-মুহম্মদ সাদী
ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আজমীর শরীফে চীশ্তিয়া তরীক্বার ইমাম, কুতুবুল আকতাব, সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপন/ অনুপম কারামত-এর বহিঃপ্রকাশ
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মাযার শরীফেই সময় কাটছে প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ। যোগাযোগ হচ্ছে অবিরাম। এদিকে দেশে ফেরার দিন ঘনিয়ে আসছে। প্রত্যক্ষ সন্নিধান ও যোগাযোগের মুহূর্তগুলো অজান্তেই দ্রুত অতিবাহিত হচ্ছে। আল্লাহ পাক এবং তাঁর প্রিয়তম হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুহব্বত ও মা’রিফাতে নিবিড় মনঃসংযোগের মুগ্ধতায় দীর্ঘ সময়ের অতিবাহনও অতি ক্ষুদ্র মনে হয়্ অবিচ্ছেদ্য নৈকট্য সংযোগের অতল গভীরতায় সময়ের পরিমাপের প্রশ্ন অবান্তর। আল্লাহ পাক-এর মাহবুব ওলীগণের যোগাযোগের অনুপম প্রহরগুলো কখনোই সময়ের গণ্ডীতে আবদ্ধ থাকে না। তাইতো আওলিয়াকুল শিরোমণি, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সময়গুলো কখন শেষ হয়ে এলো বোঝা গেলোনা।
মুহব্বত ও অনুভূতি প্রকাশের ভাষা নেই। মুখের কথার মরণ হলে হৃদয় কথা বলে। মুহব্বত স্থিতি পায় পারস্পরিক অনুভবের বন্ধনে। কুতুবুল আলম, সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, ইমামুল আইম্মাহ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতি রহমুতল্লাহি আলাইহি-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপন, ভাব বিনিময় ও যোগাযোগের বর্তমান পর্যায়ে উভয়ের অভিন্ন সিদ্ধান্তে আজমীর শরীফ থেকে এখন দেশে ফেরার পালা। দায়িমী সংযোগ ও আলাপনের ক্ষেত্র অবারিত থাকা সত্ত্বেও প্রত্যক্ষ সাক্ষাৎ ও ভাব বিনিময়ে আপাত বিয়োজনে অন্তর দুঃসহ যাতনায় দগ্ধ।
আফযালুল ইবাদ, ফখরুল আওলিয়া, লিসানুল হক্ব, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি মাযার শরীফ থেকে হোটেলে ফিরেছেন। সবকিছু গোছগাছ করছেন। মনঃস্থির করেছেন, ট্রেনযোগে আজই তিনি দেশে রওয়ানা হবেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়লেন। পথ হাটছেন ধীর পায়ে। মন পড়ে রয়েছে মাযার শরীফে। দৃষ্টি বার বার নিবন্ধ হচ্ছে মাযার শরীফের দিকেই। একটু পরেই রেল স্টেশনে পৌঁছা যাবে। জীবনের কতো অগণন স্টেশন যে পাড়ি দিতে হয় মানুষকে! কোথাও থেমে থাকা যায় না। থামলেই লক্ষ যোজন পেছনে পড়া। শুধুই সম্মুখ পানে, অর্থাৎ আল্লাহ পাক এবং মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ রউফুর রহীম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিগূঢ় নৈকট্য অভিমুখে নিরন্তর এগিয়ে চলা। এভাবে পথ চলায় হঠাৎ একসময় পার্থিব জীবনের অবসান ঘটে যাওয়া।
এসব ভাবনার গভীরতর পর্যায়ে হঠাৎ কেউ একজনের বিনীত আহবানঃ “হুযুর! দয়া করে একটু কথা শুনুন।” তিনি পেছনে তাকালেন। জানতে চাইলেনঃ “আপনি কে?” আহবানকারীর সবিনয় নিবেদনঃ “হুযূর! বেয়াদবীর জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী। আজ আপনার দেশে যাওয়া হবে না। দয়া করে মাযার শরীফে ফিরে চলুন।” জালাল এবং জামালের অপূর্ব সমন্বয়ে গঠিত হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মুবারক মানস সরোবরে এখন বিচ্ছেদের উত্থাল-পাথাল ঢেউ। দেশের পথে রওয়ানা হয়ে অচেনা-অজানা একজনের কথায় আবার কেন ফিরে যাওয়া? জিজ্ঞেস করলেনঃ “কে আপনি?” কী আপনার পরিচয়?” আহবানকারীর বিনীত জবাবঃ “আমি মাজার শরীফের নগন্য খাদিম।”
এমন জবাবে সংগত কারণেই ওলীয়ে মাদারজাদ, আশিকে রসূল, কুতুবুয্্ যামান, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেনঃ “পূর্ব সিদ্ধান্তমতেই আমি বাড়ি যাচ্ছি। আপনার কথায় মাযার শরীফে ফিরে যেতে হবে কোন কারণে?” জবাবে বলা হলোঃ “হুযূর! আমি আবারো সবিনয়ে ক্ষমা চাইছি। অনুগ্রহ করে মাযার শরীফে ফিরে যাওয়ার জন্য আপনাকে অনুরোধ জানাতে আমি আদিষ্ট হয়েছি। এর কারণ আমাকে জানানো হয়নি। মূলতঃ আপনাকে এ অনুরোধ করতে আমাকে সদয় আদেশ করেছেন চীশ্ইতয়া তরীক্বার ইমাম, ইমামুশ্্ শরীয়ত ওয়াত্্ তরীক্বত, মুহ্্ইস্্ সুন্নাহ্ণ্ড মুজাদ্দিদে যামান, সুল্্তানুল হিন্দ, ছহিবে কুন ফাইয়াকুন, ইমামুলআইম্মাহ্ণ্ড কুতুবুল আলম, গরীবে নেওয়াজ, সুলতানুল মাশায়িখ, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্ইত সানজারী ছূম্মা আজমিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। বিনীত অনুরোধ করি, দয়া করে আপনি আমার সঙ্গে ফিরে চলুন।” (চলবে)