(১)
খতীব উবাইদুল হক যে জামাতের এজেন্ট ছিলেন তা বুঝতে সাধারণ মানুষের সময় লেগেছিল বহুদিন। ‘র’ আর ‘মোসাদ’-এর মতই জামাতীদের সরাসরি এজেন্ট ছাড়াও আন্ডার কাভারে অনেক লোক রয়েছে। দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ওরফে বাংলার ইহুদী তার ক্যানভাসার মার্কা তাফসীর করার বহু পরেই জামাতের রোকন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে, ধৃত জঙ্গীদের ৬০ ভাগই জামাত-শিবিরের প্রোডাক্ট। কাজেই বহুরূপী ও বর্ণচোরা স্বাধীনতা ও ইসলাম বিরোধী জামাতের লোকজন প্রশাসনে, স্পর্শকাতর স্থানে কত স্তরে, কতভাবে ঘাপটি মেরে আছে তা নির্ণয় করা সাধারণের জন্য দুরূহ বটে।
কিন্তু ‘আকলমন্দ কি লিয়ে ইশারাই কাফি হ্যায়।’ প্রবাদ রয়েছে, ‘পাত্রে আছে যাহা ঢালিলে পড়িবে তাহা।’ অথবা ‘ধোয়া দেখলেই আগুনের অস্তিত্ব বোঝা যাবে।’ এ দুটো প্রবাদের সমন্বয়েই বলা যায়, জামাতীদের ধ্যান-ধারণা যাদের অন্তরে রয়েছে, সেটা কথা বললে প্রকাশ পাবেই। আর কথা প্রকাশ মাত্রই সে কোন মতাদর্শের লোক তা নির্ণয় নিশ্চিত হয়ে পড়ে।
জামাতের এজেন্ট হিসেবে খতীব উবাইর পরিচয় ফাঁস হওয়ার পর প্রচারণা চালানো হয়েছিল পেশ ইমাম নুরুদ্দীন ছাহেব জামাতের বাইরে গো-বেচারা মানুষ।
কিন্তু জামাতের যে কথাগুলো খতীব ছাহেব বলতেন তার মৃত্যুর পর সে চর্বিত চর্বনগুলোই উচ্চারিত হল নুরুদ্দীনের মুখে।
গত ১৬ই নভেম্বর বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমুয়ার খুৎবায় ভারপ্রাপ্ত খতীব মুহম্মদ নুরুদ্দীন মন্তব্য করলেন, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবী কুরআন শরীফের আইন পরিবর্তনের শামিল। এ দাবীর কারণেই আল্লাহ পাক ঘূর্ণিঝড়ের গযব নাযিল করেছেন। (নাঊযুবিল্লাহ)
উল্লেখ্য সদ্যমৃত লাশ পচা খতীব বলেছিলেন কুরআন শরীফে রয়েছে ভোট দেয়া আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ। দেখা যাচ্ছে, উবাইদুল হক্বের মৃত্যুর পরও আল্লাহ পাক ও কুরআন শরীফ সম্পর্কে মিথ্যাবাদী খতীব থেকে বায়তুল মুকাররম এখনো মুক্ত হলোনা। গোবেচারা হিসেবে মশহুর নুরুদ্দীনও শেষ পর্যন্ত উবাইদুল হক্বের মতই জামাতের কথাগুলোই পূনঃউচ্চারণ করলেন।
(২)
এক সময় বলা হত- “নিম হেকিম খতরে জান, নিম মোল্লা খতরে ঈমান” -এ প্রবাদটির বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার প্রয়োগের যথার্থতা হারিয়েছে। প্রবাদে যে নিম মোল্লার কথা বলা হয়েছে তার কেবল সরল অজ্ঞতাই রয়েছে। এ অজ্ঞতার সাথে কায়েমী স্বার্থবাদের সম্পৃক্ততা নেই।
কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে যে, জ্ঞান যতটুকু রয়েছে সে জ্ঞানটুকুও ধর্মব্যবসায়ী মোল্লারা স্বার্থের মোহে চুপিয়ে রাখে। তারা শুধু অজ্ঞই নয় তারা স্বার্থান্ধও।
এরা প্রবাদে উল্লেখিত নিম মোল্লার চেয়ে অনেক ভয়াবহ ও ক্ষতিকর। নিম মোল্লার কাছে শুধু আমলই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিন্তু এদের দ্বারা দ্বীন ও দুনিয়া উভয়টাই ভীষণ বিপর্যস্থ হয়।
দুনিয়াবী গযব নাযাতের পরিবর্তে তারা গযবকে আরো বৃদ্ধি করে। গযব থেকে পানাহ চাওয়ার পরিবর্তে তারা আরো গযবে পরিণত হওয়ার আমল শিক্ষা দেয়। তাতে করে সাধারণ মানুষ গযব থেকে উদ্ধারের পরিবর্তে আরো বেশী গযবে ডুবে মরে। ভারপ্রাপ্ত খতীব নুরুদ্দীন সে অবস্থাই তৈরি করেছেন।
আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ ফরমান, “অতঃপর আমি তাদেরকে অভাব অনটন, এবং রোগ-ব্যধি দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম যাতে তারা আকুতি-মিনতি করে। (সূরা আনআম)
উল্লেখ্য, আসলে তওবা ইস্তিগফার করাই গযব থেকে নাযাতের একমাত্র পথ। কিন্তু সে তওবা ইস্তিগফারের পরিবর্তে নব্য খতীব নব্য উবাই নূরুদ্দীন শিক্ষা দিচ্ছে গযবকে আরো বেশী করে প্রসারিত ও প্রলম্বিত করার প্রক্রিয়া। সে মানুষকে আল্লাহ পাক সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলছে। মিথ্যা শিক্ষা দিচ্ছে।
আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তার চেয়ে অধিক জালিম কে, যে, আল্লাহ পাক সম্পর্কে মিথ্যা বলে?”
উল্লেখ্য, কুরআন সুন্নাহর কোথাও নেই যে ইসলামের নামে প্রচলিত দলভিত্তিক রাজনীতি জায়িয। কাজেই ইসলামের নামে দলভিত্তিক রাজনীতি যদি নিষিদ্ধ করা হয় তাতে ইসলামের নির্দেশই পালন হয়। কিন্তু তাকেই কুরআনিক আইন পরিবর্তন তথা গযবের কারণ বলে ভারপ্রাপ্ত খতীব নুরুদ্দীনই মূলতঃ গযবের কারণ হয়েছে। তার কথায় গযবের ইতি হবে না বরং বাড়বে। কারণ সে প্রকাশ্য আল্লাহ পাক দ্রোহী, আল্লাহ পাক-এর প্রতি মিথ্যারোপকারী তথা মহা জালিম সাব্যস্ত হয়েছে।
মূলতঃ তার মত ধর্মব্যবসায়ী জামাতী মাওলানারাই আজকের সব আযাব-গযবের মূল কারণ।
কাজেই, শুধু ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করে নয় বরং নূরুদ্দীনের মত আন্ডার কাভারে ঘাপটি মেরে থাকা সব অপ্রকাশ্য এবং প্রকাশ্য জামাতী, দেওবন্দী, কওমী ধর্মব্যবসায়ীদের নিশ্চিহ্ন ও নির্মূল করণেই এদেশ খোদায়ী আযাব-গযব মুক্ত হবে। মহান আল্লাহ পাক কবুল করুন। (আমীন)
-মুহম্মদ আলম মৃধা, ঢাকা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২