কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মুর্তি তৈরী করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৬

সংখ্যা: ১৭৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

প্রকাশিত ফতওয়াসমূহ

[সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি। আল্লাহ্ পাক-এর অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-এর অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীল ভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা)  ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যায়) এবং  ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭.  এবং ১৬১তম সংখ্যা থেকে ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া পেশ করার পাশাপাশি ১৬৮তম সংখ্যা থেকে-

২৮তম ফতওয়া হিসেবে

“কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মুর্তি তৈরী করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্ট প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করে আসতে পারায় মহান আল্লাহ পাক-এর দরবারে বেশুমার শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মুর্তি তৈরী করা, করানো ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরিকী ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায়  বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে” এমন সব লেখাই পত্রস্থ  হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।  বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো- ‘ওহাবী সম্প্রদায়’। ইহুদীদের এজেন্ট ওহাবী মতাবলম্বী উলামায়ে ‘ছূ’রা হারাম টিভি চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে একের পর এক হারামকে হালাল, হালালকে হারাম, জায়িযকে নাজায়িয, নাজায়িযকে জায়িয বলে প্রচার করছে।  স্মরনীয় যে, ইহুদীদের এজেন্ট, ওহাবী মতাবলম্বী দাজ্জালে কায্যাব তথা উলামায়ে ‘ছূ’রা প্রচার করছে “ছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধাজ্ঞা নেই” (নাউযুবিল্লাহ)। সম্প্রতি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, “নির্বাচন কমিশনার বলেছে, ছবি তোলার বিরুদ্ধে বললে জেল-জরিমানা হবে, নির্বাচন কমিশনার ভোটার আই. ডি কার্ডের জন্য ছবিকে বাধ্যতামূলক করেছে এবং ছবির পক্ষে মসজিদে মসজিদে প্রচারণা চালাবে বলেও মন্তব্য করেছে।  আর উলামায়ে ‘ছূ’রা তার এ বক্তব্যকে সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছে যে, “রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যই ছবি তোলা জায়িয।” (নাউযুবিল্লাহ) শুধু তাই নয় তারা নিজেরাও অহরহ ছবি তুলে বা তোলায়। অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এ বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তেক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হচ্ছে। কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে ছবি তোলা জায়িয” তারা ঈমান হারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে, استحلال المعصية كفر.

অর্থাৎ, “গুণাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাঈদে নাসাফী)        অতএব বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “ছূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমানদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।  অনরূপ “ছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধ নেই বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে সকলের জন্য ছবি তোলা জায়িয” উলামায়ে “ছূ”দর এ কুফরীমূলক বক্তব্য সাধারণ মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে ছবি তুলবে (যদিও হারাম জেনেই তুলুক না কেন) তারা আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হবে যা শক্ত আযাব বা কঠিন গুণাহের কারণ। কেননা হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول (ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون.

অর্থঃ হযরত আ’মাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মুসলিম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিনি তাঁর ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্র নিকট শুনেছি, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ পাক কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ৮৮০)  উক্ত হাদীছ শরীফের ব্যাখ্যায় “উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারীতে” উল্লেখ আছে,

وفى التوضيح قال اصحابنا وغير هم صورة الحيوان حرام اشد التحريم وهم من الكبائر.

অর্থঃ “তাওজীহ্” নামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, হযরত উলামায়ে কিরাম বলেন, জীব জন্তুর ছবি বা প্রতিমূর্তি নির্মাণ করা নিষেধ, বরং কঠোর নিষিদ্ধ কাজ (অর্থাৎ হারাম) এটা কবীরাহ্ গুনাহ্। অতএব, নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, উলমায়ে “ছূ”দের উক্ত বক্তব্য ও বদ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ছবি তুলে প্রকাশ্য হারাম কাজে মশগুল হয়ে কঠিন আযাবের পাত্র হবে যা আমলের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ক্ষতিকর। কাজেই যারা এ ধরণের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব তালাশী সমঝদার মুসলমানগণ ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে। অর্থাৎ মূর্তি বা ছবিসহ সকল বিষয়ে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার ন্যায় আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজাম, ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে আল্লাহ্ পাক-এর রেজামন্দী হাছিল করতে পারে। সে জন্যই “কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মুর্তি তৈরী করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম- নাজায়িয হওয়ার অকাট্ট প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়াটি” পুণরায় প্রকাশ করা হলো।

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

ইসলামে বা শরীয়তে প্রাণীর

ছবি হারাম কেন?

