-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
মূলতঃ নুবুওওয়াতের ধারাবাহিকতা বন্ধ হওয়ার পূর্বে আল্লাহ্ পাক ওহীর মাধ্যমে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে হই্কালীন ও পরকালীন সু-সংবাদ প্রদান করতেন।
এ প্রসঙ্গে রঈসুল মুফাস্সিরীন, আল্লামাতুলিল হিবরে ওয়াল বাহরে, হামিলুশ্ শরীয়ত ওয়াত্ তরীক্বত, বাইহাকীল ওয়াকাত্হী, আলামুল হুদা কাজী মুহম্মদ ছানাউল্লাহ্ পানিপথী রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় বিশ্ববিখ্যাত “তাফসীরে মাযহারী” কিতাবের ৫ম খণ্ডের ৪২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন,
ذلك مابشر رسول الله صلى الله عليه وسلم اصحابه بالوحى عموما وخصوصا فقال ابو بكر فى الجنة وعمر فى الجنة وعثمان فى الجنة وعلى فى الجنة وطلحة فى الجنة والزبير فى الجنة وعبد الرحمن بن عوف فى الجنة وسعد بن ابى وقاص فى الجنة وسعيد بن زيد فى الجنة وابو عبيدة بن الجراح فى الجنة.
অর্থঃ- “এটা সেই সুসংবাদ যা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমকে আম (সম্মিলিত) এবং খাছ (একক) ভাবে সু-সংবাদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতী। হযরত উমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতী। হযরত উসমান যুন্ নূরাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতী। হযরত আলী র্কারামাল্লাহু ওয়াজ্হাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতী। হযরত তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতী। হযরত যুবায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতী। হযরত আর্ব্দু রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতী। হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতী। হযরত সাঈদ ইবনে যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতী এবং হযরত আবু উবায়দা ইবনে র্জারাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতী। (তিরমিযী, ইবনে মাযাহ্)
فاطمة بضعة منى اغضبها اغضبنى.
অর্থঃ- “ফাতেমা (রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা) আমার দেহের অংশ। যে ব্যক্তি তাঁর সাথে বিদ্বেষ পোষণ করে সে যেন আমার সাথেই বিদ্বেষ পোষণ করল। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
الحسن والحسين سيدا شباب اهل الجنة.
অর্থঃ “হযরত ইমাম হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতের যুবকদের সাইয়্যিদ বা সরদার।” (তিরমিযী শরীফ) বলাবাহুল্য এরূপ উদাহরণ আরো অনেক। আর নুবুওওয়াতের ধারাবাহিকতা বন্ধ তথা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্দা করার পর আল্লাহ্ পাক-এর উক্ত সু-সংবাদ প্রদানের ধারা কাশ্ফের (আত্মিক দর্শন) তথা ইলহাম ইলকার দিকে প্রর্ত্যাবর্তিত হয় অর্থাৎ ঘুমের মধ্যে স্বপ্নযোগে কিংবা জাগ্রত অবস্থায় অথবা মুরাকাবার মাধ্যমে আলমে মিসালের যাবতীয় অবস্থা দেখান।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য করতে হয় যে, ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, কুতুবুল আলম, মুযাদ্দিদে যামান, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর নাম মুবারকের পূর্বে ব্যবহৃত লক্বব মুবারক আল্লাহ্ পাক এবং তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক প্রদত্ত পার্থিব সুসংবাদ। যা তাঁর মহান মর্যাদা-মর্তবার বহিঃপ্রকাশ। আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চরম পরম নৈকট্য বা রেযামন্দি-সন্তুষ্টির স্বাক্ষর।