি ঈমান না আনার মূল কারণই হলো তাঁদের মান, শান, মর্যাদা এবং ওহী’র গুরুত্ব ও তাৎপর্য উপলব্ধিতে কাফিরদের অযোগ্যতা ও অক্ষমতা। যে কারণে ছাহিবে ওহী ওয়াল কুরআন, রহমাতুল্লিল আলামীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একান্ত কাছে পেয়ে এবং তাঁর মুবারক জীবনাচরণ প্রত্যক্ষ করেও অনুপলব্ধির কারণে কাফিররা বিস্মিত হয়েছে এবং রিসালতের প্রতি অসত্যারোপ করেছে।
এ বিষয়ে আল্লাহ পাক বলেনঃ
وَقَالُوْا مَالِ هٰذَا الرَّسُوْلِ يَاكُلُ الطَّعَامَ وَيَمْشِىْ فِى الْاسْوَاقِ لَوْلَاۤ انْزِلَ الَيْهِ مَلَكٌ فَيَكُوْنَ مَعَهٗ نَذِيْرًا
অর্থঃ “তারা বলে, ইনি কেমন রসূল! যিনি খাদ্য খান এবং বাজারে গমন করেন? তাঁর সাথে কেন ফেরেশ্্তা নাযিল করা হলোনা, যাতে তাঁর সাথে সতর্ককারী হয়ে থাকতো”? (সূরা আল ফুরক্বান-৩৭)
সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহগণের মর্যাদা ও মর্তবাই তো মানুষ জানে না। নবী-রসূল আলাইহিমুস্সালামগণের, বিশেষতঃ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সীমাহীন মান, শান, বুযুর্গী ও সম্মান মানুষ বুঝবে কী করে?
অন্য কেউ না জানলেও কিশোর মুজাদ্দিদে আ’যম মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বুযুর্গ পিতার মাক্বাম সম্পর্কে সম্যক অবহিত। বয়স মুবারক কৈশোরে থাকলেও মূলতঃ তিনি মাদারজাদ ওলীআল্লাহ। তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ক্বায়িম মক্বাম। তিনি খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ। তিনি আল্লাহ পাক এবং তাঁর প্রিয়তম হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ। জন্মসূত্রেই মহান আল্লাহ পাক তাঁর ভেতর মুজাদ্দিদে আ’যমসূলভ মানস তৈরী করে দিয়েছেন। বয়স মুবারকের ব্যবধানের প্রশ্ন তাই অবান্তর।
বলা হয়ঃ
الـمجدد مجددا ولو كان صبيا
অর্থঃ “একজন মুজাদ্দিদ মূলতঃই মুজাদ্দিদ, যদিও তিনি শিশু হয়ে থাকেন।” পারস্পরিক অনুভব ও উপলব্ধির গভীরতায় বুযুর্গ পিতাকে প্রত্যক্ষ করে কিশোর মুজাদ্দিদে আ’যম-এর মুজাদ্দিদিয়াতের ভিত্ মজবুত হয়। একইভাবে মুজাদ্দিদে আ’যম আওলাদের মাক্বাম প্রত্যক্ষ করে বুযুর্গ পিতার মাক্বামতের প্রবৃদ্ধি ঘটে। নিয়ামত লেনদেনে উভয়ের কী অনিঃশেষ মুয়ামিলা!
আজমীর শরীফ থেকে বহন করে আনা পাগড়ী মুবারক ওলীয়ে মাদারজাদ, গরীবে নেওয়াজ, ফখ্রুল আওলিয়া, কুতুবুয্যামান, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর প্রাণ প্রিয়তম আওলাদ, মুজাদ্দিদে আ’যমকে এখন দিতে মনস্থ করলেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে অবস্থানকারী প্রিয়তম আওলাদকে ফযীলতপূর্ণ পাগড়ী মুবারকের ঘটনা তিনি সবিস্তারে জানালেন। (চলবে)