জাতিগতভাবে পতিতাভোগী, অবৈধ সন্তান ও কুৎসিত ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে: স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের থেকে শুরু করে পবিত্র
শুধু তাই নয়, মুসলিম রাজপরিবারের সম্ভ্রান্ত নারীগণ উনাদের নিয়ে বিকৃত কল্পকাহিনী তৈরি করে নাটক মঞ্চস্থ করে হিন্দু মৌলবাদীরা পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করতো। এমনকি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতাও উগ্র অবৈধ হিন্দুসন্তানদের অশ্রাব্য প্যারোডি থেকে রেহাই পায়নি।
কারণ মুসলমানরা কখনোই এর প্রতিবাদ করেনি।
মুসলমানরা হিন্দুদের বিরোধিতা করেনি বলেই তারা আজ লাঞ্ছিত, অপমানিত ও মিথ্যা অপবাদে জর্জরিত। নাউযুবিল্লাহ!
“যবনাধিকারে আমরা ধর্ম বিষয়ে স্বাধীনতা প্রাপ্ত হই নাই, সর্বদাই অত্যাচারের ঘটনা ঘটিত।…এইক্ষণে ইংরাজাধিকারে সেই মনোস্তাপ একেবারেই নিবারিত হইয়াছে, আমরা অনায়াসেই ‘চর্চ্চ’(চর্চ্চ=চার্চ বা গীর্জা) নামক খ্রিস্টীয় ভজনামন্দিরের সম্মুখেই গভীর স্বরে ঢাক, ঢোল, কাড়া, তাসা, নহবৎ, সানাই, তুরী, ভেরী, বাদ্য করিতেছি, “ছ্যাডাং” শব্দে বলিদান করিতেছি, নৃত্য করিতেছি, গান করিতেছি, প্রজাপালক রাজা তাহাতে বিরক্ত মাত্র না হইয়া উৎসাহ প্রদান করিতেছে।… নবাবী আমলে আদব-কায়দা করিতে করিতে কর্মচারীদিগের প্রাণান্ত হইতো…বর্তমান রাজ-মহাত্মারা সে বিষয়ে একেবারেই অভিমানশূন্য…কেহ যদি সেলাম না করে তাহাতে কিছুমাত্র ক্ষোভ নাই।” (সূত্র: আধুনিক বাংলা কাব্যে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক, মুহম্মদ মনিরুজ্জামান, বাংলা একাডেমী, পৃষ্ঠা ১৪০)
চরম মুসলিমবিদ্বেষী ও সাম্প্রদায়িক লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের গুরু ও পৃষ্ঠপোষক, কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত এভাবেই ব্রিটিশদের দালালি করেছিল তার সম্পাদিত ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকাতে। ব্রিটিশ শাসনাধীনে বাঙালি হিন্দু ‘রামরাজত্বে’ বাস করছে, এটিই ছিল তার এই জঘন্য লেখার প্রতিপাদ্য।
রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উনার নছীহত মুবারক প্রদানকালে প্রায়শই ফারসী কবিতা মুবারক আবৃত্তি করে থাকেন। তিনি একটি ফারসী কবিতা মুবারক আবৃত্তি করে থাকেন, যাঁর অর্থ হলো, “যদি কোনো কমজাত তথা নীচ ব্যক্তিকে ক্ষমতা দেয়া হয়, তখন সে সম্মানী ব্যক্তিদের মানহানি করে থাকে।”
ব্রিটিশআমলের পূর্বে যখন মুসলিম শাসন বলবৎ ছিল, তখন নীচ-হীন হিন্দুরা বাধ্য হতো আদব-কায়দা পালন করতে। কমজাত হিন্দুরা তখন তাদের ইচ্ছামতো হিন্দুয়ানী উচ্ছৃঙ্খলতায় মাততে পারতো না। কিন্তু যখন ইংরেজরা ক্ষমতায় আসলো, তখন এই হিন্দুরা সুযোগ পেয়ে পূর্ববর্তী মুসলিম শাসকগণ উনাদের অবমাননা করতে লেগে পড়লো।
যেমন উক্ত মালউন, নিকৃষ্ট ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত সে মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক ব্যঙ্গ করা থেকে শুরু করে মুসলমান উনাদের পালনীয় সুন্নতসমূহ; দাড়ি, লুঙ্গি থেকে শুরু করে বদনা দিয়ে ওযু করা প্রভৃতি নিয়ে চরম ব্যঙ্গবিদ্রুপ করে অশ্রাব্য ভাষায় লিখেছিল-
“একবারে মারা যায় যত চাঁপদেড়ে
হাঁসফাঁস করে যত প্যাঁজখোর (পেঁয়াজ) নেড়ে
বিশেষতঃ পাকা দাড়ি পেট মোটা ভুঁড়ে
রৌদ্র গিয়া পেটে ঢোকে নেড়া মাথা ফুঁড়ে
কাজি কোল্লা মিয়া মোল্লা দাঁড়িপাল্লা ধরি
কাছাখোল্লা তোবাতাল্লা বলে আল্লা মরি
দাড়ি বয়ে ঘাম পড়ে বুক যায় ভেসে
বৃষ্টি জল পেয়ে যেন ফুটিয়াছে কেশে
বদনে ভরিছে শুধু বদনার জল
দে জল দে জল বাবা দে জল দে”
(সূত্র: আধুনিক বাংলা কাব্যে হিন্দু মুসলমান সম্পর্ক, পৃষ্ঠা ১৩৭)
‘জামাই বারিক’ প্রহসনে মুসলমানগণ উনাদের পবিত্র দ্বীন ইসলাম, সমাজ, মোল্লা, পীর- এমনকি মুসলমান কুলবধূদের নিয়ে মালউন হিন্দু দীনবন্ধু মিত্র অত্যন্ত জঘন্য ভাষায় কাব্যচর্চা করেছে। কবিতার অংশ বিশেষ এরূপ-
“আল্লা আল্লা বলরে ভাই নবী কর সার
মাজা দুলায়ে চলে যাবো ভব নদী পার
……কোরানেতে বয়েদ আছে,
দুনিয়াটা ক্যাবল মিছে
খোদার নাম বিনে জানবা সকলি ঝকমারি
ব্যানে বিকেলে দুপহরে,
গরু ছাগল সাথে করে
নামাজ পড়বা মনতা করে স্থির
মুখ খামচে বুক খামচে বিবির ভেসে যাচ্ছে হিয়ে
খসম যদি থাকতো কাচে মুচতো রুমাল দিয়ে
পিড়েয় বসে কাঁদচে বিবি ডুবি আঁখির জলে
মোল্লারে ধরচে ঠেসে খসম খসম বলে।”
মালউন দীনবন্ধু মিত্র বলেছে- মুসলমানরা গরু ছাগল নিয়ে নামাজ পড়ে। মুসলমান বিবিরা ‘খসম’ অর্থাৎ স্বামী বলে মোল্লাকে ঠেসে ধরে। নাউযুবিল্লাহ!
