গজার মাছ হত্যা ও বোমা হামলা॥ ওলীআল্লাহ্ বিরোধী চিহ্নিত ওহাবী, খারিজী, জামাতী মহলটিরই পরিকল্পিত জঘন্য ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ

সংখ্যা: ১২৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

সারাদেশে বর্তমানে তিন লাখের অধিক মসজিদ এবং তদসংশ্লিষ্ট পাঁচ লাখেরও বেশী ইমাম মুয়াজ্জিন রয়েছে। হাজার হাজার ছোট-বড় কওমী মাদ্রাসা তথা এর হাজার হাজার মুর্দারিস রয়েছে। আরো রয়েছে হাজার হাজার আলীয়া মাদ্রাসা এবং তার উস্তাদগণ। প্রতিবছর হাজারেরও উর্ধ্বে বের হয় দাওরায়ে হাদীছ তথা কামিল বা টাইটেল পাশ পর্যায়ের আলিমগণ। সারাদেশে প্রতি জুমুয়ায় তিন লাখ মসজিদে মুসল্লীদের সমাবেশ সমন্বিতভাবে চিন্তা করলে অনুভব করা যাবে, কোটি কোটি লোকের বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ হচ্ছে। পাশাপাশি সারাদেশে প্রায় সব সময় বিভিন্ন ওয়াজ-তাফসীর মজলিস ইত্যাদি লেগেই আছে। এছাড়া বাজারে ইসলামী কিতাবাদি পত্র-পত্রিকার সংখ্যাও বিস্তর। বিস্তর অনেক ইসলামী দলের সংখ্যাও এবং তাদের কার্যক্রমও বেশ সরব। কিন্তু তারপরেও কথা হচ্ছে জনজীবনে তথা সমাজে তাদের তাছির কতটুকু? নির্লজ্জ বেপর্দা-বেশরা, বেহায়াপনা, বাড়ী বাড়ী, দোকানে দোকানে সারিবদ্ধভাবে গানের আওয়াজ, টিভি, ভিডিও, সিডির অবাধ সয়লাব, সুদ-ঘুষ দুর্নীতি সহ হাজার অনাচার আর পাপাচারের ছড়াছড়ি, থার্টি ফার্স্ট নাইট কালচার, ভ্যালেনটাইন ডে, কনসার্ট ব্যা- শো’র প্রবাহে পুরো জাতি আজ টালমাটাল। অর্থাৎ কিনা জাতীয় জীবনের এই পটভূমিকায় কথিত গোটা জাহিরী মাওলানা সমাজের অবদান আজ নিতান্তই শূন্য। তারা আজ মুসলমানদেরই ইসলামী বানাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আজকে মুসলমানরা বিজাতীয়, বিধর্মীয় তথা বিদয়াতী সংস্কৃতিতে ও মানসিকতায় পুষ্ট হয়ে যে অনৈসলামী আনন্দে উচ্ছ্বসিত হচ্ছে তার বিপরীতে তাদের অন্তরে তারা কোন ইসলামী আনন্দের সঞ্চার করতে পারছেনা। কারণ তাদের নেই রূহানী শক্তি। আর হিদায়েতের কাজ করতে হলে অনিবার্যভাবে চাই রূহানী শক্তি। যুগে যুগে রূহানী ক্ষমতাধর ওলী আল্লাহগণই হিদায়েতের কাজ করেছেন। বর্তমান যামানায় তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ হলেন, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আ’ইম্মা, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী। তার রূহানী পরশে এই কনসার্টের যুগেও মানুষ টিভি-ছবি পর্যন্ত দেখা বাদ দিয়ে, সুদ-ঘুষ বেপর্দা-বেশরা বাদ দিয়ে আপাদমস্তক সুন্নত দ্বারা সুশোভিত হয়ে চলছে। এর কারণ হচ্ছে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী মানুষের অন্তরে কলবী যিকির জারি করে দিতে সক্ষম। তিনি তাদের অন্তরে রূহানী জজবা তথা এমন রূহানী আনন্দ তৈরী করে  দিতে সক্ষম যে, সে রূহানী আনন্দে আপ্লুত হয়ে মানুষ যামানার সামসাময়িক পাপাচারের আনন্দ থেকে বিমুখ হয়ে খোদায়ী আনন্দের সাথে খোদামুখী তথা আল্লাহওয়ালা হতে পারে। প্রসঙ্গতঃ এই রূহানী শক্তির নজীর ছিলেন হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি। তাই যেখানে তিনি কাফিরদেরও মুসলমান করেছেন, প্রতাপশালী গৌরগোবিন্দকে পরাজিত করেছেন তথা বাংলাদেশে ইসলামের পত্তন ঘটিয়েছেন। সেখানে বর্তমান জাহিরী নামধারী মুফাস্সীরে কুরআনরা মুসলমানদেরই ইসলামী বানাতে অক্ষমতা ব্যর্থতা দেখাচ্ছে। কারণ তারা নিজেরাই তো আসলে ইসলামী নয়। ইসলামের লেবাছে থাকলেও তারা ছবি তুলছে, বেপর্দা হচ্ছে প্রকাশ্যে হারামে লিপ্ত হচ্ছে। মূলতঃ হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর প্রতি ঐতিহ্যগতভাবে এদেশবাসী শ্রদ্ধা, সম্মান মূলতঃ রূহানী শক্তির ধারক-বাহক আউলিয়া-ই-কিরামগণের প্রতিই মানুষের গভীর বিশ্বাস ও শ্রদ্ধাবোধ এর প্রতিফলন মাত্র। আর আউলিয়া-ই-কিরামগণের প্রতি এদেশবাসীর এই গভীর শ্রদ্ধাবোধ, এক শ্রেণীর জাহিরী মাওলানাদের চক্ষুশুল।          গজার মাছের মৃত্যুর পর হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ওরস শরীফে গত ৫ ডিসেম্বর শুক্রবার বোমা হামলার দ্বারা এ কথাই স্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয়েছে যে গজার মাছ হত্যা, বোমা হামলা, এসবই একটা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ।  