ঠিক একইভাবে আমরা দেখতে পাই হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম যিনি জলীলুল ক্বদরি মিনার রুসূল, উলুল আয্মি মিনার রুসূল। যার প্রতি আল্লাহ পাক ইন্জীল শরীফ নাযিল করেছেন। উনার সম্পর্কে বলা হয়েছে, কি বলা হয়েছে? আল্লাহ পাক কিন্তু কুরআন শরীফে বলেছেন। উনার যারা উম্মত ছিল তারা বললেন যে, হে আমাদের নবী, আমাদের রসূল! আপনার যিনি রব রয়েছেন هل يستطيع আপনার রব কি এমন একটা খাদ্যের খাঞ্চা নাযিল করতে পারেন? যেটা থেকে আমরা খাদ্য খাব। খুশী প্রকাশ করব। আপনার প্রতি ঈমান আরও দৃঢ় হবে, মজবুত হবে। দিল আরো ইত্মিনান হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
আল্লাহ পাক-এর নবী ও রসূল হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম বললেন, اتقوا الله আল্লাহ পাককে ভয় কর। এ সমস্ত কথা বলা থেকে আল্লাহ পাককে ভয় কর। ان كنتم مؤمنين যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাক। কারণ আল্লাহ পাক সবকিছু পারেন। তোমরা এলোমেলো কথা বলবে না। ঠিক আছে, আল্লাহ পাক-এর কাছে আমি দুয়া করব, আল্লাহ পাক যেন নাযিল করেন। এটা বলে, তিনি দুয়া করলেন।
আল্লাহ পাক সেটা বর্ণনা করেন আল্লাহ পাক-এর ভাষায়,
قال عيسى ابن مريم اللهم ربنا انل علينا مائدة من السماء تكون لنا عيدا الاولنا واخرنا وايةمنك وارزقنا وانت خير الرزقين.
উনি দু’য়া করলেন,
قال عيس ابن مريمহযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে আল্লাহ পাক اللهم হে আল্লাহ পাক, ربنا হে আমাদের রব,
انزل علينا مائدة من السماء
আকাশ থেকে আমাদের জন্য একটা খাঞ্চা খাদ্যসহ নাযিল করে দিন আল্লাহ পাক। আল্লাহ পাক: নাযিল করলে কি হবে?
تكون لنا عيدا
যেটা আমাদের জন্য ঈদ হবে। শুধু আমাদের জন্য নয়,
عيدا لاولنا واخرنا
আমাদের পূর্ববর্তী-পরবর্তী সকলের জন্যই সেই দিন ঈদের দিন হয়ে যাবে, খুশীর দিন হয়ে যাবে। যেদিন খাঞ্চাটা নাযিল হবে।
واية منك
এবং আপনার তরফ থেকে একটা নিদর্শন হয়ে যাবে।
وارزقنا وانت خير الرزقين.
আপনি রিযিক দান করুন। আপনি উত্তম রিযিকদাতা হে বারে ইলাহী। আপনি উত্তম রিযিকদাতা, হে বারে ইলাহী।
তিনি দু’য়া করলেন। আপনি উত্তম রিযিকদাতা। আপনিই রিযিক দিয়ে থাকেন। আপনি দয়া করে আসমান থেকে খাদ্যসহ খাঞ্চা নাযিল করুন হে বারে ইলাহী। উম্মতরা দেখতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে আপনি নাযিল করে দিন আল্লাহ পাক। আপনিতো পারেন। সেটা নাযিল করলে, সে দিন আমাদের জন্য খুশীর দিন, ঈদের দিন হবে। শুধু আমাদের জন্যই নয়, আমাদের-পূর্ববর্তী পরবর্তী সকলের জন্য ঈদের দিন হবে। আর আপনার নিদর্শন যাহির হয়ে যাবে বারে ইলাহী। আপনি নাযিল করে দিন।
আল্লাহ পাক বললেন, قال الله انى منزلها عليكم আল্লাহ পাক বললেন, হে আমার নবী, হে আমার রসূল, হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালাম! অবশ্যই আমি আপনাদের প্রতি সেটা নাযিল করে দিব। তারপর কি?