নীচ-হীন হিন্দুদের দ্বারা মুসলিম রাজপরিবারের নারীগণ উনাদের উপর অপবাদ:
ভারতীয় ইতিহাসবিদ গোলাম আহমদ মোর্তজা তার ‘ইতিহাসের ইতিহাস’ গ্রন্থের ১৭২ পৃষ্ঠাতে উল্লেখ করেছেন-
“একদিন বাদশাহ হযরত আওরঙ্গজেব আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বপ্নে দেখলেন, উনার এক কন্যা উনার পা-িত্যপূর্ণ পা-ুলিপি সংশোধন করে দিচ্ছে এবং নানা ধর্মীয় উন্নতির জন্য নতুন অনেক তথ্যাদি সংগ্রহ করে পিতার করকমলে পেশ করছে। স্বপ্ন সবসময় সত্য হয় না, কিন্তু বড় বড় বুযূর্গ ও মহান আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ উনাদের স্বপ্ন সঠিক ও সার্থক হয়।”
বাদশাহ হযরত আওরঙ্গজেব আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুবারক স্বপ্নের সার্থকতা প্রমাণ করে উনার এক বুযূর্গ ওলীআল্লাহ কন্যা হযরত জেব-উন-নিসা রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেন। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. ইনাম উল হক রচিত ‘সম্রাট মুহিউদ্দীন মুহম্মদ আওরঙ্গজেব-আলমগীর বাহাদুর’ পুস্তকের ৪৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত হয়েছে-
“হযরত জেব-উন-নিসা রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি উনার পিতা হযরত আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বুদ্ধিমত্তা ও সাহিত্যিক রুচিবোধ বংশসূত্রে পেয়েছিলেন। হযরত জেব-উন-নিসা রহমতুল্লাহি আলাইহা পবিত্র কুরআন শরীফ মুখস্থ করেন, যার জন্য তিনি প্রফুল্ল পিতার নিকট থেকে ত্রিশ হাজার স্বর্ণমুদ্রা লাভ করেন। ফারসী ও আরবী ভাষায় পারদর্শী হযরত জেব-উন-নিসা রহমতুল্লাহি আলাইহা বিভিন্ন ভাষা সুশ্রীভাবে লিখতে পারতেন। উনার গ্রন্থাগার অন্য সব ব্যক্তিগত সংগ্রহকে ছাড়িয়ে যায়। উনার আদেশে সাহিত্যকর্ম সৃষ্টির জন্য বা উনার জন্য পা-ুলিপি নকল করার কাজে তিনি উচ্চ বেতনে অনেক আলিম নিয়োগ দেন। উনার বদন্যতার উপর নির্ভর করে মোল্লা সাইফুদ্দীন আরদবেলী আরবী ভাষায় লিখিত পবিত্র কুরআন শরীফ উনার প্রসিদ্ধ ভাষ্য ‘জেবদ-উত-তাফসীর’ শিরোনামে অনুবাদ করেন।”
উনার অধীনে এতো পুরুষ আলিম কাজ করতেন, কিন্তু তারপরও উনার পর্দার কোনো ঘাটতি হতো না। সমকালীন জ্ঞানী-গুণীদের লেখনীতে এর প্রমাণ রয়ে গিয়েছে। যেমন মির্জা সাঈদ আশরফ লিখেছেন- “আল্লাহ পাক উনার বান্দাগণ যেমন উনার ইবাদত করেন অথচ উনাকে প্রত্যক্ষভাবে দেখতে পান না, তেমনি হযরত জেব-উন-নিসা রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার অধীনস্থগণ উনার খিদমতের আঞ্জাম দিতেন অথচ উনাকে দেখতে পেতেন না।” সুবহানাল্লাহ!
মুসলমানগণ উনাদের ইতিহাসে বাগদাদের বাইতুল হিকমাহ’র মতোই খ্যাতি ছিল হযরত জেব-উন-নিসা রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার ব্যক্তিগত কিতাব সংগ্রহের। এই বুযূর্গ, বিদূষী, জ্ঞানীদের উদার পৃষ্ঠপোষক মহান ওলীআল্লাহ উনার প্রতি নীচ-নিকৃষ্ট-কমজাত বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কিরূপ অপবাদ আরোপ করেছিল, তা নিয়ে গোলাম আহমদ মোর্তজা তার ‘ইতিহাসের ইতিহাস’ গ্রন্থের ‘মহীয়সী জেব-উন-নিসা উনার বিকৃত চরিত্রের আসল তথ্য’ অধ্যায়ে মন্তব্য করেছেন-
“বর্তমানে ভারতের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্কিমচন্দ্রের ‘রাজসিংহ’ বইটি পাঠ্যপুস্তকরূপে গৃহীত হয়েছে। তাতে বাদশাহ হযরত আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অতি আদরের কন্যা, গুণবতী, চরিত্রবতী ও প্রতিভাময়ী হযরত জেব-উন-নিসা রহমতুল্লাহি আলাইহা উনাকে ভ্রষ্টা ও পতিতা অপেক্ষাও চরিত্রহীনা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! বঙ্কিমচন্দ্র তার উক্ত উপন্যাসে কল্পকাহিনী সাজিয়ে লিখেছে, জেব-উন-নিসা রাজপ্রাসাদের সামান্য দারোয়ান মোবারক খাঁ’র অবৈধ প্রেমিকা। বঙ্কিমের মানসিকতার কেউ কেউ লিখেছে, জেব-উন-নিসা হচ্ছে মুসলিম বিদ্বেষী মারাঠা হিন্দু শিবাজির প্রণায়াকাঙ্খী। ” নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক!
