হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
আউলিয়া-ই-কিরামগণের নাম মুবারকে কিভাবে লক্বব মুবারক সন্নিবেশিত হয় (পূর্ব প্রকাশিতের পর) তাছাড়া আল্লাহ পাক এবং তাঁর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো কখনো কামালতে নবুওয়াত এবং রিসালতে উলুল আ’যম-এর মাক্বামের হিস্সাপ্রাপ্ত আউলিয়া-ই-কিরামকে কিছু কিছু মাক্বাম বা লক্বব মুবারক প্রকাশ করার নির্দেশ করেন। তখন উক্ত আউলিয়া-ই-কিরাম তা প্রকাশ করতে বাধ্য হন। যদিও তা সর্বসাধারণের বোধগম্য না হয়। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, একদা মাহবুবে সুবহানী, হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহিকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, হুযূর! আপনি কি গাউছূল আ’যম? উনি বললেন, হ্যাঁ। আপনি কি সাইয়্যিদুল আউলিয়া? উনি বললেন, হ্যাঁ। আপনি কি মুজাদ্দিদে যামান? উনি বললেন, হ্যাঁ। আপনি কি সুলতানুল আরিফীন? উনি বললেন, হ্যাঁ, আমি সুলতানুল আরিফীন। বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ইতিবাচক জাওয়াব শুনে উক্ত ব্যক্তি চুপ হয়ে গেলেন। তখন বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, হে ব্যক্তি! তুমি কি আমার সম্পর্কে আর কিছুই শুননি? সেই ব্যক্তি বলল, জী-না। তিনি বললেন, “ওরাউল ওরা, ওরাউল ওরা, ওরাউল ওরা।” অর্থাৎ আমার মাক্বাম অনেক উপরে, আরো অনেক উপরে। যা তোমাদের মত লোকের কল্পনারই বাইরে। তিনি একবার সমসাময়িক সকল আউলিয়া -ই-কিরামকে লক্ষ্য করে বললেন,
قدمى هذه على رقبة كل اولياء الله تعالى
অর্থঃ- “আমার কদম সমস্ত আউলিয়া-ই-কিরাম-এর গর্দানের উপর। অর্থাৎ সমস্ত আউলিয়া-ই-কিরাম-এর উপর আমার শ্রেষ্ঠত্ব বা মাক্বাম।” (তাযকিরাতুল আউলিয়া) আফযালুল আউলিয়া হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় “মাবদা ওয়া মায়াদ” কিতাবে উল্লেখ করেছেন, একদিন আমি আধ্যাত্মিক হালতে (মুরাকাবায়) নিমজ্জিত অবস্থায় দেখতে পেলাম যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামূল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলছেন, আপনি আক্বাঈদ শাস্ত্রের মুজতাহিদ। তিনি উক্ত কিতাবে আরো উল্লেখ করেন যে, আল্লাহ পাক আমাকে ইলহাম-ইলকা করেছেন, আমি আমার অন্তরে এই শব্দ শুনতে পেলাম যে,
غفرت لك ولمن توسل بك الى بواسطة او بغير واسطة الى يوم القيامة.
অর্থাৎ “আপনাকে ক্ষমা করলাম এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা আপনার মধ্যস্থতায় কিংবা বিনা মধ্যস্থতায় আমার সন্তুষ্টির জন্য আপনাকে ওসীলা বানাবে (মুহব্বত ও অনুসরণ করবে) তাকেও ক্ষমা করে দিলাম।” এরূপ আরো অসংখ্য আউলিয়া-ই-কিরাম অতিবাহিত হয়েছেন যারা লক্বব বা মর্যাদা-মর্তবা প্রকাশ করার নির্দেশ পেয়েছেন এবং প্রকাশ করেছেন। হাল যামানার ইমাম, ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর জীবন মুবারকে তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি। আল্লাহ পাক তাঁকেও অসংখ্যবার ইলহাম করেছেন, ইলকা করেছেন যে, “আপনাকে ক্ষমা করলাম এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা আপনার মধ্যস্থতায় কিংবা বিনা মধ্যস্থতায় আমার সন্তুষ্টির জন্য আপনাকে ওসীলা বানাবে (মুহব্বত ও অনুসরণ করবে) তাকেও ক্ষমা করে দিলাম।” আর তাঁর নাম মুবারকের পূর্বে লক্বব বা উপাধি মুবারকসমূহ লৌহ মাহফুযে সন্নিবেশীত আছে। আল বাইয়্যিনাত-এর ১৩ তম সংখ্যা ২৯ পৃষ্ঠায় “সে দিন যা ঘটেছিল” শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৯৪ সালের ১১ অক্টোবর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব আব্দুল মতিন চৌধুরী ছাহেব-এর বাস ভবনে তথাকথিত শাইখুল হাদীছ যাকে হক্কানী-রব্বানী আলিমগণ শাইখুল হদস বলে থাকেন তথাকথিত মুফতী আমিনী ওরফে কমিনীসহ অপরাপর লক্বব বিরোধিদের লক্বব সম্পর্কে প্রশ্নের দলীলভিত্তিক বিস্তারিত জবাব দানের পর হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী একথাও বলেন যে, “এরপরও যদি আপনাদের বুঝে না আসে, তবে আমাদের এখানে আসা-যাওয়া করেন আপনাদের দেখিয়ে দেয়া যাবে আমার নামের আগে এসব লক্বব লৌহ মাহফুযে আছে কিনা।” (সুবহানাল্লাহ) (অসমাপ্ত)