-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
“ ইমামুস্ ছিদ্দীকীন” লক্বব মুবারক প্রসঙ্গে
খলীফার্তুরাহ, খরীফাতু রসূল্লিাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাকিমুল হাদীস, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হচ্ছেন ইমামুছ ছিদ্দীকীন তথা ছিদ্দীকীনগণের ইমাম বা প্রধান। মু’মিন-মুত্তাকীগণের এক বিশেষ শ্রেণী হচ্ছেন ছিদ্দীক, নবী- রসূল আলাইহিমুস সালামগণের পরেই তাঁদের স্থান বা মাকাম। সমস্ত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লহু তায়ালা আনহুমগণ ছিদ্দীক ছিলেন। তাঁদেরকে আল্লাহ পাক ছিদ্দীকীন বলে লক্বব দিয়েছেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ারা আনহুমগণের পর হযরত আওলিয়ায়ে কিরামগণের মধ্যেও অনেক ছিদ্দীক ছিলেন। বর্তমানেও আছে এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত থাকবেন। হাল যামানায় তিনিই হচ্ছেন তাঁদের ইমাম।
উল্লেখ্য যে, নবী-রসূল আলাইহিমুস সরামগণের নবুওয়াত ও রিসালাতকে জাহির করা বা ঘোষণা দেয়া ফরজ। আর আওলিয়ায়ে কিরামগণের বেলায়েতের ঘোষণা দেয়া তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বা মাকামের কথা জাহির করা ফরজ নয়। বরং সাধারণভাবে তা গোপন রাখাই শ্রেয়। তবে আল্লাহ পাক এবং তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যতটুকু প্রকাশ করতে চান ততটুকুই তারা প্রকাশ করেন। যদিও তা ওলী আল্লাহ বিদ্বেষী, হিংসুকগণ বিরোধিতা করে থাকে। ছিদ্দীকীন এমন একটি মাকাম যা আল্লাহ পাক খাছভাবে দান করেন। আবার যারা সে মাকামে পৌছার জন্য কোশেশ করেন তাকেও তা দান করা হয়।
উল্লেখ্য যে, বান্দা ও উম্মত দু’শ্রেণী। এক শ্রেণী মুহবি তথা মুহব্বতকারী। অপর শ্রেণী মাহবুব তথা যাকে খাছভাবে মুহব্বত করা হয়। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে-
الله يجتبى اليه من يشاء ويهدى اليه من ينيب.
অর্থ: “আল্লাহ পাক যাকে ইচ্ছা তাকে খাছভাবে মনোনীত করেন। আর যে তাঁর দিকে রুজু (মনোনিবেশ) হয় তাকেও তিনি হিদায়েত দান করেন।” (সূরা শুরা-১৩)
আল্লাহ পাক অন্যত্র বলেছেন-
والذين امنوا وعملوا الصلحت لند خلنهم فى الصلحين.
অর্থঃ “আর যারা ঈমান আনবে এবং আমলে সলেহ (সুন্নতের ইত্তিবা) করবে আমি অবশ্যই তাদেরকে সলেহীনগণের অন্তর্ভূক্ত করবো।” (সূরা আনকাবুত/৯)
অর্থাৎ যারা ঈমান এনে আমলে সলেহ করতে থাকবে উনারা প্রথমত: সলেহীনগণের অন্তর্ভুক্ত হবে। অত:পর ছিদ্দীক্বগণের মাকামে উন্নীত হওয়ার তৌফিক পাবে। হাদীছ শরীফ ইরশাদ মুবারাক হয়েছে-
عن عبد الله بن مسعود رضى اله تعاى عنه ان النبى صلى اله عيه وسلم قال عليكم بالصدق فان الصدق يهدى الى البر وان البريهدى الى الجنة وما يزال الرجل يصدق ويتحرى الصدق حتى يكتب عند الله صديقا.
অর্থঃ ফকীহুল উম্মত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়লা আনহু হতে বর্ণিত। নিশ্চয়ই আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “সত্যবাদিতাকে আকড়িয়ে ধরা তোমাদের জন্য ফরজ। নিশ্চয়ই সত্যবাদিতা কল্যাণের বা নেকীর পথ প্রদর্শন করে। আর কল্যাণ বা নেকী জান্নাতের পথ নির্দেশ করে। যখন কেন ইমানদার বান্দা সব ক্ষেত্রে সততা অবলম্বন করে এবং সত্যের উপর ইস্তিকামাত (অটল) থাকে তখন সে আল্লাহ পাক-এর নিকট ছিদ্দীক তথা চরম সত্যবাদী হিসেবে পরিগণিত হয়।” (তানবীহুল গাফিলীন/১০৯, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, কাবাস/ ১০৪)
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূল্লিাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী মাহবুব এবং মুহিব উভয়ই। রসূল আলাইহিস্্ সালামগণ যেমন নবী ও ছিলেন। তাঁর মাহ্বুব এবং মুহিবের বিষয়টিও ঠিক তেমনি। আল্লাহ পাক এবং তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে খাছভাবে ছিদ্দীকিয়াতের মাকাম দান করেছেন। আর তিনি সেই নিয়ামতের শুকরিয়া স্বরূপ ছোট-বড় প্রতিটি বিষয়ে সেরূপ সত্যতা ও নিষ্ঠা অবলম্বন করেন তাতে বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্দি করা যায়। ছোহবত ইখতিয়ারকারী এবং মুহব্বতকারী সকলেই সে বিষয়টি সম্মক অবহিত রয়েছেন। (অসমাপ্ত)