জামায়াত, জামায়াতীদের আদর্শ বিবর্জিত এক দল॥ যারা সাক্ষাৎ ধর্মব্যবসায়ী ও সুস্পষ্ট মুনাফিক এবং সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব (২)

সংখ্যা: ১৬০তম সংখ্যা | বিভাগ:

হাদীছ শরীফে ইরশাদ  হয়েছে, “মু’মিন এক কাতরা গুনাহ করলে আত্মদংশনে সে জর্জরিত হয়ে পড়ে। আর মুনাফিক পাহাড় পরিমাণ গুনাহ করার পরও সে স্থিরচিত্ত থাকে।” বলাবাহুল্য, আজকের জামাতী, খারেজী, ওহাবী, দেওবন্দী, লা মাজহাবী তথা ধর্ম-ব্যবসায়ীদের হয়েছে সে অবস্থা। গুনাহ এখন তাদের ঝুলি হতে নিষ্ক্রান্ত হয়ে যেন আসমান যমীন ভরিয়ে ফেলছে। ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া, হিন্দু যুবতী মহিলা দ্বারা কপালে চন্দন ও গলায় মালা নেয়া, রাম-কৃষ্ণকে শ্রদ্ধা করা, ভোটের জন্য হিন্দু বন্দনা করা, আল্লাহ পাক-এর সার্বভৌমত্ব না মেনে জনগণের সর্বভৌমত্ব মানা, ইসলামের নামে হারাম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা, নারী নেতৃত্ব গ্রহণ করা, সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা এমনকি বিজেপি ও ইনডিয়ার সাথে পর্যন্ত সখ্যতা করা- এসব কাজই তারা জায়িয করেছিলেন ইসলামের নামে, ইসলামী আন্দোলনের নামে, ইসলাম কায়েমের পথ ও প্রক্রিয়া হিসেবে। অর্থাৎ ইসলামে যে এসব কাজ নাজায়িয ও হারাম একথা তারাও জানেন। সাধারণ মুসলমানের সত্ত্বায় যে সে বিশ্বাসই বদ্ধমূল রয়েছে তা-ও তারা বুঝেন। কিন্তু তারা সহজ অর্থে প্রতারণা আর ইসলামিক পরিভাষায় মুনাফিকীটা করেন দু’ভাবে। প্রথমতঃ তারা যখন যে দলের সাথে জোট করেন তখন সে দলের কাছে তাদের নিজস্ব সত্যিকার যে আক্বীদা ও বিশ্বাস বা মূল্যায়ন সেটা প্রকাশ করেন না। পাশাপাশি এই আপাত দোস্তীর মাধ্যমে নিজেদের শক্তি সঞ্চয় ও সঞ্চার করার মাধ্যমে তারা একদিন দোস্তকেই চরম দুশমন আখ্যা দিয়ে তার ঘাড় মটকে দেয়ার পরিকল্পনায় বিভোর থাকেন- সে কথাও তারা প্রকাশ করেন না। যে জোট সরকারের সাথে তারা এতদিন যাবত চললেন সে জোট সরকারের নেতা-নেত্রীরা যে ইসলামের দৃষ্টিতে ফাসেক এবং যে শাসন ব্যবস্থা তারা চাচ্ছেন এটা যে ইসলামের দৃষ্টিতে কুফরী- এসব তারা খুব জানেন এবং মানেন। এসব কথা অনেকভাবে তাদের কিতাবে, ওয়াজে সংরক্ষিত আছে। যদিও তারা বাইরে কখনো বিএনপি’র নেত্রী-নেতাকে বলেন না যে, তাদেরকে তারা ফাসেক- জালেম মনে করেন। কিন্তু সাধারণ ধর্মপ্রাণ বিশেষতঃ তাদের সরল, অজ্ঞ কর্মীদের মনে তা-ই খুব ভালভাবে গেঁথে দেন। জালেমদের থেকে নিষ্ক্রান্ত হবার অভিলাষে খুব শীঘ্রই তারা খেলাফতের পথে চলছেন- সে আশ্বাসই তারা শোনান। আর সে খেলাফতের পথের প্রক্রিয়া হিসেবেই তারা ঐ সব ফাসেক-ফুজ্জার, জাহেল-জালিমদের সহযোগী হিসেবে চলছেন- সে অজুহাতই তারা দেন। এ কথায় সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হলেও বিএনপি নেত্রী ও জোটের কাছে কিন্তু তারা সে কথা