আমাদের ইসলামী শরীয়ত তথা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ফতওয়া হচ্ছে প্রাণীর ছবি তোলা, তোলানো, আকাঁ-আকানো, রাখা, রাখানো, দেখা-দেখানো ইত্যাদি সবই হারাম। এখন অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন যে, ইসলামী শরীয়তে প্রাণীর ছবি হারাম হলো কেন?

এর জাবে বলতে হয় যে, মূলতঃ প্রাণীর ছবি হারাম হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। তম্মধ্যে একটি অন্যতম ও প্রধান কারণ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব, নূরে মুসাজস্সাম, হাবীবুল্লাহ, শারে বা শরীয়ত প্রনেতা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রাণীর ছবি তোলা-তোলানো, আঁকা-আঁকানো, দেখা-দেখানো ও রাখা-রাখানোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

قال حدثنا الاعمش عن مسم قا كنا مع مسروق فى دار يساربن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى صلى اله عليه وسلم يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون.

অর্থঃ হযরত আ’মাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত মুসলিম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিনি তাঁর ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্র নিকট শুনেছি, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ পাক কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ৮৮০)

عن عبد الله بن عمر اخبره ان رسو الله صلى الله عليه وسلم قال ان الذين يصنعون هذه اصور يعذبون يوم القيمة يقال لهم احيوا ما خلقتم.

অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত॥ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করবে, ক্বিয়ামতের দিন তাদের কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে। এবং তাদেরকে বলা হবে, যে ছবিগুলো তোমরা তৈরী করেছ, সেগুলোর মধ্যে প্রাণ দান কর।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ৮৮০, মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ২০১)

عن عائشة حدنته ان انبى صلى الله عليه وسلم لم يكن يترك فى بيته شيئا فيه تصاليب الا نقضه.

অর্থঃ হযরত আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বর্ণনা করেন যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরে প্রাণীর ছবি বা ছবিযুক্ত সকল জিনিস (থাকলে) ধ্বংস করে ফেলতেন। (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ৮৮০, মিশকাত পৃঃ ৩৮৫)

عن ابى زرعة قال دخلت مع ابى هريرة دار بالمدينة فرأ ها اعلاها مصورا يصور قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ومن اظلم ممن ذهب يخلق كخلقى فيخلقوا حبة وليخلقوا ذرة.

অর্থঃ হযরত আবু যুরয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু॥এর সঙ্গে মদীনার এক ঘরে প্রবেশ করলাম, অতঃপর তিনি ঘরের উপরে এক ছবি অংকনকারীকে ছবি অঙ্কন করতে দেখতে পেলেন, এবং বললেন আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি অধিক অত্যাচারী, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক-এর সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত সৃষ্টি করে। তাকে বলা হবে একটি শস্যদানা সৃষ্টি কর অথবা একটি পিপিলিকা সৃষ্টি কর। (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০)

عن ابى حجيفة عن ابيه ان النبى صلى الله عليه وسلم نهى عن ثمن الدم وثمن الكلب وكسب البغى ولعن اكل الربى وموكله والواشمة والمستوشمة والمصور.

অর্থঃ হযরত আবু হুজায়ফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাহার পিতা হতে বর্ণনা করেন, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রক্তের দাম, ও কুকুরের দাম নিতে এবং যেনাকারীনীর উপার্জন নিষেধ করেছেন, এবং যে ঘুষ খায়, যে ঘুষ দেয়, যে অংগে উলকি আঁকে এবং যে আঁকায়, আর যে ছবি অংকন করে, এদের সবার ওপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা’নত দিয়েছেন।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৮৮১)

عن عائشة قالت دخ على رسول الله صلى الله عليه وسلم وانا متسترة بقرام فيه صورة فتون وجهه ثم تنا ول السبر فهتكه ثم قال ان من اشد الناس عذابا يوم القيمة الذين يشبهون بخلق الله تعالى.

