মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ: বাংলাদেশের সাধারন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এখনও জানেইনা যে, দেশে কত ব্যাপকভাবে কত ধরনের মহিলা খেলাধুলা হচ্ছে। প্রায় বিবস্ত্র হয়ে সাতার, কুস্তির পর এখন রীতিমত ফুটবল, মহিলা ক্রিকেট ব্যাপক প্রচলিত হয়েছে। জেলায় জেলায় স্কুলে স্কুলে টিম তৈরী হচ্ছে। আন্তঃজিলা প্রতিযোগিতা হচ্ছে। বিদেশেও মহিলা খেলোয়াড়রা যাচ্ছে। সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমান এগুলো সম্পর্কে নিতান্ত বেখবর হলেও এখন মহিলারা ছেলেদের সাথেই ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি অনুশীলন করছে, দৌড়ঝাপ করছে। অথচ মাত্র ৩ বছর আগেও এরকম অবস্থা ছিলো না। কিন্তু এখন মহিলা খেলাধুলা সারাদেশে এত ব্যাপক হওয়ার পিছনে কারণ হলো- খতীব উবাই’র দিয়ে যাওয়া ধর্মব্যবসায়িক ফতওয়া, টাকা খেয়ে হারামকে হালাল করার প্রতারণা। কারণ, গত ২০০৪ সাল থেকে খেলাধুলার সংশ্লিষ্টরা সবস্থানে গিয়ে প্রচার করছেন যে, “খতীব উবাই ফতওয়া দিয়েছেন, বর্তমান যামানায় মহিলা খেলাধুলা জায়িয।”
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের জুন মাসে দেশে প্রথম মহিলা কুস্তির উদ্যোগ নেয়া হয়। সারাদেশ তখন প্রতিবাদের তীব্য আগুনে ঝলসে উঠে। ২রা জুলাই ২০০৪ সালে উবাইও মহিলা কুস্তির বিরুদ্ধে বায়তুল মোকাররমে জুমুয়ার খুৎবায় বলে। কিন্তু এরপর মাঝখানে কাটে ১৫ দিন। এই ১৫ দিনে কুস্তি ফেডারেশনের সাথে খতীবের হয় লেনদেন। হয় সমঝোতা। মজ্জাগতভাবে টাকা খেয়ে ফতওয়া ঘুরিয়ে দেয়ায় অভ্যস্ত খতীব এক্ষেত্রেও একই কাজ করেন।
এরপর ২২ শে জুলাই পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়, “খতীব উবায়দুল হক এবং মৌলবাদ সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর নির্বাহী সভাপতি মাওলানা মুহিউদ্দীন খান ওরফে মাহিউদ্দীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মত মহিলা কুস্তি অনুষ্ঠানের জন্য অনুমতি দিয়েছে।” (দৈনিক সংবাদ, ১ম পৃষ্ঠা, ২২ জুলাই’০৪)
কুস্তি ফেডারেশন, তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে তাদের থেকে এই সম্মতি আদায় করেছে। খতীব, মাহিউদ্দিন গং তাদের ভাষ্যে বলেছে যে, “তারা যতটা অশালীনমনে করেছিলো ততটা অশালীন ভাবে এই মহিলা কুস্তি হবে না।”
পাঠক! কুস্তিখেলাই সে খেলা, যে খেলায় সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত পোশাক পড়তে হয়। যে খেলায় সব চেয়ে বেশী শরীর প্রদর্শিত হয়। তারপরেও উবাই বলেছিলো, মহিলা কুস্তিতে অশালীনতা হবে না। (নাউযুবিল্লাহ)
পাঠক! মহিলা খেলোয়াড়রা নিজেরাও জানে যে, তারা সম্পূর্ণ শরীয়ত বিরোধি, চরম ফাসিকী, বেহায়া-বেপর্দা ও কবীরা গুনাহ করছে। তারা এজন্য অন্তরে সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকত।
