চর্মনাই পীর তাহার ফতওয়া অনুযায়ীই নিজে মুসলমানিত্ব হারাইয়াছেন ও ইসলামের নামে সুবিধাবাদী রাজনীতির খাছ তল্পীবাহকরূপে প্রমাণিত হইয়াছেন

সংখ্যা: ১৫৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

ধর্ম ব্যবসায়ী সম্পর্কে হাদীছ শরীফে অনেক লক্ষণই প্রকাশ করা হইয়াছে। যেমন বলা হইয়াছে, “তাহাদের কথাগুলি হইবে নবীদের মত আর আমলগুলি হইবে ফেরাউনের মত। ঈমান তাহাদের কণ্ঠনালীর নীচে নামবেনা।”

হিসাব করিলে ইহার যেন শতভাগই মিলিয়া যায় চর্মনাই পীর নামধারী ব্যক্তির সাথে। আল বাইয়্যিনাত-এর ফতওয়ার কারণে যে গনজোয়ার তৈয়ার হইয়াছে উহার কারণে তিনিও এখন ময়দানে আওড়াইয়া থাকেন “পুজিবাদী গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র বা ধর্ম নিরপেক্ষতার নয় কেবল ইসলামই দেশ ও জাতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করিতে পারে। (ইত্তেফাক, ১৪ মার্চ ০৬)

গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে তাহার এইরূপ কথা অনেক অনেক। ইরাক আক্রমণ বিরোধী এক সমাবেশে তিনি বলেন, “আমরা একদিকে আমেরিকার বিরুদ্ধে শ্লোগান দেই। অপরদিকে আমেরিকার স্বপ্ন দ্রষ্টা আব্রাহাম লিঙ্কনের গণতন্ত্রের নীতি নিয়ে চলি। তিনি বলেন, “পুঁজিবাদী আব্রাহাম লিংকনের গণতন্ত্র কুফরি গণতন্ত্র।” (আজকের কাগজ-১২এপ্রিল/০৩)

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে প্রচলিত শাসন ব্যবস্থা গণতন্ত্রের উদ্ভাবক আব্রাহাম লিঙ্কন। এ শাসনব্যস্থা আল্লাহ বিরোধী।

বর্তমান কুফরী গণতন্ত্র মানলে মুসলমানিত্ব থাকবে না। (দৈনিক ইনকিলাব, ১২ এপ্রিল/০৩)

কিন্তু যে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র কুফরী মতবাদ বলে তিনি স্বীকার করলেন সেই তন্ত্র মন্ত্রই আবার তিনি মহাসমারোহে করছেন। দিনরাত তাতেই মত্ত থাকছেন। পত্রিকায় এই বিষয়ে অজস্র শিরোনাম।

উল্লেখ্য এদেশে স্বাধীনতা উত্তর সমাজতন্ত্রের সক্রিয় দল ছিল জাসদ ও তার নেতা আ.স.ম আব্দুর রব। আর তাহার সাথেই এখন চর্ম নাই পীরের নির্বাচনী জোট করার খবর হইতেছে।

 দৈনিক আমাদের সময় ২১শে ডিসেম্বর ২০০৫ চর্মনাই পীরের এই জোট বাধার খবর ছাপিয়াছে।

এদিকে শুধু সমাজতন্ত্রী আ.স.ম আব্দুর রব নয় ডাকসাইটে স্বৈরশাসক এরশাদের সহিতও তিনি জোট করিতে আগ্রহী। ৩রা এপ্রিল/২০০৫ এ দৈনিক আমাদের সময় এ  সংক্রান্ত রিপোর্টঃ

এরশাদের সঙ্গে জোট করতে পারেন চরমোনাইর পীর।

আহমদ রিয়াদঃ চরমোনাইয়ের পীর মোহাম্মদ ফজলুল করিম জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সঙ্গে জোটভূক্ত হয়ে নির্বাচন অংশ নিতে পারে। আগামী দিনে তার দল কাকে সমর্থন করবে? এ প্রশ্নের জবাবে চরমোনাইর পীর আমাদের সময়কে জানান… তার এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনী জোট করার সম্ভাবনা আছে।

এদিকে চর্মনাই পীর বি.এন.পির সাথেও নির্বাচনী জোট করিতে চাহিয়াছিল। তখন সংবাদ শিরোনাম হইয়াছিল:

