ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যূমুয্যামান, কুতুবুল আরম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউছূল আযম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, ছহিবু সুলতানিন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসুল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহকাম-৩২

সংখ্যা: ১২৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

(ধারাবাহিক)

            যেটা বলা হয়েছে,  حرمة مصاهرة (হুরমতে মুছাহিরাহ) অর্থাৎ হারাম হয়ে যাওয়া শরীয়তের একটা হুকুম রয়েছে। আল্লাহ পাক না করুন, যদি কোন শ্বশুর তার ছেলের স্ত্রীর প্রতি কোন খারাপ দৃষ্টি দেয় যেটাকে হুরমতে মুছাহিরাহ বলা হয় তাহলে পিতার জন্য যেমন সে ছেলের স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে তেমন ছেলের  জন্যও তার স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে।     কাজেই ছেলের স্ত্রী তার পিতার খিদমত করবে অর্থাৎ শ্বশুরের খিদমত করবে, সেটা ঠিক ততটুকু খিদমত করবে যতটুকু সাধারণভাবে করা সম্ভব। হ্যাঁ, পাক-শাক করে খাওয়াতে পারে, তার অন্যান্য খিদমতের আঞ্জাম দিতে পারে, তবে সরাসরি এমন কোন কাজ করবেনা, তার সামনে বেশীক্ষণ থাকবেও না এবং সরাসরি তার হাত, পা-তে হাত দিয়ে কোন কাজ করে দিবেনা, হাত-পা টিপে দেয়া, তেল দেয়া ইত্যাদি ইত্যাদি যা কিছু রয়েছে সেটা থেকে সতর্ক থাকবে। যদি কারো মনে কোন ওয়াসওয়াসা এসে যায়, যদি শ্বশুরের মনে কোন ওয়াসওয়াসা এসে যায়, খারাপ দৃষ্টি তার প্রতি পড়ে যায়, তাহলে সেটা হুরমতে মুছাহিরাহ এর কারণে শ্বশুরের জন্য যেমন তার ছেলের স্ত্রী হারাম, ঠিক ছেলের জন্যও সে স্ত্রীটা হারাম হয়ে যাবে। হয়ত অনেকে জানবেনা, বুঝবে না, কিন্তু অজান্তেই সেটা হয়ে যাবে। যার ফলশ্রুতিতে দেখা যাবে, ঐ ছেলের ঘরে যে সন্তানগুলো জন্ম গ্রহণ করবে একটাও বৈধ হবে না।   ঠিক এখানে আবার আরেকটা বিষয় রয়েছে। সেটা হচ্ছে, পিতার জন্য তার যে মেয়ে রয়েছে সেখানেও তাকে সাবধান থাকতে হবে। যেটা শরীয়তের ফায়সালা করা হয়েছে, দশ বছরের বয়স যখন পার হয়ে যাবে, তখন কোন মেয়ে যেন তার পিতার সাথে একই বিছানায় না থাকে। সেখানেও হুরমতে মুছাহিরাহ ছাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  কাজেই শরীয়তের যে মাসয়ালা-মাসায়িল রয়েছে, স্বামীর এক হুকুম। তারপর পিতা এরপর বিশেষ করে স্বামীর যে পিতা রয়েছে যদিও তার সামনে যাওয়া জায়িয রয়েছে, কিন্তু এরপরও ব্যতিক্রম রয়েছে।  ঠিক অনুরূপ যদি কোন শ্বাশুড়ী অর্থাৎ স্ত্রীর মা; যারা মেয়ের জামাই রয়েছে, তাদের জন্য শ্বাশুড়ীর সামনে কম যাওয়াটা হুকুম রয়েছে। যদি শ্বাশুরীর বয়স কম হয়; যেতে পারবে, দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে, কথা বলতে পারবে, অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় যেন কথাবার্তা না বলে, অতিরিক্ত দেখা-সাক্ষাৎ না করে। যদি শ্বাশুড়ীর বয়স কম হয়, তাহলে দেখা দেয়াটাই মাকরূহ্ এর অন্তর্ভুক্ত ফতওয়া দেয়া হয়েছে। তাহলে দেখা দেয়াটাই মাকরূহ্ বলা হয়েছে, যদি শ্বাশুড়ীর বয়স কম হয়। মেয়ের জামাই  তার দৃষ্টি যদি তার শ্বাশুড়ীর প্রতি পড়ে যায় এবং সেখানে যদি খারাপ কিছু সৃষ্টি হয়ে যায় যেটার মাধ্যমে হুরমতে মুছাহিরাহ ছাবিত হয়ে যায় তাহলে সেই মেয়ের জামাই-এর জন্য মেয়েও হারাম হয়ে যাবে।   কাজেই শরীয়তের যে হুকুম-আহকাম আল্লাহ্ পাক দিয়েছেন, খুব সূক্ষ্ম, খুব তাহক্বীক্ব, খুব ফিকির করে সে আমল করতে হবে। পর্দার হুকুম খুব সুক্ষ্ম। পর্দার খিলাফ করার কারণেই আমাদের সমাজে, সারা বিশ্বে ফিৎনা-ফাসাদ। ছেলে-মেয়ে অবাধ্য, পিতা-মাতার কথা শুনেনা, এলোমেলো কাজ করে থাকে, বেশরা-বিদয়াত কাজ করে থাকে, যদিও কিছু তাদেরকে দ্বীনী শিক্ষা দেয়া হয় এরপরও তারা বেশরা-বিদয়াত চলে থাকে। দ্বীনী শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়না, আমল দেয়না। এর মূল কারণ হচ্ছে তাদের মূলের মধ্যে গ-গোল রয়েছে। যখন মূলের মধ্যে গ-গোল থেকে যাবে তার বাইরে দিয়ে, সেখানে যতই সুসজ্জিত করা হোক না কেন সেটা টিকবেনা। তার হাক্বীক্বী বদ তাছীর বের হবেই হবে।

