কুরবানী বন্ধে দেওবন্দ প্রধান- মারগুবের আহ্বান ও তার আমল এবং এদেশীয় দেওবন্দীদের যোগসাজশ ও থানভীর হিন্দুপ্রীতি

সংখ্যা: ১৫০তম সংখ্যা | বিভাগ:

“সূরা ইউসূফ”-এর শেষ আয়াত শরীফের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে পূর্ববর্তীদের ইতিহাস পরবর্তীদের জন্য নসীহতস্বরূপ।

আর ইতিহাসের ইতিহাস হচ্ছে যে ইতিহাস থেকে অনেকেই শিক্ষা নেয়না। ইতিহাস আয়নাস্বরূপ। কিন্তু সে আয়নায় আমরা তাকাতে চাইনা। না তাকিয়ে সমসাময়িক অনুষঙ্গকেই মূল্যায়ণ করে বসি।

অথচ ইতিহাসের আয়নার দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাব আজকের ঘটনাবলী, আজকের ধর্মব্যবসায়ীদের প্রতিচিত্র ধারাবাহিকভাবে ইতিহাসের আয়নায় প্রতিবেষ্টিত হয়ে আছে। যদিও সে তিক্ত প্রতিক্রিয়া অনেকের জন্যই মেনে নেয়া কঠিন।

একটি মহলের কাছে আজকের তথাকথিত দারুল উলুম দেওবন্দ ও এদেশীয় খতীব খুব উচ্চ মার্গের বিষয়। এ অনুভূতিটা তারা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্তির মতই জিইয়ে রেখেছে। যেমন, কুরআন  শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “তাদেরকে যখন বলা হয় আল্লাহ পাক ও আল্লাহ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পথে এসো। তখন তারা বলে আমরা কি সে পথ ছেড়ে দিব যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদা ও মুরুব্বীদের পেয়েছি?”

ঠিক আজকের তথাকথিত দারুল উলুম দেওবন্দ ও তথাকথিত দেওবন্দী গং তথা তথাকথিত দেওবন্দী খতীব, শাইখুল হাদীছ, মুফতী, মাওলানা বা যারা আজকে ইসলাম থেকে, কুরআন-সুন্নাহ্র আমোঘ আহকাম থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে তারপরেও তাদেরকে তালাক দিতে তাদের অনুসারীরা যুগপৎ দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও জড়তার মধ্যে রয়েছে।

কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হালালও স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট।” সুতরাং এরূপ সুস্পষ্ট নীতিমালা ও দলীল তথা বাইয়্যিনাত থাকার পরও তা মূল্যায়ণ না করে তথাকথিত আসাতিজে দেওবন্দ বা উস্তাদবর্গের অন্ধ মুহব্বত ও অনুকরণেই মত্ত থাকা নির্ভেজাল মুরুব্বী পূজা ছাড়া কিছুই নয়।

প্রকৃতপক্ষে একে শুধু মুরুব্বী পূজা বললেও ভুল হবে। এটা প্রকারান্তরে কাদিয়ানীদের দোসর সাজা তথা নব্য কাদিয়ানী দাবী করারও শামিল।

কারণ, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রাপ্ত ওহীর মাধ্যমে যে শরীয়ত প্রচার করেছেন- যুগের দোহাই দিয়ে, শাসকের ভীতি অথবা অনুকম্পার আশায় সর্বোপরি নফসের স্বার্থে সুস্পষ্ট হারাম-হালালের বিপরীত ফতওয়া দেয়া কার্যত নিজেদেরই মনগড়া শরীয়ত প্রবর্তন করা তথা নতুন নবী-রসূল দাবী করার শামিল।

স্মর্তব্য, ইসলামী অধিষ্ঠান গণতন্ত্রের মত নয় যে, যেভাবেই চলুক নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত তা চলতেই থাকবে।

ছয় লক্ষ বছরের ইবাদতকারী মুয়াল্লিমুল মালাকুত ইবলিস আল্লাহ পাক-এর একটা আদেশ অমান্য করার কারণেই মালউন তথা ইবলিসে পরিণত হলো।

জলীলুল্ ক্বদর রসূল হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম-এর ছেলে কেনান কাফিরদের দলভুক্ত হলো।

বালাম বিন বাউরা প্রখ্যাত ছূফী ও আলিম থাকার পরও মরদুদ হলো। অথচ তার দরবারে সব সময় দশ হাজার আলিম তা’লীম নেয়ার জন্য সরগরম থাকতো।

