ইসলামের নামে জামাতের মুখপত্রের ভাষ্য ও মুনাফিক প্রসঙ্গ:

সংখ্যা: ১৫০তম সংখ্যা | বিভাগ:

“সত্য এসেছে মিথ্যা দূরীভূত হয়েছে। নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই মিথ্যা দূরীভূত হওয়ার যোগ্য।”

মিথ্যা দূরীভূত হওয়ার অনিবার্যতার রেশ ধরেই অপরাধ বিজ্ঞানে একটা কথা চালু রয়েছে, “অপরাধী সব সময়ই ক্লু রেখে যায়। অপরাধীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো ধর্মব্যবসায়ী মুনাফিক।”

মুনাফিক তার রাজনৈতিক ফায়দাজনিত ধর্মব্যবসার কারণে ধর্মের অপব্যাখ্যা করলেও, হারামকে হালাল বললেও আবার যখন ধর্মের মুখোশ পড়তে যায় তখন ঠিকই ধর্মের কথা বলতে বাধ্য হয়। যার দ্বারা মুনাফিক ধর্ম ব্যবসা করতে গিয়ে যে মিথ্যা বলেছে, ধর্মের অপব্যাখ্যা করেছে তা স্পষ্টতঃই প্রমাণ হয়।

ইসলামের নামধারী জামাতটি যে এদেশে ধর্মের নামে ব্যবসা করে যাচ্ছে সে উপলব্ধি দিন দিন সাধারনের মাঝেও প্রসারিত হচ্ছে।

ইসলাম ওহীর মাধ্যমে নাযিলকৃত দ্বীনের নাম। ওহীর সংরক্ষক খোদ আল্লাহ তায়ালা। কাজেই ওহীর বিশ্বাস ও চেতনা ক্বিয়ামত পর্যন্ত মানুষের মাঝে জাগরূক থাকবে- এটাই সত্য কথা।

“ইসলামে বেপর্দা হওয়া নাজায়িয, ছবি তোলা নাজায়িয”- এই চেতনায় ধর্মব্যবসায়ীদের ধর্মব্যবসা পানিতে ডুবে। কারণ, ধর্মব্যবসায়ীদের সাথে যেহেতু আল্লাহ পাক-এর রহমত নেই যেহেতু চলমান প্রক্রিয়াই তাদের পথ ও পুঁজি। ‘প্রচারেই প্রসার’- বিজ্ঞাপনী সূত্র ধরে তারা আইয়্যামে জাহিলিয়ার মত নর্তকী-বাদকী দ্বারাও তাদের প্রচারে মগ্ন। এ কারণে হারাম নাচ-গান ও বেপর্দা-বেহায়াপনা আর ব্যভিচার বিস্তারের সূতিকাগার টি.ভি চ্যানেলগুলোও এখন ওদের ও আশ্রয়স্থল। তারপরেও ওদের মেকী একটা খোলশ ধরে জায়িয-নাজায়িয মেনে চলার মনোভাব জাহির করার লোক দেখানো প্রবণতা প্রকট।

গত ডিসেম্বর-২০০৫ ঈসায়ী তারিখে ইসলামের নামধারী জামাতটির মুখপত্র মাসিক পৃথিবীতে প্রশ্নোত্তরে যা বলা হয়ঃ

“(খ) টেলিভিশনে অনুষ্ঠান দেখা বৈধ কি? খবরের কাগজে দেখলাম টিভি দেখা সম্পূর্ণ হারাম, এমনকি ইসলামী অনুষ্ঠান দেখাও হারাম। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হবো।

উত্তরঃ (খ) শরীয়তের দৃষ্টিতে নির্দোষ অনুষ্ঠান বাস্তবে দেখা যেমন জায়িয, তেমনি তা টেলিভিশনের পর্দায় দেখাও জায়িয। আর বাস্তবে যেসব অনুষ্ঠান দেখা নাজায়িয টেলিভিশনেও তা দেখা নাজায়িয।”

প্রদত্ত প্রশ্নোত্তরের প্রেক্ষিতে, হাদীছ শরীফের ভাষ্যনুযায়ী মিথ্যাবাদীর স্মরণশক্তি কম হয়। পাশাপাশি বলতে হয়, মুনাফিকদেরও আক্বল-বুদ্ধি কম হয়।

ইসলামের নামধারী জামাতটির অবস্থা হয়েছে তাই। কারণ, সাধারণ অবস্থায় ছেলে ছেলের দিকে তাকাতে পারে। মেয়ে মেয়ের দিকে তাকাতে পারে।

