সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মাঝে কথোপকথন
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশিষ্ট মুরীদ ও ইমাম, আমীরুল মু’মিনীন ফিল হাদীছ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করেছেন।
উল্লেখ্য যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী, হিংসা পরায়ন অনেক লোক ছিল। যারা সবসময় উনার বিরোধিতা করতো। পবিত্র হজ্জের সময় পবিত্র মক্কা শরীফে ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ আনেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনিও সম্মানি হজ্জ করার জন্য পবিত্র মক্কা শরীফে তাশরীফ নেন। তিনি দূর থেকে দেখতে পেলেন কিছু লোক সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার দিকে ইশারা করে
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খামিস আলাইহিস সালাম উনাকে উনার মুবারক শানে মিথ্যা অভিযোগ করে বললো, উনি আপনার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উপর নিজের ক্বিয়াসকে প্রাধান্য দেন। নাউযুবিল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আযম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি দূর থেকে দেখে বিষয়টি অনুধাবন করলেন যে, নিশ্চয়ই আমার বিরুদ্ধে কিছু বলা হচ্ছে। তিনি পবিত্র হজ্জের কার্যক্রম শেষ করে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার জন্য উনার নিকট গেলেন। নিকটবর্তী হয়ে সালাম দিলেন। সাইয়্যিদুনা ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সালামের জাওয়াব না দিয়ে মুখ মুবারক ফিরিয়ে নিলেন। তিনি আবারো সালাম দিলেন। তখনও তিনি সালামের জাওয়াব না দিয়ে মুখ মুবারক ফিরিয়ে নিলেন। সাইয়্যিদুনা ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি আবারো সালাম দিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সালামের জাওয়াব দিলেন না। বরং বললেন, আপনি কি ঐ ব্যক্তি নন, যে আমার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার উপর নিজের ক্বিয়াস তথা আনুমানকে প্রাধান্য দেন?
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, নাউযুবিল্লাহ! হে আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার ইজ্জত ও হুরমত মুবারক রক্ষা করা আমাদের জন্য তেমনি ফরয ও গুরুত্বপূর্ণ যেমন আপনার সম্মানিত নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মান-ইজ্জত, হুরমত মুবারক রক্ষা করা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের জন্য ফরয ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মেহেরবানী করে আমাকে কিছু বলার অনুমতি দিন। তিনি অনুমতি দিলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার কিছু জানার বিষয় রয়েছে। আপনার মুবারক খিদমতে তা পেশ করতে চাই। তিনি বললেন, বলুন।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তুলনামুলকভাবে পুরুষরা দুর্বল না মহিলারা?
সাইয়্যিদুনা ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, মহিলারা। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহিলারা দুর্বল হওয়া সত্বেও মীরাছ (মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদ) এর অর্ধেক পায়। আর এটাই হচ্ছে আপনার সম্মানিত নানাজান, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ফায়সালা মুবারক সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মাফহুম। আর আমি সেটাই আমল করে থাকি, ফতওয়া দিয়ে থাকি। আমি যদি তার বিপরীত, নিজের ক্বিয়াসকে প্রাধান্য দিতাম তাহলে বলতাম, মহিলারা পুরুষের দ্বিগুণ মীরাস পাবে। আমি কিন্তু তা বলি না।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আযম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বললেন, তুলনামুলকভাবে নামাজের গুরুত্ব বেশি, না রোযার? সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, নামাযের।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আযম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, এটাই আপানার মহাসম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ। আর আমরা সেটাই বিশ্বাস করি এবং মেনে থাকি। আমি যদি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উপর নিজের ক্বিয়াসকে প্রাধান্য দিতাম, তাহলে ফতওয়া দিতাম যে, মহিলাদের মাসিক মাজূরতার কারণে নামায কাযা আদায় করতে হবে। রোযা কাযা করতে হবে না। কিন্তু আমি সেরূপ ফতওয়া দেই না।