   এটা বলা হয়েছে, একটা ইস্তেঞ্জাখানা, লেট্রিন- ওটাকে যত সুসজ্জিতই করা হোক, মোজাইক করা হোক, টাইলস্ বসানো হোক, আরো সুসজ্জিত করা হোক না কেন, কিন্তু তার মধ্যে যে বদগন্ধ রয়েছে সেটা থেকেই যাবে। মূলের মধ্যে যেটা রয়েছে সেটা জাহির হবেই।

كل شيئ ير جع الى اصله.

প্রত্যেকটা জিনিস তার মূলের দিকে প্রত্যাবর্তন করে থাকে। কাজেই খুব ফিকির করতে হবে, চিন্তা করতে হবে। সেটাই আল্লাহ পাক বলেছেন, যে হ্যাঁ, তোমাদের সৌন্দর্য যদি অনিচ্ছা সত্ত্বেও প্রকাশ হয়ে যায়, এ সমস্ত ক্ষেত্রে দোষ নেই, তবে প্রত্যেকটার ব্যাপারে আলাদা আলাদা হুকুম রয়েছে, সেখানে সাবধান থাকতে হবে।সেটাই বলা হয়েছে,

او ابنائهن او ابناء بعولتهن.

তোমাদের ছেলে, তোমাদের স্বামীর ছেলে, যদিও সেখানে শরয়ী যে পর্দা সে হুকুম নেই, কিন্তু এরপরও নিজেকে হিফাযত রাখতে হবে।     যেমন উলামা-ই-মুতায়াখ্খিরীন ফতওয়া দিয়েছেন, সেটা হচ্ছে, যারা মাহরাম তাদের সাথে সফর করা জায়িয রয়েছে। এটা আল্লাহ্ পাক-এর নির্দেশ, আল্লাহ পাক-এর রসূল-এর নির্দেশ। কিন্তু এরপরও উলামা-ই-মুতায়াখ্খিরীন যে ফতওয়া দিয়েছেন সেটা হচ্ছে, মাহরাম হওয়ার পরেও যেহেতু ফাসাদের যুগ, দেখতে হবে, যে মাহরামের সাথে সে যাবে, তার স্বভাব-চরিত্র কতটুকু ভাল, যদি সে মাহরাম ব্যক্তির চরিত্রের মধ্যে কোন গ-গোল থেকে থাকে, তাহলে তার সাথেও সফর করা জায়িয নেই, তাহলে তার সাথেও সফর করা জায়িয নেই। সেটাই বলা হয়েছে,

  او اخوانهن او بنى اخوانهن او بنى اخوتهن او نسائهن او ماملكت ايمانهن.

তোমাদের ভাই যারা রয়েছে, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে এবং ঐ সমস্ত মহিলা যাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ জায়িয রয়েছে তাদের কথা বলা হয়েছে।

او ما ملكت ايما نهن.

