আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ

সংখ্যা: ১৮৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

আল বাইয়্যিনাত প্রতিবেদন: নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, নবীদের নবী, রসূলদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে যারা সামান্যতমও চু-চেরা করবে অথবা বদ আক্বীদা পোষণ করবে তাদের প্রত্যেকেরই আকৃতি বিকৃতি হবে। মরার পর এদের দেহ পঁচে গলে দুর্গন্ধ বের হবে।

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলী আল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লহুল আলী সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে চৌদ্দ দিনব্যাপী আয়োজিত ওয়াজ শরীফ ও দোয়ার মাহফিলে প্রধান অতিথির বয়ানে একথা বলেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম মুদ্দা জিল্লহুল আলী বলেন, মুসলমানদের উচিত সম্ভব হলে সারা বছরব্যাপী হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ তথা ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা, এ উপলক্ষে উনার ছানা-ছীফত, প্রশংসা আলোচনা করা। মুসলামনগণ উনার যত বেশি আলোচনা, ছানা-ছীফত, প্রশংসা করবে তত বেশি রহমত, বরকত, ছাকীনা লাভ করবে, তত বেশি দ্বীনি ও দুনিয়াবী সমৃদ্ধি হাছিল করবে।  আর যারা উনার মুবারক শান-মানের খিলাফ বলবে তারা দুনিয়াতে যেমন আযাব গজবে গ্রেফতার হয়ে লাঞ্ছিত, অপমানিত হবে পরকালেও অনুরূপ জাহান্নামের কীটে পরিণত হবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উলামায়ে ছূ’দের প্রসঙ্গে বলেন, দেশে অসংখ্য হারাম কাজ হলেও এ বিষয়ে তাদের কোন চু-চেরা নেই। কিন্তু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রসঙ্গে এদের চূ-চেরার কোন অন্ত নেই। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রশংসা সংশ্লিষ্ট কিছু শুনলেই এদের গাত্রদাহ শুরু হয়। এরা হিংসায় জ্বলে উঠে। অথচ উনার ছানা-ছীফত করা উম্মতের জন্য ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানের উচিত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বেশি বেশি ছানা-ছীফত করার জন্য ঘরে ঘরে মীলাদ শরীফ পাঠ এবং তাঁর জীবনী মুবারক আলোচনা করা। এটা মুসলমানদের জাহিরী-বাতিনী সমৃদ্ধি ও কাময়াবীর কারণ হবে। পিলখানা হত্যাকা- সম্পর্কে মুজাদ্দিদে আ’যম, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ম্দ্দুা জিল্লুহুল আলী বলেন, পিলখানার হত্যাযজ্ঞ এক সুগভীর ষড়যন্ত্র। যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া নস্যাৎ করার এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার এক সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার অংশ। এর সঙ্গে ভিতর বাইরের অপশক্তিগুলো জড়িত। বাইরের শত্রুরা যুদ্ধাপরাধী জামাতী-খারিজী গোয়েন্দা ও বিডিআর জাওয়ানদের যোগসাজশে এ হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীসহ এ দেশের সব বাহিনীতেই এ ধরণের যুদ্ধাপরাধী জামাতী ও খারিজী চক্রের সদস্যরা সক্রিয় রয়েছে। সরকারের দায়িত্ব কর্তব্য হলো এদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করা। অন্যথায় অন্যান্য বাহিনীতেও এ ধরনের গণহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। চালনী অভিযানের মাধ্যমে সব বাহিনীকে যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার জামাত ও খারিজী মুক্ত করে দেশপ্রেমের চেতনাসমৃদ্ধ নিবেদিত বাহিনী তৈরী করে দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব-কর্তব্য।

জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে মুজাদ্দিদে আ’যম, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, বিশ্বজঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের মদদদাতা হচ্ছে আমেরিকা ও ইসরাইল তথা সিআইএ ও মোসাদ। সেই সাথে এ উপমহাদেশে ‘র’ও জড়িত রয়েছে। বাইরের এ তিন অপশক্তির মদদে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের গোড়াপত্তন করে জামাত ও জোট সরকার। এ দেশের দশ ট্রাক অস্ত্রের রহস্য খুঁজলেও বাইরের এ তিন অপশক্তি আর বাংলাদেশী রাজাকার জামাত জোট, দেওবন্দীদের জোগসাজস ও সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যাবে। কিন্তু জোট আমলে এবং তার পূর্বে-পরে নিয়োগকৃত যুদ্ধাপরাধী, দেশদ্রোহী, রাজাকার, জামাত-জোটের গোয়েন্দাদের আতাত এবং অবৈধ লেন-দেন নীতির কারণে বিক্রি হয়ে যাওয়া গোলামদের দ্বারা এদেশের জঙ্গি সন্ত্রাসী সিরিজ বোমা হামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ২৫ ফেব্রুয়ারী পিলখানা হত্যাযজ্ঞ, এসব রহস্যের জট খুলবে না। এ জন্য প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাম-িত দেশপ্রেমিক গোয়েন্দা বিভাগ। তাহলেই বানানো জঙ্গিবাদের অপবাদ থেকে মুক্তি পাবে আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত, উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত। আর ধরা পড়বে প্রকৃত যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি-সন্ত্রাসী, রাজাকার, জামাত দেওবন্দী দেশ ও জাতির শত্রুরা।

