ছবি ভিত্তিক হজ্ব ব্যবস্থা এবং মিনায় পদপিষ্ট হাজী রওশন আরার শেষ অছিয়তও পদদলিত হওয়া প্রসঙ্গেঃ        

সংখ্যা: ১২৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

   আফসুস!

আর্তনাদ আর আহাজারি দু’কালেই। একাল আর সেকাল। সেকাল বলতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আগের কালের বেলায়। তখনকার হক্বপন্থী লোকদের আফসুস ছিল কেন আর কিছু দিন বাঁচতে পারলাম না। আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দীদার পেলামনা? আর একালের লোকদের আফসুস, কেন এই যামানার এতসব ফিৎনা-ফাসাদের আবর্তে পড়ার পূর্বেই মরে গেলামনা? ফিৎনা! জঘন্য ফিৎনা! ইসলামের মূল পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে একটি হজ্জ। হজ্জ একটি ফরয ইবাদত। আর সে এক ফরয আদায় করতে গেলে অনিচ্ছাসত্ত্বেও মুখাপেক্ষী হতে হয় অনেক হারাম কাজের। শুধু মাত্র ছবিই তুলতে হয় বিশটিরও বেশি। এছাড়া পদে পদে রয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় তোলা ছবি। আর মেয়েদের জন্য প্রয়োজনীয় পর্দার ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে বেপর্দার যে অবস্থা তা বলাই বাহুল্য।

