ছাহিবুল কাওছার, ছাহিবুল  মাহ্শার, ছাহিবুল  মাক্বামিল  মাহমূদ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মত মানুষ নন

সংখ্যা: ১২৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

عن عبد الله بن عمرو رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لست كاحد منكم.

অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি তোমাদের কারো মত নই। (বুখারী ১/২৬৩দ্দ আবূ দাউদ/১৩৭)

عن عبد الله بن عمر رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم انى لست مثلكم.

অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অনুরূপ নই। (বুখারী ১/২৬৩, ফতহুল বারী ৪/১৬৪)

عن ابى سعيد رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم انى لست كهيئتكم.

অর্থঃ- হযরত আবূ সাঈদ খুদুরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আমি ছূরতান বা আকৃতি গতভাবে তোমাদের মত নই।” (বুখারী ১/২৬৩, ফতহুল বারী ৪/১৬৫)

عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ايكم مثلى.

অর্থঃ- হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। ঞ্জতিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে আমার অনুরূপ কে রয়েছে? (বুখারী ১/২৬৩, ফতহুল বারী ৪/১৬৭) অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে কেউই আমার মত নয়। বা আমি তোমাদের কারো মত নই। তাই জনৈক কবি বলেছেন,

محمد بشر ليس كالبشر ياقوت حجر ليس كالحجر.

অর্থঃ- “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাশার, তবে তিনি অন্যান্য বাশারের মত নন। যেরূপ ইয়াকুত পাথর, অন্যান্য পাথরের মত নয়।”

বাহ্রুল উলুম হযরত মাওলানা মুহম্মদ আব্দুল আলী লখনবী রহ্মতুল্লাহি আলাইহি “মীর যাহিদ” কিতাবে উল্লেখ করেছেন,

علمه علوما بعضها ما احتوى عليه القلم الاعلى وما استطاع على احاطتها اللوح الاوفى لم يلد الدهر مثله من الازل ولايلد الى الابد فليس له ممن فى السموت والارض كفوا احد.

অর্থঃ- “আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সমস্ত বিষয়েরই ইল্ম দান করেছেন, যা মহান আল্লাহ পাক-এর মহান কুদরতী কলম বা কলমে আ’লার আওতায়ও আসেনি। যা লাওহে; মাহ্ফুজও আয়ত্ব করতে পারেনি। কস্মিনকালেও সৃষ্টির শুরু থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত তাঁর মত কেউ পয়দা হয়নি কেউ তাঁর সমকক্ষ হবেনা। সমস্ত কায়িনাতে তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।”

        উল্লেখ্য যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো অনেক দূরের কথা, উনার পুত-পবিত্রা স্ত্রীগণ অর্থাৎ হযরত উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাগণের শানেই আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,

ينساء النبى ليتن كاحد من النساء.

অর্থঃ- “হে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রীগণ! আপনারা অন্যান্য মহিলাদের মত নন।” (সূরা আহযাব/৩২)

সুতরাং যেই রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রী হওয়ার কারণে উনারা দুনিয়ার সকল মহিলাদের থেকে তুলনাহীন হলেন, সেই মহান ব্যক্তিত্ব যিনি একমাত্র আল্লাহ পাক-এর পরেই সমস্ত প্রকার শ্রেষ্ঠত্ব, ভালাই ও কল্যাণের একচ্ছত্র অধিকারী, তিনি আমাদের মত মানুষ হন কি করে?

মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,

قل انما انا بشرمثلكم يوحى الى.

অর্থঃ- “(হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলুন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মত একজন বাশার, তবে আমার প্রতি ওহী নাযিল হয়।” (সূরা কাহ্ফ/১১০)

এ আয়াতে কারিমা-এর প্রেক্ষিতে অনেকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমাদের মতই মানুষ বলে থাকে। প্রকৃতপক্ষে এটা সম্পূর্ণরূপে অশুদ্ধ ও ভুল। কারণ আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যার প্রতি ওহী নাযিল হয়। বরং আমাদের মধ্যে কেউ যদি নিজের প্রতি ওহী নাযিলের দাবী করে, তবে সে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। যেমন কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি সম্প্রদায়।