এবং তোমাদের অধীন, অধীনস্ত দাসী যারা রয়েছে, বাঁদী রয়েছে, তাদের সামনে তোমরা যেতে পারবে। তবে অধীনস্ত দাস যারা রয়েছে, দাস বর্তমান যুগে সেটা নেই, গোলাম বা দাস পূর্ববতী যামানায় সেটা ছিল। তাদের সামনে যাওয়াটা সেটা নিষিদ্ধ। শুধু বাঁদী বা দাসী তাদের সামনে যেতে পারবে।

  او التبعين غير أولى الاربة من الرجال.

ঐ সমস্ত পূরুষ যারা নির্বোধ, মহিলা সংক্রান্ত কোন জ্ঞান যাদের নেই, আলাবোলা আক্বল-সমঝ নেই, পুরুষ কি, মহিলা কি, তার কি পার্থক্য, যারা সেটা বুঝেনা, তাদের সামনে,

  او الطفل الذين لم يظهروا على عورت النساء.

ঐ সমস্ত নাবালেগ শিশু, যারা মহিলাদের সম্পর্কে বুঝেনা, পুরুষ মহিলার পার্থক্য বুঝেনা, তাদের সম্মূখে গেলেও সেখানে নাজায়িয নয়, সেটা জায়িয রয়েছে। আল্লাহ পাক এখানে যেটা বলে দিয়েছেন, সেটা জায়িয রয়েছে। যদি তাদের সম্মুখে তোমরা যাও তাহলে সেটা তোমাদের জায়িয রয়েছে।    এই বার প্রকার লোক এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রত্যেক প্রকারের মধ্যে ক্ষেত্র বিশেষে হুকুমের পার্থক্য রয়েছে। এবং এরপর বলা হয়েছে যেটা, সেটা হচ্ছে দুধ ভাই, দুধ বোন। আপন ভাই-বোনের যে হুকুম দুধ ভাই, দুধ বোনের সেই একই হুকুম। দুধ পিতা, দুধ মাতা, দুধ ছেলে একই হুকুম। এখানে সেটা আল্লাহ পাক উল্লেখ করেননি, অন্যত্র উল্লেখ করেছেন। দুধ ভাই, দুধ বোন, দুধ ছেলে এবং তার স্ত্রী, আপন ভাই-বোনের যে হুকুম, আপন ছেলের স্ত্রীর যে হুকুম ঠিক দুধ ভাই, দুধ বোন, দুধ ছেলে এবং দুধ পিতা, দুধ মাতা যারা রয়েছেন তাদের একই হুকুম, এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

কাজেই প্রত্যেকের যাদের সামনে যাওয়া জায়িয রয়েছে। এরপরও কিছু হুকুম পার্থক্য রয়েছে। সেখানে সর্তক থাকতে হবে। যদি শরয়ী পর্দা কেউ করতে চায় এবং খালিছ আল্লাহ্ পাক-এর সন্তুষ্টি, আল্লাহ পাক-এর রসূল-এর সন্তুষ্টি চায়। এবং যদি কেউ চায়, তার আল-আওলাদ, ছেলে-মেয়ে তার সিলসিলা প্রত্যেকেই নেক্কার, পরহেযগার, আল্লাহ্ওয়ালী, আল্লাহ্ওয়ালা হোক, তাহলে তাকে সেটা খেয়াল রাখতে হবে। অন্যথায় তার অজান্তে এমন কোন হারাম কাজ সংঘটিত হয়ে যাবে, সে যেটা জানলনা। তাহলে তার সিলসিলা যা আসবে, কেউই বৈধ থাকবে না। যদি অবৈধ হয় তাহলে তাদের তাছীর, তাদের ক্রিয়া সে রকমই হবে। খুব সর্তক, খুব সাবধান থাকতে হবে, এ সমস্ত বিষয় থেকে। যেটা আল্লাহ পাক নিষেধ করে দিয়েছেন। (অসমাপ্ত)

ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম-২৯

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যূমুযযামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, ছহিবু সুলতানিন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ,  হাবীবুল্লাহ্, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর  ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে-   পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম-৩০

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যূমুয ্যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, ছহিবু সুলতানিন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ,  হাবীবুল্লাহ্, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর  ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম-৩১

ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম-৩৩

খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, ছাহিবে নেয়ামত, আল মালিক, আল মাখদূম, কুতুবুল আলম, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদে আ’যম, মুহইউস সুন্নাহ, মাহিউল বিদয়াত, আযীযুয যামান, ক্বইউমুয যামান, ইমামুল আইম্মাহ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হজ্জ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উমরা উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত, হুকুম-আহকাম সম্পর্কে (২৯)