গোলাম আহমদ মোর্তজা আরো মন্তব্য করেছেন, “বঙ্কিমচন্দ্রসহ তার সঙ্গীসাথী হিন্দু লেখকেরা যেভাবে হযরত আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বুযূর্গা কন্যা, বোন প্রমুখকে এমনভাবে তুলে ধরেছে যে, কোনো পতিতার বিরুদ্ধেও কোনো ভদ্রলোক তা করতে পারবে না।” নাউযুবিল্লাহ!
শুধু তাই নয়, মুসলিম বুযূর্গ বাদশাহ ও সম্ভ্রান্ত নারীগণ উনাদের ইহানত করে এসব বিকৃত কল্পকাহিনীগুলো নাটক হিসেবে মঞ্চায়িত করে হিন্দুরা বিকৃত আনন্দ লাভ করতো। এ প্রসঙ্গে কবি ও সাহিত্যিক সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ১৩১০ ফসলী সালের তৎকালীন মাসিক ‘ইসলাম প্রচারক’-এ প্রকাশিত ‘মুসলমান ও হিন্দু লেখক’ প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন-
“তাহারা পর্দানশীন বাদশাহযাদীগণকে হেরেমের নিভৃত কক্ষ হইতে টানিয়া বাহির করিয়া, গাঁজাখোরী কল্পনাবলে কাহাকেও বা পার্বত্য মুষিক, নারীহন্তা, নরপিশাচ শিবাজির প্রণয়াকাঙ্খিনী, কাহাকেও বা শূকরভোজী রাজপুতের প্রেমাভিলাষিণী, কাহাকেও বা হিন্দু গোলামের চরণে সেবিকারূপে চিত্রিত এবং থিয়েটারে অভিনয় করিয়া বিমল আনন্দ উপভোগ করিতেছে।” (নাউযুবিল্লাহ!)
দিতে হবে দাঁতভাঙা জবাব:
হিন্দুরা মুসলমানদের মা-বোন-সম্ভ্রান্ত নারীগণ উনাদের নিয়ে এতো কুৎসা রটানোর পরও, বিকৃত নাটক মঞ্চস্থের পরও কিন্তু মুসলমানরা সম্মিলিতভাবে কোনো প্রতিবাদ করেনি। কবি ইসমাইল হোসেন সিরাজীর মতো সাহিত্যিকরা যা করেছিলেন, তা ছিল বিচ্ছিন্ন প্রয়াস মাত্র। মুসলমানরা যদি সম্মিলিতভাবে হিন্দুদের এসব দুষ্কর্মের প্রতিবাদ জানাতো, তাহলে দেশবিভাগের এতো বছর পরও আজ ‘স্বাধীন’ বাংলাদেশের কথিত বুদ্ধিজীবী মহলে এতো এতো ভারতের দালাল আমাদের দেখতে হতো না।
মুসলমান সমাজ যদি সম্মিলিতভাবে হিন্দুদের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতো, তাহলে আজকে হিন্দুরা শিক্ষক রূপে সম্ভ্রমহরণকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতো না। যেহেতু মুসলমানরা তাদের মা-বোনদের নিয়ে অপপ্রচারের পরও প্রতিবাদ করেনি, উল্টো হিন্দুদের প্রশ্রয় দিয়েছে, রাষ্ট্র ও প্রশাসনের বড় বড় পদে আসীন করেছে, সেহেতু এটিই তো স্বাভাবিক যে এই হিন্দু নরপিশাচের দল আমাদের মা-বোনদের ইজ্জতের দিকেও হাত বাড়াবে! শত শত বছর ধরে হিন্দুদের ব্যাপারে মুসলমানদের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই তো হিন্দুদের আজ এতো দুঃসাহস! নাউযুবিল্লাহ!
