-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
‘ইমামুছ ছিদ্দীকীন’ লক্বব মুবারক প্রসঙ্গে
সত্যবাদিতা এমনগুণ যার কারণে আল্লাহ পাক সত্যবাদীর সমস্ত আমলই পরিশুদ্ধ করে দেন। তাঁর সমস্ত গুনাহখতা ক্ষমা করেন।
আল্লাহ ইরশাদ করেন-
يايها اذين امنوا اتقوا الله وقووا قولا سديدا. يصلح لكم اعما لكم ويغفر كم دنوبكم ومن يطع الله ورسوله فقد فاز فوزا عظيما.
অর্থঃ- “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ পাককে ভয় কর এবং সত্য কথা বল। তাহলে তিনি তোমাদের আমলসমূহকে সংশোধন করবেন তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক এবং তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইতায়াত (আনুগত্য) করবে সে বিরাট সফলতা লাভ করবে।” (সূরা আহযাব-৭০-৭১)
উল্লেখ্য যে, ইলমে তাছাউফ-এর একটা বৈশিষ্ট বা খুছুছিয়ত হলো সত্যবাদিতাসহ সকল প্রকার নেক খাছলত (স্বভাব) হাছিল করা এবং সকল প্রকার বদ খাছলত (স্বভাব) পরিহার করা। সূফীগণ কামিল মুর্শিদের হাতে বাইয়াত হয়ে মুর্শিদ-এর নির্দেশ মত যিকির-ফিকির করত: তাঁর ফয়েজ ও তাওয়াজ্জুহ হাছিল করেন। ফলে তারা সত্য পথে চলা, সত্য কথা বলায় অভ্যস্ত হন।
আর এ পথে ইস্তিকামাত (অটল) থাকেন। যার ফলে ছিদ্দীক্বিয়াতের মাকাম প্রাপ্ত হন। এমনিভাবে বান্দা ও উম্মত তার শায়খ-এর নিকট সবর তথা ধৈর্য ধারণের ছবক নেন এবং সবর করার কোশেশ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সে সাবির তথা ধৈর্য ধারণকারীর মাকামে পৌঁছে যান। অপরাপর গুণাবলী সমূহ এভাবে হাছিল হয়। যার ফলশ্রুতিতে এক সময়ে তিনি সমস্ত সৎ গুণাবলী হাছিলে সক্ষম হন। ইলমে তাসাউফ বিদ্বেষী, ওলী আল্লাহ বিরোধী ব্যক্তিগণ কশ্মিনকালেও তা উপলব্দি করতে পারবে না। তাদের সামনে দলীল আদীল্লাহ পেশ করা মানে অন্ধ ব্যক্তিকে হাতী দেখানোর শামিল।
‘ইমামুছ ছিদ্দীকীন’ লক্বব সম্পর্কে বিভ্রান্তি এবং তার জাওয়াব
লক্বব বিরোধি, ওলীআল্লাহ বিদ্বেষী কিছু লোক আওয়ামুন্ নাছ (সাধারণ লোক)দেরকে এই বলে বিভ্রান্ত করার কোশেশ করে যে, “খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলল্লিাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুসহ সমস্ত ছিদ্দীকগণের ইমাম দাবী করেন।” (নাউযুবিল্লাহ)
মিথ্যাবাদীদের কাছে মিথ্যার কোন সীমা-পরিসীমা থাকে না। বিদ্বেষী অন্তর সব সময় বিদ্বেষে পূর্ণ থাকে। রঙিন চশমা পড়লে যেমন সব কিছুই রঙিন দৃষ্টি গোচর হয়। বিদ্বেষী ও কখনো স্বাভাবিক দেখতে পায় না। মূলতঃ যাদের অন্তরে আল্লাহ পাক এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ভয়-ভীতি নেই, তারা এর চেয়েও ভয়ানক মিথ্যা অপবাদ লেপন করতে পারে।
যারা আল্লাহ পাক-এর প্রতি মিথ্যারোপ করতে পারে। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শানে মিথ্যা অবদাপ দিতে পারে তারা ওলীআল্লাহগণের শানে এরূপ মিথ্যা তোহমত দেয়া স্বাভাবিক। তারা খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল-এর নাম মুবারকে এরূপ ডাহা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আল্লাহ পাক এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে যুদ্ধের মুখোমুখি হচ্ছে। কারণ হাদীছে কুদসীতে বর্ণিত আছে,
من عادى لى وليا فقد اذنته بالحرب.
অর্থঃ- আল্লাহ পাক বলেন, “যে ব্যক্তি আমার ওলীর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে আমি (আল্লাহ পাক) তাকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে বলি।” (বুখারী, মিশকাত) (অসমাপ্ত)