কাদিয়ানী রদ!
(ষষ্ঠ ভাগ)
(কুতুবুল ইরশাদ, মুবাহিছে আয’ম, বাহরুল উলূম, ফখরুল ফুক্বাহা, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, তাজুল মুফাসসিরীন, হাফিযুল হাদীছ, মুফতিউল আ’যম, পীরে কামিল, মুর্শিদে মুকাম্মিল হয়রতুল আল্লামা মাওলানা শাহ ছূফী শায়খ মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কর্তৃক প্রণীত “কাদিয়ানী রদ” কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খ-ে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফিরক্বা থেকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান-আক্বীদার হিফাযত হয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের প্রচেষ্টায় কামিয়াবী দান করুন (আমীন)। এক্ষেত্রে উনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষণীয়)।
(ধারাবাহিক)
আকায়েদে-নাছাফিতে আছে,
……..
“আয়াত ও হাদীছগুলির স্পষ্ট মর্মগুলি গ্রহণীয় হইবে, তৎসমুদয় ত্যাগ করতঃ বাতিনিয়া সম্প্রদায় যে মর্মগুলি দাবি করিয়া থাকে, তৎসমস্ত গ্রহণ করা ধর্মদ্রোহিতা (কাফিরি) হইবে।”
মির্জা গোলাম আহমদ কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনাদের এরূপ বিপরীত অর্থ গ্রহণ করিয়াছে, যাহা ছাহাবা, তাবিয়ি ও ইমামগণ প্রহণ করেন নাই, উহার স্পষ্ট মর্ম ত্যাগ করতঃ এইরূপ মনোক্তি মর্ম গ্রহণ করিয়াছে, যাহা কোন প্রাচীন বিদ্বান সমর্থন করেন নাই। এমন কি সে হযরত নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কর্তৃক উল্লিখিত মর্ম উপেক্ষ্য করিয়াছে।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দাজ্জালের যেরূপ বিবরণ প্রকাশ করিয়াছে মির্জা সম্পূর্ণভাবে উহার স্পষ্ট অর্থ পরিবর্তন করিয়া এরূপ মনগড়া অর্থ প্রকাশ করিয়াছে যে, কোন ছাহাবা, তাবিয়ী ও ইমাম সেইরূপ অর্থ প্রকাশ করেন নাই। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইয়াজুজ ও মাজুজের যেরূপ বিবরণ প্রকাশ করিয়াছেন, মির্জা উহার স্পষ্ট অর্থ ত্যাগ করতঃ এরূপ বাতিল অর্থ প্রকাশ করিয়াছে যে, সত্য যামানার কিংবা পরবর্তী যামানার কোন বিদ্বান সেইরূপ অর্থ প্রকাশ করেন নাই।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দাব্বাতোল আরদ ও পশ্চিম আকাশ হইতে সূর্য উদয় হওয়ার যেরূপ বিবরণ প্রকাশ করিয়াছেন, মির্জা সাহেব উহা ত্যাগ করতঃ এরূপ কল্পিত মত গ্রহণ করিয়াছে যে, দুনিয়ার কোন ইমাম, মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদ এরূপ মত প্রকাশ করেন নাই।
সে নুবুওয়াতের এরূপ কাল্পনিক বিভাগ করিয়াছে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার আসমান হইতে নাযিল হওয়ার এরূপ বাতিল ব্যাখ্যা করিয়াছে যে, দুনিয়ার কোন দায়িত্ব জ্ঞান সম্পন্ন আলিম এইরূপ মত ধারণ করেন নাই। দুনিয়ার সমস্ত ছাহাবা, তাবিয়ী, ইমাম, মুজাদ্দিদ ও পীর ওহীর দ্বাররুদ্ধ হওয়ার মত স্বীকার করিয়াছেন, কিন্তু মির্জা সাহেব নিজের নফসের প্ররোচনায় ওহীকে অকাট্য সত্য বলিয়া কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনাদেরকে উপক্ষো করিয়াছে।
দুনিয়ার ইমাম, মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদ ও পীরগণ উনাদের মতে শরীয়তের চারটি দলীল কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমায়ে মুজতাহিদীন ও ছহীহ ক্বিয়াস। আর ইলহাম শরীয়তের দলীল নহে, উক্ত দলীল চতুষ্ঠয়ের বিপরীত ইরহামগুলি শয়তানের ওয়াসওয়াসা, কিন্তু মির্জা সাহেব শয়তানি প্ররোচনাগুলির দ্বারা কুরআন, হাদীছ, ইজমাকে একেবারে উড়াইয়া দিয়াছে।
উপরোক্ত বিবরণ প্রমাণিত হইতেছে যে, মির্জা সাহেব শরীয়তে ইসলামকে ধ্বংস করিয়া হিন্দুয়ানী ও খ্রিস্টানি মতকে প্রবল ধারণা করিয়াছে। শরীয়তের সংস্কার না করিয়া শরীয়তের মু-পাত করিয়াছে। কাজেই সে কিছুতেই মুজাদ্দিদ ও সংস্কারক নামের যোগ্য হইতে পারে না। বরং বাতিল মতাবলম্বীগণের শিরোভূষণ উপাধী পাওয়ার যোগ্য পাত্র। (অসমাপ্ত)