হাদীছ শরীফেতো রয়েছে। আকাঈদের কিতাবে রয়েছে-
حب الصحابة ايمان. حب ابى بكر وعمر ايمان.
বুখারী শরীফে রয়েছে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের মুহব্বত ঈমান। জুযয়ে ঈমান। হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু: উনাদের মুহব্বত হচ্ছে জুযয়ে ঈমান। উনারা ছাহাবী হলেন কি করে? উনাদেরকে মুহব্বত করলে ঈমান হবে। মুহব্বত না করলে কাফির হয়ে যেতে হবে। কেন হতে হবে? যেহেতু উনারা আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছাহাবী। এটাই যদি হয়ে থাকে তাহলে যার জন্য উনারা ঈমানের কারণ হলেন, তাহলে উনার সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো কেউ যদি মুহব্বত না করে, তা’যীম-তাকরীম না করে তাহলে, সে কি করে ঈমানদার হতে পারে? কস্মিনকালেও সে ঈমানদার হতে পারবে না। এটা কুরআন, হাদীছ, ইজমা, ক্বিয়াসের কথা।
কাজেই, খুব সাবধান থাকতে হবে। কাজেই খুব সাবধান থাকতে হবে। যেন আল্লাহ পাক আমাদেরকে যথাযথভাবে ঈদে মীলাদুন্ নবী, ঈদে আ’যম ঈদে আকবর, সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ এই দিনের তা’যীম-তাকরীম করার তাওফীক দান করেন। ইজ্জত-সম্মান রক্ষা করার তাওফীক দান করেন। এর হুরমত রক্ষা করার তাওফীক দান করেন। আমরা যেন যথাযথ করতে পারি। আর এরপর যদি আমাদের অজান্তে কিছু ভুল-ত্রুটি হয়ে যায় আমরা লক্ষ কোটি বার আল্লাহ পাক-এর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করব। আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করব। যাতে আমাদের এই ভুল-ত্রুটি আল্লাহ পাক এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্ষমা করে দেন। কারণ, এর মধ্যে সামান্যতম ইহানত করলেই সে কাট্টা কাফির, চিরজাহান্নামী হয়ে যাবে।
আকাঈদের সমস্ত কিতাবে রয়েছে; আপনারা জানেন, যারা পড়াশুনা করে থাকেন তারা জানবেন- যে, কদু খাওয়া হচ্ছে সুন্নত। কেন? আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খেয়েছেন। তাই, কদুকে কেউ অস্বীকার করলে, অপছন্দ করলে, অবজ্ঞা করলে সে কাট্টা কাফির হয়ে যাবে। এটা কেমন কথা? কদুকে কেউ অস্বীকার করলে সে কাট্টা কাফির হয়ে যাবে। কদু ব্যতিত কত তরকারী রয়েছে। সেগুলি অপছন্দ করলে কাফের হবেনা তাহলে কদুকে অপছন্দ করলে কেন কাফির হবে?
কাফির হবে এজন্য যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কদুকে পছন্দ করেছেন, মুহব্বত করেছেন। এখন আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুহব্বতে মুহব্বত করতে হবে। আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পছন্দে পছন্দ করতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলেই সে ঈমান হারা হয়ে যাবে, কাফির হয়ে যাবে।
তাই যদি হয়ে থাকে তাহলে ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ সোমবার। এই দিনটাকে তো আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পছন্দ করেছেন। আল্লাহ পাক-এর হাবীব পছন্দ করেছেন। কিভাবে? তিরমিযী শরীফের হাদীছ শরীফে রয়েছে, একদিন আল্লাহ পাক-এর হাবীব ১০টা-১১টার দিকে কিছু খাদ্য খাচ্ছিলেন, ছাহাবায়ে কিরামসহ নাস্তা খাচ্ছিলেন। এমন সময় হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি আসলেন।
বিশিষ্ট খাদিম। ১০ বছর খিদমত করেছেন। তিনি এসে বসে রইলেন। কিছু খাচ্ছিলেন না। আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! তোমার কি হল? তুমি কেন খাচ্ছনা? তিনি বললেন, হে আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি রোযা রেখেছি। আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি রোযা রেখেছ? হে আনাস বিন মালিক, হে ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম! তোমরা জেনে রাখ, তোমাদের যদি রোযা রাখতে হয় সোমবার দিন রোযা রাখবে। কেন? আমি সোমবার দিন এসেছি, সোমবার দিন আল্লাহ পাক-এর সাক্ষাতে যাব, আমার নুবুওওয়াত প্রকাশ পেয়েছে সোমবার দিন। আমার হিজরত হয়েছে সোমবার দিন। মি’রাজ শরীফ হয়েছে সোমবার দিন। আমার বিশেষ বিশেষ কাজগুলো সব সোমবার দিন সংঘটিত হয়েছে এবং হবে। কাজেই, তোমাদের রোযা রাখতে হলে সোমবার দিন রোযা রাখবে। সুবহানাল্লাহ।
আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকিদ করেছেন। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকিদ করেছেন। বুখারী শরীফে রয়েছে, অন্যান্য হাদীছ শরীফে রয়েছে এই সোমবার দিনের গুরুত্ব মর্যাদা।
আফদ্বালুন্ নাস, বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার যখন ইন্তিকালের সময় হয়ে গেল। উনি উনার মেয়ে উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাকে ডেকে বললেন, আজকে কি বার? সোমবার।