নিকট ইতিহাসে আফজালুল আউলিয়া হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সময় আবুল ফজল, ফৈজী, আজকের দেওবন্দী মাওলানা-খতীবদের চেয়ে অনেক উচুঁ দরের মাওলানা ছিলো।

সুতরাং এত উচুঁ দরের মাওলানা হওয়ার পরও ক্ষমতা ও অর্থের লোভী হয়ে গোমরাহ হওয়ার জন্য তারা এত মশহুর হতে পারে।

সেক্ষেত্রে আজকের তথাকথিত দেওবন্দী খতীব, শাইখুল হাদীছ, মুফতী, মাওলানা গং তথা খোদ দারুল উলুম দেওবন্দও ক্ষমতা ও অর্থের লোভী তথা প্রতিপত্তির আশঙ্কায় সুস্পষ্ট কুরআন-সুন্নাহ্র আহকামকে অস্বীকার করার প্রেক্ষিতে তাদেরকে গোমরাহ, ফাসিক ও বিদ্য়াতী বলা যাবে না আর বললেও তাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলে কুফরী হবেনা এটা কুরআন-সুন্নাহ্র কোথায় আছে?

মূলতঃ আজকে সত্যিকার অর্থে অবস্থা যখন তাই এটা এখন ফরজ তাদেরকে সেভাবেই চিহ্নিত ও প্রতিহত করার।

সেক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী বলে আজকের তথাকথিত দেওবন্দীরা যতই হল্লা-চিল্লা করুক, তাদেরকে জবাব দিতে হবে যে, ইবলিসের ছয় লক্ষ বছরের ঐতিহ্যের তুলনায় তাদের দেড়’শ বছরের ঐতিহ্য কিছুই নয়। ঐতিহ্য নয় ইসলামের দৃষ্টিতে কুরআন-সুন্নাহ্ই বড়।

আর ঐতিহ্য বলতে এটাও যে, জামানার মুজাদ্দিদের আগমন প্রেক্ষাপটে ঐতিহ্যবাহী নামধারী আলিম-উলামাও বিচ্যুতিতে চলে যায়। এবং তাদের হাত থেকে রক্ষা করে সনাতন ইসলামকে পূর্নঃজাগরিত করার পূর্ণ রূহানী যোগ্যতা নিয়েই মুজাদ্দিদে জামানগণ আবির্ভাব হন।

তথাকথিত ঐতিহ্যবাহী নামধারী উলামাগণ যে কিরূপ বিচ্যুতিতে পড়তে পারে তার একটি উদাহরণ আজকের তথাকথিত খতীব।

তথাকথিত শাইখুল হাদীছ আজিজুল হক তার “আল কুরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা” শীর্ষক বইয়ে তাদের দেওবন্দী আকাবিরদের আদর্শ বয়ান করে বলেছেন যে, তারা মেয়েদের দিকে দৃষ্টি তো দিতেনই না এমনকি কোথাও নছীহত করতে গেলে মাঝে শক্ত পর্দা তো থাকতই তদুপরি যে পাশে মহিলারা রয়েছে পর্দার ওপাশে তার উল্টোমুখ হয়ে বসতেন। যাতে মহিলারা কেউ উঁকি দিয়ে নছীহতকারী পুরুষকেও দেখতে না পারে।

সেক্ষেত্রে আজকে বাংলাদেশে দেওবন্দীদের বর্ষীয়ান নেতা তথাকথিত খতীব ছাহেবের মেয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। তার প্রতিবেশীরা জানান, তার মেয়ে পাতলা জামদানী শাড়ী পড়েই খোলামেলা চলাফেরা করছে। ছবিও তুলছে। এমনকি থার্টি ফাস্ট নাইট পালনেও অংশগ্রহণ করেছে।

অথচ এসব বিষয়ে খতীবের কোন প্রতিক্রিয়া নেই। যদিও হাদীছ শরীফের ভাষায় তিনি দাইয়্যূস সাব্যস্ত হন। তবু তিনি নির্বিকার। এর কারণও রয়েছে বটে।

মুরুব্বী পূজাই যেহেতু দেওবন্দী সিলসিলার বাতিক সেহেতু এই উৎসাহ তথাকথিত খতীব আজ লাভ করেছেন খোদ দারুল উলুম দেওবন্দের প্রধান মাওলানা তথা ভাইস চ্যান্সেলর মৌলানা মারগুবুর রহমানের কাছ থেকে।

