(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
যেটা আমরা গত সপ্তাহতে বলেছি। আমরা সামনেও ইনশাআল্লাহ বলবো, এর শর্ত-শারায়েতগুলি, এর অনেক ফযীলত রয়েছে, হজ্জ করতেই হবে। যাদের সাধ্য-সামর্থ রয়েছে, সচ্ছলতা রয়েছে এবং সমস্ত শর্ত মিলে যাবে, তাদেরকে অবশ্যই হজ্জ করতে হবে। এখান থেকে যদি সে বিরত থাকে তাহলে সে ঈমানদার হিসেবে ইন্তেকাল করতে পারবে না। সে কাফির, মুশরিক ইহুদী নাছারা হয়ে মারা যাবে। নাউযুবিল্লাহ! কাজেই বিষয়টা ফিকির করতে হবে। সে ঈমানদার হিসেবে মারা যেতে পারবে না। সে ইহুদী-নাছারা, মজুসী, মুশরিক হয়ে মারা যাবে।
যেটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে স্পষ্টভাবে।
عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ أُمَامَةَ رَضِيَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ “مَنْ لَمْ يَمْـنَـعْهُ مِنَ الْحَجِّ حَاجَةٌ ظَاهِرَةٌ، سُلْطَانٌ جَائِرٌ، مَرَضٌ حَابِسٌ، فَمَاتَ وَلَمْ يَحُجَّ، فَـلْيَمُتْ إِنْ شَاءَ يَـهُودِيًّا، وَّإِنْ شَاءَ نَصْرَانِيًّا
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ أُمَامَةَ رَضِيَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ “مَنْ لَمْ يَمْـنَـعْهُ مِنَ الْحَجِّ
হযরত আবূ উমামাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোন ব্যক্তিকে হজ্জে যেতে বাধা দিলো না। কিসে?
حَاجَةٌ ظَاهِرَةٌ، سُلْطَانٌ جَائِرٌ، مَرَضٌ حَابِسٌ، فَمَاتَ وَلَـمْ يَحُجَّ ،
বাহ্যিক কোন বাধা থাকলো না, কোন জালিম বাদশাহও তাকে বাধা দিলো না এবং তার কঠিন কোন রোগও হলো না। অর্থাৎ সে সুস্থ থাকলো। অসুখ-বিসুখ নেই, কোন জালিম বাদশাহও নেই, বাহ্যিক কোন বাধাও নেই। সব তার সুযোগ সুবিধা রয়েছে। সমস্ত শর্ত পুরা হয়ে গেছে, এ অবস্থায় যদি কেউ হজ্জ ফরয হওয়ার পর হজ্জ না করে, সেটাই বলতেছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি –
فَـلْيَمُتْ إِنْ شَاءَ يَـهُوْدِيًّا، وَّإِنْ شَاءَ نَصْرَانِيًّا
হয় সে ইহুদী হয়ে মরুক বা সে খৃস্টান হয়ে মারা যাক। নাউযুবিল্লাহ! এখন শর্ত- শারায়েত পাওয়ার পর অবশ্যই হজ্জ ফরয আদায় করতে হবে। আর শর্ত- শারায়েত পুরা না হলে হজ্জ ফরয হচ্ছে না। তখন সে কি করে করবে? তখন সে হজ্জ আদায় করলে, ফরয আদায় না হয়ে ক্ষেত্র বিশেষে এটার বিপরীতও হতে পারে। একজন মহিলা যদি মাহরাম ছাড়া হজ্জ করতে যায় তাহলে সে গোনায় জড়িত হয়ে যেতে পারে। গুনাহগার হয়ে যেতে পারে। কাজেই সেটা তাকে ফিকির করতে হবে। এজন্য সেটা বলা হয়েছে, শর্ত-শারায়েত অনুযায়ি হজ্জ ফরয হলে অবশ্যই আদায় করতে হবে, না করলে সে কঠিন গুনাহে গুনাহ্গার হবে। তার ইন্তেকাল ঈমান ব্যতীত হতে পারে। বিষয়টা খুব ফিকির করতে হবে। আমরা সামনে ইনশাআল্লাহ পর্যায়ক্রমে আলোচনা করবো। কাজেই শর্ত-শারায়েতের যে কতটুকু গুরুত্ব রয়েছে হজ্জে মাবরূরের ব্যাপারে, সে বিষয়টা বুঝতে হবে, ফিকির করতে হবে এবং হজ্জ যথাযথ আদায় করতে হবে।
মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক, যিনি মালিক, যিনি রব তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন। আর যিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে হজ্জ এবং উমরাহ সম্পর্কে বিস্তারিত হুকুম-আহকাম বর্ণনা করেছেন। যে বিষয়গুলি প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী, পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যেই জানা দায়িত্ব এবং কর্তব্য। মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব তিনি উনার কালাম, পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
أَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلّٰهِ
তোমরা হজ্জ এবং উমরাহ করো মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব উনার রেজামন্দী সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে।
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بُنِيَ الْإِسْلَامُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَإِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيْـتَاءِ الزَّكَاةِ وَالْحَجِّ وَصَوْمِ رَمَضَانَ
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ইসলাম উনার ভিত্তি হচ্ছে পাঁচটি বিষয়ের উপরে। প্রথম হচ্ছে- কালীমা শরীফ। দ্বিতীয় হচ্ছে- নামায। তৃতীয় হচ্ছে- যাকাত আদায় করা। চতুর্থ হচ্ছে- পবিত্র রমাদ্বান শরীফে রোযা রাখা এবং পঞ্চম হচ্ছে- হজ্জ সম্পাদন করা। এ পাঁচটি বিষয়ে ঈমান আনা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরযের অন্তর্ভুক্ত এবং অবস্থাভেদে প্রত্যেকের উপর এই আমলগুলি বর্তাবে। যে পবিত্র কালিমা শরীফ প্রত্যেক মুসলমান মাত্র বিশ্বাস করতে হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি এক তিনি খ¦লিক, মালিক, রব। আর যিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব উনার হাবীব এবং রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর নামায যা কা¡য়িম করা অর্থাৎ প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত বিতরসহ ছয় ওয়াক্ত আদায় করা দায়িত্ব ও কর্তব্য। আর যাকাত যাদের সম্পদ থাকবে, মালিকে নিসাব হবে, বৎসরে একবার ফরয হবে। আর পবিত্র রমাদ্বান শরীফের রোযা বৎসরে একমাস। আর হজ্জ হচ্ছে জীবনে একবার যাদের নিসাব থাকবে তাদের জন্য। মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব তিনি উনার কালাম পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে আরো বলেন-
وَلِلّٰهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَـيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيْلًا
মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের জন্য, অর্থাৎ রেযামন্দী মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে মানুষের উপর হজ্জকে ফরয করা হয়েছে, যাদের সামর্থ রয়েছে। যাদের সামর্থ রয়েছে তাদের জন্য হজ্জ ফরয করা হয়েছে। অর্থাৎ জীবনে একবার হজ্জ ফরয।
وَمَنْ كَفَرَ فَإِنَّ الله غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِيْنَ
আর যে বিষয়টা অস্বীকার করবে সে যেন জেনে রাখে মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব তিনি মানুষের, জিন-ইনসানের আমল থেকে বেনিয়াজ, গাইরুল্লাহ থেকে বেনিয়াজ। এই সমস্ত আমলের উনার কোন প্রয়োজন নেই। (অসমাপ্ত)