وعلمناه من لدنا علما
অর্থ: আল্লাহ পাক বলেন, আর আমি আমার তরফ থেকে উনাকে অর্থাৎ আমার ওলীকে গইবের ইলম্ দান করেছি। (সূরা কাহাফ-৬৫)
খইরুল উম্মাহাত, সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম ছিলেন উনার যামানায় আল্লাহ পাক উনার মনোনীতা লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ এবং ইলমে গইব তথা অদৃশ্য ইলমের অধিকারিণী। তাই তিনি ইলমে গইব তথা ঐশীজ্ঞান ইলহাম-ইলক্বার মাধ্যমেই স্বীয় আওলাদ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে বাস্তব সত্য বাণীগুলি উনার কবিতার ভাষায় ব্যক্ত করেছিলেন।
এমনকি বর্ণিত না’ত শরীফখানাও ইলহামী-গইবী ইলমে পরিপূর্ণ। যার বাস্তবতা পরবর্তীতে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ ও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বাস্তব নুবুওওয়াতী ও রিসালতী গোটা যিন্দিগী মুবারকে আমরা লক্ষ্য করি। যেখানে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আম্মা ইলমে গইবের জ্ঞানে জ্ঞানী ছিলেন, সেখানে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে পরিপূর্ণভাবে আল্লাহ পাক প্রদত্ত ইলমে গইবের অধিকারী তথা ‘মুত্তালাউন আলাল গইব’ তা বলার অপেক্ষাই রাখেনা।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্্ নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা শ্রদ্ধেয়া আম্মা খইরাতুল উম্মাহাত, ত্বাহিরাহ, ত্বইয়িবাহ, মুনাওওয়ারাহ, যাকিইয়াহ হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম স্বীয় আওলাদ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে প্রশংসামূলক যে না’ত শরীফ বা ক্বাছীদা শরীফ পাঠ করেছিলেন তা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ হিসেবে গণ্য ও পরিচিত। যা তিনি স্বীয় বিছাল মুবারকের কয়েকদিন পূর্বে পাঠ (আবৃত্তি) করেছিলেন। যা আল্লামা হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী শাফিয়ী আশয়ারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘কিতাবুল আযীম ওয়াসসুন্নাহ’ কিতাবে সঙ্কলন করেছেন।
নিম্নে উক্ত মুবারক না’ত শরীফখানা উল্লেখ করা হলো-
আরবী না’ত শরীফ:
(۱) بَارَكَ الله فِيْكَ مِنْ غُلَامٖ +
يَا اِبْنُ الَّذِىْ مِنْ حُرْمَةِ الْحِمَامٖ
(۲) فَاَنْتَ مَبْعُوْثٌ اِلَى الْاَنَامٖ +
مِنْ عِنْدِ ذِى الْجَلَالِ وَ الْاِكْرَامٖ
(۳) تُبْعَثُ فِى الْحِلِّ وَالْحَرَامٖ+
تُبْعَثُ بِالتَّحْقِيْقِ وَالْاِسْلَامٖ
(۴) دِيْنُ اَبِيْكَ الْبِرِّ وَاِبْرَاهَامٖ +
فَالله اَنْهَاكَ عَنِ الْاَصْنَامٖ
(۵) كُلُّ كَثِيْرِ يُفْنٰى وَاَنَا مَيَتَةٌ+
وَذِكْرِىْ بَاقٍ تَرَكْتُ خَيْرًا وَلَدْتُّ طُهْرًا
১. হে আমার যোগ্য আওলাদ, আল্লাহ পাক আপনাকে বরকতময় করেই সৃষ্টি করেছেন। হে আমার যোগ্য আওলাদ, আমার পবিত্র বিছাল শরীফ-এর সময় আমি তা বলে যাচ্ছি।
২. আপনি সমস্ত সৃষ্টি জগতের জন্য নবী ও রসূলরূপে প্রেরিত হয়েছেন। মহা সম্মান ও প্রতিপত্তির অধিকারী আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকেই প্রেরিত হয়েছেন।
৩. আপনাকে নবী ও রসূলরূপে পাঠানো হয়েছে মদীনা শরীফ, মক্কা শরীফ ও সারা দুনিয়াবাসীদের মধ্যে। আপনাকে নবী ও রসূলরূপে পাঠানো হয়েছে হক্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য এবং দীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
৪. আপনি আপনার সৎকর্মশীল পিতা হযরত আব্দুল্লাহ যবীহুল্লাহ আলাইহিস্্ সালাম ও হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস্্ সালাম-এর দীনকে পুনর্জীবিত করবেন। আর মহান আল্লাহ পাক আপনার কারণেই আপনার উম্মতদেরকে মূর্তিপূজা থেকে রক্ষা করবেন।
৫. সবকিছুই ধ্বংস হবে। আমিও বিছাল শরীফ লাভ করব বা দিদারে ইলাহীতে চলে যাব। কিন্তু আমার প্রশংসনীয় আলোচনা অনন্তকাল ধরে অবশিষ্ট থাকবে। কারণ, আমি আল্লাহ পাক-এর সর্বশ্রেষ্ঠ হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রেখে যাচ্ছি। যাঁকে পূতঃ পবিত্র হিসেবে আগমন করতে সাহায্য করেছি।
উল্লেখ্য, আলোচ্য না’ত শরীফখানার শ্রেষ্ঠত্ব ও মকবুলিয়াত বলার অপেক্ষা রাখে না। যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ পবিত্র ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে প্রায় দেড় মাস ব্যাপী আয়োজিত মাহফিলে উক্ত না’ত শরীফ-এর উপর এককভাবে বিশেষ প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
মুহম্মদ ইছহাকুর রহমান