দে.হো. সাঈদী লুট, হত্যা, ধর্ষণ সহযোগী থেকে আজকের কুরআন শরীফ অপব্যাখ্যাকারী
কুরআন শরীফে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “মানুষ ও জ্বীনের মধ্যে যারা দুষ্ট প্রকৃতির তাদেরকেই আমি নবী-রসূল তথা আউলিয়ায়ে কিরামের শত্রু করেছি।”
মূলত: বিরোধীতা হওয়া, অপবাদ রটনা হওয়া সুন্নত। সে সুন্নত পালিত হচ্ছে বর্তমান জামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, মুহইস্ সুন্নাহ্, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ক্ষেত্রেও। সারাদেশে তথা বিশ্বে উলামায়ে ‘ছূ’রা তাঁর নামে অপবাট রটনা করছে, বিরোধিতা করছে। কিন্তু যারাই করছে খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে যে, এরা প্রত্যেকেই খুব বদ আমলের অধিকারী। অসততা, মিথ্যাবাদী এমনকি চরিত্রহীনতারও অধিকারী। হুজ্জাতুল ইসলাম, হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ইহ্ইয়াউলূমিদ্দীন কিতাবে এ সমস্ত আলিম নামধারীদের দোষত্রুটি তুলে ধরলে তা মোটেই গীবত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন। বরং বলেছেন, “কিছুক্ষণ সময় নামধারী মাওলানাদের দোষত্রুটি তুলে ধরা ষাট বছরের বে-রিয়া নফল ইবাদতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।” প্রসঙ্গতঃ গত ৬ই ডিসেম্বর/২০০৫ ঈসায়ী ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তথাকথিত সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও ভোট চাওয়া হারাম, টেলিভিশনে ইসলামী প্রোগ্রাম করা হারাম ইত্যকার দেয়াল লেখনীর বিষোদগার করে শাস্তি দাবী করেছে। বিষয়টি হয়েছে, যেমন রূহ তেমন যবানের মত। যেমন, কাফিররা পবিত্র কুরআন শরীফ সম্পর্কে বলতো, “ওরা বলতো, এগুলোতো সে কালের উপকথা, যা তিনি লিখিয়ে নিয়েছেন, এগুলো সকাল-সন্ধা তার নিকট পাঠ করা হয়।’(সূরা ফুরক্বান-৫) কাফিররা বলে, “এটা মিথ্যা ব্যতীত কিছুই নয়, তিনি এটা উদ্ভাবন করেছেন এবং ভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক তাঁকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছে।”(সূরা ফুরক্বান-৪) পৌত্তলিকরা একথাও বলে যে, “তাকে শিক্ষা দেয় এক মানুষ।”(সূরা নহল-১০৩) মূলতঃ আল বাইয়্যিনাত-এর দেয়াল লিখনীর ক্ষেত্রে সাঈদীর বিরোধিতা কাফিরদের কুরআন শরীফের বিরোধিতারই অনুরূপ। তবে আল বাইয়্যিনাত-এর দেয়াল লেখনী যে কুরআন-সুন্নাহ্রই কথা তা প্রমাণের আগে এর বিরোধিতাকারী সাঈদীর চরিত্র সম্পর্কে আলোকপাত প্রয়োজন। যার দ্বারা প্রমাণ হবে যে, তার মত নিকৃষ্ট লোকই আল বাইয়্যিনাত-এর দেয়াল লিখনীর বিরোধিতার উপযুক্ত বটে। পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে:
দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ॥ লুটেরা থেকে কুরআনের অপব্যাখ্যাকারী
“৭১ এর ঘাতক, দালাল ও যুদ্ধাপরাধী সম্পর্কিত গণতদন্ত কমিশন” রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, “১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য দেলোয়ার হোসেন সাঈদী তার নিজ এলাকায় আল বদর, আল শামস্ ও রাজাকার বাহিনী গঠন করেন এবং তাদের সরাসরিভাবে সহযোগিতা করেন। ১৯৭১-এ তিনি সরাসরিভাবে কোন রাজনৈতিক দলের নেতা ছিলেন না, তবে তথাকথিত মাওলানা হিসেবে তিনি তার স্বাধীনতাবিরোধী তৎপরতা পরিচালনা করেছেন। তার এলাকায় হানাদারদের সহযোগী বাহিনী গঠন করে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে লুটতারাজ করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি তার এলাকায় অপর চারজন সহযোগী নিয়ে ‘পাঁচ তহবিল’নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন, যাদের প্রধান কাজ ছিলো মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর জোরপূর্বক দখল এবং তাদের সম্পত্তি লুণ্ঠন করা। লুণ্ঠনকৃত এ সমস্ত সম্পদকে দোলোয়ার হোসেন সাঈদী ‘গনিমতের মাল’আখ্যায়িত করে এসব সম্পদ নিজে ভোগ করার পাশাপাশি পাড়ের