-মুহম্মদ সাদী
আজমীর শরীফে চীশ্তিয়া তরীক্বার ইমাম, কুতুবুল আক্্তাব, সুলত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্্তী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপন/অনুপম কারামত-এর বহিঃপ্রকাশ
পূর্ব প্রকাশিতের পর
অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হয়। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হয়। খাদিম এসে সবিনয়ে জানান, “হুযূর! মাযার শরীফের সন্নিকটে যাবার এখনই সময়। দয়াকরে আমার সঙ্গে আসুন।” এতোদিন মাযার শরীফের থেকে বিশেষ যোগাযোগ, একান্ত আলাপন ও প্রত্যক্ষ সাক্ষাতের পরও পুনরায় নিরিবিলি সাক্ষাতের কারণ জানতে উৎসুক ফখরুল আওলিয়া, মুসতাজাবুদ্্ দাওয়াত, ছূফিয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি খাদিমের অনুরোধে ধীর ক্বদমে মাযার শরীফের দিকে অগ্রসর হতে থাকলেন। তিনি সামনে, খাদিম পেছনে। চারদিকে প্রায় নীরব-নিঝুম। কিছুক্ষণ পরই দেখা গেলো, সঙ্গি খাদিম নেই। ডানে, বাঁয়ে, সামনে, পেছনে কোথাও নেই। কোথায় যেন অদৃশ্য হয়ে গেলেন। তিনি বুঝে গেলেন, রওয়ানা পথ থেকে ফিরে আসতে অনুরোধকারী এবং এ মুহূর্তে মাযার শরীফের একান্ত সন্নিকটবর্তী হতে সঙ্গদানকারী ভিন্ন ভিন্ন খাদিম কেবলই উপলক্ষ।
আশিকে ইলাহি, আশিকে রসূল, ছাহিবে কাশ্্ফ ওয়া কারামত, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সঙ্গে এখন কেউ নেই। বিজন পরিবেশ। তিনি এখন একা। মানুষের ভিড়ে মাযার শরীফের সন্নিকটে তিনি আগেও এসেছেন অনেকবার। কিন্তু এমন বেদনা-বিমুগ্ধ আবেশ, মধুর তন্ময়তা ও অন্তহীন ভাবনা কখনো মনকে এতো আচ্ছন্ন করেনি। আল্লাহ পাক-এর অপার রহমত এবং রহমতে এলাহী, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্রাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অন্তহীন ইহ্্সানে পরিপূর্ণরূপে আচ্ছাদিত মূল মাযার শরীফ এখন হাত দিয়ে স্পর্শ করার প্রায় কাছাকাছি।
একান্ত সন্নিকটে গিয়ে বিনম্র আওয়াজে তিনি নিবেদন করলেন: “হে সুল্তানুল হিন্দ, কুতুবুল আক্্তাব, গরীবে নেওয়াজ, মুজাদ্দিদে যামান, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, কুতুবুল মাশায়িখ, হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তি রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনার মুবারক আহ্বানে আমি হাযির হয়েছি।” নিমিষেই বুক মুবারকে মৃদু স্পর্শ অনুভবন করলেন হযরতুল আল্লামাসাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি। সবিনয়ে জানতে চাইলেন: “কে এখানে?” জবাব এলো: “আমি চীশ্তিয়া তরীক্বার ইমাম, কুতুবুল আক্্তাব, সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল আলম, গরীবে নেওয়াজ, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তি সান্্জারী ছুম্মা আজমীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। হে ওলীয়ে মাদারজাদ, ফখরুল আওলিয়া, লিসানুল হক্ব, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান মুদ্দা জিল্লুহুল আলী! আপনি বেশ কিছুদিন আমার মাযার শরীফে থেকেছেন। আপনার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপিত হয়েছে, সাক্ষাত হয়েছে, অনেক ভাব বিনিময় হয়েছে, প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপিত হয়েছে, সাক্ষাত হয়েছে, অনেক ভাব বিনিময় হয়েছে। কোন কিছুই বাকী নেই। তবে আপনাকে দেয়ার অপেক্ষায় একটি বিশেষ বিষয় (নিয়ামত) আমার কাছে রয়েছে। তা’ আপনাকে দেয়ার জন্যই দেশে ফেরার পথ থেকে ফিরে আসতে আপনাকে আমি অনুরোধ করেছি।”
হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি ভাবছেন: “মাযার শরীফে এতোদিনের অবস্থানে কতো যোগাযোগ, কতো কথা কতো সাক্ষাৎ, কতো নিগূঢ় নৈকট্য সাধিত হলো। এমন কী বাকী রয়ে গেলো, যার জন্য আমার ফিরে আসা?” “বিশেষ নিয়ামত” সম্পর্কে তিনি গভীরতর ফিকিরে মগ্ন হলেন। নিয়ামত বন্টন প্রশ্নে তাঁর মনে হলো: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লাহি আলামীন, রউফুর রহমীহ, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন:
انما انا قاسم والله يعطى.
অর্থ: “নিয়ামত দান করেন আল্লাহ পাক, আর আমি যাবতীয় নিয়ামত বন্টনকারী।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত)
আল্লাহ পাক এবং তাঁর প্রিয়তম হাবীব, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুহব্বত, মা’রিফাত ও সন্তুষ্টিসহ ইহকাল ও পরকালের সমুদয় নিয়ামত তিনিই (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বন্টন করে থাকেন। বন্টনের এ নিরঙ্কুশ ইখতিয়ার ও আধিপত্য একমাত্র রফিকু ছাহিবিল কুদরত, খাজিনাতুর রহমত, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এরই। তিনি সদয় হয়ে চীশ্তিয়া তরীক্বার ইমাম, গরীবে নেওয়াজ, কুতুবুল আক্্তাব, ওলীয়ে মাদারজাদ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ্, হযরত খাজা সাই্িযদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তি রহমতুল্লাহি আলাইহিকে লক্বব দান করেছেন “সুল্্তানুল হিন্দ”, “কুতুবুল হিন্দ”।
প্রেক্ষিত কারণে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ অন্যান্য আরো বিস্তীর্ণ জনপদে কাউকে “ওলীআল্লাহ” হতে হলে তাঁর অনুমোদন প্রয়োজন হয়। আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, ছাহিবুল ইহ্্সান, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সদয় দানকৃত লক্ববের কারণেই এ অনুমোদন অতি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয় আনুষ্ঠানিক অথবা অনানুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ামত হাছিলে সকল ওলীআল্লাই (রহমতুল্লাহি আলাইহিম) ধন্য হয়ে থাকেন। (চলবে)