-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
‘মুহ্ইস সুন্নাহ’ লক্বব মুবারক প্রসঙ্গেঃ
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবে আ’যম, ইমামে আ’যম, সুলতানুল আওলিয়া, হাকীমুল হাদীছ, সাইয়্যিদুল মুজতাহিদীন, আওলাদে রসুল, সাইয়্যিদুনা ইমাম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ পাক-এর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নতের সূক্ষ্মাতি-সূক্ষ্ম, পুঙ্খানুপুঙ্খ ইতায়াত (অনুসরণ-অনুকরণ) করে থাকেন। ছোহবত ইখতিয়ারকারীগণ মাত্রই তা অবহিত রয়েছেন। তিনি অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার ফলে অসংখ্য অগণিত সুন্নত জিন্দা বা পুনঃপ্রচলন করেছেন। নিচে তাঁর জিন্দাকৃত কিছু সুন্নতের বিবরণ দেয়া হলো-
ইমামাহ বা পাগড়ীঃ ইমামাহ বা পাগড়ী পরা দায়িমী সুন্নত। আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবসময় পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন। বাড়ী বা বাসায় অবস্থান করাকালীন তিন হাত পরিমান পাগড়ী পরিধান করতেন। বাড়ী বা বাসার বাইরে গমনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে সাত হাত এবং বিশেষ বিশেষ দিন তথা ঈদ, জুমুয়া ইত্যাদিতে বার হাত পরিমাণের পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন।
কালক্রমে উলামায়ে “ছূ”দের মনগড়া আমলের কারণে সেই দায়িমী সুন্নত বিলুপ্ত হয়। এমনকি উলামায়ে “ছূ”রা সেই দায়িমী সুন্নতকে অস্বীকার করে বসেছে। (নাউজুবিল্লাহ) যদিও বা দু একজনকে পরিধান করতে দেখা যায় সেটা শুধুমাত্র ফরয নামায পড়ার সময়। নামায শেষ হতে না হতেই তড়িঘড়ি করে খুলে ফেলে দেয়। যারা নামকাওয়াস্তে পরিধান করে তারা আবার সুশৃংখলভাবে বাঁধার নিয়মও জানে না। উলামায়ে “ছূ”দের বদ তাছীরের কারণে সাধারণ মানুষ পাগড়ীর সঠিক পরিমাপ পর্যন্ত জানে না।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দাজিল্লুহুল আলী সেই দায়িমী সুন্নতকে জিন্দা করেছেন। পাগড়ীর পরিমাণ, রং, বাঁধার নিয়ম, ফযীলত শিক্ষাসহ সর্বস্তরে ব্যাপকভাবে পাগড়ীর প্রচলন করেছেন। এমনকি তিনি নিজ হাত মুবারকে অনেককে পাগড়ী পরিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ইদানিং যারা সুশৃংখলভাবে ও যথাযথভাবে পাগড়ী পরিধান করেন সেটা তাঁরই তাজদীদের সোনালী ফসল।
ইমামাহ বা পাগড়ীর ফযীলতঃ
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসুলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ,
কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, ছহিবে ইসমে আ’যম, সুলতানুল আওলিয়া, হাকীমুল হাদীছ, সাইয়্যিদুল মুজতাহিদীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, “একটি সুন্নত একটি ফরজ আমলের মর্যাদাকে সত্তরগুণ বৃদ্ধি করে দেয়। পাগড়ী পরিধান করে এক রাকায়াত নামায পরা পাগড়ী ছাড়া সত্তর রাকায়াত নামায অপেক্ষা অধিক ফযীলতপুর্ণ। পাগড়ী পরে এক বৎসর নামায আদায় করা পাগড়ী ছাড়া সত্তর বছর নামায আদায় করা হতে উত্তম।
হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
صلاة بعمامة افضل من سبعين صلاة بغير عمامة
অর্থঃ আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “পাগড়ীসহ দু’ রাকায়াত নামায পাগড়ী ছাড়া সত্তর রাকায়াত নামায অপেক্ষা অধিক ফযীলতপূর্ণ।” (মিরকাত-৮/২৫০, হাশিয়ায়ে শামায়িলুত তিরমিযী-৮, হিদায়াতুল ইবাদ-৬৮, আশয়াতুল লুময়াত-৩/৫৮৩, মিরয়াতুল মানাজীহ-৬/১০৬)
আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন,
ان الله وملائكته يصلون على صاحب العمائم يوم الجمعة.
অর্থঃ “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক জুমুয়ার দিন পাগড়ী পরিধানকারীগণের উপর রহমত নাযিল করেন এবং তাঁর ফেরেশ্তাগণ তাঁদের জন্য মাগফিরাত কামনা করেন।” (বযলুল মাজহুদ-৬/৫১, আনওয়ারুল মাহমুদ-২/৪৪৬, আল লিবাস ওয়ায্ যীনাহ-১৩৫, মাজমাউয যাওয়াঈদ-৫/১২০, কাশফুল খিফা ওয়া মুযীলুল ইলবাস-২/৬৮)
আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “নিশ্চয়ই পাগড়ী হচ্ছে ইসলামের বিশেষ নিদর্শন। আর এটা মুসলমান ও মুশরিকদের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। (উমদাতুল কারী-২১/৩০৮, তুহফাতুল আহওয়াজি-৫/৪২, যুরকানী-৬/২৭২))
রঈসুল মুফাসসিরীন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “তোমরা পাগড়ী পরিধান কর। তাহলে তোমাদের সহনশীলতা ও গাম্ভীর্যতা বৃদ্ধি পাবে। (আল লিবাস ওয়ায্ যীনাহ-১২৮, মাজমাউয্ যাওয়াঈদ-৫/১১৯, আল কবীর-১২/২২১, ফতহুল বারী-১০/২৮৩, খছাইলে নববী-৭৮, আল মুসতাদরিক-৪/১৯৩, কাশফুল গুম্মাহ-১/৯৪) (অসমাপ্ত)