 ইন্টারনেট সূত্রে পাওয়া যায়ঃ

বিশ্বায়নের যুগে দেওবন্দে একদিন

সম্প্রতি ভারতের দেওবন্দের ইসলামিক মাদ্রাসাগুলো পরিদর্শনে গিয়েছিলেন নেদারল্যান্ডের ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো যোগিন্দার সিকান্দ। দেওবন্দ থেকে ফিরে এসে তিনি তার নিজস্ব সাইট কালান্দারে সেখানকার মাদ্রাসা শিক্ষা, উগ্রবাদীদের নিয়ে প্রধান মৌলভীর দৃষ্টিভঙ্গি, মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় মৌলভীদের বক্তব্য ও মাদ্রাসা ছাত্রদের প্রকাশিত ম্যাগাজিন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য কিছু অংশ পাঠকদের জন্য দেয়া হলোঃ

মা’লানা মারগুব নিজেকে নারীদের উচ্চশিক্ষার পক্ষে বলে জানালেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, তার নিজের কন্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে। নাতনীও এখন আলিগড়ে ডিগ্রি নেয়ার জন্য পড়ছে। (যেমন এদেশীয় দেওবন্দী খতীব ওবায়দুল হকের মেয়ে বেপর্দার উদাহরণ তৈরী করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে।)

মৌলভীপ্রধানের কক্ষ থেকে দু’রকমের অনুভূতি নিয়ে বেরিয়ে  এলাম। তিনি নারীদের উচ্চশিক্ষার যথেষ্ট গুণগ্রাহী হলেও নিম্ন পদমর্যাদার দেওবন্দি উলামাদের অনেককেই আধুনিক শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণের চরম বিরোধিতা করতে দেখেছি।” (আমাদের সময়, ৩ ডিসেম্বর/২০০৫, পৃষ্ঠা নং- ৬)

মূলতঃ ইসলামের দৃষ্টিতে পর্দার খেলাফ হওয়ার জন্য প্রতিবেদনে উল্লিখিত “নিম্ন পদমর্যাদার দেওবন্দী উলামারা” বিরোধীতা করছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

উল্লেখ্য, দেওবন্দীদের এ ইতিহাস নতুন নয়। দেওবন্দীদের গুরু আশরাফ আলী থানভীই এ নীতির পৃষ্ঠপোষক। তিনি তার বইয়ে লিখেছেন, শেরুওয়ানী আচকান এগুলো পড়বে বিত্তশালী মুসলমানরা। আর গরীব শ্রেণীর মুসলমান পড়বে সুন্নতী কোর্তা, লুঙ্গী ইত্যাদি। (নাউযুবিল্লাহ) ইসলামকে তারা কোথায় ঠেকালেন?

মূলতঃ এ বোধের আলোকেই তারা আজকে প্রতিভাত করতে চাচ্ছেন যে, উচ্চ শ্রেণীর মুসলমানরা পর্দা করবেনা, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে, সমাজের উচ্চবিত্ত ফ্যাশনওয়ালাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলবে, থার্টি ফাস্ট নাইট করবে ইত্যাদি। আর নিম্নপদস্থ ও নিম্নবিত্ত তারা কেবল পর্দা করবে, বোরকা পড়বে। (নাউযুবিল্লাহ)

তাদের মধ্যে যেন হিন্দুদের জাতিভেদ প্রথা তথা হিন্দুপ্রীতি জেঁকে বসেছে। স্মর্তব্য দেওবন্দীদের মাঝে হিন্দুপ্রীতি ও তাশাব্বুহ অনেকটা জন্মগত থেকেই। তাদের কিস্তি টুপি, কোনা ফাড়া জামা ও পাজামা সবই মূলত হিন্দুদের পোশাক।

বাদশাহ্ আকবরের আমলে যা হিন্দুদের জন্য প্রবর্তিত হয়েছিলো। তারপরেও দেওবন্দীরা অদ্যাবধি তাদের মুরুব্বী পূজার কারণে সে পোশাকই পড়ে আসছে। যার একটিও সুন্নত নয়।

মূলতঃ দেওবন্দীদের এই হিন্দুপ্রীতি ও মুরুব্বী পূজা আজকে যেন খোদ গো-পূজারীতে পরিণত করেছে।

গত ৪ঠা জানুয়ারী/২০০৬ ঈসায়ী চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বকোণে এবং সিলেট থেকে প্রকাশিত দৈনিক জালালাবাদে পত্রস্থ হয়ঃ

ঈদে গরু কুরবানী না করতে

দেওবন্দের আহ্বান

এনএনবি: ভারতের উত্তর প্রদেশের ঐতিহ্যবাহি দেওবন্দ দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এবার ঈদুল আজহায় গরু কুরবানী না করার জন্য মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। হিন্দুদের ভাবাবেগের প্রতি সম্মান জানিয়ে মাদ্রাসাটি এ আহ্বান জানায় বলে ভারতের একাধিক সংবাদ মাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।