ভুলেও প্রকাশ করেন না। সেখানে তারা জাতীয়তাবাদী ও মডারেট গণতন্ত্রী বলে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। নচেৎ বিএনপি নেত্রী ও তার দল কি মানবেন? অথবা আসলে কি তারা জানেন যে, এই জামাত ও ইসলামের নামধারী দলগুলো তাদেরকে চরম ফাসেক এমনকি কাফেরও পর্যন্ত মনে করে? জাহেল, জালেম বদদ্বীন, বদ চরিত্র তথা তাগুতী শক্তি ইত্যাদি সবই মনে করে? তারা কি এ কথা জানলে তাদের গ্রহণ করবেন যে এই জামাত তাদের সহযোগী শক্তি হিসেবে মডারেট ও জাতীয়তাবাদীর পক্ষ সাজার ছদ্মাবরণে এক সময় কাঙ্খিত শক্তি অর্জন করতে পারলে তাদের এতদিনের ভাই ও দোস্ত বিএনপি’কেই তারা অনৈসলামী, ইসলামের দুশমন, ইত্যাদি আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদে নামবে? তাদের বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হবে? বিএনপিকে ভোট দেয়া নাজায়িয-হারাম বলবে? প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, এ ধরনের উদাহরণ কিন্তু জামাতীরা যথেষ্ট দিয়েছে। যদিও তারা সাধারণ মুসলমানের কাছে অজুহাত পেশ করে বিএনপি ও আওয়ামীলীগ দুটোই খারাপ।  দুটোই মন্দ ও খারাপ দল। তবে বিএনপি হল মন্দের ভাল। সেজন্যই তারা বিএনপি’কে সাপোর্ট দিয়ে থাকে।  অথচ এই বিএনপি সম্পর্কেই জামাত আমীর মতিউর রহমান নিজামী মন্তব্য করেছিল: “অতীতে নমরূদ, ফেরআউন, আবূ লাহাব, আবূ জেহেল সন্ত্রাস, নির্যাতন, হত্যা করিয়া যেমন ইসলামী আন্দোলন স্তব্ধ করিতে পারে নাই, তেমনি এই সন্ত্রাসী বিএনপি সরকারও ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের হত্যা করিয়া এদেশের ইসলামী আন্দোলনকে স্তব্ধ করিতে পারিবে না।  বিএনপি সরকার এই দেশ হইতে ইসলামকে তুলিয়া ফেলার ইহুদী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চেষ্টা করিতেছে।” (ইত্তেফাক- ১৯.১২.৯৫) অর্থাৎ সাধারণত এখন জামাতীরা যে বিএনপি’কে মন্দের ভাল বলে থাকে এক সময়ে সে বিএনপি’কে উহারা ইহুদী বলতেও ছাড়ে নাই। এদিকে খেলাফতের প্রক্রিয়ায় জামাত, বিএনপি ও তার নারী নেতৃত্বকে সমর্থন করে- এই প্রচারণা যারা কবুল করেন তাদের ১৯৯৬ পূর্ব সময়টার কথা স্মরণ করা উচিৎ।  সে সময় জামাত কি ভীষণ আওয়ামী সহযোগী শক্তি হয়ে উঠেছিল। আওয়ামী লীগকে সেদিন অন্তরের দোস্ত বলে একাকার হয়ে গিয়েছিল এবং আজকের বিএনপি নেত্রী নয়, সে দিন আওয়ামীলীগ নেত্রীকেও কেমন কদমবুছি করে চলেছিল তা এক জ্বলন্ত প্রমাণ। ৭ই মে ১৯৮৩-এর নির্বাচনে তারা আজকের জোট নেত্রীকে বাদ দিয়ে ঠিকই আওয়ামীলীগের সাথে নির্বাচনে গিয়েছিল। আবার ১০ই জুলাই ১৯৮৬-এর প্রথম সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগকে অনুসরণ করে উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকে। আবার আওয়ামী লীগকে অনুসরণ করেই ১৯৮৭-তে এক যোগে পদত্যাগ করে।  