অর্থঃ হযরত আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার নিকট আসলেন। প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা চাদর গায়ে দেওয়া ছিলাম। এটা দেখে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চেহারা মুবারক রঙ্গিন হয়ে গেল। অতঃপর তিনি চাদর খানা নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন “ক্বিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক-এর সৃষ্টির সাদৃশ্য (কোন প্রাণীর ছুরত) সৃষ্টি করে” (মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২০০)

عن ابى معاوية ان من اشد اه النار يوم اقيمة عذابا المصورون.

অর্থঃ হযরত আবূ মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, “নিশ্চয় ক্বিয়ামতের দিন দোযখবাসীদের মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন আজাবা হবে, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি আঁকে বা তোলে।” (মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২০১)

عن سعيد قال حاء رحل الى ابن عباس فقال انى رجل اصور هذه الصور فاقتنى فيها فقال له ادن منى فدنا منه ثم قال ادن منى فدفا حتى وضع يده على راسه وقال انبئك بما سمعت من رسول الله صلى اله عليه وسلم وسمعت رسول اله صلى الله عليه وسلم يقول كل مصور فى النار يجعل له بك صورة صورها نفسا فيعذبه فى جهنم وقال ان كنت لابد فاعلا فاصنع الشجر وما لا نفس له.

অর্থঃ হযরত সাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নিকট এসে বলল, আমি এমন এক ব্যক্তি যে প্রাণীর ছবি অংকন করি, সুতরাং এ ব্যাপারে আমাকে ফতওয়া দিন। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাকে বললেন, তুমি আমার নিকটবর্তী হও। সে ব্যক্তি তাঁর নিকটবর্তী হল। পুণরায় বললেন, তুমি আরো নিকটবর্তী হও। সে আরো নিকটবর্তী হলে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ ব্যাপারে যা বলতে শুনেছি তোমাকে তা বলব। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “প্রত্যেক প্রাণীর ছবি তৈরীকারীই জাহান্নামে যাবে। এবং আল্লাহ্ পাক প্রত্যেকটি ছবিকে প্রাণ দিবেন এবং সেই ছবি গুলো তাদেরকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে।” এবং ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, তোমার যদি ছবি আঁকতেই হয় তবে, গাছ-পালা বা প্রাণহীন বস্তুর ছবি আঁক। (মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২০২)

عن ابى هريرة قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول قال الله تعاى ومن اظلم ممن ذهب يخلق كخلقى فليخلقوا ذرة اويخلقوا حبة او شعيرة.

অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি- তিনি বলেছেন, “আল্লাহ্ পাক বলেন, মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি অধিক অত্যাচারী, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক-এর সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত তৈরী করে। তাদেরকে বলা হবে॥ তাহলে তোমরা একটি পিপিলিকা অথবা একটি শস্য অথবা একটি গম তৈরী করে দাও।” (মিশকাত শরীফ পৃঃ ৩৮৫)

عن عائشة عن النبى صلى الله عليه وسلم قال ان اشدا لناس عذابا يوم القيمة الذين يضاهون بخلق الله.

অর্থঃ হযরত আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “নিশ্চয় ক্বিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক-এর সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত তৈরী করবে।” (মিশকাত পৃঃ ৩৮৫)

عن عبد الله بن مسعود قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول اشد الناس عذابا عند الله المصورون.

অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি॥ তিনি বলেছেন, আল্লাহ্ পাক ঐ ব্যক্তিকে কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে। (মিশকাত শরীফ- ৩৮৫)

عن ابى هريرة قال قال رسول الله صلى اله عليه وسلم يخرج عنق من النار يوم القيمة لها عينان تبصران واذنان تسمعان ولسان ينطق يقول انى وكلت بثلثة بكل جبار  عنيد وكل من دعا مع الله اها اخر وبالمصورين.

অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত॥ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ক্বিয়ামতের দিন এমন একখানা আগুনের গর্দান বের হবে, যার দুটো চক্ষু থাকবে। যদ্বারা সে দেখতে পাবে। দুটো কান থাকবে, যদ্বারা সে শুনতে পাবে। একটি মূখ থাকবে, যদ্বারা সে কথা বলবে। গর্দানটি বলবে॥ নিশ্চয় আমাকে তিন ব্যক্তির অভিভাবক বানান হয়েছে॥ (১) প্রত্যেক অহংকারী অত্যাচার লোকের (২) যারা আল্লাহ পাক-এর সাথে অন্যকেও প্রভু ডাকে (৩) যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করে। (মিশকাত শরীফ পৃঃ ৩৮৬)

عن جابر قال نهى رسول الله صلى اله عليه وسلم عن الصورة فى البيت ونهى ان يصنع ذلك.

অর্থঃ হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি রাখতে নিষেধ করেছেন এবং ওটা তৈরী করতেও নিষেধ করেছেন। (তিরমিযি ১ম জিঃ পৃঃ ২০৭)

عن جابر ان النبى صلى الله عليه وسلم امر عمربن الخطاب زمن الفتح وهو بالبطحاء ان يأتى الكعبة فيمحو ك صورة فيها فلم يد خلها النبى صلى الله عليه وسلم حتى محيت كل صورة فيها.

অর্থঃ হযরত জাবের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের সময় হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কে হুকুম করলেন॥ তিনি যেন পাথর দিয়ে ক্বাবা ঘরের সমস্ত মূর্তি বা চিত্রগুলি ধ্বংস করে দেন।

          হুযূর পাক সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্বাবা ঘরের মুর্তি বা চিত্রগুলো ধ্বংস না করা পর্যন্ত ক্বাবা ঘরে প্রবেশ করলেন না। (আবু দাউদ শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৯)

عن عيسى بن حميد قال سال عقبة الحسن قال ان فى مسجدنا ساحة فيها تصاوير قال انحروها.

অর্থঃ হযরত ঈসা বিন হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, হযরত ওকবাতুল হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আমাদের মসজিদে প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা কাপড় রয়েছে। তখন হযরত ঈসা বিন হুমাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, তুমি (মসজিদ থেকে) ওটা সরিয়ে ফেল। (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ২য় জিঃ পৃঃ৪৬)

عن ابى عثمان قال حدثتنى لبابة عن امها وكانت تخدم عثمان بن عفان ان عثمان ابن عفان كان يصلى الى تابوت فيه تماثيل فامربه فحك.

অর্থঃ হযরত আবু উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, লোবাবাহ তার মাতা হতে আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, তার মাতা হযরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু॥এর খেদমতে ছিলেন, আর হযরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু প্রাণীর ছবিযুক্ত একটি সিন্দুকের দিকে নামায পড়ছিলেন। অতঃপর হযরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর আদেশে ওটা নিঃচিহ্ন করে ফেলা হলো। (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ২য় জিঃ পৃঃ৪৬)

عن اسامة قال دخلت مع النبى صلى الله عليه وسلم الكعبة فرايت فى البيت صورة فامرنى فاتيته بدلو من الماء فجعل يضرب تلك الصورة ويقول قاتل الله فوما يصورون مالايخلقون.

অর্থঃ হযরত উসামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে পবিত্র ক্বাবা ঘরে প্রবেশ করলাম। আমি ক্বাবা ঘরের ভিতরে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলাম। অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হুকুমে আমি পাত্রে করে পানি নিয়ে আসলাম।

          হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ ছবিগুলিতে পানি নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন, “আল্লাহ্ পাক ঐ গোত্রের সাথে জ্বিহাদ ঘোষণা করেছেন, যে গোত্র এরূপ প্রাণীর ছুরত তৈরী করে। যা সে তৈরী করতে অক্ষম অর্থাৎ জীবন দিতে পারেনা।” (মুছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ৮ম জিঃ পৃঃ২৯৬, তাহাবী ২য় জিঃ পৃঃ৩৬৩)

عن ابن مسعود قال اشد الناس عذابا يوم القيامة رجل قتل نبيا او قته نبى اورجل يض الناس بغير العلم اومصور يصور التماثيل.