হাট বন্দরে বিক্রি করে ব্যবসা করতেন। ঔপন্যাসিক হুমায়ুন আহমদের পিতা ফয়জুর রহমান আহমদের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দেলোয়ার হোসেন সাঈদী জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন এই শহীদের কন্যা সুফিয়া হায়দার এবং জামাতা আলী হায়দার খান। তারা জানান যে, দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর সহযোগিতায় ফয়জুর রহমান আহমেদকে পাকিস্তানী সৈন্যরা হত্যা করে এবং হত্যার পরদিন সাঈদী পিরোজপুরে ফয়জুর রহমান আহমেদের বাড়ি লুট করে। একাত্তরে সাঈদীর কুতৎপরতার কথা উল্লেখ করে পাড়ের হাট ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা মিজান জানিয়েছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দেলোয়ার হোসেন সাঈদী পাক হানাদার বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় লিপ্ত ছিলেন। তিনি ধর্মের দোহাই দিয়ে পাড়ের হাট বন্দরের হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি লুট করে সেসব মালামাল নিজে মাথায় করে বহন করে নিয়ে যান। মদন নামে এক হিন্দু ব্যবসায়ীর বাজারের দোকানঘর ভেঙ্গে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন। দেলোয়ার হোসেন সাঈদী সাহেব বাজারের বিভিন্ন মনোহরী ও মুদি দোকান লুট করে লঞ্চঘাটে দোকান দিয়েছিলেন। দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর অপকর্ম, দেশদ্রোহিতার কথা এলাকার হাজার হাজার হিন্দু মুসলিম আজও ভুলতে পারেনি। (মাসিক নিপুন, আগস্ট-১৯৮৭) পিরোজপুরের এডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক গণতদন্ত কমিশনকে জানিয়েছেন যে, যুদ্ধের সময় সাঈদী পাড়ের হাট বন্দরের বিপদ সাহার বাড়ি জোড়পূর্বক দখল করেন এবং দখলের পর থেকে তিনি এ বাড়িতেই থাকতেন। তিনি সেখানে অসামাজিক কার্যকলাপও পরিচালনা করতেন। এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের তালিকা প্রস্তুত করে পাক সেনাদের কাছে সরবরাহ করতেন সাঈদী। এডভোকেট রাজ্জাক আরও জানিয়েছেন, সাঈদী পিরোজপুরে পাকিস্তানী সেনাদের মনোতুষ্টির জন্য বলপূর্বক মেয়েদের ধরে এনে তাদের ক্যাম্পে পাঠাতেন। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধের সময় সাঈদী পাড়ের হাট বন্দরটি আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। পিরোজপুরের গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট আলী হায়দার খানও সাঈদীর বিরুদ্ধে অনুরূপ অভিযোগ এনেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সাঈদীর সহযোগিতায় তাদের এলাকায় হিমাংশু বাবুর ভাই ও আত্মীয়স্বজনকে হত্যা করা হয়েছে। পিরোজপুরের গণপতি হালদারকেও সাঈদী ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তৎকালীন মহুকুমা এসডিপিও ফয়জুর রহমান আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত এসডিও রাজ্জাক এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান, স্কুল হেডমাস্টার আব্দুল গফফার মিয়া, সমাজসেবী শামসুল হক ফরাজী অতুল কর্মকার প্রমুখ সরকারি কর্মকর্তাদের সাঈদীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। পাকিস্তানী বাহিনীর ক্যাপ্টেন আজিজের সঙ্গে তার সুসম্পর্কের কারণে তাকে নারী ‘সাপ্লাই’দিতেন বলে জানিয়েছেন আলী হায়দার খান। (সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়, ১৫ ডিসেম্বর/২০০৫) একাত্তরের এই ঘাতক জামাত নেতা মাসিক আল বাইয়্যিনাত ও তার দেয়াল লিখনীর বিরুদ্ধে নানা জঘন্য অপপ্রচার ও শক্ত অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।
কারণ, মাসিক আল বাইয়্যিনাতই তার ও তার অনৈসলামিক দলের অস্তিত্বকে নির্মূল করার গায়েবী হিম্মত রাখে। মহান আল্লাহ পাক কবুলের মালিক। (আমীন)
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, বাসাবো, ঢাকা।
বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