কাদিয়ানী রদ! (ষষ্ঠ ভাগ)
(কুতুবুল ইরশাদ, মুবাহিছে আয’ম, বাহরুল উলূম, ফখরুল ফুক্বাহা, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, তাজুল মুফাস্সিরীন, হাফিযুল হাদীছ, মুফতিউল আ’যম, পীরে কামিল, মুর্শিদে মুকাম্মিল হযরতুল আল্লামা মাওলানা শাহ্ ছূফী শায়খ মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খ-ে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফিরক্বা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান-আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টায় কামিয়াবী দান করুন (আমীন)। এক্ষেত্রে তাঁর কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষণীয়)।
(ধারাবাহিক)
১ম বর্ষের ৪র্থ সংখ্যা, আহমদী পত্রিকা, ৬০ পৃষ্ঠা;- “যদি সেই ইস্রায়লী ঈছা পূনরায় আসেন, তাহা হইলে পুনর্জন্ম বা আত্মবিকাশ ও জন্মগ্রহণবাদ সত্য বলিয়া মানিতে হয় এবং মৃত ব্যক্তির আত্মা অন্য দেহে অধিষ্ঠান করিতে পারে কিম্বা এই জড় জগতে ঘুরিয়া আসিতে পারে, ইহাও স্বীকার করিতে হয়। কিন্তু পবিত্র কোরআনের শিক্ষানুযায়ী উভয় মতই অশুদ্ধ। কোন জীবিত বা মৃত ব্যক্তির আত্মা বা আধ্যাত্মিক শক্তি মানবের বা অপর কোন প্রকার আকৃতি ধারণ করিয়া অন্য কাহারও অন্তরের মধ্যে কখনও প্রবেশ করে না। এক ব্যক্তির আত্মা তাহার জীবিতাবস্থায় বা তাহার মৃত্যুর পর যেমন অপর ব্যক্তিতে প্রবেশ করে না, তদ্রুপ এক ব্যক্তির আধ্যত্মিক শক্তিও তাহার জীবিতাবস্থায় বা তাহার মৃত্যুর পর আর এক ব্যক্তির অন্তরে প্রবেশ করে না।” এক্ষণে আমাদের বক্তব্য এই যে, মির্জা ছাহেব কি কৃষ্ণ, হজরত মোহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হজরত ঈছা আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর অবতার সাজিলেন? তাঁহাদের আত্মা কি মির্জা ছাহেবের মধ্যে আসিয়াছিল? ইহা তো মির্জা ছাহেব ও তাঁহার ভক্তদিগের মত, কোরআন ও হাদিছের মতে নিষিদ্ধ। কাদিয়ানি মৌলবি নূরুদ্দিন ছাহেব ‘রদ্দে-তানাছোখ’ কেতাবের ১১ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন;-
উদূ লেখা ঢুকবে…………………………………………….
“একজনের আত্মা অন্য দেহে প্রবেশ করার মছলা যেরূপ তওহিদের বিপরীত সেইরূপ শেরকের অবলম্বন, ………………” তৎপরে তিনি উহার ২০ পৃষ্ঠায় উহার বাতীল হওয়া সম্বন্ধে কোরআনের তিনটী আয়াত লিখিয়াছেন। ইহাতে বুঝা যাইতেছে যে, মির্জা ছাহেবের উহা শয়তানি এলহাম। আমরা কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে বজ্রনিনাদে ঘোষণা করিতেছি যে, যদি তাহারা কোরআন, হাদিছ, এজমা, কেয়াছ, বা তাহাদের মান্য মোজাদ্দেদগণের কথা হইতে প্রমাণ করাইয়া দিতে পারেন যে, কেহ কৃষ্ণ বা উক্ত নবিদ্বয়ের অবতার সাজিয়া বাহির হইবে, তবে ১০০ টাকা পুরস্কার পাইবেন। আর যদি ইহা তাহার নিজের এলহাম হয়, তবে তাহার নুতুন শরিয়ত প্রস্তত করা হইবে-যাহা শরিয়তে মোহাম্মদীকে মনছুখ করিয়া দিবে। মির্জা ছাহেব হজরত ঈছা আলাইহিস্ সালাম-এর সশরীরে জীবিতাবস্থায় আছমানে উত্থিত হওয়া ও পুনরায় দুনইয়াতে নাজেল হওয়ার কথা অস্বীকার করিয়াছেন। তিনি হামামাতোল-বোশরার ১৮ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, তনি এলহাম ও মোকাশাফা দ্বারা বুঝিতে পারিয়াছেন যে, হজরত ঈছা মরিয়া গিয়াছেন। তিনি এজালায়-আওহামের ১।১৩৫ পৃষ্ঠায় এমাম আবদুল অহাব শায়ারানি ও পীর মহইউদ্দীন আরাবীর কথা মান্য করিয়াছেন। উহার ১৩৬ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, এমাম জালালদ্দিন ছইউতি ও পীর মহইউদ্দীন সম্বন্ধে লিখিয়াছেন যে, তাঁহারা নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সহিত সাক্ষাৎ করিয়া হাদিছ ছহিহ করিয়া লইতেন। আরও উহার ১৩৭ পৃষ্ঠায় শাহ অলিউল্লাহ ছাহেব এবং উহার ২।৩০৫ পৃষ্ঠায় এমাম আহমদ ছারহান্দিকে মোজাদ্দেদ বলিয়া লিখিয়াছেন। তিনি উহার ১।১৭৪ পৃষ্ঠায় হজরত বড় পীর ছাহেবের কথা দলীল তাহাদের দলের ‘কওলোল-মবিন’ কেতাবের ১৫।১৬।১৭ পৃষ্ঠায় এমাম গাজ্জালী, এমাম ছইউতি, এমাম রব্বানি আহমদ ছারহান্দি ও শাহ অলিউল্লাহ ছাহেবঘণকে মোজদ্দেদ স্থির করা হইয়াছে। পশ্চম বর্ষের ৫।৬।৭ম সংখ্যা আহমদী পত্রিকা, ৫৮পৃষ্ঠা;- এমাম গাজ্জালী, এমাম ফখরদ্দিন রাজি, এমাম জালালদ্দিন ছাইউতি, এমাম বয়হকি, শাহ অলিউল্লাহ, এমাম রাব্বানি আমহদ ছারহান্দি ও ছৈয়দ আমহদ বেরেলিকে মোজাদ্দেদ বলা হইয়াছে। (অসমাপ্ত)