অর্থঃ হযরত ইবনে মাস্উদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিদের ক্বিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি হবে, যারা কোন নবী আলাইহিস সালামকে শহীদ করেছে অথবা কোন নবী আলাইহিস সালাম যাদেরকে হত্যা করেছেন এবং ঐ সমস্ত লোক যারা বিনা ইলমে মানুষদেরকে গোম্রাহ করে এবং যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করে। (মুসনদে আহ্মদ ২য় জিঃ পৃঃ২১৭)

অনুরূপ অসংখ্য অগণিত হাদীছ শরীফ রয়েছে, যার মাধ্যমে প্রাণীর ছবি তোলা, আঁকা রাখা ইত্যাদিকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। আর মহান আল্লাহপাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এর পক্ষ থেকে যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ তাই শরীয়তে হারাম হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে।

এথন কেউ প্রশ্ন করতে পারেন যে, আপনারা বললেন, “আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব প্রাণীর ছবি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন “অথচ দলীল হিসেবে পেশ করা হলো শুধু হাদীছ শরীফ! তাহলে কি এই প্রমাণিত হয় না যে, আল্লাহ পাক প্রাণীর ছবি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেননি, করেছেন আল্লাহ পাক-এর হাবীব!

এর জবাবে প্রথমতঃ বলতে হয় যে, তাহলে আমাদের প্রশ্ন হলো- আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি কখনো ওহী ব্যতীত কোন কথা বলেছেন? কস্মিনকালেও নয়। কারণ আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফে সুস্পষ্টভাবেই ইরশাদ করেছেন যে,

وما ينطق عن الهوى ان هو الا وحى يوحى.

অর্থাৎ “আমার হাবীব যতক্ষণ পর্যন্ত ওহী নাযিল না হয় ততক্ষন পর্যন্ত কোন কথাই বলেন না।”

অর্থাৎ আমার নির্দেশেই আমার হাবীব সব বলেন ও করেন। যদি তাই হয়ে থাকে তবে তো এটাই সাব্যস্ত হয় যে, আল্লাহপাক-এর হাবীব-এর কথাগুলো মূলতঃ আল্লাহ পাক-এরই কথা।

তাছাড়া কালামুল্লাহ শরীফে এরূপ অসংখ্য আয়াত শরীফ রয়েছে যেখানে আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব-এর ফায়ছালাকে নিজের ফায়ছালা বলে উল্লেখ করেছেন নিম্নোক্ত ঘটনা ও আয়াত শরীফ তার বাস্তব প্রমাণ –

নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এক ফুফাতো বোন ছিলেন, হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা । উনাকে বিয়ে দিতে হবে। উনার জন্য একটা ছেলে খুঁজতেছিলেন। এদিকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চিন্তা করলেন, হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বিয়ে করাতে হবে, আর হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাকে বিয়ে দিতে হবে। এখন একজন ছেলে দরকার, একজন মেয়ে দরকার। আর যদি এই ছেলে-মেয়েকে বিয়ে করায়ে দেয়া হয়, তাহলে তো আর ছেলে-মেয়ের দরকার হয়না। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মনে মনে চিন্তা করলেন, হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কাছে হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হবে। উনি এটা চিন্তা করলেন। এ সংবাদ গিয়ে পৌঁছলো হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর কাছে এবং উনার ভাই হযরত আব্দুল্লাহ্  ইবনে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কাছে। উনাদের কাছে গিয়ে যখন সংবাদ পৌঁছলো, পৌঁছার পর উনারা মনে মনে চিন্তা করলেন, বিয়ে শাদীর মধ্যে কুফু একটা শর্ত আছে, অর্থাৎ ‘সমকক্ষতা’। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনি শুধু মনে মনে চিন্তা করলেন, আমরা কোরাইশ বংশীয়। আর হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তো কোরাইশ বংশীয় নন তাহলে কুফুর কি হবে। উনি এটা চিন্তা করলেন মাত্র, এই চিন্তা করার সাথে সাথেই আল্লাহ্ পাক আয়াত শরীফ নাযিল করে দিলেন,