পাকিস্তানে আমেরিকা ও তার মিত্রদের আগ্রাসন প্রসঙ্গে মুজাদ্দিদে আ’যম, মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, পাকিস্তানীদের জন্য পারভেজ মোশাররফ ছিল উপযুক্ত শাসক। কিন্তু পাকিস্তানীরা তাকে অবমূল্যায়নের কারণেই আজকে পাকিস্তানের পারমানবিক চুল্লি এবং পাকিস্তানীরা হুমকীর সম্মূখীন। এখনো পাকিস্তানীদের সময় রয়েছে তওবা-ইস্তিগফার করে বর্তমানের সাদ্দামরূপী আমেরিকার তাবেদার দেশদ্রোহী সরকারকে উৎখাত করে প্রকৃত দেশপ্রেমিক সরকারকে ক্ষমতায় বসানো। আমেরিকাসহ বিশ্ব পরাশক্তিকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে মুজাদ্দিদে আ’যম, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আমেরিকা এবং তার মিত্ররা যদি মুসলমানদের উপর ফের জুলুম নির্যাতন চালায় তবে তাদের এমন কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে যা বিশ্ববাসী কখনো দেখেনি। কাজেই তিনি আমেরিকাসহ তার জালিম মিত্রবাহিনীকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে মুসলমানদের উপর জুলুম নির্যাতন বন্ধ করতে বলেন এবং মুসলমানদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বলেন।

সউদী ওহাবী সরকার কর্তৃক উচ্চ শব্দ দূষণের অজুহাতে মাইকে আযান নিষিদ্ধ করণ প্রসঙ্গে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, এটা মূলতঃ ইহুদীদের ইসলাম বিরোধিতার নীল নকশারই বহিঃপ্রকাশ। এর আগে ইহুদী তাবেদার ওহাবী সরকার কালিমা শরীফ থেকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক বাদ দেয়ার ঘোষণা দিয়েও মূলতঃ ইহুদী তোষণের নজীর স্থাপন করেছিল। এ ঘটনাও মূলতঃ তারই ধারাবাহিক প্রক্রিয়া মাত্র। বিশ্বের ২৫০ কোটিরও অধিক মুসলমানের উচিৎ এ ধরনের ইসলাম বিরোধী অপকর্মের পুনরাবৃত্তি না ঘটানোর জন্য এবং এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য সউদি ওহাবী সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা। উল্লেখ্য, গত ১৬ ছফর ১৪৩০ হিজরী থেকে ১৫ রবীউল আউয়াল শরীফ পর্যন্ত রাজারবাগ দরবার শরীফ-এ ৩০ দিন ব্যাপী প্রতিযোগিতা, ওয়াজ শরীফ, দোয়া ও সামার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ১লা রবীউল আউয়াল শরীফ থেকে ১৪ই রবীউল আউয়াল শরীফ পর্যন্ত বিষয়ভিত্তিক ওয়াজ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ রবীউল আউয়াল শরীফ পবিত্র সামার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আগামী বছর আরো দীর্ঘ সময় ব্যাপী এ মুবারক ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাহফিল উদযাপন করার কথা বলা হয়।

এ মাহফিলে দেশ বিদেশের অসংখ্য পুরুষ এবং মহিলাগণ উপস্থিত হয়ে খাছ পর্দার সহিত ওয়াজ নছীহত শ্রবণ ও বিশেষ তালিম-তালক্বীন গ্রহণ করেন।

স্মর্তব্য, গত ৮ রবীউছ ছানী রোজ রোববার বড়পীর সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ওফাত শরীফ উপলক্ষে রাজারবাগ দরবার শরীফ-এ পবিত্র ফাতিহা-ই-ইয়াজদাহম উদযাপিত হয়।

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ

আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত সংবাদ