فمن يكفر بعد منكم
এটা নাযিল করার পর যদি কেউ অস্বীকার করে, ইজ্জত-সম্মান না করে ইহানত করে,
فانى اعذابا لا اعذبه احدا من العلمين.
হে আমার নবী, আমার রসূল হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম! আপনি জেনে রাখুন, আমি এমন শাস্তি দিব, এমন কঠিন শাস্তি দিব যমীনের মধ্যে আমি কাউকে এমন শাস্তি দেইনি। এমন কঠিন শাস্তি দিব। আল্লাহ পাক আয়াত শরীফ নাযিল করলেন। নাযিল করে খাঞ্চাও নাযিল করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ।
এখন এখানে ফিকির করতে হবে, বুঝতে হবে কুরআন শরীফের আয়াত শরীফ। হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনিও আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উম্মত। তিনি সরাসরি আসবেন আখিরী যামানায় ইমাম মাহ্দী আলাইহিস্ সালামকে সাহায্য করার জন্য, দাজ্জালকে হত্যা করার জন্য। তিনি সরাসরি উম্মত। তিনি বললেন, আল্লাহ পাক আসমান থেকে খাঞ্চা নাযিল করে দেন, সেটা ঈদ হয়ে যাবে। আশ্চর্যের ব্যাপার। ওহাবী, খারিজী, রাফিজী, মু’তাজিলা, সালাফী যারা রয়েছে এই গোমরাহ, বাতিল, বদ মাযহাবের, বদ লোকগুলোর জন্য। যে, আল্লাহ পাক-এর নবী হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম-এর খাদ্যের খাঞ্চা নাযিল হবে, সেটাকে ঈদের দিন ঘোষণা করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ। আল্লাহ পাক সেটা কবুল করে নিলেন। এটাই যদি হয়ে থাকে তাহলে যিনি সমস্ত কায়েনাতের মূল, যিনি আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যার জন্য হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম, আল্লাহ পাক-এর নবী হযরত ঈসা রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাদের জন্ম হলো আগমন হলো। উনাদের নুবুওওয়াত মু’জিযা সব জাহির হয়ে গেল। তাহলে যার জন্য হলো উনার আগমনের দিন তাহলে কতটুকু খুশীর দিন হবে, এটা তো আক্বলের ব্যাপার রয়েছে। ঈমানদারদের ঈমানের ব্যাপার রয়েছে। যার ঈমান নেই, অন্তরে গালিয রয়েছে সে তো এটা বুঝতে পারবে না। তাহলে কতটুকু খুশীর দিন হবে সেই দিনটা, যেদিন আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন। (সুবহানাল্লাহ)
এখন তাদের আরেকটা জিনিস বুঝতে হবে, ওহাবী, খারিজী, রাফিজী, মু’তাজিলা বদ আক্বীদা, বদ মাযহাব বাহাত্তর বাতিল ফিরক্বার যারা রয়েছে, এদের উপর আল্লাহ পাক-এর গযব নাযিল হয়ে গেছে। এরা লাঞ্ছিত ইহকালে এবং পরকালে। আল্লাহ পাক তো বলেছেন,
قال الله انى منزلها عليكم
নিশ্চয়ই সেটা আমি নাযিল করব। তবে
فمن يكفر بعد منكم
যারা অস্বীকার করবে, কুফরী করবে শুকরিয়া করবে না,
فانى اعذبه عذابا لا اعذبه احدا من العلمين.