وما كان لمؤمن ولامؤمنة اذا قضى الله ورسوله امرا ان يكون لهم اخيرة من امرهم ومن يعص الله ورسوه فقد ضل ضللا مبينا.

অর্থঃ “কোন মু’মিন নর-নারীর জন্য জায়িয হবেনা, আল্লাহ্ পাক এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ফায়ছালা করেছেন, সেই ফায়ছালার মধ্যে চু-চেরা, ক্বিল ও ক্বাল করা বা নিজস্ব মত পেশ করা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূলের নাফরমানী করবে সে প্রকাশ্য গুমরাহে গুমরাহ হবে।” (সূরা আহযাব-৩৬)

মূলতঃ তাঁদের বিবাহের ব্যাপারে ফায়ছালা দিলেন আল্লাহ পাক-এর হাবীব। কিন্তু আল্লাহপাক  বলেন,

اذا قضى الله ورسوله.

অর্থাৎ আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল-এর ফায়ছালা।

মূলতঃ আল্লাহ পাক উক্ত আয়াত শরীফে আল্লাহ পাক-এর হাবীব-এর ফায়ছালাকে আল্লাহ পাক-এর ফায়ছালা বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ আল্লাহ পাক-এর হাবীব আল্লাহপাক-এর নির্দেশ ব্যতীত কোন কথা বলেননা ও কোন কাজ করেননা।

তাই অনেক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকেও দেখা যেত আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ বলে হাদীছ শরীফ উল্লেখ করতেন। যেমন এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ আছে যে, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিযাল্লাহু তায়ালা আনহু একবার কা’বা শরীফের দেয়ালে একটি নির্দেশাবলী ঝুলিয়ে দিলেন। উক্ত নির্দেশাবলীর শিরোনাম ছিল “আল্লাহ পাক এর নির্দেশ”।

এর নিচে কিছু হাদীছ শরীফ তিনি উল্লেখ করেন। উনাকে প্রশ্ন করা হলো, আপনি বললেন, “আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ” অথচ উল্লেখ করলেন কিছু হাদীছ শরীফ।

জবাবে তিনি বললেন, তোমরা কি কুরআন শরীফ পাঠ করনি? তারা বললো হ্যাঁ আমরা কুরআন শরীফ পাঠ করেছি এবং আমাদের মধ্যে অনেকে কুরআনে হাফিযও রয়েছেন। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,

وما ينطق عن الهوى ان هو الا وحى يوحى.

অর্থাৎ “আমার হাবীব যতক্ষণ পর্যন্ত ওহী নাযিল না হয় ততক্ষন পর্যন্ত কোন কথাই বলেন না।”

উক্ত আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করার সাথে সাথে তারা বললেন, আমরা বুঝতে পেরেছি। অর্থাৎ আল্লাহ পাক-এর হাবীব-এর আদেশ নির্দেশগুলো,মূলতঃ আল্লাহ পাক-এরই আদেশ-নির্দেশের অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ হাদীছ শরীফ-এর নির্দেশগুলো কুরআন শরীফের নির্দেশেরই অনুরূপ। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

عن ابى رافع رضى الله عنه قال قال النبى صلى الله عليه وسلم لا الفئن احد كم متكئا على اريكته ياتيه الامر من امرى مما امرت به ونهيت عنه فيقول لا ادرى ما وجدنا فى كتاب الله اتبعناه.