তখন “আজকের ইসলাম বিরোধী” আওয়ামী লীগের সাথে তাদের খুবই দোস্তী। আওয়ামীলীগের কর্মকাণ্ড তখন তাদের কাছে কেবল হালালই নয় বরং জেহাদী ফজীলত যুক্ত বলিয়াও তারা প্রচার করত। কিন্তু এর পরে তারা অধিক ফযীলতের আশায় তাদের কথিত ও প্রচারিত ইহুদী বিএনপির (১৯.১২.৯৫) সাথে তারা একাত্ম হয়েছে। আর এই যে, প্রকাশ্য মুনাফিকী, ডিগবাজী, ছলনা, ষড়যন্ত্র, ক্ষমতা লাভ ও ভোগের নীল নকশা- এ সবই তারা প্রচার করে ইসলাম কায়েমের কৌশল, ইসলামী খেলাফত বাস্তবায়নের হেকমত তথা তাদের তথাকথিত ইসলামী রাজনীতির প্রক্রিয়া হিসেবে। এদিকে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মা, কুতুবুল আলম, মুহইস্ সুন্নাহ, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহল আলী সম্পর্কে তাদের জিহ্বা সব সময় পাঁচ হাত লম্বা হয়ে মিথ্যার পাহাড় রচনা করে থাকে।  তাদের ফরমাবরদার বাংলার ইহুদী খ্যাত ব্যক্তি শয়তানের বাক্সে তথা টিভি চ্যানেলে বসে শয়তানের কণ্ঠে আল বাইয়্যিনাত-এর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিষোদগার করে থাকে। তাদের কথা যে, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজরারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী অনর্থক তাদের কর্মকাণ্ডকে নাজায়িয বলেন। অথচ রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আবূ দাঊদ শরীফে বর্ণিত যামানার মুজাদ্দিদ। তিনি কালের প্রেক্ষাপটে মুজাদ্দিদে আ’যম। বর্তমানে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যাঁর উছিলায় ইসলাম টিকে আছে। তিনি বলেন, “আল্লাহ পাক কারো পিঠে সীল মোহর মেরে দেননি যে তাকে হালাল-হারাম নির্বিচারে যে কোনভাবে ইসলাম কায়েম করতে  হবে।  তিনি বলেন, “বণী ইসলাইলের ৭০ হাজার নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম শহীদ হয়েছেন কিন্তু তাই বলে তাঁদের নবুওয়াত-রেসালতের কোন  ঘাটতি হয়নি।” তিনি বলেন, “হারাম দিয়ে কোন দিন কামিয়াবী আসে না। আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি পাওয়া যায় না।” তিনি বলেন, “আল্লাহ  পাক-এর মতে মত তথা আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পথে পথ হওয়াতেই কামিয়াবী।”  তিনি বলেন, “চেষ্টা বান্দার তরফ হতে, কবুলের মালিক আল্লাহ পাক। তবে এ চেষ্টাটা হতে  হবে ইসলাম নির্দেশিত পথে।” বলাবাহুল্য, ইসলাম নির্দেশিত পথ ছাড়া ইসলামের নামে যে যতই কাজ করুক না কেন তা হবে হারাম এবং সে পথে কোনদিন ইসলাম আসবে না। আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি পাওয়া যাবে না। কিন্তু আজকের জামাতীরা তথা ধর্মব্যবসায়ীরা বলে থাকে- এসব কথা মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী  বানিয়ে বানিয়ে বলেন। নিজ থেকে বলেন। (নাউজুবিল্লাহ) কিন্তু প্রকাশ্য বাহাছের চ্যালেঞ্জ দেয়া হয়েছে যে, রাজারবাগ  শরীফের মুর্শিদ ক্বিবলা নিজ থেকে কোন কথা বলেন না।  