-মুহম্মদ সাদী
হজ্ব এবং যিয়ারত শেষে দেশে ফেরার পালা ॥ মন পড়ে রয়েছে পবিত্র রওযা মুবারকে রফীক্বে ছাহিবে কুদরত, ছাহিবে লাওলাক, রউর্ফু রহীম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুবারক স্পর্শে তাঁর অবস্থানস্থল অতুলনীয় মর্যাদা ও মহত্ত্বে সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। মহান আল্লাহ্ পাক-এর পরই তাঁর প্রিয়তম হাবীব, মাশুকে মাওলা, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুবারক অধিষ্ঠান। তাঁর মহানতম শান, মান ও সীমাহীন মর্যাদার পরিধি এতো উর্ধ্বে যে, তিনিই সমুদয় সৃষ্টির মূল। সৃষ্টিকুল প্রাণময়, বিকশিত, সঞ্জীবিত ও প্রবাহমান রাখা এবং পরিণতির দিকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহ পাক-এর উদ্দিষ্ট ব্যবস্থায় তিনি (মাশুকে মাওলা, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিয়ামক মাধ্যম। তাইতো আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের সকল ইমাম-মুজতাহিদ এবং হক্কানী-রব্বানী আলিমগণ-এর ইজমা (ঐক্যমত) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, পবিত্র রওযা শরীফের যে মাটি মুবারক ফখরুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, দলীলে কা’বায়ে মাক্বছূদ, হাবীবে আ’যম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুবারক শরীর স্পর্শ করে আছে, সে মাটি মুবারক আরশে মু’য়াল্লাহ থেকেও অধিক মর্যাদাবান। মূলতঃ সে মাটি মুবারক আল্লাহ্ পাক এবং তাঁর প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত অন্য সকল কিছু থেকেই অধিক সম্মানিত ও মর্যাদাবান। হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, মাশুকে মাওলা, রসূলু রব্বিল আলামীন, খযীনু কামালিল্লাহ্, তাজেদারে মদীনা, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অবস্থানস্থল (পবিত্র রওযা শরীফ) “রওযাতুম্ মিন রিয়াদ্বিল জান্নাহ” অভিধায় অভিষিক্ত। তিনি জান্নাতে তাশরীফ নিলে জান্নাত মহিমান্বিত ও গৌরবান্বিত হয়। জান্নাতের জন্ম স্বার্থক হয়। হাক্বীক্বত এই যে, তাঁর যে কোন অবস্থানস্থল জান্নাতের মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়। ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামাত, ফখরুল আউলিয়া, লিসানুল হক্ব, কুতুবুজ্জামান, আওলাদুর রসূল, হযরতুল আল্লামা, শাহ ছূফী সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাঈশী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মন বলে যে, খযীনাতুর রহমত, সনদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল আনাম, সিরাজুম্ মুনীরা, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে দায়িমী সাক্ষাৎ ও দিদারে যে অবিচ্ছেদ্য সংযোগ ও অনুপম নিয়ামত হাছিল হয়েছে, জান্নাতে তার চেয়ে অধিক প্রাপ্তিযোগ ও ইতমিনান আছে কী? জান্নাতে খইরুল আনাম, ছাহিবু মীছাক্ব, ছাহিবু কা’বা ক্বওসাইন আও আদ্না, তাফসীরে কালামে ইলাহী, হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুবারক ছোহবতে অবস্থান এবং আল্লাহ্ পাক-এর দিদার লাভ করাই মাহবুব ওলীগণের মূল প্রত্যাশা। এ প্রত্যাশাকে কেন্দ্র করেই জীবদ্দশায় তাঁদের ধ্যান, ধারণা, আচরণ, বিচরণ এবং জীবনের যাবতীয় কার্যাবলী অন্তরে অঙ্কুরিত ও বাস্তবে পরিচালিত হয়। আল্লাহ্ পাক-এর দিদার হাছিলের নিয়ামক মাধ্যম ইমামুস্ সাক্বালাইন, সাইয়্যিদুল খলায়িক্ব, নবীয়ে আক্বদাস, মাশুকে মাওলা, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য নৈকট্য সাধিত হলে ওলীআল্লাহ্গণের প্রত্যাশা পূরণের কোন প্রতিবন্ধকতাই আর অবশিষ্ট থাকে না। আশৈশব অন্তরে লালিত এমন প্রত্যাশা পূরণের পরিতৃপ্তিতে নৈকট্য সুধায় ধন্য কামিয়াবীর শীর্ষ মাক্বামে অবস্থানকারী আশিকে নবী, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মন কিছুতেই চায়না এই নিগূঢ় সান্নিধ্য ছেড়ে দেশে ফিরে যেতে।
(অসমাপ্ত)