আর একটি পরিবারে মাহরামভুক্ত ভাই-বোন বা স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের দিকে তাকাতে পারে কিন্তু টিভির পর্দায় যখন একসাথেই ছেলে মেয়ে থাকে তখন কি হতে পারে? আর শুধু একজন ছেলে একজন মেয়েই থাকে না বহু মেয়ে ছেলেও এক সাথে থাকে।

“কাজেই সাধারণ অবস্থায় যা জায়িয টেলিভিশনেও তা জায়িয”- এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বলতে হয়, কোন পরিবারের বাবা-মা, ভাই-বোন একসাথে টেলিভিশনের সামনে বসা আছে। সেক্ষেত্রে বাবা ও ভাইদের জন্য জায়িয পুরুষদের প্রতি তাকানো। আবার মা ও বোনের জন্য জায়িয মেয়েদের দিকে তাকানো।

কিন্তু টিভির পর্দায় একই সাথে যখন ভেসে আসে ছেলে-মেয়ের মুখ তখন বাবা বা ভাই কি টিভির পর্দায় যেখানে যেখানে ছেলে আসে সেখানে আর মা ও বোন কি যেখানে যেখানে মেয়ে আছে সেদিকেই চোখের দৃষ্টিকে ভাগ ভাগ করে নিক্ষিপ্ত করবে? আর তাদের চোখের দৃষ্টি কি সরু পাইপ লাইনের মত যে, আলাদা আলাদা জায়গায় নিবদ্ধ হয়ে থাকবে?

মূলত: টিভির দিকে তাকালে যে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অনিবার্যভাবে গোটা পর্দার উপরই দৃষ্টি পড়বে তা যারা অস্বীকার করবে তারা শুধু নিখাদ মুনাফিক ও ধর্মব্যবসায়ী নয় চরম স্তরের জাহিল ও প্রতারক  এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধিও বটে। যাদের কথা সুস্থ সমাজে পরিত্যাজ্য।

সাধারণ মুসলমানের সাথে তারা দিন দিন এভাবেই ছলনা ও প্রতারণা করে যাচ্ছে। তাছাড়া টিভিতে তথাকথিত ইসলামী অনুষ্ঠানের শুরুতে মধ্যে এবং শেষেও থাকে অশ্লীল নাচ-গান। যে কারণে সাপ্তাহিক খবরের কাগজে ‘একি প শিরোনামে’ প্রতিবেদন করা হয়েছিলো, “আযান প্রচারের পরই নায়কের বুকে নায়িকার জড়াজড়ি।” অর্থাৎ বিষয়টির বিষদৃশ্যতা, অভব্যতা, অপবিত্রতা তারা বুঝলেও আমাদের তথাকথিত ইসলামী অনুষ্ঠান করনেওয়ালারা মানছেন না।

অথচ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা হক্বকে বাতিলের সাথে মিশ্রিত করোনা।” কিন্তু তারপরেও তারা তাদের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হারাম নাচ, গান ও বেপর্দা-বেহায়ার সাথে তথাকথিত ইসলামী প্রোগ্রাম অন্তর্ভুক্ত করে দিব্যি খোলামেলাভাবে আল্লাহ পাক-এর আইন অমান্য করে চলছেন।

আর মুখে ফেনা তুলছেন, “আল্লাহ্র আইন চাই।” এর চেয়ে বড় মুনাফিকী আর কি হতে পারে?

এমনকি উক্ত পত্রিকার সে সংখ্যায় বা যে পাতায় তারা এ ভুল ফতওয়া দিয়েছেন সে একই সংখ্যায় রয়ে গেছে টিভি দেখা যে ভুল তার পক্ষে জবাব।

যেমন, একই সংখ্যার ৫নং প্রশ্নের ‘গ’ এর উত্তরে বলা হয়েছে, “তবে আমাদের দেশে সাধারণত যেভাবে হলুদ অনুষ্ঠান করা হয় অর্থাৎ পর্দাহীনতা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলেমেশা প্রভৃতি নাজায়িয কাজ হয়ে থাকে। এরূপ অনুষ্ঠান করা কোন ভাবেই জায়িয নয়।

এ জবাবের মূল কথা হলো, “পর্দাহীনতা।” উল্লেখ্য, মেয়েরা যদি মেয়েকে আলাদাভাবে গায়ে হলুদ দেয় তা সম্পূর্ণ জায়িয। তারপরেও উক্ত অখ্যাত পত্রিকা পৃথিবী বলেছে যে, “আমাদের দেশে সাধারণত যেভাবে হলুদ অনুষ্ঠান করা হয়… এরূপ অনুষ্ঠান করা জায়িয নয়।” যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে আমাদের দেশে বর্তমানে টিভির যে অবস্থা যা পর্দাহীনতার মা’- (যেমন হাদীছ শরীফে বলা হয়েছে, মিথ্যা সব গুণাহর মা) তা কিভাবে জায়িয হয়?

