ইমাম সম্মেলনে অর্ধনগ্ন খ্রীষ্টান মহিলা মেরীর পর এবার খোলামেলা হিন্দু মহিলা সুনিতা মুখার্জী তথাকথিত ইমামদের প্রতি নিস্প্রোয়জন ছিল প্রধানমন্ত্রীর নছীহত

সংখ্যা: ২৯৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

ইনশাআল্লাহ এ লেখা যখন প্রকাশিত হবে তখন মে মাস। কিন্তু যে ঘটনাকে নিয়ে এ লেখার বিষয় তা গত ডিসেম্বরের ২৪ তারিখের। অর্থাৎ ২৪-১২-২০০৩ ঈসায়ী তারিখে অনুষ্ঠিত ইমাম সম্মেলনের।

সাধারণ সাংবাদিকতার আঙ্গিকে তা ডেথ নিউজ বলে বিবেচ্য হলেও যে ইমাম ছাহেবদের নিয়ে কথা; তারা কথিত সম্মেলনের ভাবধারা থেকে আদৌ সরে আসেনি বিধায় ইসলামের দৃষ্টিতে তা এখনও অবশ্যই অবশ্যই বিশেষ সমালোচনার বিষয়।

উল্লেখ্য, একইভাবে গত বছর ২৯শে আগস্ট/২০০২ ঈঃ তারিখে অনুষ্ঠিত তথাকথিত সম্মেলনের আপত্তিকর বিষয় সম্পর্কে আল বাইয়্যিনাত-এ সমালোচনা করা হয়েছিল। আল বাইয়্যিনাতে বলা হয়েছিল, “যে কথা ইতোপূর্বে বলা হয়েছে। এতদিন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দেখে আসছে যে, ইমামরাই রাজা, উজীর, মন্ত্রী, সেনাপতি, পাত্র-মিত্র, কোটাল সবাইকে নছীহত করতে; কিন্তু জোট সরকারের ইমামদের কৃপায় তারা দেখতে পাচ্ছে যে, এখন খোদ ইমাম ছাহেবরাই ওয়াজ-নছীহত শুনতে সচেষ্ট। এতদিন যাবৎ তাও জোট সরকার সমর্থিত আলিমরা মুসলিম মহিলাকে তাদের রাজনৈতিক নেত্রী মানতে আনুগত্যের চরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছেন। কিন্তু এখন সে নেত্রীকে মানার কায়দা-কানুন, আদব-মুহব্বত শেখার ব্যাপারে নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে, নেত্রীকে পর্দামুক্ত, আধুনিক সংস্কৃতিবান নারী জনশক্তি গঠনে কি করে সক্রিয় সহযোগিতা করা যায়, সেই তর্জ-তরীক্বা ও ইল্ম-কালাম শিখার জন্য এবার তারা খোদ মার্কিন মুলূকের  বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মেরী এ্যান পিটার্সের ন্যায় শর্ট স্কার্ট পরিহিতা জাদরেল খ্রীষ্টান মহিলাকে তাদের উস্তাদ, শায়খ তথা মুর্শিদরূপে কবুল করেছে।

সূত্রে প্রকাশ, বব কাটিং, শর্ট স্কার্ট পরিহিতা মেরি এ্যান পিটার্স সত্যিই ইমাম ছাহেবদের নছীহত করতে গিয়ে কুরআন শরীফের ৪৯ নং সূরার  একটি আয়াত শরীফের অর্থ করেন এভাবে, ( যা মূলতঃ ভুল) “তোমাদেরকে ভিন্ন ভিন্ন জাতি ও ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠী হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে। এর অর্থ এই নয় যে, তোমরা একে অপরকে ঘৃণা করবে বরং একে অপরের কাছে শিক্ষা গ্রহণ করবে।”

অর্থাৎ মেরী এ্যান পিটার্স স্পষ্টতঃ ব্যক্ত করলেন যে, তার মত খ্রীষ্টান মহিলার কাছ থেকে জোট সরকার সমর্থিত ইমামদের শিক্ষা কেবল শুরু হলো।”

মেরী এ্যান পিটার্স নছীহত করেন, “কুরআন শরীফ সকল মানুষের সমান অধিকার এবং নিরপেক্ষতার শিক্ষা দেয়। ইসলাম আরো শিক্ষা দেয় যে, নির্বাচনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অবশ্যই বিশ্বাস ও সততার উপর ভিত্তি করে করতে হবে।”

বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, মেরী এ্যানের কথিত নারী মর্যাদার ক্ষেত্রে তার মত শর্ট স্কার্ট পড়ে বিয়ার খেয়ে পার্টিতে নাচানাচি করা একটি শর্ত। আর এ জিনিসটিও করতে গিয়ে বাঁধার সম্মুখীন হতে হলেও তাতে সাহস যুগিয়েছেন মেরী এই বলে, “তবে যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের অবস্থা আগে এরকম ছিলনা এবং আমাদের দেশের নারীদের ইতিহাসে দেখা যায় তাদের পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার লাভ করতে দীর্ঘ সময় লেগেছে।”

পাঠক! মেরীর এই বক্তব্য থেকে কয়েকটি জিনিস স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয়। প্রথমতঃ এই যে, বর্তমানে আমাদের দেশের জোটভুক্ত নামধারী ইমামরা ইসলামের নামে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান ইত্যাদি কবুল করেছেন, সে শিক্ষা মূলতঃ তারা মেরী গং এর কাছ থেকে নিয়েছেন।”

 মেরীর পর সুনিতা

আর এবারের উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে যে, খ্রীষ্টান মেরী এ্যান পিটার্সের পর তথাকথিত ইমামদের এবার নছীহত করেছেন, তাদের ওয়াজ শুনিয়েছেন ইউ.এন.এফ.পি.এ বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিন্দু সুনিতা মুখার্জী। অর্থাৎ অর্ধনগ্না খ্রীষ্টান মহিলার পর একইভাবে এবার খোলামেলা হিন্দু মহিলা আমাদের জাতীয় ইমামদের উস্তাদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। তিনি নারীর অধিকার অর্জনে সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে ইমাম ছাহেবদের নছীহত করেছেন। এবং নারীর অধিকার বাস্তবায়নের এই আদলটি যে কি হতে পারে সে প্রসঙ্গে খোদ প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে স্পর্শকাতর কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, “পরিবর্তনশীল বিশ্বের মূল স্রোতধারার সাথে থাকতে হলে আমাদেরকেও সনাতন চিন্তা, ধ্যান-ধারনা ও বোধের বেড়াজাল ভেঙ্গে বেরিয়ে আসতে হবে।”

পাঠকমাত্রই জানা আছে যে, সাধারণতঃ বামপন্থী ও ইসলাম বিরোধী তথাকথিত প্রগতিশীলরাই সনাতন ইসলামী অনুশাসন যথা শরীয়তী পর্দা পালন, নাচগান বর্জন করণ ইত্যাদি ইসলামী আচারকে সনাতন ধ্যান-ধারণা এবং অজ্ঞতা ও কুসংস্কার বলে থাকে। এখন জোট সরকার তথা তথাকথিত ইসলামী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাহলে কি বললেন?

মূলতঃ তিনি যে বামপন্থীদের বিপরীত অর্থে বলেননি তা নছীহত গ্রহীতা তথাকথিত ইমামদের আমল দেখেই বুঝা যায়। যথাঃ- (১) ঢাকাস্থ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সম্মেলনে আগত সাতশ’ ইমাম সবাই একযোগে নিস্পলক দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়ার দিকে তাকিয়ে তার নারী কণ্ঠের ওয়াজ শুনেছেন।

(২) একইভাবে তারা সুনিতা মুখার্জীর বয়ানও শুনেছেন এবং মুগ্ধ দৃষ্টিতে তার দেহ রেখা পাঠ করেছেন, রূপ-লাবণ্য উপভোগ করেছেন।

অথচ আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন, “মু’মিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের ইজ্জত-আবরু হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য পবিত্রতা রয়েছে।”

আর হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,  “যে দেখে এবং দেখায় উভয়ের প্রতি লা’নত।”

হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত বুরাইদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, একদিন আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে লক্ষ্য করে বললেন, “হে আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! দৃষ্টিকে অনুসরণ করোনা। যদি কোথাও দৃষ্টি পড়ে যায়, শরীয়তের খিলাফ কোন স্থানে যদি তোমার দৃষ্টি পড়ে যায় সেটাকে অনুসরণ করনা। প্রথম দৃষ্টি ক্ষমা করে দেয়া হবে; কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টি ক্ষমা করা হবেনা।”

