অছিয়ত মুবারক (৪২): মানুষের সাথে বেশী মেলামেশা করবেন না। তাহলে বদ লোকের বদ তাছীর (প্রভাব) থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
অছিয়ত মুবারক (৪৩): জাহিরী বা প্রকাশ্যে যেমন মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে তায়াল্লুক বা সম্পর্ক রেখেছেন বাতিনী বা গোপনেও সেরূপ তায়াল্লুক বা সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত রাখবেন। কারণ, ইলিমের হক সে পর্যন্ত সঠিকভাবে পূর্ণ হবে না, যতক্ষণ না আপনার জাহির-বাতিন বা প্রকাশ্য ও গোপন সকল কাজ-কর্ম ইলিম অনুযায়ী হবে।
অছিয়ত মুবারক (৪৪): আপনার জন্য সমীচীন ও শোভনীয় কোন কাজ বাদশাহ বা আমীর-উমারা যদি অর্পণ করে তাহলে আপনি তখনই তা গ্রহণ করবেন যখন সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন যে, যদি আপনি ঐ দায়িত্ব গ্রহন না করেন তাহলে অযোগ্য লোক ঐ দায়িত্ব গ্রহন করবে। ফলে সর্ব-সাধারণের অনেক ক্ষতি সাধিত হবে।
তবে বাদশাহ বা আমীর-উমারা তারা যদি আপনার ইলিমের বা অভিজ্ঞতার কারণে ঐ দায়িত্ব দেয় তবেই তা গ্রহন করবেন, অন্যথায় নয়।
অছিয়ত মুবারক (৪৫): মুনাযারা বা বাহাসের মজলীসে কোন কথা ভয়-ভীতির সাথে বলবেন না। কেননা ভয়-ভীতির কারণে কথা সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করা যায় না। বরং মুখে জড়তার সৃষ্টি হয়। ফলে কথা স্পষ্ট করে বলা যায় না।
অছিয়ত মুবারক (৪৬): অধিক হাসি-ঠাট্টা করা থেকে বিরত থাকবেন। কেননা অধিক হাসি-ঠাট্টা করলে দিল বা অন্তর মারা যায়। ফলে মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির-ফিকির থেকে অন্তর গাফিল হয়ে পরে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
كَلَّا ۖ بَلْ ۜ رَانَ عَلٰى قُـلُوْبِهِم مَّا كَانُـوْا يَكْسِبُـوْنَ
অর্থ: বরং তারা যা করেছে, সে কারণে তাদের ক্বলব বা অন্তকরণে মরিচা পড়েছে। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুতাফফিফীন: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪)
অছিয়ত মুবারক (৪৭): ভাব-গাম্ভীর্যতা রক্ষা করে ধীর-স্থীরতার সাথে পথ চলবেন। অর্থাৎ পথ চলার সময়ও সুন্নত মুবারকের দিকে খেয়াল রাখবেন। কোন কাজই তাড়াহুড়া করে করবেন না। কেননা, তাড়াহুড়ায় শয়তান খুশী হয়।
এটা মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অপছন্দ।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَكَانَ الْإِنْسَانُ عَجُوْلًا
অর্থ: মানুষ বড়ই ব্যস্তমতি। অর্থাৎ সবকাজেই মানুষ তাড়াহুড়ো করে। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বনি ইসরাঈল: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
অছিয়ত মুবারক (৪৮): কোন লোক পিছন দিক থেকে আপনাকে ডাকলে, তার ডাকে সাড়া দিবেন না। কেননা চতুস্পদ জন্তুকেই কেবল পিছন দিক থেকে ডাকা হয়।
অছিয়ত মুবারক (৪৯): কথা বলার সময় আওয়াজ উঁচু করবেন না বা চিৎকার করে কথা বলবেন না।
অছিয়ত মুবারক (৫০): পবিত্র সুন্নত মুবারক পালনার্থে মানুষের মাঝে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে কম নাড়া-চাড়াকে আপনার অভ্যাসে পরিণত করবেন। অর্থাৎ জনসম্মুখে অপ্রয়োজনীয় বা বেহুদা কোন কাজ করবেন না।
অছিয়ত মুবারক (৫১): মানুষের মাঝে থাকাকালীন সময়ে মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির অধিক পরিমাণে করবেন। যাতে মানুষ আপনার থেকে শিক্ষা গ্রহন করে নিজেদের জীবনে তা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুপ্রাণিত হয়। অর্থাৎ তারাও অধিক পরিমাণে যিকির-ফিকির করে।
একজন কুতুবুয যামান উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১১৬ -মুহম্মদ সাদী