বর্তমান সংখ্যার আলোচনাঃ আইয়্যামে জাহেলিয়াতের মত মাস আগ- পাছ করে মনগড়াভাবে নতুন চন্দ্রমাস গণনা করার নেপথ্যে সৌদি শাসকগোষ্ঠীর এ কোন প্রকারের কুফরী?
একজন সামর্থবান মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ্জ করা ফরয। সম্পদশালী লোক ছাড়াও যে কোন ধার্মিক মুসলমান যার অন্তরে রয়েছে আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুহব্বত, সারাজীবন ধরেই তিনি তার বুকের মধ্যে একটি স্বপ্ন রচনা করেন, যে একদিন যাবেন আল্লাহ পাক-এর গর কা’বা শরীফ-এর জিয়ারতে। সৃষ্টির শুরু থেকেই যে ঘর আজও দাঁড়িয়ে আছে মক্কা শরীফ-এর বুকে। হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে আখিরী রসুল সাইয়ি্যদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হয়ূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ঘরের চারপার্শ্বে তাওয়াফ করেছেন। লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের সাথে একত্রে তিনি ঘোষণা দেবেন “লাব্বায়েক, আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক” অর্থাৎ হে আমার আল্লাহ পাক হাযির, আমি হাযির। একজন মুসলমান তার বুকের গভীরে আরও লালন করেন হজ্জ শেষে যাবেন মদীনা শরীফের পথে। রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রওজা যুবারকের পার্শ্বে দাঁড়িয়ে জীবনের সব আবেগ ঢেলে বলবেন “আসসালাতু আস্সালামু আলাইকা ইয় রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” আর্থিকভাবে কম সঙ্গল একজন মুসলমান তার জীবনের এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য ধীরে ধীরে সঞ্চয় করেন তার জীবনের কষ্টার্জিত অর্থ। তারপর, যেদিন তার প্রতিক্ষার প্রহর শেষ হয়, পাড়ি দেন সেই মরুর দেশে।
১ই জিলহজ্জ আরাফার দিন। জিলহজ্জ মাসের ১ তারিখে আরাফার ময়দানে উপস্থিত থাকা ফরজ। বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মুসলমান সমবেত হয় এবং নির্দিষ্ট সময় অবস্থান করেন এখানে, শুধু আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টির জন্য। শুধু এই তারিখ (৯ই জিলহজ্জ) এবং এই স্থান (আরাফার ময়দান) ব্যতীত সমগ্র বিশ্বে এমন কোন দিন বেই, স্থান নেই যেদিন, সেখানে উপস্থিত হলে হজ্জের এই ফরজ আদায় হবে। অথচ হায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা আবেগতাড়িত মুখসলমানদের আবেগের কোনই মুল্য নেই। মুসলমান নামধারী কিছু ইহুদীদের চর, প্রতারক, মুসলমানদের এই আমলকে নষ্ট করে দেবার জন্য, তাদের দূয়া যাতে কবুল না হয় সেই লক্ষ্যে বদ্ধপরিকর। তারা সুকৌশলে প্রতি বছরই জিলহজ্জ মাসের তারিখ গণনা এমনভাবে করে যেন ৯ই জিলহজ্জ আরাফার ময়দানে মুসলমানগণ একত্রিত না হয়ে ভিন্ন তারিখে সেখানে অবস্থান করেন। কেননা, কেও যদি চায় শুক্রবারের জুমুয়ার নামায বৃহস্পতিবারে আদায় করবে তবে কি তা আদায় হবে? অথবা কেও যদি চায় আশুরার ফযীলত ৯ই মুহররম পেতে তবে কি সে তা পাবে? তাহলে কি করে জিলকদ মাসের ২৮ তারিখেই চাঁদ দেখার ঘোষণা দিয়ে জিলবুদের ২৯ তারিখ থেকে ১ম জিলহজ্জ গণনা শুরু কবে, হজ্জ করতে আসা বিশ্বের সকল মুসলমানদের ৮ই জিলহজ্জ আরাফার ময়দানে উপস্থিত করা হল? প্রায় প্রতি বছরই এভাবে সৌদি সরকার মনগড়াভাবে জিলহজ্জ মাসের তারিখ ঘোষণা করে হচ্ছ। অনুষ্ঠান বাতিল করে দিচ্ছে। প্রশ্ন আসে এই সৌদি সরকার প্রকৃতপক্ষে কি চায়?
* তারা কি মুসলমানদের আমলগুলো নষ্ট করে দিতে চায়?
তারা কি এও চায় মুসলমানদের দুয়াগুলো যেন কবুল না হয়? ২১
সে নাকি তারা শুধু তাদের প্রভু ইহুদী-খ্রিষ্টানদের খুশী করতে চায়?
২১০ নাকি তারা শুধু তাদের প্রভু ইহুদী-খ্রিষ্টানদের খুশী করে আমৃত্যু ক্ষমতায় অধিষ্টিত থাকতে চায়?
* অথবা তারা কোন নতুন ধর্ম এবং তাদের নির্ধারিত কোন পথের কথা বলতে চায়?
নিম্নের বিষয়গুলো আলোচনা করলে এলে। সম্পর্কে একটা ধারণা বেশ স্পষ্টভাবে আমাদের সামনে ফুটে উঠবে। (চলবে)
চাঁদ দেখার রিপোর্টঃ
১৪২৮ হিজরীর সফর মাসের চাঁদ দেখার সম্ভাব্য তারিখ ও বারঃ
নিউমুন সংঘটিত হবে ১৭ই ফেব্রুয়ারী বিকেল ৪:১৫ ঘণ্টায় (আর্ন্তজাতিক সময় অনুযায়ী)। পৃথিবীর কোন মহাদেশ থেকেই নিউমুনের দিন চাঁদ দেখা যাবার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। পৃথিবীতে প্রথম চাঁদ দৃশ্যমান হবে ১৮ই ফেব্রুয়ারী। চাঁদ প্রথম দৃশ্যমান হতে পারে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, চীন এই অঞ্চলে। সৌদি আরবে ১৭ই ফেব্রুয়ারী সফর মাসের চাঁদ দেখার কোন সম্ভাবনা নেই। সৌদি আরবে চাঁদ দৃশ্যমান হবে ১৮ই ফেব্রুয়ারী, রবিবার।
বাংলাদেশে ১৪২৮ হিজরীর সফর মাসের চাঁদ দেখা যাবার সম্ভাব্য তারিখ ও বারঃ
যদি আকাশ পরিষ্কার থাকে তবে বাংলাদেশে সফর মাসের চাঁদ
দৃশ্যমান হতে পারে ১৮ই ফেব্রুয়ারী, রবিবার। তখন চাঁদের বয়স হবে ১৯ ফন্টা ৭৯ মিনিট। দিগন্ত রেখা থেকে চাঁদ ৮.১৭ ডিগ্রী উচ্চতায় থাকবে অর্থাৎ দিগন্ত রেখার খুব কাছাকাছি চাঁদ খুঁজতে হবে। সূর্য অস্ত যাবে ৫:৫৬ ঘণ্টায় এবং চাঁদ অন্ত যাবে ৬:৪২ ঘণ্টায় (ঢাকার সময় অনুযায়ী)। অর্থাৎ সূর্য অস্ত যাবার ৫/১০ মিনিট পর থেকে চাঁদ অস্ত যাবার ৫/১০ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত ২৫/২৬ মিনিটের মধ্যে চাঁদ দেখা যেতে পারে। সফর মাসের প্রথম তারিখ হতে পারে ১৯শে ফেব্রুয়ারী, সোমবার।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২