বিএনপির সাথে চরমোনাই পীরের নির্বাচনী সমঝোতার ৮দফা

ফয়সল নোইঃ  নির্বাচনী মোর্চা গড়তে জাতীয় পার্টি (এরশাদ)’র প্রস্তাব নাকচ করে দেয়ার পর চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন দল ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বিএনপির সাথে নির্বাচনী সমঝোতায় যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, এ লক্ষ্যে প্রাথমিক চুক্তি সই হলে শাসনতন্ত্র আন্দোলনসহ আরো দু’টি ইসলামিক দল ও কয়েকটি ছোট দল একত্রিত হয়ে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোতে প্রত্যক্ষ বিরোধী ভূমিকা পালন করবে। এ বিষয়ে শাসনতন্ত্রের কেন্দ্রীয় দু’জন নেতার সাথে বিএনপির শীর্ষ কয়েকজন নেতার নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে বলে জানা গেছে। (দৈনিক মানবজমিন ৫ই জুন ২০০৩)

কিন্তু বি.এনপির কাছে চর্মনাইর পীর এর অবস্থান তেমন কিছু মনে হয়নি বলে বিএনপি চর্মনাইকে তাদের জোটে নেয়নি। তাই বলে বিএনপির কাছে গ্রহনযোগ্যতা তুলে ধরার প্রবণতাও থেমে থাকেনি। মুক্তাঙ্গনের এক সমাবেশে চর্মনাই পীর অতঃপর বলেছিল বিএনপির উচিত আমার কাছে কৃতজ্ঞ থাকা। কারণ গত নির্বাচনে এরশাদকে আমার সাথে না রাখলে আওয়ামী লীগ এরশাদকে নিত। তাহলে আজকের বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারত না।

অর্থাৎ বিএনপি ক্ষমতার আসার পেছনে চর্মনাই পীর যে নেপথ্যে কাজ করিয়াছেন সে গলাবাজি তিনিই করিলেন। কিন্তু এর দ্বারা যে তিনি প্রকারান্তরে নারী নেতৃত্বের পক্ষেই কাজ করিয়াছেন প্রকাশ্যে সে কথাই প্রমাণ করিলেন।

অর্থাৎ স্বার্থের প্রয়োজনে তিনিও যে নারী নেতৃত্বের সাথে আপোষে পিছপা হইবেন না তাহারই নজীর রাখিলেন।

এদিকে “যাহারা আওয়ামী লীগ করে তারা কাফের” (দৈনিক ভোরের কাগজ, ২৮শে অক্টোবর/৯৮) এই ফতওয়া দেয়ার পরও চর্ম নাই পীর সুযোগ ও সুবিধা মনে করিলে আওয়ামী লীগের সাথেও জোট বাধতে আগ্রহী।

৮ই জানুয়ারী/২০০৬এ দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত এ খবরে চর্মনাই পীর বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগ বা বিএনপি বুঝিনা, যারা সত্যিকার অর্থে ইসলামের স্বার্থে দেশের পক্ষে কাজ করার অঙ্গীকার করবে তাদের সাথে আমাদের নির্বাচনী সমঝোতা  বা ঐক্য হতে পারে।”

একদিকে তিনি বলিতেছেন যে, যাহারা আওয়ামী লীগ করে তাহারা কাফের অপরদিকে সেই কাফেরকেও আবার তিনি ইসলাম কায়েমের জন্য উপযুক্ত মনে করতেছেন। আসলে সুযোগ সন্ধানী চর্মনাই পীর হিসেবের টোপ ফেলিতেছেন। যেখান থেকে বেশী সুবিধা পাইবেন সেখানেই তিনি মিলিবেন।

নচেৎ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপি সম্পর্কেও তাহার দলের স্বীকারোক্তি হইলো-

চোরদের ক্ষমতায় রেখে ইসলামী শাসন কায়েম করা যাবে না।

শাসনতন্ত্র আন্দোলন।

যুগান্তর রিপোর্টঃ

ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজী বলছেন, জোট সরকারে যারা আছেন তাদের অধিকাংশই চোর ও দুর্নীতিবাজ। এ সরকার জনগণের মৌলিক অধিকার এবং জান-মাল ও ইজ্জত রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। এই চোরদের ক্ষমতায় রেখে জনগণের মৌলিক অধিকার ও ইসলামী শাসন কায়েম করা যাবেনা। (যুগান্তর ৮ই এপ্রিল/২০০৬)।