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, মুহাদ্দিসীনে কিরাম ও মুফাস্সিরীনে কিরামগণ, ইমাম-মুজতাহিদ, যারা ফক্বীহ্ অনেক কিছু উল্লেখ করেছেন, সাধারণভাবে যদি কারো দৃষ্টি কারো উপর পড়ে যায়, যদি তার বদ খেয়াল না থাকে, সেটা জায়িয হবে অথবা হবে না? আর যদি কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ দৃষ্টি করে তাহলে সেটাই বা কতটুকু শরীয়তের হুকুম?   এখানে যদিও কেউ কেউ বলেছেন, কোন খারাপ উদ্দেশ্য ব্যতীত যদি কেউ দৃষ্টি করে সে হোক পুরুষ বা মহিলা সেটা তার জন্য মাকরূহ্। আর উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কেউ যদি দৃষ্টি করে সেটা হারাম। কিন্তু মূল সর্বসম্মত মত যেটা সেটা হচ্ছে, উদ্দেশ্য ভাল থাকুক অথবা খারাপ থাকুক, ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অর্থাৎ যদি সে একাধিক দৃষ্টি করে তাহলে অবশ্যই সেটা হারাম হবে। এবং যদি উঁকি-ঝুঁকিও কেউ দেয় ইচ্ছাকৃত সেটাও তার হারাম, কবীরাহ্ গুনাহ্র অন্তর্ভুক্ত হবে।

পাঠক! পবিত্র কুরআন-সুন্নাহ্য় এরূপ অনেক অনেক আদেশ-নির্দেশ রয়েছে। সে প্রেক্ষিতে আবহমান কাল ধরে মুসলমান মাত্রই বেগানা-মহিলাদের দিকে তাকানো সম্পর্কে শরীয়তী ধ্যান-ধারনা রয়েছে। এবং কুরআন-সুন্নাহ্য় বর্ণিত এসব কথা আমাদের ইমাম ছাহেবগণই শিক্ষা দিয়ে আসছেন।

এখন দেশের সরকার প্রধান সেই সনাতন ধ্যান-ধারানাকে, অজ্ঞতা ও কুসংস্কার বলে আখ্যা দিলেন এবং তার বেড়াজাল ভাঙ্গতে বললেন। এবং তার কথা মত তথাকথিত ইমাম ছাহেবগণ তা ভাঙ্গলেনও। তারা চীন মৈত্রীর সম্মেলন কেন্দ্রের নরম চেয়ারে বসে মহিলা সরকার প্রধান তথা সুনিতা মুখার্জীর দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলেন, কান পাতলেন, নফসানিয়ত আনন্দে মজলেন। এবং এ ধারাবাহিকতায় তাদের মধ্যে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ছয়জন সরাসরি মহিলা সরকার প্রধানের একান্ত কাছে গিয়ে তার হাত থেকে সম্মান-পত্র ও ক্রেষ্ট গ্রহণ করলেন।

উল্লেখ্য, এ মহতী অনুষ্ঠানে মহিলা সরকার প্রধান তথা সুনিতা মুখার্জীর দিকে তাকানো ও তার সুললিত কণ্ঠ শোনার ক্ষেত্রে  যথারীতি আরো উপস্থিত ছিলেন তথাকথিত ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মুহিউদ্দীন, ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের মহাপরিচালক এ.জেড শামসুল আলম প্রমূখ।

যদিও তারা সুনিতা মুখার্জীর তথা প্রধানমন্ত্রীর মত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদে বিশ্বাসী নন বরং তারা নিজেদের ইসলামী চিন্তাবিদ ও ব্যক্তিত্ব বলে জাহির করতে অভ্যস্ত। সেক্ষেত্রে এরূপ অনৈসলামিক আবহে তাদের উপস্থিতি, সক্রিয় তৎপরতা, তাদের ইসলামী খোলসকে আবারো উপহাস করলো। ইসলামের নামে তারা আজ কত ঘৃণ্য স্বার্থবাদী ও সুবিধাবাদী, আমলহীন, ধর্ম ব্যবসায়ী তাই প্রতিভাত করলো।

উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইমাম প্রশিক্ষন একাডেমীতে কি কায়দায় দরস দেয়া হয় এবং শ্রেষ্ঠ ইমাম নির্বাচন করা হয় এটা তার সামান্য নজীরমাত্র। আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে যে, একই তরীক্বায় আগামী দু’বছর এক লাখ ইমামের প্রশিক্ষন সমাপ্ত করা হবে।  সুতরাং তারাও যে কোন তবকার হবে সেটা সহজেই অনুধাবনীয়।

এখানে উল্লেখ্য যে, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমীর প্রধান অভিভাবক ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মহোদয় বলেছেন, ইমামদের আজকের যুগের মানুষ হতে হবে, ইমাম প্রশিক্ষণের পদ্ধতি ও বিষয়বস্তু সবই আজকের যুগের বিষয়। পাশাপাশি সরকার প্রধান বলেছেন, পরিবর্তনশীল বিশ্বের মূল শ্রোতধারার সাথে থাকতে হবে।

