‘জামায়াত’ শব্দের অর্থ কি তা ধর্মপ্রাণ মুসলমান তো বটেই- অতি আম মুসলমানও অবগত আছেন।
ইসলামে মুসলমানদের জমায়েতবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ রয়েছে। বিশেষ করে জামায়াতে নামায পড়ার বিষয়েই ‘জামায়াত’ শব্দটি বেশি আলোচিত ও অনুভূত হয়। হাদীছ শরীফে জামায়াতে নামায পড়ার জোর তাকীদ রয়েছে।
হাদীছ শরীফে বর্ণিত নামাযের জামায়াতের তাকীদ থেকেই মূলতঃ ‘জামায়াত’ শব্দটি মুসলমানদের মাঝে ব্যাপক আলোচিত।
একা একা নামায ইসলামে নিরুৎসাহিত ও নিন্দিত। প্রতি মুসলমান আলাদা আলাদা নামায পড়ার চেয়ে এলাকায় সব বা অনেক মুসলমান এক সাথে নামায পড়ার নামই ‘জামায়াত’।
লক্ষণীয় যে, অনেক মুসলমান যখন এক সাথে হচ্ছে তখনই তাকে ‘জামায়াত’ বলা হচ্ছে।
এদিক থেকে সিআইএ’র এজেন্ট মওদুদী ইসলামের কি ক্ষতি করে গেছে- তা মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ফয়েজ-বরকতে যা ভেবে দেখার, অনুধাবন করার, ফিকির করার সময় এসেছে।
সিআইএ’র চর মওদুদী যে ‘জামায়াতে ইসলাম’ প্রতিষ্ঠা করেছে- তদপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন প্রসঙ্গত হয় যে, তাহলে ইসলাম কয়টা?
দশ-বিশ, একশ’, পাঁচশ’ বা হাজার লক্ষ মুসলমান এক সাথে হওয়ার পরই যখন মুসলমানের জামায়াত হয়। পাশাপাশি ইসলাম আবার ভিন্ন ভিন্নভাবে কতগুলো আছে বা কার কার ইসলামে আছে? অথবা কোথায় কোথায় কি কি নামে? কার কার মালিকানায় বা কোন কোন আলাদা আলাদা ইসলাম আছে যে, সে সবগুলোকে জামায়াতবদ্ধ করে মওদুদী ‘জামায়েতে ইসলাম’ নাম দিলেন।
মূলতঃ এটা হতে পারত ‘জামায়াতে মুসলমান’। যদিও জামায়াতে মুসলমানের বৈশিষ্ট্য ধারণ করার মত কোনো যোগ্যতাই মওদুদীর ছিল না বা তার বংশবদদের মাঝেও বিন্দুমাত্র নেই।
সবচেয়ে বড় কথা মওদুদী মুসলমান ছিলেন কিনা তাই এখন ঘনীভূত প্রশ্ন। বরং সিআইএ’র চর মওদুদী যে, ভীষণ ইসলাম বিরোধী লোক ছিলেন, ইসলামকে তিনি ভগ্ন ভগ্ন ও খণ্ড খণ্ড এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র করে বিকৃত করে উপস্থাপন করেছেন তার প্রতিষ্ঠিত ও প্রচলিত ‘জামায়াতে ইসলাম’ শব্দটি তারই প্রমাণ।
মূলতঃ সিআইএ’র চর মওদুদীকে দিয়ে সিআইএ খুব সুক্ষ্ম ও কূটকৌশলে দীর্ঘদিন যাবত মুসলমানদের মুখ দিয়েই ইসলাম বিরোধী, বিদ্বেষী ও বিদ্রোহী একথা উচ্চারণ করিয়ে আসছে।
জামাতে ইসলাম উচ্চারণ করিয়ে ইসলামের বহু শরীক প্রতিপন্ন করে আসছে। তাদের চর মওদুদীর দ্বারাই তারা ইসলামের উপর এরূপ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে এ যাবতকাল পর্যন্ত পুরোদস্তুর সফল হয়েছে।
মওদুদীর এ ষড়যন্ত্র যে কত জঘণ্য তার প্রমাণ মিলে আজকের দেওয়ানবাগীদের দিয়ে। ইসলাম বাদ দিয়ে তারা আজ ‘মুহম্মদী ইসলাম’ নামে নতুন কুফরী মত প্রচার করছে। সিআইএ মওদুদীর দ্বারা মূলতঃ ইসলামের নামে এরূপ ভিন্ন ভিন্ন নামসর্বস্ব ইসলামেরই সূচনা করতে চেয়েছিল। আর সেসব তথাকথিত ইসলামের যদি জামাত হত তবে মওদুদী কথিত ‘জামাতে ইসলাম’ আপাত দৃষ্টিতে সঙ্গত হত।
কিন্তু ইসলামের মালিক আল্লাহ পাক ও তার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর আল্লাহ পাক এক। আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক এবং ইসলামও এক।
আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, ‘এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য একমাত্র দ্বীন হিসেবে ঘোষণা করলাম।’ কাজেই দেখা যাচ্ছে আল্লাহ পাক-এর কাছে একমাত্র ইসলামই দ্বীন। ইসলাম এখানে একক। ইসলাম নামে ভিন্ন ভিন্ন বা অন্য কিছুর কোনো অস্তিত্ব নেই।
সুতরাং তাদের জামায়াত হওয়ার কোনো বিষয়ও নেই। তারপরেও মওদুদী জামায়াতে ইসলাম বলে মূলতঃ আল্লাহ পাক ও তার হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্রোহী হয়েছে। ইসলাম বিরোধী, বিদ্বেষী ও বিদ্রোহী ব্যক্তি হয়েছে।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তথাকথিত ইসলামের পথ আবিষ্কার করে আবার তাদের জামায়াতের কথা বলে যে বাদশাহ আকবরের ন্যায় সব ধর্ম একীভূত করে দ্বীনে-ই-ইলাহী প্রবর্তকের ন্যায় ‘জামায়াতে ইসলাম’ নামে শক্ত ও জঘণ্য কুফরী মত-পথের প্রবর্তক হয়েছে।
আর নিজামী ওরফে মইত্যা, মুজাহিদ ওরফে মইজ্যা, সাঈদী ওরফে ইহুদী থেকে সব জামাতীরা ঈমানহারা হয়ে সেই কুফরী মতপথেই চলছে। (নাঊজুবিল্লাহ)
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২