মূলতঃ উপরোক্ত আয়াত শরীফের সঠিক ও নির্ভরযোগ্য ব্যাখ্যা হলো, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধুমাত্র আদম সন্তান হিসেবে مثل بشر বা মানুষের অনুরূপ। সেজন্যই বনী আদমকে আশরাফুল মাখলুকাত করা হয়েছে, অর্থাৎ আল্লাহ্ পাক মানুষকে আশরাফিয়াত দান করেছেন বা সৃষ্টির সেরা করেছেন। হাক্বীক্বত তিনি আমাদের মত মানুষ নন। লক্ষ-কোটি দিক বা বিষয় রয়েছে, যার দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মত মানুষ নন, বরং তিনি “নূরে মুজাস্সাম” বা নূরের সৃষ্টি। হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম থেকে শুরু করে হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম পর্যন্ত যে সকল পুত-পবিত্র মহিলা ও পুরুষ আলাইহিমুস সালামগণের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়েছেন, তাঁদের সকলের মধ্যেই তিনি সরাসরি নূর আকারে স্থানান্তরিত হয়েছেন এবং সবশেষে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম-এর রেহেম শরীফ হতে নূর হিসেবেই যমীনে তাশরীফ এনেছেন। সে কারণে তাঁর শরীর মুবারকে কোন ছায়া ছিলনা। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শরীর মুবারকে যা কিছু ছিল, তা সবই ছিল পবিত্র থেকে পবিত্রতম। এমনকি তাঁর প্রস্রাব ও ইস্তিঞ্জা মুবারকও  ছিল পাক ও পবিত্র। যা পান করার কারণে জাহান্নামী লোকের জন্য জাহান্নাম হারাম হয়ে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। তিনি যে হাযত পুরা করতেন তাও কোন মানুষ দেখতে পেত না। যমিন তা সাথে সাথেই গ্রাস করে ফেলত বা খেয়ে ফেলত। তাঁর শরীর মুবারকে কাশ্মিনকালেও মশামাছি বসতো না।

        উম্মতের জন্য চারটির বেশী বিবাহ করা হারাম। কিন্তু আল্লাহ পাক এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য বিবাহের তা ছিলনা।   তিনি স্বয়ং নিজেই শারে’ বা শরীয়ত প্রণেতা, তিনি যা করেছেন, বলেছেন ও সম্মতি দিয়েছেন তাই শরীয়ত। পক্ষান্তরে সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে তা নয়। সাধারণ মানুষ পরস্পর পরস্পর যেভাবে ডেকে থাকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সেভাবে ডাকলে কুফরী হবে।

        সাধারণ মানুষের কলেমা শরীফ হচ্ছে,

 لااله الا الله محمد رسول الله.

পক্ষান্তরে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কলেমা শরীফ হচ্ছে,

لااله الا الله انى رسول الله.

যা সাধারণ মানুষ দাবী করলে কাফির হবে। সাধারণ মানুষের স্ত্রীকে তালাক দিলে বা স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে অন্য কেউ বিবাহ করতে পারে। কিন্তু আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিদায়ের পরে উম্মুল মু’মিনীনগণকে অন্য কোন মানুষের জন্য বিবাহ করা হারাম! সাধারণ মানুষের মৃত্যূর পরে তার মীরাছ (পরিত্যাক্ত সম্পদ বন্টন করতে হয়। কিন্তু আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ক্ষেত্রে তা নয়। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাত, জাহান্নাম, আরশ, কুরসী লওহ,-কলম ইত্যাদি সবকিছুই দেখেছেন। এমনকি মিরাজ শরীফে তিনি স্বয়ং আল্লাহ পাককেও দেখেছেন। কিন্তু আমাদের সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়।

এমনিভাবে অসংখ্য, অগণিত বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা একমাত্র হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য খাছ। যা অন্য কোন মানুষ তো দূরের কথা অন্যান্য কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণকেও দান করা হয়নি। কাজেই তিনি কোন দিক থেকেই আমাদের মত মানুষ নন। য

-মাওলানা মুহম্মদ নেছারুদ্দীন

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র, মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া – (১৮) প্রকাশিত ফতওয়াসমূহ

আউয়ালু শাফি’, আউয়ালু মুশাফ্ফা’, আউয়ালু মাঁই ইউহাররিকু বাবাল জান্নাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই জান্নাতের মালিক

ছাহিবুল আয়াত, ছাহিবুল হাদীছ, ছাহিবুল বুরহান, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীছ শরীফ ব্যতীত কালামুল্লাহ শরীফ বুঝা এবং আমল করা সম্ভব নয়

ছাহিবুল মদীনাহ, ছাহিবুল মক্কাহ, ছাহিবুল হাত্বীম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমস্ত ইলমের অধিকারী ॥ সুন্দর হস্তাক্ষরে লিখন তাঁর মু’জিযা ॥ তিনি মুয়াল্লিম হিসেবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু  তায়ালা আনহুমগণকে আক্ষরিক জ্ঞান শিক্ষা দিতেন

দা’ওয়াতু ইব্রাহীম, দা’ওয়াতুন্ নাবিয়্যীন, দলীলুল খইরাত, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক স্বীয় উম্মতকে জাগ্রত ও স্বপ্নযোগে পথ প্রদর্শন