পরিবর্তনশীল বিশ্বের মূল শ্রোতধারা বলতে যে বর্তমান ইউরোপ-আমেরিকার খ্রীষ্টান-ইহুদীদের ভাবধারা বোঝায় তা না বললেও চলে। সেক্ষেত্রে তা যে প্রকাশ্য ইসলাম বর্জনের প্রবনতার পর্যায়ে পড়ে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। অথচ আল্লাহ্ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ ফরমান, “হে ঈমানদারগণ তোমরা ইহুদী-খ্রীষ্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করোনা।” উল্লেখ্য, পরিবর্তনশীল বিশ্বের মূল শ্রোতধারার সাথে থাকতে হবে এ ধারণা বা চেতনা ইসলামের সাথে আদৌ সঙ্গতিপূর্ণ নয় তা ইমাম সম্মেলনের সব ইমামই জানেন। তারা যে ইসলামী জ্ঞানের যৎকিঞ্চিত সার্টিফিকেট লাভ করেছেন সে সার্টিফিকেট লব্ধ জ্ঞানও সে কথাই প্রকাশ করে।

মূলতঃ সরকারের কথা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে ইসলাম আগের যুগের কথা, বর্তমান যুগে তা অচল। সুতরাং সুরা আহযাবে, সূরা নূরে, বোখারী শরীফে, তিরমিযী শরীফে, মুসলিম শরীফে তথা শত শত হাদীস শরীফে স্পষ্ট পর্দার কথা থাকলেও মহিলাদের দিকে না তাকানোর কথা থাকলেও সরকারের ভাষায় সেসব পর্দার ধারণা ফেলে দিয়ে আধুনিক যুগের মানুষ হতে হবে। বলাবাহুল্য সরকারের অনুগত ইমামরা হয়েছেও তাই।

তারা অর্ধনগ্ন খ্রীষ্টান  মেরীর পর এবার কট্টর হিন্দু সুনিতা মুখার্জীর কাছ থেকে ছবক নিয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়েছে, তন্মধ্যে কেউ কেউ শ্রেষ্ঠও নির্বাচিত হয়েছে।

এক্ষেত্রে কোন কোন মহল যদিও বলেছেন যে, বাংলাদেশের মত একটা ধর্মপ্রাণ মুসলিম দেশে ধর্মীয় সমাজের স্পর্শকাতর অধিষ্ঠান ইমাম সাহেবদেরকে অর্ধনগ্ন খ্রীষ্টান মহিলা, তথা খোলামেলা কট্টর হিন্দু মহিলা সুনিতা মুখার্জীর ছবক প্রদানের দ্বারা সরকার এদেশের মুসলমানদেরকে মার্কিনীদের কাছে মডারেট দেশ হিসেবে প্রতীয়মান করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে আর ইমাম সাহেবরা তারই গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। মহল বিশেষের এ অভিযোগ আংশিক সত্য হলেও পুরোটাই নয়।

কারণ এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী তাদেরই নসীহত করতে পেরেছেন, তারাই সুনিতা মুখার্জী ও ম্যারীর নসীহত শুনতে হাজির হয়েছিলেন যারা আগে থেকেই তাদের ভাবধারায় সিক্ত ছিলেন, যারা যুগের দাবী অনুযায়ী চলতে অনুপ্রাণিত ছিলেন, যারা পরিবর্তনশীল বিশ্বের মূল ধারার সাথে থাকতে নিজ থেকেই প্রচেষ্ট ছিলেন। এরা তথাকথিত ইসলামী রাজনীতির তল্পীবাহক তথা তার সমর্থক।

প্রধানমন্ত্রীর বলার বহু পূর্বেই তারা, “যুগের মানুষ হতে হবে অথবা পরিবর্তনশীল বিশ্বের মূল শ্রোতধারার সাথে থাকতে হবে।” ইসলামী আদর্শ বিবর্জিত এ ওয়াস্ওয়াসার কাছে নিজেদের বিসর্জন দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের কাছে যাওয়ার পূর্বে তারাই প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেছেন, সোহবত আদায় করেছেন।     কট্টর হিন্দু সুনিতা মুখার্জীর ছবক দেয়ার পূর্বেই তারা কট্টর হিন্দু গান্ধীর হরতাল করেছেন, হিন্দুদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেনক্ষè। অর্ধনগ্ন খ্রীষ্টান মহিলা মেরীর ছবক দেয়ার পূর্বেই তারা খ্রীষ্টানদের মৌলবাদ গ্রহণ করেছেন, নির্বাচন গণতন্ত্র ইত্যাদি করেছেন।