কিন্তু উবাই’র ফতওয়া পাওয়ার পর তাদের সে ভয় কর্পূরের মত উড়ে গেলো। তারা এখন তওবার পথ থেকে ঘুরে গেলো। তারা নিশ্চিন্ত হয়ে গেলো। তারা হারামে মত্ত হয়ে গেলো এবং উবাই’র গুমরাহী ফতওয়া তারা প্রচার শুরু করলো। অর্থাৎ মহিলা খেলাধুলা এখন লক্ষ লক্ষ মহিলা জায়িয মনে করে তা অনুশীলন করতে লাগলো, প্রতিযোগিতায় নামলো। লক্ষ-কোটি দর্শক তা দেখলো। কোটি কোটি ব্যভিচারের গুনাহ অবাধে হতে লাগলো।
যার সং্গতকারণেই এ গুনাহর ভার গিয়ে পড়তে থাকলো উবাই’র উপর এবঙ অনাগতকাল ধরে মহিলা খেলাধুলার এ ধারাবাহিকতা, ব্যাপকতা এবং মহিলা খেলাধুলার সংশ্লিষ্টতা সবই গিয়ে পড়বে উবাই’র উপর। কেননা, হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “যে কোন ভুল ফতওয়া দেয় তার সে ভুল ফতওয়ার উপর যতজন আমল করে সবার গুনাহ যে ভুল ফতওয়া দিয়েছে তার উপর পড়বে।”
এছাড়া গুনাহর সংশ্লিষ্টতার একটা বিষয় রয়েছে। যেমন, হাদীছ শরীফে শরাব সঙশ্লিষ্ট ১০ জনকে লা’নতী বলা হয়েছে। যে শরাব উৎপন্ন করে, যে শরাব বহন করে, যে শরাব বিক্রি করে, যে কিনে, যে পরিবেশন করে ইত্যাদি।
টিক উবাই’র মহিলা কুস্তি তথা খেলাধুলাকে জায়িয ফতওয়ার দ্বারা-
যতজন মহিলা এ ফতওয়া মানবে,
যারা খেলাধুলা দেখবে, যারা খেলবে,
সে খেলা যতজন দেখবে,
তার যত ভিডিও হবে,
তা যতজন দেখবে আর এসব কাজে যতজন পৃষ্ঠপোষকতা করবে,
আর্থিক সহযোগিতা করবে,
অন্যান্য সহযোগিতা করবে এবং
উবাই’র কারণে মহিলা খেলাধুলা জায়িয এরূপ ধারণা চালু হওয়ার কারণে এবং সে প্রেক্ষিতে মহিলাদের ব্যাপক অংশগ্রহণের কারণে।
আরো যত মহিলা এতে শামীল হবে এতসবকিছুতে আর যত কোটি কোটি বেপর্দা, বেহায়া, বেশরার গুনাহ হবে তথা কোটি কোটি ব্যাভিচারের গুনাহ হবে সব গুনাহর যোগফল গিয়ে বর্তাবে এবং বর্তাচ্ছে উবাই’র উপর।
উল্লেখ্য, উবাই আদনা কিছু পয়সা খেয়ে শুধু মহিলা খেলা নয়, মহিলা কুস্তির মত প্রায় বিবস্ত্র ও অশালীন খেলাও জায়িয করলো; তার পরিণতিতে এত কোটি কোটি গুনাহর দায়ও তাকেই বহন করতে হবেই হবে। আর এর প্রকাশও যমীনেই ঘটেছে। তার মৃত্যুও হয়েছে গযবের। মৃত্যুর কিছুক্ষণ পরই লাশ নষ্ট হয়ে গেছে। মুখমণ্ডল ভয়ঙ্কর আকৃতি ধারণ করেছে। শরীর বেঢপ আকৃতি ধারণ করেছে। আকৃতির চরম বিকৃতি ঘটেছে।
মূলতঃ সামান্য দু’পয়সার বিনিময়ে উবাই যে কোটি কোটি কোটি হারাম কাজের সূচনা করেছে তার পরিণতি পরকালে যে কত ভয়ঙ্কর হবে দুনিয়াতেই মৃত্যুর সাথে সাথে তার লাশ পচন ও আকৃতির চরম বিকৃতির মধ্য দিয়ে তার সামান্য নজীর যেন প্রকাশ পেয়েছে। (নাউযুবিল্লাহ)
-মুহম্মদ আরিফুর রহমান, ঢাকা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২