আখিরী রসূল। শেষ রসূল। খাতামুন্ নাবিয়্যীন। নবীদের মধ্যে শেষ। আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে শেষ নবী বা রসূল মানা মুসলমানের ঈমানের প্রধান অঙ্গ। কিন্তু কার্যত এ বিষয়ে সঠিক ও সার্থক উপলব্ধি শুধু সাধারণের মাঝেই নয়, মুফতী, মাওলানা, শাইখুল হাদীছ, খতীব ইত্যাদি নামধারীদের মাঝেও খুবই কম।
আখিরী রসূল যিনি হবেন তাঁর যোগ্যতা কি? সে সম্পর্কে আল্লাহ পাকই ভাল জানেন। তবে তাঁর উম্মত হিসেবে নিদেনপক্ষে কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে বিশ্বাস থাকা অনিবার্য।
যিনি আখিরী রসূল হবেন অনাগত কাল সম্পর্কে ইল্ম থাকা তাঁর শানের অন্তর্ভুক্ত।
প্রসঙ্গতঃ আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমান, “সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব ইল্ম আমাকে দেয়া হয়েছে।” অর্থাৎ ক্বিয়ামত পর্যন্ত উদ্ভুত সব পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্যক অবগত হয়েই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় শরীয়ত দিয়ে গেছেন।
মূলতঃ এ বিশ্বাসটুকু যদি চেতনায় জাগরুক থাকে তাহলে বলার অবকাশ হয়না যে, এ যুগে ছবির প্রয়োজন রয়েছে, নারী নেতৃত্বের প্রয়োজন রয়েছে, ইসলামের নামে ভোট-গণতন্ত্র ইত্যাদির প্রয়োজন রয়েছে, মৌলবাদ, ব্লাসফেমী, হরতাল, লংমার্চ ইত্যাদির প্রয়োজন রয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে অকাট্য হারাম এসব কাজগুলোকে আবার ইসলামের নামে করার অর্থ হলো যে, তারা ইসলামের সংস্কার চান। প্রায় পনেরশ’ বছর পূর্বে নাযিলকৃত ইসলামকে তারা এ যুগে অচল মনে করেন বা যুগোপযোগী মনে করেন না।
অর্থাৎ কিনা তারা আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে শেষ যুগের অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিফহাল তা বিশ্বাস করেন না বা এ যুগেও তাঁর শরীয়ত প্রযোজ্য তা মানেনা।
ফলতঃ মুফতী, মাওলানা, শাইখুল হাদীছ, খতীব ইত্যাদি পরিচয়ে থাকার পরও আসলে যে তারা মুসলমানই থাকেননা তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। বরং সত্যি বলতে গেলে তারা তাতে প্রকাশ্য মুরতাদের তবক্বারই অন্তর্ভুক্ত হন।
আর এক্ষেত্রে ১৯৮৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত কুখ্যাত মুরতাদ সালমান রুশদীর সাথেও তাদের কোন পার্থক্য করা যায়না।
সম্প্রতি সালমান রুশদী টাইমসে লিখেছে, “ইসলামের আধুনিকায়ন প্রয়োজন। এই আধুনিকায়ন ইসলামের অনমনীয় মনোভাব
(অর্থাৎ ছহীহ ইসলাম)-এর বিরুদ্ধে। পবিত্র কুরআন শরীফকে ঐতিহাসিক গ্রন্থ হিসেবে পড়া উচিত। বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল রেখে ইসলামের সমস্ত ধারনায় সংস্কার করতেই হবে।”
বলাবাহুল্য, রুশদী যা বলেছে উলামায়ে ‘ছূ’রা তার আগেই তা করে ফেলেছে। তারা বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল রেখে ছবি, নারী নেতৃত্ব, গণতন্ত্র ইত্যাদি সংস্কার করে ফেলেছে। এক্ষেত্রে কুরআন শরীফকে তারা ঐতিহাসিক গ্রন্থেরই মর্যাদা দিয়েছে। ওহীর মর্যাদা বা কালামুল্লাহ শরীফের মর্যাদা দেয়নি আদৌ। বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে তারা হরতাল, মৌলবাদ, ব্লাসফেমী ইত্যাদি যাবতীয় সংস্কারই করেছে।
সেক্ষেত্রে প্রতিভাত হয়, এরা কুখ্যাত মুরতাদ সালমান রুশদীর সমগোত্রীয়ই কেবল নয় বরং তার থেকে অনেক এগিয়ে। রুশদী আগামীকাল যা চিন্তা করে এরা আজই তা করে।
মূলতঃ এরা হচ্ছে মুনাফিক। আর মুনাফিক প্রকাশ্য মুরতাদের চেয়েও অনেক বেশী ক্ষতিকর। তাও সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব ইল্মের অধিকারী আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় হাদীছ শরীফে ব্যক্ত করে গেছেন।
-মুহম্মদ তারীফুর রহমান, ঢাকা।
বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