ভাষান্তরঃ- ইবনে একরাম হোসেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার “মজলিসুল উলামা” দাবী করেছে যে, কোকাকোলা এবং এ ধরনের সকল কোমল পানীয়তে (soft drinks) খুব সামান্য পরিমাণে হলেও এ্যালকোহল (Alcohol) মিশ্রিত রয়েছে। এ ব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এবং এসকল পানীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানীগুলো এ দাবী বা অভিযোগ অস্বীকার করে না এবং করতেও পারবে না।
“মজলিসুল উলামা”-এর দাবীর স্বপক্ষে দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করেছে এবং তাদের প্রকাশিত রিপোর্টের সাথে সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে দিয়েছে। মানুষের দ্বীন হিফাযতের জন্য তাদের প্রকাশিত রিপোর্টটি হুবহু ‘বাংলায় অনুবাদ’ করে পাঠক সমাজে উপস্থাপন করবো ইনশাআল্লাহ।
(ধারাবাহিক)
ভ্যানিলা নির্ঝাসের ব্যাপারটি সবসময় উপেক্ষিত রয়েছে। এমনকি “মজলিসুল উলামা” এবং “উটুসান কনজিউমারও” এ ব্যাপারে কাজ করেনি। ইথানল হচ্ছে ইথাইল এ্যালকোহল যাকে গ্রেইন এ্যালকোহলও বলে। প্রায় সবধরনের কোমল পানীয়তে রয়েছে ইথানল। ইথানল ফ্লেভারিং এজেন্টসমূহ দ্রবীভূত করতে প্রয়োজন হয়। কোক এবং স্পারনোটা স্বীকার করেছে যে তারা এ্যালকোহল ব্যবহার করে। ল্যাবরেটরীতে ইথানল খমার করা নয়, সুতরাং ব্যবহার করা যাবে, এটা শয়তান ও কাফিরের যুক্তি। (খমার: বিভিন্ন প্রকার ফল, শষ্য থেকে চোলাই করণের (Fementation) মাধ্যমে যে এ্যালকোহল প্রস্তুত হয় তাকে খমার বলে। রাসায়নিক এ্যালকোহল: ল্যাবরেটরীতে প্রস্তুতকৃত এ্যালকোহলকে রাসায়নিক এলকোহল বলে।)
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে মদ হারাম করেছেন তাতে বোঝা যায়, যে জিনিষ নেশাগ্রস্ত করে তা যেকোনভাবে, যেকোন নামে উপস্থাপন করা হোক না কেন সবই হারাম। যেমন বিয়ার ইত্যাদি। একবার সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করা হয়েছিল- বার্লি, শষ্য এবং মধু থেকে চোলাইকরণের (Fermentation) মাধ্যমে যে সকল পানীয় প্রস্তুত হয় সেসব বিষয়ে। যেহেতু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কথা মুবারক ছিল হেকমতপূর্ণ। তিনি বলেন, যাই নেশাগ্রস্থ করে তাই খমার এবং সকল খমার হচ্ছে হারাম।
হযরত উমর ইবনূল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ঘোষণা দেন যে “খমার হচ্ছে সেই জিনিষ যা স্নায়ুকে অবশ করে দেয়। এখান থেকে এটা স্পষ্ট যে, ইথানল (শরাব) কোন প্রকার সন্দেহ ছাড়াই হারাম।
গ্লিসারিন যা ইতিমধ্যেই জমিয়াতুল উলামা দ্বারা হারাম ঘোষিত হয়েছে। তা কোকে দুইভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রথমত, এটা ব্যবহার হয় “ভ্যানিলা নির্ঝাস ফ্লেভার কে স্থায়ী রাখার জন্য। দ্বিতীয়ত গ্লিসারিণ মূল ফর্মূলাতে ব্যবহার হয় প্রিজারভেটিব হিসেবে। আর কোকে গ্লিসারিণ ব্যবহৃত হয় না। যদিও বলা হয় এখন পণ্যদ্রব্য “৭স” এর ফ্লেভার অংশটুকু তৈরী করা হয় ৯৫% এলকোহাল দিয়ে সাথে মেশানো হয় লেমন, অরেঞ্জ, লাইম, কেসিয়া এবং নাটমাগ অয়েল। অল্প অথবা বেশী যে কোন পরিমানের এলকোহল দ্বারা নেশাগ্রস্থ হওয়াকে বাধা দেয়ার জন্য ইসলাম অত্যন্ত কঠিন সাবধান বাণী করেছে।
যদি কাউকে এ বিষয়ে অনুমতি দেয়া হত তবে সে এই পথে পা রাখলে অন্য পা তাকে অনুসরণ করতো, সে প্রথমে হাটলে পরে সে দৌড়াতো। সে কোন অবস্থাতেই থামতে পারতো না। এসব কারণে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দশ প্রকার লোককে মালউন বা লা’নতগ্রস্থ বলেছেন যে, “আল্লাহ রাব্বুল আলামীন “খমার’ কে লা’নত করেছেন এবং আরও লা’নত করেছেন যে খমার প্রস্তুত করে, যার জন্য প্রস্তুত হয়, যে পান করে, যে পরিবেশন করে, যে বহন করে, যার জন্য বহন করা হয়, যে বিক্রি করে, যে বিক্রি করে উপার্জন করে, যে ক্রয় করে, এবং যার জন্য কেনা হয়। যখন সূরা মায়িদার এই আয়াত শরীফ নায়িল হয়, রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ পাক “খমার” প্রকৃতভাবেই নিষিদ্ধ করেছেন। ফলে যার কাছে এই আয়াত শরীফ পৌছবে তার কাছে যদি এ জাতীয় জিনিষ থাকে সে যেন তা পান এবং বিক্রি না করে।
এই হাদীছ শরীফ-এর বর্ণনাকারী বলেন, “যার কাছে যতটুকু ছিল ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ তা নিয়ে মদীনা শরীফের রাস্তায় ফেলে দেন।” (চলবে)
বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