মাওলানা মুফতী মুহম্মদ আল কাওছার
মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইতায়াত, অনুসরণ-অনুকরণ করতে বলেছেন। আর ইহুদী-নাছারা, বেদ্বীন-বদদ্বীনদেরকে পরিহার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি এটাও বলেছেন যে-
يايها الذين امنوا لا تتخذوا اليهود والنصرى اولياء بعضهم اولياء بعض ومن يتولـهم منكم فانه منهم ان الله لايهدى القوم الظالـمين.
অর্থ : হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইহুদী ও নাছারাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। (তারা কখনোই তোমাদের বন্ধু হবে না) তারা একে অপরের বন্ধু। কাজেই, তোমাদের মধ্যে যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে তারা তাদেরই অন্তভূর্ক্ত হবে। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যালিমদেরকে হেদায়েত দান করেন না। (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫১)
অর্থাৎ যারা ইহুদী নাছারা মুজুসী, মুশরিকদের সাথে আন্তরিক মুহব্বত রাখবে তারা কখনোই হেদায়েত পাবে না। কেননা, এরা হচ্ছে যালিম বা অত্যাচারী। আর এদের সাথে যারা আন্তরিক সম্পর্ক রাখবে তারা এদের মত যালিম বা অত্যাচারী হবে। মহান আল্লাহ পাক এদের পরিণতি সম্পর্কে বলেছেন-
اولئك جزاءهم ان عليهم لعنة الله والـملائكة والناس اجمعين
অর্থ: ঐ সমস্ত লোকদের প্রতিদান হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে তাদের উপর লা’নত বা অভিসম্পাত। হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম ও সমস্ত লোকের পক্ষ থেকে লা’নত বা অভিসম্পাত। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৭)
অথচ অপ্রিয় সত্য কথা হচ্ছে- আজ মুসলমানরা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ-নিষেধ মুবারক ভুলে গিয়েছে। মালউন ইবলিস এবং তার দোসর ইহুদী নাছারা, বেদ্বীন-বদ্বীনদের নিয়মনীতি, তর্জ-ত্বরীকা গ্রহণ করেছে। আবার মুসলমান বলে দাবিও করছে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদেরই অনুসরণ-অনুকরণ করছে স্বাচ্ছন্দের সাথে। নাউযুবিল্লাহ! অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, তারা যেন তাদের সদ্য জাত সন্তানটিকেও শয়তান ও তার দোসর ইহুদী-নাছারাদের অনুসারী বানানোর জন্য বিস্তর প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে। নাউযুবিল্লাহ!
এ কাজে তারা উলামায়ে “ছূ”দের মদদ পাচ্ছে। তাদের সহযোগীতাই তাদের এই গোমরাহীর পথ পরিষ্কার হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত মুবারকগুলো গায়েব হচ্ছে। আর বিদয়াত তথা শয়তানের পদাঙ্কই সুন্নতে পরিনত হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
যার ফলশ্রুতিতে পৃথিবী জুড়ে সেই সকল নামধারী মুসলমানরা কাফির, মুশরিক, ইহুদী, নাছারা, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দ্বারা অমানবিক জুলুম, নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। লাঞ্ছিত-অপমানিত হচ্ছে। স্বদেশ থেকে বিতাড়িত হতে বাধ্য হচ্ছে।
এমন কঠিন দুর্দিনে যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সেই গায়েব হওয়া সুন্নত মুবারকগুলো জিন্দা বা পুন: প্রচলন করছেন। একজন মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যত সুন্নত মুবারক রয়েছে প্রতিটি সুন্নত মুবারকই তিনি স্পষ্ট দলীল-আদিল্লাহ দ্বারা মুসলিম উম্মাহ উনাদের কাছে তুলে ধরেছেন। এককথায় হাক্বীক্বী মুসলমান হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থাপত্রই দিয়েছেন। মু’মিন মুসলমানগণ উনারা যদি সেগুলো অনুসরণ-অনুকরণ করতে পারে তাহলে তারা তাদের হারানো গৌরব ফিরে পাবে। পৃথিবীর কোন শক্তিই তাঁদেরকে পদানত করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। আর মু’মিন মুসলমানগণই হবেন শাসক। দুনিয়ার সবাই হবে শাসিত। যার জন্য আমরা আলোচ্য নিবন্ধে ধারাবাহিকভাবে তা আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। যাতে স্পষ্টভাবে এ বিষয়টিও পরিস্ফুটিত হবে যে সত্যি তিনি মুহইস সুন্নাহ তথা সুন্নত জিন্দা বা পুন: প্রচলনকারী মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম।