তাহলে বুঝা যাচ্ছে, উম্মতের সেই যোগ্যতা তো নেই। সেই ক্ষমতা তাদের নেই। উম্মতের ডিউটি, উম্মত গোলাম। আল্লাহ পাক-এর গোলাম। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গোলাম। তার ডিউটি হচ্ছে মনিবের যা আদেশ-নির্দেশ রয়েছে, হুবহু তা তামিল করা। তাহলে তার জন্য কামিয়াবী রয়েছে। এখন হাদীছ শরীফে, কুরআন শরীফে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ পাক বলেছেন যে, “তোমরা হুবহু অনুসরণ কর, আদেশ পালন কর। আমরা সেটা পালন করবো। যেহেতু কুরআন শরীফ বিশুদ্ধ, হাদীছ শরীফও বিশুদ্ধ। অনেক হাদীছ শরীফে রয়েছে, এই ঈদ সম্পর্কে। কাজেই, সেটা আমরা হুবহু পালন করবো, মেনে নিবো।
যারা মানবে না তারা কাট্টা কাফির হয়ে যাবে। গোমরাহ হয়ে যাবে, মরদুদ হয়ে যাবে। মুরতাদ হয়ে যাবে। মালউন হয়ে যাবে। মাদহুর হয়ে যাবে। কাজেই, এরা হাদীছ শরীফ অস্বীকার করার কারণে কুরআন শরীফ অস্বীকার করার কারণে, মুরতাদ হয়ে যাবে।
যদি ইসলামী খিলাফত এখানে থাকতো তাহলে এদেরকে তিনদিন সময় দেয়া হতো তওবাহ করার জন্য। যদি তওবা করে, তো ভালো। আর যদি তওবা না করে তাহলে তাদের একমাত্র শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড। কাজেই, এদের থেকে দূরে থাকতে হবে, এদেরকে দূরে রাখতে হবে। এরা গোমরাহ, বাতিল ফিরকার অন্তর্ভুক্ত এবং এদেরও দায়িত্ব ইস্তিগ্ফার, তওবাহ করে আল্লাহ পাক-এর মতে মত হওয়ার জন্য, আল্লাহ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পথে পথ হওয়ার জন্য কোশেশ করা। অন্যথায় তাদের ইন্তিকালের পরে জাহান্নাম ছাড়া কোন গতি থাকবে না।
কিছু লোক বলে থাকে, কুরআন শরীফ আল্লাহ পাক-এর কালাম। এটাতে কোন সন্দেহ নেই। হাদীছ শরীফ যেহেতু হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা লিখেছেন তাহলে এর মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। (নাউযুবিল্লাহ) এরা কাট্টা কাফির। আল্লাহ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফতওয়া দিয়েছেন, ‘আহলে কুরআন’ কাফির। কারণ, কুরআন শরীফতো আল্লাহ পাক লিখে দিয়ে যাননি। আল্লাহ পাক নাযিল করেছেন আল্লাহ পাক-এর হাবীবের প্রতি।
তিনি বলেছেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ সেটা লিপিবদ্ধ করেছেন। ঠিক একইভাবে হাদীছ শরীফ আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেছেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম সেটা লিপিবদ্ধ করেছেন। যাঁরা কুরআন শরীফ লিপিবদ্ধ করেছেন, তাঁরাই হাদীছ শরীফ লিপিবদ্ধ করেছেন। তাহলে যদি হাদীছ শরীফে সন্দেহ থেকে থাকে তাহলে কুরআন শরীফে সন্দেহ এসে যাবে। (নাউযুবিল্লাহ)
কাজেই, এরা কাফির শ্রেণীর লোক হবে, মুনাফিক শ্রেণীর লোক হবে, যারা হাদীছ শরীফে সন্দেহ করবে। কারণ, হাদীছ শরীফে সন্দেহ করলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমদের প্রতি সন্দেহ করা হয়। আর উনাদের প্রতি সন্দেহ করলে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি সন্দেহ করা হবে। আর আল্লাহ পাক-এর হাবীবের প্রতি সন্দেহ করলে আল্লাহ পাক-এর প্রতি সন্দেহ করা হবে। সে কাট্টা কাফির, চির জাহান্নামী হয়ে যাবে। সেটাই হাদীছ শরীফে বলা হয়েছে,
عن عبد الله بن مغفل رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الله الله فى اصا بى لا تتخذ وهم غرضا من بعدى فمن احبهم فبحبى احبهم ومن ابغضهم فببغضى ابغضهم ومن اذاهم فقد اذانى ومن اذانى فقد اذى الله ومن اذى الله فيوشك ان يأ خذه.
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফ্ফাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেন,
الله الله فى اصحا بى
তোমরা আমার ছাহাবায়ে কিরাম-এর ব্যাপারে আল্লাহ পাককে ভয় কর। আল্লাহ পাককে ভয় কর।
لا تتخذ وهم غر ضا من بعدى
আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব-এর পরে আল্লাহ পাক-এর হাবীবের যাঁরা ছাহাবী, তাঁদেকে তোমরা তিরস্কারের লক্ষ্যস্থল করোনা।
فمن احبهم فبحبى احبهم
আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেন, যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমদেরকে মুহব্বত করলো, তারা আল্লাহ পাক-এর হাবীবকে মুহব্বত করার কারণে মুহব্বত করলো।
ومن ابغضهم فببغضى ابغضهم
আর যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো, তারা আল্লাহ পাক-এর হাবীবের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করার কারণে।
ومن اذاهم فقد اذانى ومن اذانى فقد اذى الله ومن اذى الله فيوشك ان يأخذه.
আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেন, যারা আল্লাহ পাক-এর হাবীবের ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমকে কষ্ট দিল, তারা আল্লাহ পাক-এর হাবীবকে কষ্ট দিল। আর যারা আল্লাহ পাক-এর হাবীবকে কষ্ট দিল, তারা আল্লাহ পাককে কষ্ট দিল। আর যারা আল্লাহ পাককে কষ্ট দিবে, আল্লাহ পাক তাদেরকে পাকড়াও করবেন। (নাউযুবিল্লাহ) অর্থাৎ তারা জাহান্নামী হয়ে যাবে।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম সম্পর্কে আল্লাহ পাক-এর হাবীব স্পষ্ট বলে দিলেন। যে, তোমরা আমার ছাহাবায়ে কিরামকে তিরস্কারের লক্ষ্যস্থল করোনা। চু-চেরা করনা। উনাদের প্রতি সন্দেহ পোষণ করোনা। কোন প্রকার উনাদেরকে কষ্ট দিওনা। কষ্ট দিলেই সেটা আল্লাহ পাক-এর হাবীবকে কষ্ট দেয়া হবে। আর আল্লাহ পাক-এর হাবীবকে কষ্ট দেয়ার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ পাককে কষ্ট দেয়া। আর আল্লাহ পাককে কষ্ট দেয়ার অর্থ হচ্ছে জাহান্নামী হওয়া।
সেজন্য অন্য হাদীছ শরীফে বলা হয়েছে,
عن ابى سعيدن الخدرى رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تسبوا اصحا بى فلو ان احد كم انفق مثل احد ذهبا ما بلغ مد احدهم ولا نصيفه.
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেন, لاتسبوا اصحا بى
আল্লাহ পাক-এর হাবীব স্পষ্ট নিষেধ করেছেন, তোমরা আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমদেরকে খারাপ বলোনা। অশ্লীল কথা বলোনা। বাজে কথা বলোনা। যেটা মানুষ বলে মানুষকে বকা দিয়ে থাকে, গালী-গালাজ করে থাকে, এ ধরনের কোন কথা তোমরা বল না।
فلو ان احد كم انفق مثل احد ذهبا ما بلغ مد احد هم ولا نصيفه.
আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেন, তোমরা পরবর্তী যারা উম্মত রয়েছ, তারা যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ দান করো তাহলে আল্লাহ পাক-এর হাবীবের যাঁরা ছাহাবী উনারা যে এক মুদ বা অর্ধ মুদ। এক মুদ কাকে বলে? চৌদ্দ ছটাক। অর্ধ মুদ সাত ছটাক। একসের থেকে কম। এ এক সের বা আধা সের। এক মুদ বা আধা মুদ চৌদ্দ ছটাক বা সাত ছটাক গম উনারা যে দান করেছেন, সেই গম দান করে উনারা যে ফযীলত অর্জন করেছেন, এখন এক সের গমের দাম যদি চৌদ্দ টাকা হয়; চৌদ্দ টাকা বা সাত টাকা দান করে উনারা যে ফযীলত হাছিল করেছেন, তোমরা উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ সেই উহুদ পাহাড় যত বড় পাহাড় এত স্বর্ণ আল্লাহ পাক-এর যমীনে কোথাও পাওয়া মুশকিল হবে। হ্যাঁ তবে স্বর্ণের খনিতে পাওয়া যেতে পারে। সেই পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও যদি তোমরা দান করো তাহলেও সেই পরিমাণ নেকী তোমরা হাছিল করতে পারবে না।
তাহলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমদের কত বড় মর্যাদা-ফযীলত রয়েছে। উনারা হাদীছ শরীফ লিপিবদ্ধ করেছেন। উনারা বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেছেন যে, একাধিক ঈদ রয়েছে। এখন যদি কেউ একাধিক ঈদ না মানে সে আল্লাহ পাক-এর হাবীবের যাঁরা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, তাঁদেরকে সে অস্বীকার করলো। এটা কাট্টা কুফরী হয়ে যাবে।
আরো আল্লাহ পাক-এর হাবীব কি বলেছেন,
عن ابن عمر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا رايتم الذين يسبون ا صحا بى فقولوا لعنة الله على شركم.
আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেছেন যে, দেখ, তোমরা যদি কখনও দেখ কোন ব্যক্তিকে, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক-এর হাবীবের যাঁরা ছাহাবায়ে কিরাম তাঁদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলে, খারাপ কথা বলে, অশ্লীল কথা বলে, উনাদের সমালোচনা করে তাহলে স্পষ্ট বলে দিও, তোমার এই বদ কাজের জন্য আল্লাহ পাক-এর লা’নত তোমার উপর। আল্লাহ পাক-এর লা’নত তোমার উপর এই বদ কাজের জন্য। তোমরা সেটা বলে দিও। কত শক্ত কথা বলা হয়েছে। (অসমাপ্ত)