এছাড়া একই সংখ্যায় ২নং প্রশ্নের-উত্তরে বলা হয়েছে, “সহশিক্ষা নাজায়িয। তবে সহশিক্ষার বিপল্প না থাকলে নিতান্ত প্রয়োজনে সহশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করা জায়িয হবে। তবে অবশ্যই নিজের মন ও চক্ষু নিয়ন্ত্রণ করে এবং নিজেকে হেফাজত করে চলতে হবে।”

এখানেও বলা হয়েছে, নিজের মন ও চক্ষু নিয়ন্ত্রণ করে এবং নিজেকে হেফাযত করে চলতে হবে।

যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে একই টিভি পর্দায় কি করে মন ও চক্ষু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কারণ প্রাপ্ত তথ্য মতে ইদানিংকালে টিভিতে তথাকথিত ইসলামী অনুষ্ঠানেও তথাকথিত মাওলানা, ইসলামী চিন্তাবিদদের পাশাপাশি আকর্ষণীয়া তরুণীরাও সুবেশী ঢংয়ে থাকে। (নাউযুবিল্লাহ) তাহলে পর্দা যায় কোথায়?

এছাড়া ২ এর ‘ঘ’ এর উত্তরে বলা হয়েছে, “প্রাপ্ত বয়স্ক বা এর কাছাকাছি বয়সী মেয়েদের প্রাইভেট পড়ানো জায়িয নয়।”

এখানেও মূল বক্তব্য হলো পর্দাহীনতা। তাহলে দেখা যাচ্ছে ইসলামের নামধারী তথাকথিত জামাতটি তাদের পত্রিকায় ৭৭-৭৯ পৃষ্ঠার মধ্যেই কতবার কত শক্তভাবে পর্দার পক্ষে ও পর্দাহীনতার বিরুদ্ধে বলতে বাধ্য হয়েছে।

বলার অপেক্ষা থাকেনা যে, আজকে মেয়েদের মধ্যে যে হালের ক্রেজী মনোভাব যা মূলত: বেপর্দা-বেহায়ার শেষ সীমানা তা প্রতিনিয়ত প্রসব করছে, দরস্ তা’লীম দিচ্ছে টিভি চ্যানেলগুলো। যার মূলই হচ্ছে হারাম ছবি। অর্থাৎ হারাম জায়গায়, হারামের জন্মস্থানে আগে, পড়ে, মাঝখানে অশ্লীল নাচগান দ্বারা সংযুক্ত হয়ে তৈরী হচ্ছে তথাকথিত ইসলামী অনুষ্ঠান।

সুতরাং প্রশ্ন দাঁড়ায়, এরপরেও এত বড় হারাম কাজ শুধু বেপর্দাই নয় বরং ‘বেপর্দার মা’র মা জন্মদিতে কিভাবে উৎসাহী হয় তথাকথিত ইসলামী জামাত। পাশাপাশি তারা আবার পর্দার পক্ষেও বলে। আবার ছবির পক্ষেও বলে। মূলত: মুনাফিক এদেরকেই বলে। এজন্য কুরআন শরীফে বলা হয়েছে, “মুনাফিকদের স্থান জান্নামের সর্বনিম্নস্তরে।”

-মুহম্মদ তারীফুর রহমান, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের  দাঁতভাঙ্গা জবাব- ১৫

 বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫ 

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-৩

চাঁদের তারিখ নিয়ে জাহিলী যুগের বদ প্রথার পুনঃপ্রচলন॥ নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’ ঈদ, কুরবানীসহ জামিউল ইবাদত হজ্জও হচ্ছে বরবাদ

শুধু ছবি তোলা নিয়েই বড় ধোঁকা নয়, গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র চর্চা করে “ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের” নামেও তিনি মহা ধোঁকা দিচ্ছেন