তিনি বললেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন দিন বিদায় নিয়েছিলেন, উনারতো জানা রয়েছে তারপরেও। হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বললেন, সোমবার দিন। তিনি মনে করলেন, তিনি ইন্তিকালের নিকটবর্তী হয়েছেন। তিনি বললেন, আমার যদি ইন্তিকাল সোমবার দিন হত, তাহলে কত উত্তম হত।
তিনি সোমবার দিন ইন্তিকালের আর্জি করলেন। যদিও তিনি সোমবার দিন বাদ মাগরিব বিছাল শরীফ লাভ করেছেন। তারমধ্যে লক্ষ্য-কোটি হিকমত রয়েছে। লক্ষ-কোটি হিকমত রয়েছে।
এর মধ্যে একটা হচ্ছে, সোমবার তো আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পেয়ে সম্মানিত হয়ে গেছে। তার তো আর সম্মানের দরকার নেই। মঙ্গলবারের সম্মানের দরকার ছিল। যার জন্য আফদ্বালুন্ নাস, বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে মঙ্গলবারের দিন বিছাল শরীফ দিলেন। মঙ্গলবার সম্মানিত হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ।
তিনি কিন্তু আরজি করেছিলেন, যেহেতু আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবার দিন বিছাল শরীফ লাভ করেছেন। আমার যদি সোমবার দিন বিছাল শরীফ হতো। কারণ সোমবারের যে সম্মান রয়েছে, ইজ্জত রয়েছে তা উনাদের জানা ছিল। যার জন্য তিনি বিদায়ের সময়ও আর্জি করেছেন।
আমার ইন্তিকাল যদি সোমবারে হতো তাহলে কত উত্তম হতো। কত উত্তম হতো। কাজেই, খুব চিন্তার বিষয় ফিকিরের বিষয়। খুব তা’যীম-তাকরীম। কারণ, আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সংশ্লিষ্ট যা কিছু রয়েছে তাকে ইজ্জত সম্মান করা ফরযে আইন। ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফকে, সোমবার দিনকে সম্মান করা ফরযে আইন। বিন্দু থেকে বিন্দুতম ইহানত করলে কাট্টা কুফরী হয়ে যাবে। ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। এটা মনে রাখতে হবে।
যে, কদু খাওয়া সুন্নত। কদুকে তা’যীম-তাকরীম করা ফরয। কেন? একমাত্র তায়াল্লুক মায়ার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে তায়াল্লুক থাকার কারণে সম্মানিত হয়েছে। এখন কদু খাওয়া সুন্নত। আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে কদু খেয়েছেন সেই কদু কি আপনারা কেউ দেখেছেন? কেউ দেখেন নি। আমরা কেউ দেখিনি। সেই কদুতো আরব দেশে ছিল। আমাদের দেশের কদু আর সেই দেশের কদু পার্থক্য থাকতে পারে। সেই কদুর সিলসিলা যদি ধরা হয় তবে হাজার হাজার নসব অতিবাহিত হয়ে গেছে। সেই দেশের কদুতো এই দেশে নেই। ঐ দেশের যে কদু রয়েছে আমাদের দেশে আরেক কদু রয়েছে। সেই কদুর বংশধর যদি ধরা হয় সেটা হতে পারে অথবা তা গায়েবও হয়ে যেতে পারে। অন্য কদু এসে থাকতে পারে।
তারপরও শুধু নামের সাথে সংযুক্ত রয়েছে কদু এতটুকু। এইজন্য এই কদুকে সম্মান করা ফরযে আইন হয়ে গেছে। এটাই যদি হয়ে থাকে, তাহলে আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে সংযুক্ত রয়েছে ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ, সোমবার দিন তাহলে সেই দিনটার কেন ইজ্জত থাকবে না, সম্মান থাকবে না? সেই দিনকে কেন ইহানত করলে কুফরী হবে না? অবশ্যই কুফরী হবে।
যদি কেউ বলে ঈদে মীলাদুন্ নবী, ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর মানা শিরক, বিদয়াত, কুফরী তাহলে সে কাট্টা কাফির। এক নম্বার কাফির হবে। সে আবু জাহিল, আবু লাহাব, উবাই বিন সুলূলের মত এক নম্বার জাহান্নামে আল্লাহ পাক তাকে নিপতিত করবেন।
কাজেই, খুব সাবধান থাকতে হবে। আল্লাহ পাক-এর হাবীবের সংশ্লিষ্ট যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছু, সমস্ত কিছু ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছে। সম্মানিত হয়েছে। তা’যীম-তাকরীমের উপযুক্ত হয়েছে। ইজ্জত সম্মানের উপযুক্ত হয়েছে। এটা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা মনে রাখবেন। এই আক্বীদা পোষণ করতে হবে।
এর খিলাফ যদি কেউ আক্বীদা পোষণ করে সে খারিজী, রাফিযী, মু’তাজিলা, ওহাবী, সালাফী বাতিল ফিরকার অন্তর্ভূক্ত হবে। যা আমাদের দেশে রয়েছে। কাজেই, এদের বদ আক্বীদা, বদ মাযহাব থেকে সাবধান থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে।
এরা আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সম্মানের কথা শুনলে এদের শরীর জ্বলে উঠে। অথচ আল্লাহ পাক ছানা-ছিফত করেছেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর। আল্লাহ পাক ইজ্জত দিয়েছেন। আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজে নিজের ছানা-ছিফত করেছেন।
আল্লাহ পাক ইজ্জত দিয়েছেন। ইজমা হয়েছে। কাজেই, এরপরতো কথা থাকতে পারে না। কাজেই আল্লাহ পাক যেন আমাদেরকে আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তা’যীম-তাকরীম যথাযথ করার তাওফিক দান করেন। (অসমাপ্ত)