  প্রসঙ্গতঃ এসব বিষয়ে সমসাময়িক আলিম নামধারীদের কোন উচ্চ-বাচ্য নেই, কোন প্রতিক্রিয়া নেই। হজ্জের মত একটা ফরয ইবাদত, একটা মৌলিক ইবাদতে এতসব অনৈসলামী অনুষঙ্গ যোগ হয়েছে তাতে তথাকথিত শাইখুল হাদীছ, মুফতি, মাওলানা, মুফাস্সিরে কুরআন, খতীবরা কেউ টু শব্দ করছেনা। এদের ঈমানী কুওয়াত, ইসলামী সমঝ যেন হাওয়ায় উবে গেছে। ছবির ব্যবহার থাকায় আজ যে কত অনৈসলামিক ও গুনাহ্র রাস্তা তৈরী হচ্ছে সে দিকে এদের ভ্রুক্ষেপও নেই। হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “হে আলী! (রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) কোন বেগানা মেয়ে লোকের প্রতি আপনার প্রথম দৃষ্টি (অনিচ্ছাকৃত) ক্ষমা করা হবে কিন্তু দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষমা করা হবেনা।” ইসলামের পরিভাষায় প্রতিটি দৃষ্টিতে লা’নত ও কবীরা গুনাহ যে দেখে ও দেখায় উভয়ের  প্রতি।”             এতদ্বপ্রেক্ষিতে আজকে হজ্জের জন্য ছবি সংযুক্তির কারণে গত ৫/০২/০৪ঈঃ তারিখের সব জাতীয় দৈনিকসহ অনেক টি,ভি চ্যানেলে দেখানো হল মরহুমা মহিলা হাজী রওশন আরা, জাহানারা বেগমের ছবি।           অথচ পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায় তারা ছিলেন নেক্কার মহিলা। তারা বেপর্দা পছন্দ করতেন না। কিন্তু আজকে ছবির ব্যবস্থা সারা দেশে তথা বিশ্বে শত শত কোটি লোকের সামনে তাদের বেপর্দা করে দিল। শত শত কোটি লোক তাদের চেহারা দেখে নিল। তাদের পবিত্র ইচ্ছার প্রতি, সম্মানের প্রতি, তাক্বওয়ার প্রতি চরম আঘাত হানল।    হাজী রওশন আরার মেজো ছেলে মুহম্মদ আব্দুুল কাদির বাবু বলেন, “মা আমাদের সব সময় সৎ জীবন-যাপনের পরামর্শ দিতেন। ছবি তুলতে চাইতেন না।” তিনি বলতেন আমি মারা গেলে কেউ যেন আমার লাশ না দেখে।” (দৈনিক মানবজমিন/৫ই ফেব্রুঃ’০৪)         পাঠক! ছবি ভিত্তিক হজ্জ ব্যবস্থা কি পারল একজন নেক্কার, পরহিযগার মহিলার পবিত্র জীবনের এই শেষ আরজু, ঈমানের আরজু, আমলের আরজু, তাক্বওয়ার আরজু রক্ষা করতে? না ছবি ভিত্তিক হজ্জ ব্যবস্থার তোড়ে ভেসে গেল রওশন আরার জীবনের শেষ আকুতি? ঈমানী আরজী? শুধু বাংলাদেশের মুসলমানই নয়, বিশ্বের অপরাপর দেশের মুসলমানই নয় বরং গোটা বিশ্বের কাফির-মুসলমান নির্বিশেষে সবাই টি,ভি চ্যানেলে অথবা পত্রিকাতে রওশন আরার লাশ দেখল। যে রওশন আরা জীবিত অবস্থায় ছবি তুলতে চাইতেন না ছবি ভিত্তিক হজ্জ ব্যবস্থা  সে রওশন আরাকে হজ্জের নামেই ছবি তুলতে বাধ্য করল।       একটি নয় শুধু বাংলাদেশেই বিশটিরও বেশী ছবি আর মক্কা শরীফে ও মদীনা শরীফের মত পবিত্র ভূমিতে পদে পদে ক্লোজ সার্কিট টিভিতে লাখ লাখ ছবি তার তোলা হল।   যে রওশন আরার শেষ অছিয়ত ছিল “আমার মৃত্যুর পর কেউ যেন আমার লাশ  না দেখে।” ছবি ভিত্তিক ব্যবস্থার ফলে সে রওশন আরাকে শত শত, কোটি-লোক দেখল, জানল, হৃদয়ঙ্গম করল। অথচ এটা যে পর্দানশীন নেক্কার আল্লাহওয়ালী মহিলার জন্য কত মর্মান্তিক! কত তীব্র জ্বালা! ছিল তা বিকৃত অন্তর, মুর্দা দিল বিশিষ্ট ওহাবী-সালাফী, ফাসিক-ফুজ্জার গোষ্ঠী বুঝবে কি করে? ‘তাযকিরাতুল আউলিয়াতে’ বর্ণিত রয়েছে, “এক আল্লাহওয়ালী মহিলা ঘরের ভিতর চাদর দ্বারা আবৃত থাকা সত্ত্বেও এক লোক তার একটি অঙ্গ দেখে ফেলে। একথা সে মহিলা জানতে পেরে সে লোকের কাছে খবর পাঠালেন যে, সে তার কোন অঙ্গটি দেখতে পেয়েছে?  মিনায় পদপিষ্ট হাজী রওশন আরার শেষ অছিয়ত             জবাবে সে বলল, পুরো চাদরে আবৃত থাকায় সে কেবল তাঁর চোখ জোড়াই দেখতে পেয়েছে। তখন সে নেক্কার মহিলা বেদনা দগ্ধ হয়ে বললেন, যে চোখ পরপুরুষ দেখেছে সে চোখ আমার থাকার দরকার নেই। তিনি তৎক্ষণাৎ তার চোখ দুটো উপরে ফেলে সে লোকের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, নাও ভাল করে দেখ।” (সুবহানাল্লাহ)   পাঠক! তাযকিরাতুল আউলিয়ায় উল্লিখিত নেক্কার মহিলার এই অনুভূতি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং এটি সমস্ত নেক্কার পর্দানশীল মহিলারই অনুভূতিরই একটি প্রতীকী প্রতিফলন, উদাহরণ মাত্র।

