মুহম্মদ সাদী
ওলীয়ে মাদারজাদ, কুতুবুল আলম, হযরতুল আল্লামা আবু নজম মুহম্মদ নাজমুস্ সায়াদাত ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি “ন’ হুযূর ক্বিবলা” নাম মুবারকে সমধিক মশহুর ছিলেন। ১২ রবিউল আউয়াল, ১৪০২ হিজরী, ২২ পৌষ, ১৩৮৮ বঙ্গাব্দ, ০৭ জানুয়ারী, ১৯৮২ ঈসায়ী তারিখে তিনি ইন্তিকাল করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ইন্তিকাল অবধি প্রধান খলীফা হযরতুল আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ নানুপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর মুবারক ছোহ্বতে নিয়োজিত থেকে জাহির ও বাতিনের সামগ্রিক ইল্ম হাছিলে কামিয়াবীর শীর্ষ ধাপে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন।
অবশ্য হযরতুল আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ নানুপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি আমীরুশ্ শরীয়ত, মাহ্তাবে তরীক্বত, হাজীউল হারামাইন, হাদীউস্ সাক্বালাইন, মাহিউল বিদ্য়াত, মুহ্ইস্ সুন্নাতিন্ নুবুবিয়াহ, নাশিরুল মিল্লাতিল মুস্তাফিয়া, ছদরে জমিয়তে উলামায়ে হানাফিয়া, শাইখুল ইসলাম, ইমামুল হুদা, ক্বাইয়ূমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, নায়িবে মুজাদ্দিদ, খলীফাতুল্লাহ, সাজ্জাদানশীল পীর, পীরে দস্তগীর, পীরে কামিলে মুকাম্মিল, বড় হুযূর ক্বিবলা, আলহাজ্ব, হযরত মাওলানা আব্দুল হাই ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর নিকট থেকেও খিলাফত এবং অপরিমেয় নিয়ামত লাভ করেছিলেন। ২৪ জুমাদাল উলা, ১৩৯৭ হিজরী, ৩০ বৈশাখ, ১৩৮৪ বঙ্গাব্দ, ১৩ মে, ১৯৭৭ ঈসায়ী সালের শুক্রবার ৭৩ বছর বয়স মুবারকে তিনি ইন্তিকাল করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
হিদায়েতপূর্ণ সমাজ নির্মাণের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রমে কুতুবুল আলম, ফখরুল ফুক্বাহা, ইমামুল আওলিয়া, জামিউল্ উলূম ওয়াল হিকাম, আশিকে রসূল, হুজ্জাতুল ইসলাম, মাখ্যানুল মা’রিফাত, মুঈনুল মিল্লাত, সুলত্বানুল আরিফীন, হযরতুল আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ নানুপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর শরীর মুবারক ক্রমেই ভেঙ্গে পড়ছিলো। অবশেষে ১২ যিলক্বদ ১৪১৫ হিজরী, ৩০ চৈত্র ১৪০১ বাংলা, ১৩ এপ্রিল ১৯৯৫ ঈসায়ী বৃহস্পতিবার সকাল ১০:৪৫ মিনিটে তিনি আল্লাহ পাক-এর দীদারে চলে যান। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।)
কারামত অধ্যায়ে উপরের নতিদীর্ঘ আলোচনায় অনেকের মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয় যে, এতো কেবল স্বপ্ন বৃত্তান্ত। এর সঙ্গে ওলীয়ে মাদারজাদ, ফখরুল আওলিয়া, লিসানুল হক্ব, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কারামতের সম্পৃক্ততা কোথায়? বর্ণনার শুরুতেই আমরা জেনেছি, “কারামত”-এর অর্থ কামালত-সমৃদ্ধ বুযূর্গী (সম্মান)। এর আরো অনেক অর্থ আছে। যেমনঃ মান, শান, ইজ্জত, ঐতিহ্য, প্রভাব, প্রতিপত্তি, ক্ষমতা ইত্যাদি। ওলীআল্লাহগণের কামিয়াবীর অধিষ্ঠান (মাক্বাম)-এর সঙ্গে তাঁদের কারামত অবধারিতভাবে সংশ্লিষ্ট।
আল্লাহপাক এবং তারঁ প্রিয়তম হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে যে ওলীআল্লাহ-এর সংশ্লেষ ও নৈকট্য যতো নিগূঢ় তাঁর কারামত ততো বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত, অতল গভীর ও সূক্ষ্মতর। সাধারণতঃ অলৌকিক কোন বিষয় প্রদর্শন করতে পারার নাম যেমন কারামত, তেমনি মর্যাদা ও সম্মানরূপ অতিসূক্ষ্ম অলৌকিক নিয়ামতের নামও কারামত। উভয় কারামতই মর্যাদা ও নিয়ামত অভিধায় অভিষিক্ত হলেও দু’য়ের মাঝে দুস্তর ব্যবধান। যে মর্যাদা ও নিয়ামত পেলে আল্লাহ পাক এবং মাশুকে মাওলা, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কখনো বিচ্ছেদ ও ব্যবধান সূচিত হয়না এবং ক্রমান্বয়ে ইস্তিকামতের বুনিয়াদ দৃঢ় হয়, মূলতঃ তারই নাম কারামত। এ কারামত এতো সুক্ষ্ম যে, সমষ্টির কাছে তা’ প্রায় দুর্বোধ্যই থেকে যায়।
মহান আল্লাহ পাক এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অপরিমেয় সদয় ইহ্সানে আফযালুল ইবাদ, ফখরুল আওলিয়া, ছাহিবে কাশফ ওয়া কারামত, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণিত সুক্ষ্ম কারামত-সমৃদ্ধ (অতুলনীয় বুযূর্গী-সমৃদ্ধ) হয়ে কামিয়াবীর শীর্ষ ধাপে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। যুগপৎ বুযূর্গ পিতা রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং মুজাদ্দিদে আ’যম পুত্র মুদ্দা জিল্লুহুল আলীকে রউফুর রহীম, আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, খাজিনাতুর রহমত, ছাহিবুল ইহ্সান, হাবীবুল্লাহ, হুযূর, পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুবারক সাক্ষাৎদান এবং তা’ কুতুবুল আলম, সুলত্বানুল আরিফীন, হযরতুল আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ নানুপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মাধ্যমে সত্যায়ন নিঃসন্দেহে ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর অতুলনীয় মর্দাদাসম্পন্ন কারামতের পরিচয় জ্ঞাপক। (চলবে)