এদিকে আবার বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দল সম্পর্কে একসাথে চর্মনাইর পীরের বক্তব্য হল-

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কথায় ও কাজে কোন মিল নেই। যাদের কথা ও কাজের সাথে মিল নেই আমরা তাদের সাথে নেই। ইনকিলাব ৭ আগস্ট/০৫)

কিন্তু বছর না ঘুরতেই চর্মনাই পীর সংবাদ শিরোনাম হনঃ

বিএনপি ও আওয়ামী লীগের গোলাম হবো। চরমোনাইর পীর।

স্টাফ রিপোর্টারঃ ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের আমীর ও চরমোনাইর পীর মাওলানা ফজলুল করিম বলেছেন, শতকরা নব্বইভাগ মুসলমানের এই দেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যদি ইসলামী হুকুমত কায়েম করে তাহলে আমরা তাদের গোলাম হয়ে থাকবো। (দৈনিক সংগ্রাম ১ লা এপ্রিল/২০০৬)

আসলে গোলাম হতে তার দ্বিধা নাই, আপত্তি নাই একটুও। শুধু দরকার একটু স্বার্থের গন্ধের। যেখানেই ভাগটা বেশী পাওয়া যাইবে সেখানেই গোলাম হইয়া সে তাহার মাথা ঠুকিবে।

যদিও এটা তাহার জন্য খুবই সাধারণ। কারণ কিছু পাওয়ার আগেই সে তার মুসলমানিত্ব হারাইয়া ফেলিয়াছে। আর এটা তাহার কথা মুতাবেকই। তাহার দেয়া ফতওয়া অনুযায়ীই।

 এ লেখার প্রথমেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, চর্ম নাই পীর বলিয়াছে যাহারা আব্রাহাম লিঙ্কনের গণতন্ত্র করে তাহারা কুফরী করে।

আর বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, স্বার্থান্বেষী নির্বাচনী জোট ছাড়াও চর্মনাই পীর যা করতেছেন তাহলো সেই আব্রাহাম লিঙ্কনের গণতন্ত্র। তারই নির্দেশিত নির্বাচন ও ভোটের রাজনীতি।

সংবাদ শিরোনাম:

চরমোনাইর পীর ১৫৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করবেন

স্টাফ রিপোর্টারঃ চরমোনাইর পীর ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের আমীর মাওলানা মোহাম্মদ ফজলুল করীম শিগগিরই ১৫৬ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করবেন। ইতিমধ্যে এসব আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সুত্র জানায়, সম্প্রতি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। (দৈনিক মানবজমিন ১০ই জানুয়ারী/২০০৬)

অতএব দেখা যাইতেছে গণতন্ত্র কুফরী মতবাদ বলিলেও গণতন্ত্র করিলে মুসলমানিত্ব থাকিবেনা বলিলেও চর্মনাই পীর নিজেই গণন্ত্রের ধারা অনুযায়ী একদিকে একের পর এক বিভিন্ন দলের তথা সমাজতন্ত্রী রব, এরশাদ, কাফের (?) আওয়ামী লীগ, চোর ও জালেম বি.এন.পি এর সহিত নির্বাচনী আঁতাত করার পায়তারা করতেছেন পাশাপাশি  হালুয়া রুটির ভাগ মনমত না হলে নিজের দল থেকেই  ১৫৬ আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিতেছেন। অর্থাৎ তিনি আব্রাহাম লিঙ্কনের বহুদলীয় গণতন্ত্র ও নির্বাচনী ব্যবস্থার খাছ ফরমাবরদার ও একনিষ্ঠ খাদেম সাজিলেন। তথা তার ফতওয়া মোতাবেকই কুফরী করিলেন। নিজের ফতওয়ায় নিজেই মুসলমানিত্ব হারাইলেন। (নাঊযুবিল্লাহ)

-ওয়ালীউর রহমান, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের  দাঁতভাঙ্গা জবাব- ১৫

 বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫ 

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-৩

চাঁদের তারিখ নিয়ে জাহিলী যুগের বদ প্রথার পুনঃপ্রচলন॥ নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’ ঈদ, কুরবানীসহ জামিউল ইবাদত হজ্জও হচ্ছে বরবাদ

শুধু ছবি তোলা নিয়েই বড় ধোঁকা নয়, গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র চর্চা করে “ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের” নামেও তিনি মহা ধোঁকা দিচ্ছেন