হিন্দুরা তাদের লেখায় মুসলমান মা-বোনদের চরিত্রের উপর অপবাদ দিয়েছে, দিচ্ছে এবং দিয়ে যাচ্ছে। কারণ তাদের নিজেদের চরিত্রই ঠিক নেই। যেমন কট্টর হিন্দুত্ববাদী লেখক নীরদ সি চৌধুরী তার ‘বাঙালি জীবনে রমণী’ গ্রন্থের ৬৭ পৃষ্ঠাতে লিখেছে-
“সেকালে বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে ‘শ্বাশুড়ে’ এবং ‘বৌও’ বলিয়া দুটি গালি শোনা যাইত, উহার প্রথমটির অর্থ শ্বাশুড়ীরত, ও দ্বিতীয়টির অর্থ পুত্রবধূরত। শ্বশুর-পুত্রবধূর ব্যাপার সম্ভবত খুব কমই দেখা যাইত, কিন্তু শ্বাশুড়ী-জামাইঘটিত ব্যাপার বিরল ছিল না।”
হিন্দুসমাজ আবহমান কাল থেকেই পরকীয়া ও ব্যভিচারে নিমজ্জিত, যার ফলে তাদের ঘরে ঘরে জন্ম নিয়ে থাকে অবৈধ সন্তান। পাঠকগণ, আমরা জানি যে- হিন্দুত্ববাদের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি হলো ভারতের গুজরাটে। এই গুজরাটেই ২০০২ সালে ভয়াবহ দাঙ্গা হয়েছে এবং সেই দাঙ্গার মূল হোতা নরেন্দ্র মোদিকেই প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন করেছে ভারতের সাম্প্রদায়িক হিন্দু জনগোষ্ঠী।
সেই গুজরাট নিয়ে ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র খবরে প্রকাশিত হয়েছে যে, ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে দেখা গিয়েছে গুজরাটের ৯৮ শতাংশ পিতৃত্বই মিথ্যা অর্থাৎ ৯৮ শতাংশ সন্তানই সেখানে অবৈধ সন্তান! সংবাদটির বাংলা অনুবাদ ৮ই ডিসেম্বর ২০১৪ ঈসায়ী তারিখে এদেশের ‘দৈনিক যুগান্তরে’ও ছাপা হয়েছে।
উক্ত খবরে এসেছে যে, ‘পরকীয়ার রাজ্য’ গুজরাটে প্রতিবছর বহুসংখ্যক পুরুষ পিতৃত্ব নির্ণয়ের জন্য ডিএনএ টেস্ট করার আবেদন করে। তার মধ্যে ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, তার পরিবারের সন্তানটির জৈবিক পিতা পুরুষটি নয় অর্থাৎ সন্তানটি অবৈধ সম্পর্কের ফসল।
অর্থাৎ সত্যিকার অর্থেই সেখানকার হিন্দুরা একটি অভিশপ্ত জীবন বয়ে চলেছে। এই অভিশাপ তারা কুড়িয়েছে মুসলিম মা-বোন, সম্ভ্রান্ত নারী ও বুযূর্গ ওলীআল্লাহগণ উনাদের পূত-পবিত্র চরিত্রে অপবাদ দানের মাধ্যমে। হিন্দুরা নিজেরা অবৈধ সন্তান এবং তাদের পরিবারেও জন্ম নিয়ে থাকে হিন্দু হারামযাদার দল। এবং অবৈধ সন্তান হবার কারণেই হিন্দুরা দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধিতা করে থাকে। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং ওলীআল্লাহগণ উনাদের নিয়ে কুৎসিত মন্তব্য করে থাকে। যে প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