 এশিয়ায় বৃহত্তম এই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের এ ধরনের মতামতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আহমেদবাদ ও গুজরাটে এই মতামতের প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়েছে, এক ধরনের ধর্মব্যবসায়ী দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে ইসলামের নাম ব্যবহার করে স্বার্থ সিদ্ধি করতে গিয়ে ধর্মের সর্বনাশ করছে।

মূলতঃ আজকের দেওবন্দীরা যে চিহ্নিত ও প্রতিষ্ঠিত ধর্মব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছে পাশাপাশি দেওবন্দের ভাইস চ্যান্সেলর সেই আবুল ফজল, ফৈজীর মতই গোমরাহ হয়েছে উপরের গরু কুরবানী নিষিদ্ধ করণে অনুমোদনে কেবল তার কুকীর্তি কেবল সীমাবদ্ধ নয়।

সে যে ভারত রাজশক্তির দ্বারা তথা ক্ষমতা ও অর্থপ্রাপ্তির দ্বারা কত প্রলুব্ধ হতে পারে মুহূর্তেই ফতওয়া উল্টিয়ে দিতে পারে তার প্রমাণ পর্যাপ্ত।

আরো প্রমাণঃ

বোরকা পরে ভোটে দাঁড়ানোর ফতোয়া

আবারো সংবাদ শিরোনামে ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দ শহরের ১৪০ বছরের পুরনো ইসলামী শিক্ষা ও আইন প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম প্রতিষ্ঠানটি বুধবার উত্তর প্রদেশে এক ফতোয়া জারি করেছে।

মুসলমান মহিলারা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না। দাঁড়াতে চাইলে বোরকায়  মুখ ঢাকতে হবে। দারুল উলুমের ফতোয়ায় বলা হয়েছে, বোরকা না পরে পুরুষের সামনে বেরুনোর অনুমতি মুসলমান মহিলাদের নেই। ইসলামী আইনে শুধু পর্দানশীল মহিলারাই নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন। উত্তর প্রদেশের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুসলমান মহিলা প্রার্থীদের অবিলম্বে বোরকা পরার নির্দেশ দিয়েছেন এই ইসলামী আদালত। চলতি নির্বাচনের ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। কয়েকশ’ মুসলমান মহিলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। (দৈনিক সমকাল, ১৯ আগস্ট/২০০৫ ঈসায়ী, পৃষ্ঠা নং ৬)

লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, বোরকা না পরে পুরুষের সামনে না বেরুনের ফতওয়া দিলেও মহিলাদের নেতা হওয়া যে নাজায়িয তথা নির্বাচন করাই নাজায়িয সে ব্যাপারে ঐতিহ্যবাহী দাবীকৃত দারুল উলুম দেওবন্দ কি লজ্জাকর গোমরাহী ফতওয়া দিলো। মূলতঃ ক্ষমতা ও অর্থের প্রলোভন ও আশঙ্কা দ্বারা প্রভাবিত হওয়াই যে এর কারণ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তার নজীরও রয়েছে নগদঃ

ভোট প্রচারে বোরকা নিয়ে

জারি ফতোয়া প্রত্যাহার

বোরকা নিয়ে জারি করা ফতোয়ায় দেশব্যাপী হইচই ওঠায় দেওবন্দের মুসলিম ধর্ম সংগঠন দারুল উলুম আজ নিজেই ঢোক গিলে ফেললো। রাজনীতিতে ধর্মীয় অনুশাসন জারির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ভাইস চ্যান্সেলর মৌলানা মারগুবুর রহমান বলেছেন, সমস্ত মুফতীকে বলে দেয়া হয়েছে যে, কেউ ফতোয়া জারি করবেন না। একই সঙ্গে তাদের প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলার নির্দেশও  দেয়া হয়েছে। ভোট নিয়ে মুসলিম মহিলাদের ওপর জারি করা ফতোয়া তুলে নিতে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।” (আমাদের সময় ২৪ আগস্ট/২০০৫ ঈসায়ী, পৃষ্ঠান নং- ৪)

বিষয়টা ঠিক এদেশের দেওবন্দী মাওলানাদের মতই। শুধু তথাকথিত শাইখুল হাদীছের “আল কুরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা” বই-ই ন য় বরং খতীবসহ সব নেতৃস্থানীয় দেওবন্দী মাওলানা, মুফতীদের বয়ান, ক্যাসেট ও লেখায়ই নারী নেতৃত্ব নাজায়িয ও হারাম- এ ফতওয়া বহুবার এসেছে।