অর্থঃ “হযরত আবু রা’ফে রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- রসূলে মকবূল ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি তোমাদের কাউকে যেন এরূপ না দেখি যে, সে তার গদীতে ঠেস দিয়ে বসে থাকবে। আর তার নিকট আমার আদেশাবলীর কোন একটি আদেশ পৌঁছল, যাতে আমি কোন বিষয়ে আদেশ বা নিষেধ করেছি। তখন সে বলবে, আমি এসব কিছু জানিনা, আল্লাহ পাক-এর কিতাবে যা পাবো, তাই অনুসরণ করবো।” (তিরমিযী, আবূ দাউদ, ইবনে মাজাহ্, আহ্মদ, মিশকাত, মায়ারিফুস্ সুনান, বযলুল মাজহুদ, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব)

          হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে,

عن العرباض بن سارية رضى الله عنه قال قام رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال ايحسب احد كم متكتا اا ما فى هذا القران الا وانى واله قد امرت ووعظت ونهيت عن اشياء انها لمثل اقران.

অর্থঃ “হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, একদিন রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেন, তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার গদীতে ঠেস দিয়ে একথা মনে কর যে, আল্লাহ্ পাক যা এ কুরআন শরীফে অবতীর্ণ করেছেন, তা ব্যতীত তিনি আর কিছুই হারাম করেননি? তোমরা জেনে রাখ, আমি খোদার কছম করে বলছি- নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অনেক বিষয়ে আদেশ দিয়েছি, উপদেশ দিয়েছি এবং নিষেধও করেছি, আমার এরূপ বিষয়ও নিশ্চয়ই কুরআন শরীফের বিষয়ের ন্যায়।” (আবূ দাউদ, মিশকাত, বযলুল মাজহুদ, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব)

          উক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারা বুঝা যায় যে, কুরআন শরীফের ন্যায় হাদীছ শরীফও শরীয়তের অকাট্য দলীল।

আরো প্রমানিত হলো যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এর আদেশ-নির্দেশগুলো মূলতঃ আল্লাহ পাক-এরই আদেশ-নির্দেশের অন্তর্ভূক্ত। কাজেই শরীয়তের কোন বিষয় কুরআন শরীফ-এর দ্বারা নিষিদ্ধ বা হারাম সাব্যস্ত হওয়ার যেরূপ গুরুত্ব রয়েছে, তদ্রুপ হাদীছ শরীফের দ্বারা নিষিদ্ধ বা হারাম সাব্যস্ত বিষয়েরও তদ্রুপ বরং তার চেয়েও বেশী গুরুত্ব রয়েছে।

অতএব, প্রাণীর ছবি তোলা-তোলানো, আঁকা-আঁকানো, রাখা-রাখানো, দেখা-দেখানো হারাম এটা শুধু আল্লাহ পাক-এর হাবীব-এর ফায়ছালাই নয় বরং মহান আল্লাহ পাক-এর ফায়ছালাও। আর মহান আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন তাই ইসলামে বা শরীয়তে তা হারাম।

স্মর্তব্য, ইসলামে বা শরীয়তে প্রাণীর ছবি হারাম হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে-

مضاهاة لخلق الله.

অর্থাৎ- “স্রষ্টার সাথে সাদৃশ্যতা”

          কারণ ছবি ও মূর্তি তৈরী করার অর্থই হলো নিজেকে স্রষ্টা হিসেবে প্রকাশ করা। (নাউযুল্লিাহ্) নির্ভরযোগ্য সকল কিতাবেই এটা উল্লেখ আছে।    নিম্নে এ সম্পর্কিত কতিপয় দলীল প্রমান পেশ করা হলো-

 ফখরুল মুহাদ্দিছীন, আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত ব্যাখ্যা গ্রন্থ বুখারী শরীফের শরাহ্ “উমদাতুল ক্বারী”-এর ২২ খ- ৭০ পৃষ্ঠায়  লিখেন,

صورة الحيوان حرام اشد التحريم وهو من الكبائر وسواء صنعه لما يمتهن او بغيره فحرام بكل حال ان فيه مضاهاة لخلق الله.

