-মুহম্মদ সাদী
আজমীর শরীফে চীশ্তিয়া তরীক্বার ইমাম, কুতুবুল আক্তাব, সুল্তানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপন/ অনুপম কারামত-এর বহিঃপ্রকাশ
পূর্ব প্রকাশিতের পর
সিরহিন্দ শরীফে পৌঁছে তিনি আপন আওলাদ-ফরজন্দ, নৈকট্যধন্য খলীফা ও মুরীদগণকে নির্দেশ করেনঃ “আমার ইন্তিকালের পর সাইয়্যিদুল আবেদীন, ছাহিবুল আস্রার, মাখ্যানুল মা’রিফাত, আশ্রাফুল আওলিয়া, সুল্তানুল আওলিয়া, মিশ্কাতুল মুহিব্বীন, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে ছাহিবু লাওলাক, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তি সানজারী ছূম্মা আজমিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং রহমাতুল উম্মাহ, রউফুর রহীম, আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, সিরাজুম মুনীরা, রফিকু ছাহিবুল কুদরত, রহমতে ইলাহী, নূরে মুজাস্সাম, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমতুল্লিল্ আলামীন, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুবারক পরশ মাখা এ গিলাফে আমার কাফন পরিয়ে দিয়ো।
এ মুবারক গিলাফে আবৃত অবস্থায় আমি আল্লাহ পাক-এর সান্নিধ্যে উপস্থিত হতে চাই।” নির্দেশ অনুযায়ী দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থানকালে ঐ গিলাফ মুবারক দিয়েই তাঁর কাফন পরানো হয়। (সুবহানাল্লাহ)
মাহ্বুব ওলীআল্লাহগণের পারস্পরিক হাদিয়া আদান-প্রদানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কতো অপরিসীম, বিশেষতঃ কুতুবুল হিন্দ, শামসুল আরিফীন, গাউছে ছামদানী, কুদওয়াতুস্ সালিকীন, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তি রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর তরফ থেকে পাওয়া মুবারক হাদিয়া কতো ফযীলতপূর্ণ তা’ উপরের ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ
يبعث رجل على احد عشر مائة سنة وهو نور عظيم اسمه اسمى بين السلطانين الجابرين يدخل الجنة بشفاعنه كذا وكذا من الناس.
অর্থঃ “হিজরী একাদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে আল্লাহপাক এমন এক মহান ব্যক্তিকে যমীনে পাঠাবেন, যিনি হবেন এক বৃহৎ নূর। তাঁর নাম হবে আমার নাম মুবারকের অনুরূপ। দু’ অত্যাচারী বাদশা’র রাজত্বকালের মাঝে তিনি আবির্ভূত হবেন এবং তাঁর সুপারিশে অগণিত মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (জামউল জাওয়াম, জামিউদ্ দুরার)
খাজিনাতুর রহমত, জামিউল কুতুবাঈন, মায্হারে তাজাল্লিয়াতে ইলাহী, নূরুন্ আ’যীম, মুজ্তাহিদ ফি জামিউল উলূম, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত্ তরীক্বত, ইমামে রব্বানী, কুতুবুল আলম, আফ্জালুল আওলিয়া, ক্বাইউমে আউয়াল, হযরত ইমাম শায়খ আহ্মদ ফারুক্বী সিরহিন্দী মুজাদ্দিদে আল্ফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি এ হাদীছ শরীফের পরিপূর্ণ মিছ্দাক্ব। উপ-মহাদেশের পাঞ্জাব প্রদেশের সিরহিন্দ শরীফে ৯৭১ হিজরীতে আগমনের পর ইন্তিকাল অবধি ইসলামী উম্মাহ’র ঘোর দুর্দিনে রিসালতের ধারায় ইসলামী রেনেসাঁ এবং তাওহীদ ও আধ্যাত্ম চিন্তার পুনর্বিন্যাসে তাঁর সফল তাজদিদে সমঝ্দার মানুষের কাছে বর্ণিত হাদীছ শরীফের সত্যায়ন প্রতিভাত হয়। গভীর অনুধাবনের বিষয়, এ হাদীছ শরীফের মিছদাক্ব, কামিয়াবীর শীর্ষতম সোপানে অধিষ্টিত, হাজার বছরের মুজাদ্দিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি মাহ্বাতুল আনওয়ার, ওয়ারিছুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, বুরহানুল ওয়াছিলীন, ইমামুল মুয়াহ্হিদীন, বুরহানুল আশিক্বীন, সুলতানুল হিন্দ, খাজায়ে খাজেগাঁ, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তি রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর নিকট থেকে হাদিয়া হিসাবে প্রাপ্ত গিলাফে কাফন মুবারকে আবৃত অবস্থায় আল্লাহ পাক-এর নিকট হাযির হওয়া পছন্দ করেছেন। (সুবহানাল্লাহ)
অনুরূপ পদ্ধতিতে আজ নিয়ামত-সমৃদ্ধ হাদিয়া দেয়া হবে আফ্যালুল ইবাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, ফখ্রুল আওলিয়া, লিসানুল হক্ব, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহিকে। তিনি এবং ইমামুশ্ শরীয়ত ওয়াত্ তরীক্বত, সুল্তানুল আরিফীন, দলীলুল আরিফীন, কুতুবুল আলম, মাহ্বুবে সুব্হানী, গরীবে নেওয়াজ, ইমামুল আইম্মাহ, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, হযরত খাঁজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তি রহমতুল্লাহি আলাইহি এখন উভয়ে উভয়ের একান্ত নিগূঢ় সন্নিধানে। সব নাজ-নিয়ামতই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সদয় ইচ্ছা এবং ইখ্তিয়ারে। যাবতীয় নিয়ামত বণ্টনে এটি তাঁর নিরঙ্কুশ আধিপত্য। (চলবে)