তাদেরকে এমন শাস্তি আমি দিব। আল্লাহ পাক বলেন, আল্লাহ পাক-এর যমীনে এর পূর্বে কাউকে এমন আযাব-গযব দেয়া হয়নি। এম শাস্তি দেয়া হবে।
কাজেই, একটা খাঞ্চা আসল, একটা নিয়ামত। এটাকে কেউ অস্বীকার করলে কি হবে? কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। কেমন শাস্তি। যেই শাস্তি আল্লাহ পাক-এর যমীনে কাউকে দেননি। এমন শাস্তি তাদেরকে দেয়া হবে। তাহলে আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যিনি সবচেয়ে বড় নিয়ামত, সবচয়ে বড় যিনি নিয়ামত তিনি আসলেন এখন তিনি আসলেন যমীনে এখন উনার আসার পরে যারা উনার আগমনে শুকরিয়া করবে না, খুশী প্রকাশ করবে না, তাহলে তারা অস্বীকার করল। তাহলে তাদের কতটুকু আযাব হবে, গযব হবে, তারপর তারা ঠিক আবু জাহিলের ক্বায়িম-মক্বাম। আবু জাহিল আবু লাহাব যেমন জাহান্নামের অতল তলে তলিয়ে গেছে, উবাই বিন সুলূল জাহান্নামের অতল তলে তলিয়ে গেছে, ঠিক তারাও সে রকম তলিয়ে যাবে। ঠিক এমন শাস্তি হবে আল্লাহ পাক-এর যমীনে এবং মৃত্যুর পরে যেই শাস্তি যেই গযব আল্লাহ পাক-এর যমীনে কাউকে দেয়া হয়নি। তেমন আযাব গযব তাদেরকে দেয়া হবে। আল্লাহ পাক সেটা ঘোষণা করে দিয়েছেন। যেটা কুরআন শরীফে রয়েছে। এটা মানুষের কোন বানানো কথা নয়। মানুষের এটা বানানো কথা নয়। এত কঠিন আযাব এত কঠিন গযব দেয়া হবে।
নবী এবং রসূল আলাইহিমুস সালামগণের যে কোন বিষয়কে আল্লাহ পাক ঈদের দিন ঘোষণা করে দিলেন। উনাদের সংশ্লিষ্ট এবং তায়াল্লুক থাকার কারণে। যিনি আল্লাহ পাক ওয়াজিবুল ওজুদ আর আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যার উজুদ মুবারক বরকতময়। যার জন্য আল্লাহ পাক-এর আসমান-যমীন সমস্ত কায়িনাত সম্মানিত হয়ে গেল, ফযিলতপ্রাপ্ত হয়ে গেল, ইজ্জত লাভ করল, যার কারণে আল্লাহ পাক-এর মুহব্বত-মারিফাত হাছিল করতে পারল। উনি যে আসলেন, উনার অজুদ মুবারক যে আসলো তা কতটুকু খুশীর দিন এটা মানুষের জানা নেই।
কাজেই, সেই দিন যদি কেউ খুশী প্রকাশ না করে তাহলে তার কত কঠিন শাস্তি হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই দিন খুশী প্রকাশ করাই ঈদে আা’যম, ঈদে আকবর, ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ। সেদিন খুশী প্রকাশ করা হচ্ছে ফরয, ওয়াজিবের অন্তর্ভূক্ত। কেউ যদি খুশী প্রকাশ না করে সে কাট্টা কাফির, সে চির জাহান্নামী হবে। তার জন্য কঠিন আযাব আল্লাহ পাক-এর তরফ থেকে নাযিল হয়ে যাবে। আল্লাহ পাক সূরা মায়িদার মধ্যে এটা বলে দিয়েছেন। সূরা মায়িদার ১১৪ এবং ১১৫ নম্বর আয়াত শরীফে আল্লাহ পাক বলে দিয়েছেন। তাদের জন্য কঠিন আযাব-গযব নাযিল হবে। কোন মানুষের কথা নয়। এটা সরাসরি আল্লাহ পাক এর কালামের মধ্যে রয়েছে। খুব সাবধান থাকতে হবে। আল্লাহ পাক-এর হাবীবের যে তায়াল্লুক রয়েছে নিসবত রয়েছে। উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় কতটুকু মর্যাদার হতে পারে? এজন্য বলা হয়ে থাকে। যে ঈদ তো অবশ্যই বরং ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর যা আমরা পালন করি। (অসমাপ্ত)