কিন্তু এরপরে তারাই আজ আবার চশমখোরের মত সে ফতওয়া উল্টিয়ে নারী-নেতৃত্বের আঁচলে জোট বেঁধেছে।

এবং এ ব্যাপারে দেওবন্দীদের প্রধান মুরুব্বী তথাকথিত মাওলানা মারুগব যে এদেশের দেওবন্দীদের হেদায়েত করতে পারতো, নীতিগত ভাবে এদেরকে হেদায়েত করার দায়-দায়িত্ব যার উপর বর্তায় সেও যে পঁচে গেছে বরং আরো বেশী পঁচে গেছে, বড় গোমরাহ হয়ে গেছে উদ্ধৃত খবর তারই প্রমাণ। মেয়ে ও নাতনীকে বেপর্দায় চালানো, মহিলাদের ভোট যুদ্ধে নামানো এমনকি তাদের প্রতি নিজের দেয়া “বোরকা পড়ার হুকুমের” ফতওয়াও উঠানোর পর হিন্দু রাজশক্তির নেক নজরে থাকার জন্য মুসলমানদেরকেও কুরবানী না করার জন্য উৎসাহিত করা- এসব কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষ ক্বিয়ামতের আলামত হিসেবে প্রকাশিত হয়।

যেমনটি হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “ক্বিয়ামত আসার আগে অনেক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে। তারা এমন সব কথা বলবে যা তোমরা শোননি, তোমাদের বাপ-দাদা, চৌদ্দপুরুষ শুনেনি। তোমরা তাদের কাছে যেয়োনা, তাদেরকে তোমাদের কাছে আসতে দিয়োনা। তবে তারা তোমাদের গোমরাহ করতে পারবে না।

সত্যিই তথাকথিত দারুল উলুম দেওবন্দীগং আজকে ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, নারী নেতৃত্ব জায়িয করা, এমনকি কুরবানী করা সংক্রান্ত যে ফতওয়া দিয়েছে তা আমাদের চৌদ্দপুরুষ কেউ শোনেনি। এদেরকে কাছে তাই আসতে না দিলেই এরা এসব বিষয়ের পাশাপাশি মিলাদ-ক্বিয়াম, চোখে বুছা দেয়া মাযার শরীফ জিয়ারত, উজরত গ্রহণ, কুনূতে নাযেলা ইত্যাদি বিষয়ে আমাদেরকে গোমরাহ করতে পারবেনা। অতএব, ঈমান রক্ষার্থেই তাদেরকে আমাদের থেকে দূরে রাখতে হবে। দারুল উলুম দেওবন্দের নামে তারা বড় বড় শাইখুল ইসলাম, শাইখুল হাদীছ, মুফতী, মাওলানা, খতীব, মুফাস্সিরে কুরআন ইত্যাদি দাবী করলেও কুরআন-সুন্নাহ্র ফায়সালা অনুযায়ী অনেক আগেই তারা ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছে সে কথাই জোরদারভাবে আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। হাদীছ শরীফে সে নছীহতই জোরদারভাবে করা হয়েছে।

পাদটীকাঃ

বাংলাদেশে ইসলামের প্রবেশ বা হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর আগমন তথা গৌর গোবিন্দের নির্মূলীকরণ মূলতঃ গরু কুরবানীকে নিষিদ্ধ করেই।

ইতিহাসের নছীহত এই যে, যে বা যারাই গরু কুরবানী নিষিদ্ধ করতে গেছে তারা নিজেরাই ধ্বংস হয়েছে। গৌর গোবিন্দ থেকে ইন্ধিরা গান্ধী অনেকেই তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

অতএব, বলা যায় যে, গরু কুরবানী বন্ধে নিজেদের সম্পৃক্ত করে আসন্ন ধ্বংসের সাথে দেওবন্দীরাও নিজেদের সম্পৃক্ত করেছে। (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক)

-মুহম্মদ ওয়ালী উল্লাহ, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের  দাঁতভাঙ্গা জবাব- ১৫

 বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫ 

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-৩

চাঁদের তারিখ নিয়ে জাহিলী যুগের বদ প্রথার পুনঃপ্রচলন॥ নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’ ঈদ, কুরবানীসহ জামিউল ইবাদত হজ্জও হচ্ছে বরবাদ

শুধু ছবি তোলা নিয়েই বড় ধোঁকা নয়, গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র চর্চা করে “ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের” নামেও তিনি মহা ধোঁকা দিচ্ছেন