বিশেষত এর সাথে জোট সরকারের অন্তর্ভুক্ত একটা নামধারী ইসলামী দল বিশেষভাবে জড়িত। ধর্মীয়ভাবে এরা ওহাবী, খারিজী, তথা জামাতী বলে চিহ্নিত। সিলেটে হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ওসীলায় যে, এ দেশের মানুষ মুসলমান হয়েছেন, তাঁর ওসীলায় যে এদেশে ইসলামের প্রচার-প্রসার হয়েছে উক্ত মহলটি সে ধারণা ও চেতনা অবলুপ্ত করতে চায়।  কিছুদিন পূর্বে এই মহলের এক কুখ্যাত চিহ্নিত মুফাস্সীরে কুরআন সিলেটে তার তথাকথিত তাফসীরের মাহফিলে বলেছিল যে, “ওলীআল্লাহ্দের কোন রূহানী শক্তি নেই। সিলেটের শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মাযারের কোন ফযীলত নেই। তিনি মাটির সাথে মিশে মাটি হয়ে গেছেন।” (নাঊযুবিল্লাহ)          উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআন শরীফে যেখানে ইরশাদ হয়েছে যে, “শহীদদের লাশ নষ্ট হয় না” সেখানে যিনি গাজী ও সত্যিকারের ওলীআল্লাহ্ তাঁর লাশ নষ্ট হয় কি করে? উল্লেখ্য, ওলীআল্লাহগণের অবশ্যই রূহানী শক্তি রয়েছে কিন্তু তারা সে রূহানী শক্তি মহান আল্লাহ পাক-এর নির্দেশে ও ইশারায় প্রয়োগ করেন মাত্র। সুতরাং যারা বলতে চাচ্ছে যে, ‘মাযার শরীফের গজার মাছ মরে গিয়েছে, বোমা হামলা হয়েছে; কই রূহানী শক্তি থাকলে হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি কিছু করলেন না কেন? সুতরাং তাঁর কোন ক্ষমতা নেই”।  তাদের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাহলে বলতে হয় যে, ৭০ হাজার বনী ইসরাঈলের নবী শহীদ হয়েছেন। আর নবী-রসূল আলাইহিস্ সালাম-এর যে রুহানী শক্তি রয়েছে তারা যে মু’জিযা দেখিয়েছেন তা তো অনিবার্য সত্য। কিন্তু তারপরও তারা শহীদ হলেন কেন? তাহলে কি এই বলতে হবে যে তাদের রূহানী শক্তি ছিলনা? (নাঊযুবিল্লাহি মিন  যালিক)  পাশাপাশি পৃথিবীতে শত শত কোটি কাফির রয়েছে, তাদেরকে স্বয়ং আল্লাহ্ পাকই কিছু বলছেন না বা মুসলমান বানিয়ে দিচ্ছেন না কেন? এমনকি বুশ-ব্লেয়ার মুসলমান রাষ্ট্র ইরাককে তছনছ করার পরও আল্লাহ পাক কিছু বলছেন না। তাহলে  কি হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি তথা ওলীআল্লাহগণের বিরোধী সেই মহলটির বক্তব্য অনুযায়ী এই সাবস্ত হয় না যে, আল্লাহ্ পাক-এরও কোন শক্তি নেই। (নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক) মূলতঃ ওলীআল্লাহগণ আল্লাহ পাক-এর ইশারা ব্যতীত তাঁদের রূহানী শক্তি প্রয়োগ করেন না। আর আল্লাহ্ পাক এর ইশারা তথা হিকমত সম্পর্কে আল্লাহ পাক-এর ওলীগণই ভাল অবগত। কাজেই হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি এর বিরোধী মহল তথা বিদ্বেষী মহলটির আমরা গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করছি ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।  পাশাপাশি হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর দরগাহে অবস্থিত মাদ্রাসার নাম কেন হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি এর নামে নামকরণ করা হল না সে সম্পর্কেও গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করছি এবং তা করার জন্য জোরদার সুপারিশ করছি। পুনশ্চঃ (১) স্মরণ রাখা প্রয়োজন যে বেছাল মুবারক সাধিত হওয়ার পর ওলীআল্লাহগণের সমসাময়িক দুনিয়ায় হিদায়েতের বাধ্যবাধকতা তথা শরীয়তী হুকুম থাকেনা। (১) হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মাযার শরীফে যারা গান-বাজনা সহ গাঁজা সেবনে লিপ্ত ছিল তারাও ছহীহ নয়। আর যারা মাযার ও ওলীআল্লাহ বিদ্বেষী তারাও শরীয়তে সমর্থনযোগ্য নয়। এজন্যই হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “দু’শ্রেণীর লোক আমার পিঠ বাঁকা করে ফেলেছে, (১) আমলহীন নামধারী আলিম। (২) ইলম্বিহীন আবেদ।” কাজেই ঈমান রক্ষার্থে এ দু’শ্রেণী থেকেই পরহেজ হতে হবে।

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান, ঢাকা।

 শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২২  

ইরাকের মীরজাফর সাদ্দাম  রাশিয়ার বেলারুশ যেতে চায় কেন?    

চট্টলার বহুল প্রচলিত দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশ্যে আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাতের কাছে ক্ষমা চেয়ে তারা রক্ষা পেলো ॥

প্রসঙ্গঃ ছবি, অশ্লীল ছবি ইনকিলাব ও হাটহাজারীর আহমক শাফী উপাখ্যান

শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২৩