হযরত মিক্বদাম বিন মা’দিকারাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, সাবধান হয়ে যাও, আসমানবাসী, যমীনবাসী, জ্বিন, ইনছান সকলেই
الا انى اوتيت القران ومثله معه
সাবধান হয়ে যাও, সতর্ক হয়ে যাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক আমাকে কুরআন শরীফ দিয়েছেন তার অনুরূপ হাদীছ শরীফও দিয়েছেন। (সুবহানাল্লাহ)
আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন। কি বললেন? সাবধান হয়ে যাও, সতর্ক হয়ে যাও। নিশ্চয়ই, আল্লাহ পাক আমাকে কুরআন শরীফ দিয়েছেন তার অনুরূপ আমাকে হাদীছ শরীফও দিয়েছেন।
الا يوشك رجل شبعان على اريكته يقول عليكم بهذا القران فما وجد تم فيه من حلال فا حلوه وما وجدتم فيه من حرام فحرموه وان ما حرم رسول الله كما حرم الله.
সাবধান হয়ে যাও। অতি শীঘ্রই তোমরা দেখতে পাবে, কিছু লোক বের হবে যারা গদিতে হেলান দিয়ে বসবে। যারা দুনিয়ায় তৃপ্ত। গইরুল্লাহ্ মধ্যে তৃপ্ত। বে-দ্বীনী, বদ-দ্বীনী, কুফরী, শিরকীর মধ্যে তৃপ্ত। এই সমস্ত লোকগুলি কি বলবে?
عليكم بهذا القران
“তোমাদের জন্য কুরআন শরীফই যথেষ্ট। এই কুরআন শরীফে যা কিছু রয়েছে এটাই তোমাদের জন্য যথেষ্ট।” (নাউযুবিল্লাহ)
ما وخدتم فيه من حلال فاحلوه
তোমরা কুরআন শরীফে যা কিছু হালাল পাবে সেটাকে হালাল হিসাবে গ্রহন কর
ما وجدتم فيه من حرام فحرموه
এবং কুরআন শরীফে তোমরা যা হারাম পাবে সেটাকে শুধু হারাম হিসাবে গ্রহণ কর। অর্থাৎ আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “কিছু লোক বের হবে কিয়ামতের পূর্বে যারা এমন কথা বলবে যে, কুরআন শরীফই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। কুরআন শরীফে যেটা হালাল আছে সেটাই হালাল, যা হারাম হয়েছে সেটাই হারাম। এদের থেকে তোমরা সাবধান থেক।”
এরপর আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ان ما حرم رسول الله صلى الله عليه وسلم كما حرم الله.
“নিশ্চয়ই, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা হারাম করেছেন সেটা ঐ রকমই হারাম যেমন আল্লাহ পাক হারাম করেছেন।” (সুবহানাল্লাহ)
তাহলে দেখা যাচ্ছে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই বলছেন, সাবধান হয়ে যাও। শুধু কুরআন শরীফে হারাম-হালাল থাকলে সেটাই হারাম-হালাল, নয়। বরং আল্লাহ পাক-এর হাবীব যেটা হারাম বলবেন সেটাও হারাম, যেটাকে হালাল বলবেন সেটাও হালাল।
কাজেই, আল্লাহ পাক-এর হাবীব যেহেতু বলেছেন, এই দু’ঈদ ব্যতীত আরো ঈদ রয়েছে। তাহলে সেটাকে মানতে হবে। সেটাকে অস্বীকার করলে সেটাও কুফরী হয়ে যাবে। এই হাদীছ শরীফের দ্বারা সেটাও ছাবিত হয়েছে। এই হাদীছ শরীফসহ আরো হাদীছ শরীফে রয়েছে। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন ও তাকীদ করেন যে হাদীছ শরীফের কত গুরুত্ব রয়েছে,
عن العرباض بن سار ية رضى الله تعالى عنه قال قام رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال ايحسب احدكم متكئا على اريكته يظن ان الله لم يحرم شيئا الا ما فى هذا القران الا وانى والله قد امرت وو عظت ونهيت عن اشياء انها لمثل القران او اكثر.
হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু বলেন,
قام رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال ايحسب احدكم متكئا على اريكته
একবার আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মধ্যে দাঁড়ালেন এবং বললেন, তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার গদিতে হেলান দিয়ে এ কথা মনে কর? তোমরা কি এটা ধারনা কর?
يظن ان الله لم يحرم شيئا الا ما فى هذا القران
তোমরা কি এই আক্বীদা বা ধারণা পোষণ কর? যে, আল্লাহ পাক যা কিছু হালাল-হারাম করার সেটা কুরআন শরীফেই করেছেন। এর বাইরে আল্লাহ পাক কিছুই হারাম-হালাল করেননি।
ان الله لم يحرم شيئا الا ما فى هذا القران
কুরআন শরীফ ব্যতীত আল্লাহ পাক অন্য কোথাও কোন জিনিষ হালাল-হারাম করেননি। তোমরা কি এ ধারণা পোষণ কর?
আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ থেকে এ কথা বলতেছেন, তোমরা কি এই আক্বীদা পোষণ কর?
এই আক্বীদা পোষন কর না
الا وانى والله قد امرت ووعظت ونهيت عن اشياء انها لمثل القران او اكثر.
আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেছেন, অনেক তাকীদ করে الا সাবধান হয়ে যাও وانى নিশ্চয়ই, আমি والله আল্লাহ পাক-এর কসম !
الا وانى والله قد امرت وو عظت ونهيت عن اشياء انها لمثل القران او اكثر.
সাবধান হয়ে যাও, সতর্ক হয়ে যাও নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক-এর কসম আমি যা আদেশ করে থাকি, নিষেধ করে থাকি, ওয়ায করে থাকি, উপদেশ দিয়ে থাকি।
وانها لمثل القران او اكثر.
নিশ্চয়ই, আমার আদেশ, আমার নিষেধ, আমার ওয়ায, আমার নছীহত, আমার প্রতিটি কথা তোমাদের কাছে কুরআন শরীফের অনুরূপ। সুবহানাল্লাহ। ক্ষেত্র বিশেষে তার চাইতেও গুরুত্ব রাখে। সুবহানাল্লাহ। আবু দাউদ শরীফের হাদীছ।
আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ক্বওল হাদীছ শরীফ। অনেক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা কি এটা ধারণা কর? শুধু কুরআন শরীফেই হারাম-হালাল করা হয়েছে আর অন্য কোথাও কর হয়নি। না, আমি যেটা বলে থাকি, আমি যেটা আদেশ করে থাকি, ওয়ায করে থাকি, নিষেধ করে থাকি তার প্রতিটা বিষয়
وانها لمثل القران
নিশ্চয়ই কুরআন শরীফেরই মত। কুরআন শরীফকে যেভাবে তোমরা মেনে থাক। আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীবকে সেভাবে তোমরা মানবে। বরং তার চেয়ে বেশী গুরুত্ব দিবে। او اكثر বরং তার চেয়ে বেশী গুরুত্ব দিবে। কেননা, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীছ শরীফকে কেউ যদি গুরুত্ব না দেয় তাহলে সে কুরআন শরীফ মানতে পারবে না। এখন কুরআন শরীফ আমরা কোথায় পেলাম? কে কুরআন শরীফ আমাদেরকে দিয়েছেন? আল্লাহ পাক কি সরাসরি আমাদেরকে কুরআন শরীফ দিয়েছেন? না আমাদের উপর নাযিল করেছেন? এই আক্বীদা কেউ যদি পোষণ করে, সে কাট্টা কাফির, সেই কাদিয়ানী, সেই মুনাফিক, সে খারিজী, রাফিজী, মু’তাজিলা, ওহাবীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। আল্লাহ পাক তো কুরআন শরীফ আমাদের কাছে দেননি। আল্লাহ পাক কুরআন শরীফ নাযিল করেছেন আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এটা কুরআন শরীফ, এটা হাদীছ শরীফ, আমরা বিশ্বাস করেছি।
(অসমাপ্ত)
ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- ইসলামী আক্বীদা এবং তার গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও আহকাম-৩