بَعْدَ ذَٰلِكَ زَنِيمٍ
অর্থ: “উপরন্তু আপনার বিরোধিতাকারীরা অবৈধ সন্তান।” (পবিত্র সূরা ক্বলম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)
ভারতের মন্দিরগুলোতে ‘দেবদাসী’ প্রথা বলে একধরনের প্রথা চালু রয়েছে। এই প্রথায় নীচুশ্রেণীর হিন্দু মেয়েদেরকে ছোটবেলা থেকেই মন্দিরের ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের যৌনদাসী হিসেবে জীবন অতিবাহিত করতে হয়। অর্থাৎ মালউন দীনবন্ধু মিত্র’র সমাজের মহিলারা পুরোহিতদের যৌনদাসী হয় এবং ঐসব যৌনদাসীদের অবৈধ সন্তান হওয়ার কারণেই তারা মুসলিম মোল্লা-মৌলভী উনাদের সাথে মুসলিম মা-বোনদের জড়িয়ে অশ্রাব্য কবিতা রচনা করে থাকে।
এই অবৈধ হিন্দুসন্তানগুলো মুসলিম সম্ভ্রান্ত বাদশাহযাদীগণ উনাদের পূত-পবিত্র চরিত্রে অশ্লীল কুৎসা রটনা করে যেসব নাটক মঞ্চস্থ করতো, সেগুলোতে অভিনেত্রী হিসেবে তারা নিয়োগ দিতো পতিতাদেরকে। কোনো ভদ্রঘরের মেয়ে সেগুলোতে অভিনয় করতো না। এ প্রসঙ্গে নীরদ সি চৌধুরী তার ‘আত্মঘাতী বাঙালি’ গ্রন্থের ১৩৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছে-
“সেজন্য আমি সারা জীবনেও দেশে কোনো থিয়েটার দেখি নাই। আমার বাল্যকালে অভিনেত্রীরা বেশ্যা বলিয়া থিয়েটারের প্রতি ব্রাহ্মপন্থীদের ঘোর আপত্তি ছিল।”
ফলশ্রুতিতে রবীন্দ্র ঠগ কিংবা বঙ্কিম, যাদের বিকৃত কল্পকাহিনী নিয়ে মুসলিমবিদ্বেষী নাটক মঞ্চস্থ হতো, তারা ওতপ্রেতভাবেই পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িত ছিল। কারণ তাদের মুসলিমবিদ্বেষী উপন্যাসের প্রচারপ্রসার হতো পতিতাদের অভিনীত নাটক দ্বারা। কলকাতার লেখক রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছে, “রবীন্দ্রনাথের ঠাকুর্দা, দ্বারকানাথ ঠাকুরের তেতাল্লিশটা (৪৩) বেশ্যালয় ছিল কলকাতাতেই।” কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার ২৮শে কার্তিক ১৪০৬ সংখ্যায় আরো ছাপা হয়েছেÑ “অতএব, মদের ব্যবসায় নামলো রবীন্দ্রনাথের ঠাকুর্দা। কিছুদিনের মধ্যে আফিংয়ের ব্যবসায়ও হাত পাকাল ও বাজিমাত করল কুরুচির রেসে। ঘোড়দৌড়ে একবার একটি রুপার কাপ দিলো দ্বারকানাথ। কলকাতার ঘোড়দৌড় জমে উঠেছে, দ্বারকানাথের টাকা উড়ছে সেখানে। মামলাবাজ বাবুদের পরামর্শ দিয়ে ভালোই কামাতো দ্বারকানাথ। এছাড়া ছিল ২৪ পরগণার সল্ট এজেন্ট ও সেরেস্তাদার।”
– গোলাম মাওলা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০