সেক্ষেত্রে তাযকিরাতুল আউলিয়ায় উল্লিখিত মহিলা তাঁর জীবদ্দশায় জানতে পেরে ব্যবস্থা গ্রহণ করে আত্মার শান্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু মরহুমা হাজী রওশন আরা যাঁর একান্ত ইচ্ছা ছিল একটি ছবিও না তোলা, যাঁর জীবনের শেষ আরজি ছিল তার লাশ যেন কেউ না দেখে; সেখানে যখন তার লাখ লাখ ছবি তোলা হয় এবং শত শত কোটি কোটি লোক তার মৃত্যুর পরে তাকে দেখে। আর তার মূলে থাকে ছবি ভিত্তিক হজ্জ ব্যবস্থা। তখন সে ব্যবস্থা কত আমানবিক! কত অনৈতিক! কত অনৈসলামিক! তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। পাশাপাশি শুধু একজন রওশন আরা নয় মূলতঃ লাখ লাখ নেক্কার রওশন আরার ক্ষেত্রেও এই একই অবস্থা। অতএব, সে ছবি ভিত্তিক হজ্জ ব্যবস্থা যে কত অমানবিক! কত অনৈতিক! অন্যায়! কত অধার্মিক! কত বেশী অনৈসলামিক তা কেবলমাত্র ঈমানদারগণই অনুভব করতে পারেন।        কিন্তু অন্তরশূন্য, মুর্দা দিলের অধিকারী, ওহাবী-সালাফী, ফাসিক-ফুজ্জার গোষ্ঠী সে ঈমানী অনুভূতিকে আদৌ আমল না দিয়ে নিজেদেরকে নিকৃষ্ট জাহান্নামী, বেশী আযাবের  অধিকারীরূপে গড়ে তুলছে। হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “কিয়ামতের ময়দানে ঐ ব্যক্তির সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে যে ছবি তুলে বা আঁকে।” (বুখারী শরীফ)   অন্য হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “যে কেউ একটি বদ কাজের সূচনা করল যতজন লোক সে কাজে জড়িত হল সবার গুনাহ যে প্রথম প্রচলন করেছে তার আমল নামায় লিখা হবে।” (মিশকাত শরীফ)       এজন্য বলা হয়,  দুনিয়াতে যখন যত হত্যাকা- ঘটে তখন প্রথম গুনাহ লেখা হয় কাবিলের আমলনামায়। কারণ সেই প্রথম হত্যা করেছিল।             তদ্রুপ বলতে হয়, কুরআন-সুন্নাহয় স্পষ্টভাবে ছবি তোলার বিপক্ষে বলা হলেও, আযাব-গযবের কথা তথা শক্ত শাস্তির কথা বলা হলেও হজ্জের মত একটি মৌলিক ফরয ইবাদতে ছবির মত হারাম কাজ যেসব দেশী-বিদেশী ওহাবী-সালাফী, ফাসিক-ফুজ্জার কর্তৃপক্ষ প্রচলন করেছে ও জিইয়ে রাখছে; আর তাতে ছবি তোলা ও বেপর্দা হওয়ার মত কোটি কোটি কবীরাহ গুনাহ হচ্ছে- সেসব কোটি কোটি কবীরাহ গুনাহ ঐ সব দেশী বিদেশী ওহাবী-সালাফী, জামাতী, খারিজী তথা ফাসিক-ফুজ্জার কর্তৃপক্ষেরই উপড়েই পড়বে এবং তারা হবে জাহান্নামের ঘৃণীতকীট। (নাঊযুবিল্লাহ)

 -মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান, ঢাকা।

 প্রসঙ্গঃ কমনওয়েলথ ও সি.পি.এ সম্মেলন

বিরোধীতা হওয়া, অপবাদ রটনা হওয়া, মিথ্যা তোহমত যুক্ত হওয়া আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নত॥  কুমন্ত্রক ও কায্যাবরাই সুন্নত পালনে সহায়তাকারী

 পিরোজপুরে রাজারবাগ শরীফের প্রধান বিরোধীর জঘণ্য চরিত্র ফাঁস

শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২৫

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাজ্জাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব-২