ভাষান্তরঃ- আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুনিস মুর্শেদ
[দক্ষিণ আফ্রিকার মজলিসুল উলামা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছে যে, কোকাকোলা এবং এ ধরনের কোমল পানীয় (ংড়ভঃ ফৎরহশং)-এ খুব সামান্য পরিমাণে হলেও এ্যালকোহল (অষপড়যড়ষ) মিশ্রিত রয়েছে। এ ব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এবং এ সকল পানীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানীগুলো এ দাবী বা অভিযোগ অস্বীকার করে না এবং করতেও পারবে না। মজলিসুল উলামা-এর দাবীর স্বপক্ষে দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করেছে এবং তাদের প্রকাশিত রিপোর্টের সাথে সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে দিয়েছে। মানুষের দ্বীন হিফাযতের জন্য তাদের প্রকাশিত রিপোর্টটি ‘বাংলায় অনুবাদ’ করে পাঠক সমাজে উপস্থাপন করবো ইনশাআল্লাহ।] (ধারাবাহিক) যারা কোকাকোলা ও এ ধরনের অন্যান্য পানীয় সম্পর্কে কোন অনুসন্ধান চালায়নি, অথচ একে হালাল মনে করে, তাদের জন্যও এ ধরনের পানীয় মুশ্তাবাহ বা সন্দেহজনকে পরিণত হয়েছে। যেহেতু আমরা এবং অনেকে একে হারাম বলে দাবী করেছি। সুতরাং তাক্বওয়া ও পরহিযগারীর দাবী হলো, তারা তাদের অনুসারীদের এ ধরনের পানীয় পান থেকে বিরত থাকতে বলবে এবং যেহেতু তারা এর নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে আমাদের উদঘাটিত তথ্য গ্রহণ করে না সেহেতু তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো, সঠিক ও যথাযথ অনুসন্ধানের মাধ্যমে এর হালাল হওয়ার দলীল পেশ করা। অথচ এ ব্যাপারে তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। উপরোন্তু যারা কোকাকোলা কে হারাম প্রমাণ করেছে তাদের দলীল-প্রমাণের ভিত্তি ও সত্যতা খতিয়ে দেখবার ব্যাপারেও এদের কোন তোয়াক্কা নেই। সুতরাং আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, এ সমস্ত পানীয় হালাল হওয়ার ব্যাপারে তাদের ফতওয়া মনগড়া এবং ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতে প্রদত্ত। অথচ হয়তো তারা এ সকল পানীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানীগুলোতে এসব পানীয়ের উপাদান সম্বন্ধে জানতে চেয়ে দু’একটি চিঠি লিখেছে এবং তাদের উত্তরকেই চূড়ান্ত সত্য ধরে নিয়ে সন্তুষ্ট রয়েছে। এবং আমাদের পিছনে আমাদের দাবীর সমালোচনায় মুখর হয়েছে। তারা হক্কানী-আলিম হলে অবশ্যই আমাদের কাছ থকে আমাদের বক্তব্যের ভিত্তি সম্পর্কে তাহক্বীক করত অথচ এ ব্যাপারে তারা পুরোপুরি অনিচ্ছুক। আমাদের মুতাশাদ্দিদ (চরমপন্থী) বলে অপবাদ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আমরা অহেতুক বাড়াবাড়ি করে কোককে মুসলমানদের পানের অনুপযোগী বলে সাব্যস্ত করেছি। দাবী করা হচ্ছে, কোক এবং অন্যান্য কোমল পানীয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আমরা জনগণের উপর কঠোরতা চাপিয়ে দিয়েছি। অথচ একটু নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিবেচনা করলেই এ কথা অন্যায় অপবাদ হিসেবে প্রতীয়মান হবে। প্রথমতঃ কোক খাদ্য ও পরিপুষ্টির কোন প্রয়োজনীয় উপাদান নয়। কোক পান না করলে পুষ্টি বিজ্ঞান অনুযায়ী কারো বিরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা নেই। দ্বিতীয়তঃ কোক হচ্ছে এমন একটি বিলাসবহুল পানীয় যার থেকে এমনিতেই আমাদের দেশের ও অন্যান্য দেশের ব্যাপক অমুসলিম জনগোষ্ঠী ও অপব্যয় হিসেবে বিরত থাকে। তৃতীয়তঃ কোক এবং এ প্রকারের পানীয় মূলতঃ শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অতএব, এর থেকে বিরত থাকা মুসলমানদের জন্য রহমতের কারণ। চুতর্থতঃ কোক ও এ প্রকারের কোমল পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকলে কারো কোন ভাবেই কোন ক্ষতি নেই। পঞ্চমতঃ কার্বোনেটেড কোমল পানীয়ের বিকল্প তাজা ফলের রস ইত্যাদি রয়েছে যা মানুষ পান করতে পারে। উপরোক্ত বাস্তবতার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, “কোমল পানীয় থেকে বিরত থাকতে বললে জনগণের উপর কঠোরতা আরোপ করা হয়”- একথার কোন বস্তুনিষ্ঠতা নেই। বরং আমরা মনে করি, সামান্য দুনিয়ার মোহে মোহগ্রস্ত হয়ে তাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করবার উদ্দেশ্যেই আমাদের উপর অন্যায় অপবাদ আরোপ করছে এবং এভাবে নিজেদের উলামায়ে ‘ছূ’ বা দুনিয়াদার আলিম হিসেবে প্রতিপন্ন করছে। (চলবে)
বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা-১১