অর্থঃ “প্রাণীর ছবি তৈরী করা শক্ত হারাম ও কবীরা গুনাহ। সম্মানের জন্য তৈরী করুক অথবা অন্য কারণে, সবটার একই হুকুম। অর্থাৎ প্রত্যেক অবস্থাতেই তা হারাম। কেননা, ছবি ও মূর্তি তৈরীর মধ্যে স্রষ্টার সাদৃশ্যতা রয়েছে।

          রঈসুল মুহাদ্দিছীন, আল্লামা ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত মুসলিম শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ “শরহে নববী” ৭ম জিঃ ৮১ পৃষ্ঠায় লিখেন,

تصوير صورة الحيوان حرام شديد التحريم وهو من الكبائرلانه متوعد عليه بهذا الوعبد الشديد المذكور فى الاحاديث وسواء صنعه بما يمتهن او بغيره فصنعته حرام بكل حال لان فيه مضاهاة لخلق الله تعالى.

অর্থঃ “প্রাণীর ছবি তৈরী করা শক্ত  হারাম ও কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। কেননা হাদীস শরীফ সমূহে এ ব্যাপারে কঠিন শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাণীর ছবি সম্মানের জন্য তৈরী করুক অথবা অন্য কোন উদ্দেশ্যে তার একই হুকুম। অর্থাৎ সর্বাবস্থায়ই প্রাণীর ছবি উঠানো হারাম। কেননা এতে স্রষ্টার সাদৃশ্যতা  প্রকাশ পায়।”

          উক্ত কিতাবের উক্ত খণ্ডের ৮৪ পৃষ্ঠায় এ সম্পর্কে  আরো উল্লেখ আছে যে,

قال العلماء سبب امتنا عهم من بيت فيه صورة كونها معصية فاحثة وفيها مضاهاة لخق الله تعالى ……..

অর্থঃ- “উলামা-ই-কিরামগণ বলেন, যে ঘরে প্রাণীর ছবি রয়েছে সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ না করার কারণ হলো, ছবি তৈরী করা গুনাহ ও ফাহেশা কাজ এবং এতে স্রষ্টার সাদৃশ্যতা রয়েছে….।”

          “রেজভীয়া” কিতাবের ১০ম খণ্ডে উল্লেখ আছে,

উদূ লেখা ঢুকবে…………………………………………

অর্থঃ “ …. আল্লামা শামী “রদ্দুল মুহতারে” উল্লেখ করেন যে, প্রাণীর ছবি তৈরী করা নাজায়িয। কেননা এটা স্রষ্টার সাদৃশ্যতা দাবী করার নামান্তর। অনুরূপ “বাহর্রু রায়িকে” উল্লেখ আছে যে, প্রাণীর ছবি তৈরী করা প্রত্যেক অবস্থাতেই হারাম। কেননা এতে স্রষ্টার সাদৃশ্যতা রয়েছে। … যেহেতু ছবি হারাম হওয়ার কারণ হলো স্রষ্টার সাথে সাদৃশ্যতা। তাই পার্থক্য করা যাবেনা (বরং সব ধরণের ছবিই হারাম) ….।”

          অতএব, উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, ছবি হারাম হওয়ার আরেকটি কারণ হলো-

مضاهاة لخلق الله.

‘স্রষ্টার সাথে সাদৃশ্যতা।’ অর্থাৎ ছবি তৈরীকারী প্রকারান্তরে স্রষ্টার সাদৃশ্যতা দাবী করলো, যা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।

মূলকথা হলো প্রাণীর ছবি হারাম হওয়ার ব্যাপারে যত কারণই বর্ণনা করা হোকনা কেন সব কারণের মুল ও প্রধান কারণ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রাণীর ছবি তুলতে, আঁকতে ও রাখতে নিষেধ করেছেন। তাই প্রাণীর ছবি তোলা-তোলানো, আঁকা-আঁকানো, দেখা-দেখানো, রাখা-রাখানো ইসলামী শরীয়তে সম্পূর্ণ হারাম ও নাজায়িয।

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন।

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা লুঙ্গি চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৭

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৮

ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া— (১)

ফতওয়া বিভাগ-গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (২)

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-(৩)