হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূর্ববর্তী ইমাম-মুজতাহিদ এবং আউলিয়া-ই- কিরামগণকে যেরূপ লক্বব বা উপাধী দ্বারা সম্বোধন করেছেন সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমান যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান আওলার্দু রসূল রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলীকেও আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘কুতুবুল আলম’, ‘মুজাদ্দিদুয্ যামান’সহ অসংখ্য লক্বব মুবারক দ্বারা সু-সংবাদ দিয়েছেন।
মূলতঃ এটা নতুন কোন বিষয় নয় বরং সাইয়্যিদুল মুরসলীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সেই শ্বাশ্বত বাণীর প্রতিফলন মাত্র। যে প্রসঙ্গে তিনি বলেন-
لم يبق بعدى من النبوة الا المبشرات قالوا وما المبشرات قال الرؤيا الصالحة.
অর্থঃ- “আমার পরে নুবুওওয়াতের ধারাবাহিকতা বন্ধ হবে। তবে (বেলায়েতের) সুসংবাদের ধারা (জারী) অব্যাহত থাকবে। হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ জিজ্ঞাসা করলেন, (বেলায়েতের) সেই সুসংবাদ কি? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সত্য স্বপ্ন।”(তাফসীরে খাযেন-২/৩০৫, দুররুল মানছুর-৪/৩১২)
অপর এক রেওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, (বেলায়েতের) সেই সত্য স্বপ্ন যা মু’মীন-মুত্তাক্বীগণ দেখেন কিংবা তাঁদের সর্ম্পকে অন্য কাউকে দেখানো হয়। (তাফসীরে তাবারী, কুরতুবী, মাজহারী, রুহুল মায়ানী, বয়ান, বুখারী) হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে, الرؤيا الصالحة كلام يكلم به ربك عبده فى المتام. অর্থঃ- “সত্য স্বপ্ন এমন বাক্যকে বলা হয় যা দ্বারা আল্লাহ পাক স্বপ্নে তার বান্দার সাথে কথা বলে থাকেন। (তাফসীরে রুহুল মায়ানী ৬/১৫২) স্মর্তব্য, ইলহাম-ইলকা, কাশ্ফ-কারামত এবং মুরাকাবা-মুশাহাদা ইত্যাদি সবই সু-সংবাদের অন্তর্ভুক্ত। উল্লেখ্য যে, সুসংবাদ পাওয়ার যত মাধ্যম আছে তন্মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাধ্যমে যে খোশ-খবরী বা সু-সংবাদ পাওয়া যায় সেটাই চুড়ান্ত পর্যায়ের। কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন
من رانى فى المنام فقد رانى فان الشيطان لايتمثل فى صورتى.
অর্থঃ- “যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখলো সে সত্যি আমাকেই দেখলো। কারণ শয়তান আমার (ছূরত) আকৃতি ধারণ করতে পারেনা।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত) কাজেই আউলিয়া-ই-কিরাম-এর স্বপ্ন নিছক সাধারণ কোন স্বপ্ন নয় বরং তা হচ্ছে অর্থবহ, তত্ত্ব ও তথ্যপূর্ণ এবং তাৎপর্যম-িত। হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
اذا اقترب الزمان لم تكد رؤيا المسلم تكذب واصدقكم رؤيا اصدقكم حديثا ورؤيا المسلم جزء من ستة واربعين جزأ من النبوة.
অর্থঃ “আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন সময় (ক্বিয়ামত) নিকটবর্তী হবে তখন মুসলমানদের (আউলিয়া-ই-কিরামগণের) স্বপ্ন মিথ্যা হবেনা। বরং তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক সত্যভাষী ব্যক্তিই (সবচেয়ে বড় ওলীআল্লাহ্ই) সর্বাধিক সত্য ও বাস্তব স্বপ্নদ্রষ্টা হবেন। আর মুসলমানদে (আউলিয়া-ই- কিরামগণের) স্বপ্ন নুবুওওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের একভাগ।” (তাফসীর খাযেন ২/৩০৫, মাজহারী-৫/৪৩ রুহুল মায়ানী ৬/১৫১ রুহুল বয়ান৪/৬১ তাবারী ১১/৯৪ দুররুল মানছুর ৩/১১২, বুখারী, মুসলিম ২/২৪১, মিশকাত)