ভাষান্তরঃ- ইবনে একরাম হোসেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার “মজলিসুল উলামা” দাবী করেছে যে, কোকাকোলা এবং এ ধরনের সকল কোমল পানীয়তে (ংড়ভঃ ফৎরহশং) খুব সামান্য পরিমাণে হলেও এ্যালকোহল (অষপড়যড়ষ) মিশ্রিত রয়েছে। এ ব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এবং এসকল পানীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানীগুলো এ দাবী বা অভিযোগ অস্বীকার করে না এবং করতেও পারবে না।
“মজলিসুল উলামা”-এর দাবীর স্বপক্ষে দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করেছে এবং তাদের প্রকাশিত রিপোর্টের সাথে সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে দিয়েছে। মানুষের দ্বীন হিফাযতের জন্য তাদের প্রকাশিত রিপোর্টটি হুবহু ‘বাংলায় অনুবাদ’ করে পাঠক সমাজে উপস্থাপন করবো ইনশাআল্লাহ।
(ধারাবাহিক)
এই রেসিপিতে অথবা যে কোন কোলা জাতীয় পানীয়তে কোলার (কোলা বাদামের নির্ঝাস) পরিমাণ অত্যন্ত কম। কোন কোন কোলা জাতীয় পানীয় উল্লেখ করে কোকা পাতার নির্ঝাস বা কোলা বাদামের নির্ঝাস কোনটাই বহন করে না। এই রেসিপির মাধ্যমে এক গ্যালন কোলা প্রস্তুত করা হয় ০.৩৭ গ্রাম কোলা বাদাম থেকে। এক আউন্স কোলা ফ্লেভার দিয়ে এক বোতল কার্বনেটেড পানীয়কে কোলাগন্ধ যুক্ত করা যায়। সুতরাং এক বোতল কোমল পানীয় প্রস্তুত করতে প্রয়োজন হয় ৩ মিলিগ্রাম কোলা বাদাম এবং এবং এই অল্প পরিমাণ কোলা বাদামও এলকোহলে চুবিয়ে পরে বাদাম সরিয়ে ফেলা হয় এবং সেই এলকোহল যুক্ত নির্ঝাস কোলা সিরাপে মেশানো হয়।
অনেক ‘কোকাকোলা’ পানীয় পানকারী এই বলে মন্তব্য করে যে, বিভিন্ন এলাকার কোকাকোলার স্বাদ বিভিন্ন রকম। যে এলাকায় কোকাকোলায় বোতলজাত করা হয়, সেই এলাকার পানিতে খনিজ উপাদানের উপস্থিতির পরিমাণকে কোকাকোলা কোম্পানী এই স্বাদের ভিন্নতার জন্য দায়ী করে। যে সকল ফ্যাক্টরীতে সিরাপ প্রস্তুত করা হয় চিনির সাহায্যে অথবা কখনও চিনির পাশাপাশি কর্ণ সিরাপ দিয়ে তার স্বাদ, আর যে সিরাপ প্রস্তুত করা হয় ইক্ষুর চিনি দিয়ে তার স্বাদের মধ্যে পার্থক্য থাকে। কোকাকোলায় কি কোকেইন আছে? কোকাকোলায় শুধু কোকাপাতার নির্ঝাসই থাকে তা নয়। পূর্বে সেখানে কোকা এলিক্সার এবং অন্যান্য পানীয় মেশানো থাকতো (এলিক্সারঃ এলকোহল সহযোগে প্রস্তুত সিরাপকে বলে)। ১৯০৩ সাল পর্যন্ত কোকা পাতার নির্ঝাসের মধ্যে যতটুকু কোকেইন থাকতো তার পুরোটাই কোক এর মধ্যে থাকতো। পরবর্তীতে অনেক বেদনা নিয়ে কোকাকোলা কোম্পানী কোকার নির্ঝাস থেকে কোকেইনকে সরাতে বাধ্য হয়।
তবে তার পরিবর্তে পণ্যদ্রব্য-৫ এর উপস্থিতি ঘটায়। (পণ্যদ্রব্য-৫ঃ এলকোহল সহযোগে প্রস্তুত কোকাকোলার একটি উপাদান) একটি সূত্রমতে ১৯০৯ সালেও প্রায় ৬৯ প্রকার কোকাকোলার মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ কোকেইন ছিল। কোকাকোলায় এসপিরিন দিলে সেখানে তলানি জমে। ধারণা করা হয়, কোকেইনের সাথে মিশ্রনের কারণ এই প্রিসিপিটেশন। কোকাকোলা কোম্পানী বেশ বিরক্তবোধ করে যখন তাদের বলা হয় এখনও কিছু কোকেইন তাদের কোমল পানীয়তে আছে। এক পরীক্ষায় দেখা গেছে পূর্বে এক আউন্স কোকাকোলা সিরাপের মধ্যে ২.৬ মিলিগ্রাম কোকেইন থাকতো।
কোকাকোলা সম্পর্কে বিশেষ তথ্য
১. কোকাকোলায় রয়েছে এলকোহল এবং এটা স্পষ্ট প্রমাণ করে যে, মুসলমানদের জন্য তা পান করা হারাম।
২. বর্তমানে যখন অনুসন্ধান করে একটি পুস্তকে এর গোপন ফর্মূলা প্রকাশ করা হল তখন সবাই বিস্ময়ে বিহ্বল হয়ে গেল।
৩. বইটির লেখক মূল ফর্মূলার কাছে পৌছতে পেরেছিলেন যা কোম্পানীর আর্কাইভে সংরক্ষিত ছিল এবং সেই ফর্মূলাতে এলকোহলের উপস্থিতির কথা উল্লেখ ছিল। এই আবিষ্কারের কথা বৃটেনের ‘সানডে টাইমসে’ প্রকাশ করা হয়।
৪. কোকাকোলা কোম্পানী প্রথমে এই প্রকাশিত রেসিপি অস্বীকার করে কিন্তু পরে যখন ‘সানডে টাইমসে তা প্রকাশ করা হয় তখন এই বিষয়ে অনেক অভিজ্ঞ লোকও বোকা বনে যায় এবং তারা বিশ্বাস করে ফর্মূলা সঠিক।
৫. আজ অবধি কোকাকোলা কোম্পানী অস্বীকার করেনি যে এই পানীয়তে এলকোহল রয়েছে।
৬. এক শতাব্দী ধরে কোকাকোলা কোম্পানী তার কোকাকোলার উপাদানগুলো প্রকাশ করতে অসম্মতি জানিয়েছে। কিন্তু ১৯৭৭ সালে যখন ভারত সরকার তার ফর্মূলা প্রকাশ করতে চাপ প্রয়োগ করে তখন তারা ফর্মূলা প্রকাশের চেয়ে কোম্পানী গুটিয়ে নিয়ে চলে যায়।
৬. এই গোপনীয়তা রক্ষা করে সমগ্র বিশ্বে তাদের বিক্রী প্রায় কয়েক বিলিয়ন ডলার। প্রায় ১৮৫টি দেশে তাদের এই বিক্রী রয়েছে।
৭. কোকাকোলার লেবেলএ এলকোহলের উপস্থিতির কথা লেখা নেই। এতে স্পষ্ট বোঝা যায় যে গোপনীয়তার নামে মুসলমানদের এলকোহল পান করিয়ে যাচ্ছে।
৮. গবেষণায় দেখা গেছে কোকাকোলায় প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিকর উপাদান ছাড়া বাস্তবে কিছুই নেই। (চলবে)
বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