সুতরাং ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমীতে মেরী বা সুনিতার দরস দান, নসীহত বা ওয়াজ করণ তথা ছবক প্রদান এ প্রশ্নবানেই জর্জরিত করে যে, আজকের মুসলমান সমাজ যাদের থেকে শুক্রবারের বয়ান শুনছেন, যাদের পিছনে নামায পড়ছেন তারা কাদের থেকে শিখে এসে এবং কিধরনের কথা শিখে এসে মুসলমানদের ধর্মকেন্দ্র মসজিদের অভিভাবক সেজে বসছে? এ ধরণের ইমামদের কাছে আল্লাহ পাক-এর ঘর মসজিদ আজকে কতটুকু নিরাপদ?

পরিশেষে উল্লেখ্য যে, পরিবর্তনশীল বিশ্বের মূল শ্রোতধারার সাথে থাকার জন্য অথবা বর্তমান যুগের মানুষ হতে সরকারের যে আহবান তা তারা উপযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে পৌছাতে পেরেছেন।

যেমন, মকতুবাত শরীফে উল্লেখ হয়েছে, “একবার এক ওলী আল্লাহ্ স্বপ্নে দেখেন যে ইবলিস মানুষকে ওয়াস্ওয়াসা দেয়ার কাজ ছেড়ে দিয়ে দিব্যি দিবা-নিদ্রা যাচ্ছে। এর কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বলল হুযূর! বর্তমানে আর আমার কাজ করার প্রয়োজন হয়না। বর্তমানে আলিম নামধারীরাই, ইমাম নামধারীরাই আমার আগেই আমার চেয়ে বেশী কাজ করে দিচ্ছে। তাই এখন আমার অখণ্ড অবসর। আর অবসর পেলে যা হয় আমি তাই করছি, দিবা নিদ্রা যাচ্ছি।”

প্রসঙ্গতঃ তাই বলতে হয় যে, তথাকথিত ইমাম ছাহেবদের পরিবর্তনশীল বিশ্বের মূল শ্রোতধারার সাথে থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আহবানের অথবা বর্তমান যুগের মানুষ হওয়ার জন্য ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর নছীহতের আসলে দরকার ছিলনা। কারণ ইমাম নামধারীরা তথা তথাকথিত শাইখুল হাদীছ, মুফতী, মাওলানা তথা খতীবরা আসলে সে আহবান বা নছীহতের আগে থেকেই সেরূপটিই হয়ে আছে। তাদের ধর্মব্যবসার জন্য অনেক আগেই ইসলামকে তারা ছেড়ে দিয়েছে। ইসলামের নামেই তারা হারামকে হালাল করেছে।  যে প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “আখিরী যামানায় এমন কিছু মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে তারা এমন সব কথা বলবে, যা তোমরা শোননি,তোমাদের বাব-দাদা, চৌদ্দপুরুষ শোনেনি। তোমরা তাদের কাছে যেয়োনা, তাদেরকে তোমাদের কাছে আসতে দিওনা। তবে তারা তোমাদের গোমরাহ করতে পারবে না।

– মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ্, বাসাবো, ঢাকা।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাক্বীক্বী নায়িব ও ওয়ারিছ। তাঁর বিরোধিতাকারীরা মুনাফিক, কাফির ও শয়তানের অনুসারী- ৬

‘ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাণীর ছবি তোলা, রাখা, আঁকা, দেখা হারাম’ মুজাদ্দিদে আ’যমের অনবদ্য তাজদীদ

ইতিহাসের নিরীখে, বর্তমান সংবিধান প্রণেতা গণপরিষদেরই কোন আইনী ভিত্তি বা বৈধতা ছিল না। গত ৫৪ বৎসর দেশবাসীকে যে অবৈধ সংবিধানের অধীনে বাধ্যগত করে রাখা হয়েছিলো এর প্রতিকার দিবে কে? ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দ্বীন ইসলামের প্রতিফলন ব্যাতীত কোন সংবিধানই বৈধ হতে পারে না কারণ দেশের মালিক ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান

প্রসঙ্গঃ ‘ইসলাম ও মুসলমানের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিবাদ’ প্রতিবাদের ভাষা ও ধরণ; বৃহত্তর স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্রতর স্বার্থ ত্যাগ এবং সহীহ সমঝ

তথাকথিত জাতীয় খতীবের নববর্ষ পালন জিহালতি আর গোমরাহীর চরম মিশ্রণ