আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ

সংখ্যা: ১৫৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

আল বাইয়্যিনাত প্রতিবেদন: মিরাজ শরীফ-এর ঘটনা হচ্ছে আল্লাহ পাক-এর এক কুদরত এবং তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এক মু’জিজা। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চব্বিশ ঘন্টাই আল্লাহ পাক-এর দীদারে মশগুল রয়েছেন। হক্বীক্বতে মিরাজ শরীফ দ্বারা নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে আল্লাহ পাক-এর যে গভীর নিছবত ও সম্পর্ক রয়েছে, সেটাই স্পষ্ট করে দেয়া  হয়েছে।

ইমামে আ’যম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবে আ’যম, কুতুবুল আ’যম, সুলতানুল নাছীর, নূরে মুর্কারম, হাবীবুল্লাহ, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত-এর মজলিশে আলোচনাকালে একথা বলেন।

মিরাজ শরীফ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিরাজ শরীফের প্রসঙ্গ এলেই এক শ্রেণীর কথিত ওয়ায়েজ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে কুফরীমূলক বক্তব্য প্রদান করে থাকে। তারা বলে থাকে, মিরাজ শরীফের পূর্বে সিনা মুবারক চাক করে ভিতর থেকে নাপাকী ফেলে দেয়া  হয়েছে এবং মিরাজ শরীফ গমনের যোগ্যতা প্রদান করা হয়েছে। (নাঊযূবিল্লাহ)

এসব মূলত: কুফরী বিশ্বাস। তিনি বলেন, আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সমস্ত কিছু পবিত্র থেকে পবিত্রতম। এবং তাঁকে নতুন করে কোন বিষয়ে যোগ্য করার চিন্তা করাও কুফরী। কারণ, তিনি সৃষ্টিই হয়েছেন পরিপূর্ণরূপে।

মিরাজ শরীফ বিশ্বাস করা ফরয ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত  আবূ বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বিনা বাক্যে মিরাজ শরীফ বিশ্বাস করার কারণে তিনি ছিদ্দীকে আকবর লক্ববে ভূষিত হয়েছেন। আর আল্লাহ পাক-এর হাবীব সংশ্লিষ্ট যে কোন বিষয়ে হুসনে যন বা বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করাটা মূলতঃ নিছবত এবং মুহব্বতের সাথে সম্পৃক্ত।

তিনি বলেন, যুগে যুগে যারাই যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ হয়েছেন তাঁরা আল্লাহ পাক-এর হাবীব নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে গভীর মুহব্বত এবং নিছবতের প্রেক্ষিতে এবং তাঁর প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা ও হুসনে যন থাকার কারণেই হয়েছেন। আজমীর শরীফের হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী আজমিরী সানজীরি রহমতুল্লাহি আলাইহিও সেই শ্রেণীরই একজন ওলীআল্লাহ। যার উছীলায় আল্লাহ পাক হিন্দুস্থানের এক কোটিরও বেশী মূর্তি পুজককে ঈমানদার বানিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রত্যেক যুগেই এই শ্রেণীর লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ থাকেন। যাদের সাথে আল্লাহ পাক-এর হাবীবের গভীর নিছবতের প্রেক্ষিতে নববী হিদায়েতের ধারা অব্যাহত থাকে। যাদের ওসীলায় মানুষ রিযিক প্রাপ্ত হয়, বৃষ্টি বর্ষণ হয়, বিপদ-আপদ মুক্ত হয় এবং রহমত নাযিল হয়। এ ধারাবাহিকতা ক্বিয়ামত পর্যন্তই অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, আওলিয়ায়ে কিরামগণের পাশাপাশি আরেকটা শ্রেণী রয়েছে যারা হচ্ছে, উলামায়ে ‘ছূ’। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে তায়াল্লুক-নিছবত এবং মুহব্বত না থাকায় এবং তাঁর প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা ও হুসনে যন না থাকার কারণে তারা গোমরাহীতে নিপতিত হয়েছে এবং ইসলাম সম্পর্কে এলোমেলো বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে।

এরাই হচ্ছে ইসলামের শত্রু, উলামায়ে ‘ছূ’ এবং মুনাফিক। যুগে যুগে এই শ্রেণীর আবুল ফজল, ফৈজী, মোল্লা মুবারক নাগোরীরূপী উলামায়ে ‘ছূ’ আর মুনাফিকরাই ইসলাম ও মুসলমানদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। কাজেই এদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। কেননা, এরা ইসলামের খোলসে ইহুদী-নাসারা, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দালাল হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। খিলাফত কায়িম হলে এ দু’শ্রেণীর প্রথম বিচার করতে হবে।

এই শ্রেণীর উলামায়ে ছূ’দের দৃষ্টান্ত দিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি তথাকথিত জাতীয় খতীব কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফের মিথ্যা বরাত দিয়ে বলেছে, “ভোট একটি আমানত” এবং “সৎ লোককে ভোট না দিলে আমানতের খিয়ানত হবে।” অথচ কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফের কোথাও এ ধরণের কোন বক্তব্য নেই। বরং এটা প্রকাশ্য মিথ্যা এবং জালিয়াতির শামিল। কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ সম্পর্কে মিথ্যা বর্ণনাকারীদেরকে কাফির এবং দুনিয়ায় থাকতেই তাদের স্থান জাহান্নামে নির্ধারিত বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

তিনি মুসলমানদের উপর বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, মসজিদের মত পবিত্র স্থানে প্রকাশ্যে এ ধরণের কুফরীমূলক বক্তব্য প্রদানের পরেও কোন একটি লোকও তার প্রতিবাদ করেনি- এটাই সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়।

তথাকথিত খতীবের কুফরী সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, এই কথিত খতীব “ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মত পবিত্র অনুষ্ঠান পালনকে বিদ্য়াত” ফতওয়া দিলেও নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখকে (হিন্দুয়ানী অনুষ্ঠানকে) আল্লাহ পাক-এর নিয়ামত বলে বিবৃতি দিয়েছে এবং এজন্য আল্লাহ পাক-এর শুকরিয়া আদায় করতে বলেছে। অথচ এই পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে নারী-পুরুষ একাকার হয়ে চরম বেপর্দা হয়ে থাকে। মুসলমান মেয়েরা হিন্দুদের ন্যায় কপালে সিঁদুর দিয়ে থাকে। ইত্যাদি আরো অসংখ্য কুফরী কাজ করে থাকে।

উল্লেখ্য, গত ০৬ আগস্ট, ০৬ ঈসায়ী রবিবার (দিবাগত সোমবার) সুন্নতী জামে মসজিদে গরীবে নেওয়াজ, খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী আজমিরী, সানজিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ঈসালে ছওয়াব উপলক্ষে ওয়াজ শরীফ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া গত ২০ আগস্ট, ০৬ ঈসায়ী রবিবার (সোমবার) মিরাজ শরীফ উপলক্ষে ওয়াজ শরীফ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসব মাহফিলে মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী প্রধান অতিথি হিসেবে মুবারক বয়ান পেশ করেন।

 আল বাইয়্যিনাত সংবাদ আল বাইয়্যিনাত প্রতিবেদনঃ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত  ও মাহফিল সংবাদ আল বাইয়্যিনাত প্রতিবেদনঃ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