– হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
“ছাহিবু কুন ফাইয়াকুন” লক্বব প্রাপ্ত ওলীআল্লাহ কি
নিজে আল্লাহ হওয়ার দাবী করেন?
ওলী আল্লাহ বিদ্বেষী কিছু লোক قلت عم قلت فهم তথা কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে বলে যে, ছাহিবু কুন ফাইয়াকুন অর্থ কুন ফাইয়াকুনের মালিক। যা আল্লাহ পাক-এর জন্যই খাছ। কোন মানুষ কুন ফাইয়াকুনের মালিক বা অধিকারী হতে পারে না। অথচ তাদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ ভুল, অশুদ্ধ, অজ্ঞতা সূচক, জেহালতপূর্ণ এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। সাথে সাথে তা কুফরীও বটে। কারণ আল্লাহ পাক-এর দেখা, শুনা, জানা ইত্যাদি কোনটি মানুষের মত নয়। সেটা সম্পূর্ণ কুদরতের অন্তর্ভূক্ত। যারা বলবে মানুষের মত তারা কাফির। মুশাবিহা ফিরকা, বাতিল বাহাত্তর দলের একদল। তাদের আক্বীদা হচ্ছে- আল্লাহ পাক-এরও মানুষের মত হাত, পা, কান, চোখ ইত্যাদি রয়েছে। তিনিও মানুষের মত দেখেন, শুনেন, জানেন। (নাউযুবিল্লাহ)
যেখানে আল্লাহ পাক-এর হাত, পা, চোখ ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে। সেটা তার কুদরতকে বুঝানো হয়েছে। কাজেই “ওলী আল্লাহগণের আদেশের মত আল্লাহ পাক-এর আদেশ,” মনে করা যাবেনা। বরং “আল্লাহ পাক-এর আদেশের মত ওলী আল্লাহগণের আদেশ” বলা যেতে পারে। কারণ আল্লাহ পাক কারো মুহতাজ নন। এমনকি তিনি ব্জৈৈষ্ফশ্চ লফজের মুহতাজও নন। তিনি তা হতেও পবিত্র। (মুকাশাফাতে আইনীয়া, মাকতুবাত শরীফ)
আর ওলীআল্লাহগণ আল্লাহ পাক-এর মুহতাজ। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুহতাজ। তাঁরা আল্লাহ পাক এবং তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুণে গুণান্বিত। তাঁরা কোন মাখলুকাতের মুহতাজ নন। একইভাবে কোন লক্ববের মুহতাজও তাঁরা নন। মুলত: মাখলূকাতের ফায়দার জন্য আল্লাহ পাক এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইচ্ছায় তাঁদের লক্ববগুলো প্রকাশিত হয়।
আল্লাহ পাক-এর গুণে গুণান্বিত হলে যদি আল্লাহ হওয়ার দাবি করা বুঝায় তাহলে লক্বব বিরোধীরাসহ সবাই আল্লাহ হওয়ার দাবীকারী। সবাইতো দেখে, শুনে, বুঝে। তাহলে তারাও আল্লাহ হওয়ার দাবী করলো। সুতরাং তারা সকলেই কাফির। কারণ আল্লাহ পাকতো দেখেন, শুনেন। তাছাড়া “হাকিম” বিচারক, সেও আল্লাহ হওয়ার দাবিদার। কারণ আল্লাহ পাক হচ্ছেন হাকিম। মানুষ হাকিম হয় কিভাবে? লক্বব বিরোধীদের গুরু আশরাফ আলী থানবী। সে তাহলে বড় কাফির। সে তো “হাকিমুল উম্মত” লক্বব ব্যবহার করেছে। অপর দিকে অনেক বৈজ্ঞানিক আছেন। যারা অনেক নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করেছেন। ওলী আল্লাহ বিদ্বেষীদের ফতওয়া মুতাবিক তারাও আল্লাহ হওয়ার দাবীদার, কাফির। আর যদি তা না হয়, তাহলে ওলী আল্লাহগণের ইশারায় আবিষ্কৃত হলে ওলী আল্লাহগণ আল্লাহ হওয়ার দাবীকারী হবেন কেন?
আমরা ইতোমধ্যেই এই লেখায় উল্লেখ করেছি যে, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবুবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউসুল আযম হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি। ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, মুজাদ্দিদে যামান, সুলতানুল আরেফীন হযরত গরীবে নেওয়াজ, রহমতুল্লাহি আলাইহিসহ অনেক আওলিয়ায়ে কিরাম ছিলেন ‘‘ছাহিবু কুন ফাইয়াকুন” লক্ববের অধিকারী।ঞ্জতাঁরা যদি আল্লাহ হওয়ার দাবীকারী না হন তাহলে পঞ্চদশ শতকের মুজাদ্দিদ, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সুলত্বানুল আরিফীন, হাকিমুল হাদীছ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা, ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আল্লাহ হওয়ার দাবীকারী হবেন কেন? তাঁর শানে এই তোহমত কেন? মুলতঃ ইহা জাহিলদের জেহালতী। আর হিংসুকদের হিংসার প্রতিফলন। ওলী আল্লাহগণের মুখালিফ বা বিরোধীদের বিরুদ্ধাচারণ। জাহিলরা হিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর শানে এরূপ মিথ্যা তোহমত (অপবাদ) দিয়ে মালউন ইবলিসের যোগ্য উত্তরসূরীর পরিচয় দিয়ে থাকে। ইবলিশ যেমন হযরত আদম আলাইহিস সালাম-এর শ্রেষ্ঠত্ব দেখে সহ্য করতে পারেনি। হিংসার আগুনে জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয়েছিল। তারাও মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা, ইমাম রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলীর শ্রেষ্ঠত,¡ মর্যাদা- মর্তবা দেখে হিংসার আগুনে জ্বলে-পুড়ে ছারখার হচ্ছে। বিরোধিতা যত তীব্র হচ্ছে তাদের ধ্বংসও তেমনি তরান্বিত হচ্ছে। লক্বব বিরোধীরা তাঁর প্রতি হিংসা ও বিদ্বেষ পোষণ করতে গিয়ে আল্লাহ পাক-এর আদেশ লংঘন করেছে। ফলে কুফুরীতে নিমজ্জিত হচ্ছে। আল্লাহ পাক বলেন,
ولا تتمنوا ما فضل اله به بعضكم على بعض.
অর্থঃ আল্লাহ পাক তোমাদের একজনের উপর অন্যজনকে যে ফযীলত দিয়েছেন তোমরা (হিংসার বসবর্তী হয়ে) তার আকাঙ্খী হয়ো না। (সুরা নিসা/৩২) সেই আয়াত শরীফের শেষাংশে আল্লাহ পাক এটাও বলেছেন যে,
واسئلوا الله من فضله.
অর্থঃ “তোমরাও আল্লাহ পাক-এর নিকট তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা কর।”
উক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা এটা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়েছে যে, ছাহিবু কুন ফাইয়াকুন লক্বব প্রাপ্ত ওলী আল্লাহ-এর ছোহবত ইখতিয়ার করে আল্লাহ পাক-এর অনুগ্রহ তালাশ কর। তাহলে তোমরাও সেই ছাহিবু কুন ফাইয়াকুন লক্ববের হিস্সা বা অংশ পাবে।” (সুহানাল্লাহ)। অসমাপ্ত