আজকের জামাতীরা, ধর্মব্যবসায়ীরা ইসলাম থেকে সরে যাওয়ার কারণে স্বার্থবাদী হওয়ার কারণে উচ্চারণ করতে পারছে না, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী মুজাদ্দিদে আ’যম হওয়ার বদৌলতে তাঁর রূহানী যোগ্যতায় খোদায়ী মদদে কুরআন-সুন্নাহর সে কথাগুলো পুনঃ উচ্চারণ করেন মাত্র। যুগ, যুগপ্রবাহ, যুগধর্ম, যুগশাসন ও পারিপার্শ্বিকতা স্বার্থবাদিতার উর্ধ্বে উঠে তিনি সত্যিকার ইসলামকে ব্যক্ত করেন মাত্র। মজার কথা হলো, ইসলামের নামে ধর্মব্যবসার ভিত্তি তৈরীতে জামাতীদেরকেও ঐসব কথাই বলে আসতে হয়েছে।  নচেৎ প্রথমেই যদি তারা আজকের মত অনৈসলামী আচরণ করত, ফতওয়া দিত, তাহলে আজকের ভিত তারা তৈরী করতে পারত না।  কাজেই ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়  তখন তাদেরকে মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের তাজদীদী ফতওয়াগুলো উচ্চারণ করতে হয়েছে।  তাদের জন্মদাতা মওদুদী ছবি তোলা, নারী নেতৃত্ব মানা, গণতন্ত্র মানা, নির্বাচন করা, সংসদ নির্বাচন করা, সাংসদ হওয়া সবই কাট্টা হারাম ফতওয়া দিয়েছেন। এমনকি যেসব হারাম কাজ আজকে তারা হেকমত হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন,  ‘মন্দের ভালো বলে’ তত্ত্ব প্রচার করছেন, ইসলামী রাজনীতির প্রক্রিয়া ও পথ হিসেবে বর্ণনা করছেন- এসব বিবৃতি যে সবই ভুল তা তাদের বর্তমান আমীর নিজামীর গ্রন্থেই বর্ণিত আছে।  তবে নিজামীর সে লেখা ছিল বর্তমান স্বার্থের  ভাগ পাওয়ার আগে। বর্তমান হালুয়া-রুটির ভাগের ভাগ্য খোলার আগে।  এক্ষেত্রে মাদ্রাসার দুনিয়াদার মৌলানা বা উলামায়ে ‘ছু’ যাকে এক প্লেট বিরানী খাওয়ায়ে পাল্টা ফতওয়া  লেখানো যায় তার মধ্যে আর নিজামীর মধ্যে কোনই পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না। বরং অতি আশ্চর্য হতে হয় সামান্য দুনিয়াবী লোভে এ ধর্ম ব্যবসায়ীরা কত নিকৃষ্টভাবে নিজেদের আদর্শ থেকে দুরে সরে আসতে পারে, নিজেদের বিরোধিতা নিজেরা করতে পারে।  ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত ‘ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন’ বইয়ে তিনি লিখেন- “ইসলামী আন্দোলন মূলতঃ নবী-রসূলদের পরিচালিত আন্দোলনেরই উত্তরসূরী। সুতরাং নবী রসূলদের আন্দোলনের ইতিহাসের আলোকে এর সাফল্য ও ব্যর্থতার মূল্যায়নই যথার্থ মূল্যায়ন। নবী রসূলগণ সব সময় অহীর মাধ্যমে সরাসরি আল্লাহর দ্বারা পরিচালিত হয়েছেন। এর পরও আমরা দেখতে পাই সব নবীর জীবনে সমাজে নেতৃত্বের পরিবর্তন আসেনি বা দ্বীন বিজয়ী হবার সুযোগ পায়নি। যেমন হযরত নূহ (আঃ) সুদীর্ঘ সাড়ে নয়শ’ বছর তার কওমের কাছে দাওয়াত দিয়েছেন। ব্যক্তিগতভাবে দাওয়াত দিয়েছেন; লোকদেরকে একত্রে সমবেত করে দাওয়াত দিয়েছেন, গোপনে দাওয়াত দিয়েছেন, প্রকাশ্যে দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু মুষ্টিমেয় লোক ছাড়া ঈমান আনেনি। তাই বলে হযরত নুহ (আঃ) কিন্তু ব্যর্থ হননি। … … যেমন হযরত নুহ (আঃ) শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দ্বীনের উপর দ্বীনের দাওয়াতের উপর অটল অবিচল থেকে তিনি কামিয়াব হয়েছেন।” উল্লেখ্য, যদি তাই  হয়ে থাকে তবে  আজকে জামাতীরা যে ‘মন্দের ভালো’ ‘আমলে হিকমা বা তথাকথিত ইসলামী রাজনীতির প্রক্রিয়ার নামে যেসব হারাম কাজকে তারা আজ হালাল করছে তার সবই ভুল প্রমাণিত হয়। এবং ‘হারামকে হালাল বললে কাফির সাব্যস্ত হওয়ার’ অপদস্থতায় পড়তে হয়। অতএব, সত্যানুসন্ধানী কোন জামাত-শিবির কর্মী যদি থাকেন তবে তারা এসব বিষয় ভেবে দেখবেন কি? ইসলামকে জিন্দা করার ে াগানে আপাত মুগ্ধ কিন্তু হক তালাশী যেসব জামাত-শিবির কর্মী আছেন তারা অনুভব করবেন কি যে হারাম দিয়ে, নাজায়েয পথে  চলে কোন দিন আল্লাহ পাক-এর রহমত পাওয়া যায়না। আর আল্লাহর রহমত ছাড়া কোন দিন আল্লাহর পথে চলা যায় না। কামিয়াব হওয়া যায়না। আর ইসলামী আন্দোলনের উদ্দেশ্যই হল ইসলাম কায়েম নয় বরং আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি। প্রসঙ্গতঃ তারা আরো জানেন কি যে, এসব ইসলামের নামে তথাকথিত আন্দোলনের চেয়ে খোদ নিজামীও আল্লাহ পাক-এর মত বা তাঁর সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দিতে বলেছেন। তিনি লিখেছেন, “ইসলামী আন্দোলন যাঁর জন্যে, যাঁর নির্দেশে, এর সফলতা ও ব্যর্থতা নির্ণয় করতে হবে তাঁর দেয়া মানদণ্ডেই। ইসলামী আন্দোলন আল্লাহর পথের আন্দোলন, আল্লাহর সন্তোষ অর্জনের আন্দোলন, আল্লাহর নির্দেশ পালনের আন্দোলন, সুতরাং এর সাফল্যের সংজ্ঞা গ্রহণ করতে হবে তাঁর কাছ থেকেই। তিনি সূরা ‘ছফের’ মাধ্যমে আল্লাহর পথে মাল দিয়ে জান দিয়ে জিহাদের যে নির্দেশ দিয়েছেন তাতো আখেরাতে আজাবে আলীম থেকে, কষ্টদায়ক শাস্তি থেকে বাঁচার উপায় হিসাবেই দিয়েছেন। অতঃপর এ কাজের দু’টো প্রতিদানের কথা উল্লেখ করেছেন। “আল্লাহ তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন, এবং এমন জান্নাতে স্থান দেবেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে। সদা বসন্ত বিরাজমান জান্নাতে উত্তম ঘর তোমাদের দান করা হবে। এটাই হল সব চেয়ে বড় সাফল্য।” আস্ সাফ ঃ ১২ আল্লাহ পাকের এই ঘোষণা থেকে আমরা পরিস্কার বুঝতে পারি  আখেরাতের কামিয়াবীই হল বড় কামিয়াবী। ইসলামী আন্দোলনের ব্যক্তিদের সামনে এটাই হতে হবে প্রধান ও মুখ্য বিষয়। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে জাগতিকভাবে কোন একটা স্থানে ইসলামী আন্দোলন সফল হলে বা বিজয়ী হলেও আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যদি আদালতে  আখেরাতে  আল্লাহর দরবারে সাফল্যের সনদ না পায় তা হলে ঐ ব্যক্তিদের আন্দোলন ব্যর্থ বলেই বিবেচিত হবে। পক্ষান্তরে কোথাও ইসলামী আন্দোলন জাগতিকভাবে সফলতা অর্জন করতে নাও পারে, আর আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিগণ আখেরাতের বিচারে আল্লাহর দরবারে নেককার আবরার হিসেবে বিবেচিত হয়, আল্লাহর কাছে পুরস্কৃত হয়, তারা সন্তোষ লাভে সক্ষম হয়, তাহলে তাদের আন্দোলনকে কামিয়াব বলতে হবে। মনে রাখতে হবে আল্লাহর ভাষায় এটাই সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ কামিয়াবী।” অতএব, নিজামী সাহেবের উপরোক্ত ভাষ্য অনুযায়ী তাদের তথাকথিত  আমলে হেকমা তথা নাজায়িয ও হারাম কাজের দ্বারা যদি ইসলামী শাসন আসেও তাহলেও তাতে সফলতা নেই। “এই দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করলে জাগতিকভাবে কোন একটা স্থানে ইসলামী আন্দোলন সফল হলে বা বিজয়ী হলেও আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যদি আদালতে আখিরাতে আল্লাহর দরবারে সাফল্যের সনদ না পায় তাহলে ঐ ব্যক্তিদের আন্দোলন ব্যর্থ বলেই বিবেচিত হবে। মূলতঃ মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এরই তাজদীদের স্বীকারোক্তি। মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী এ বিষয়ে মুসলিম শরীফের একটি হাদীছ শরীফ উল্লেখ করেন যে, ‘কিয়ামতের ময়দানে প্রথমে ডাকা হবে কিছু আলিম, দানশীল ও শহীদকে। তাদের প্রত্যেকেই জাহান্নামী হবে। কারণ তারা ইলম শিক্ষা দেয়ার পরও, দান করার পরও, জীবন দেয়ার পরও তাদের নিয়তের বিশুদ্ধতা ছিলনা। খুলুছিয়ত বা ইখলাছ ছিলনা। বলাবাহুল্য, এই খুলুছিয়ত শিক্ষা দেয়ার তরতীব জামাতী, খারেজী, ওহাবী দেওবন্দী তথা তাবত ধর্মব্যবসায়ী তথা তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনকারী কারো মাঝে নেই। কাজেই, এ খুলুছিয়ত ও হক্ব পথ ব্যতীত তারা ইসলামের নামে যত আন্দোলন-ফান্দোলনই করুন না কেন শরীয়া মুতাবিক তাদের জন্য অপেক্ষা করছে জাহান্নাম। তাদের তথাকথিত ইসলামী আন্দোলন এবং তারা বড়ই অ-সফল। কাজেই, তাদের রূহানিয়ত তথা খুলুছিয়ত শেখার জন্য দরকার তথা ফরজ মুজাদ্দিদে আ’যমের নেক ছায়াতলে হাজির হওয়া।  উল্লেখ্য, তাঁর কাফেলা সব সময়ই কামিয়াব। তাঁর পথ সব সময়ই কামিয়াবীর’- এ কথা স্বীকার করেছে আমীরে জামাতও। কারণ, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহল আলী জামাতীদের কথিত  আমলী হিকমা (ইসলামের নামে নাজায়িয কাজকে জায়িয করা) না করলেও তিনি যে বেমেছাল নেককার এবং নেকপথেই আছেন- এ কথা জামাতী তথা তাঁর ঘোর শত্রুরাও স্বীকার করে। আর সে ক্ষেত্রে জামাত আমীর নিজামীও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। পক্ষান্তরে কোথাও ইসলামী আন্দোলন জাগতিকভাবে সফলতা অর্জন করতে নাও পারে, আর আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিগণ আখিরাতের বিচারে আল্লাহ পাক-এর দরবারে নেককার, আবরার হিসেবে বিবেচিত হয়, আল্লাহ পাক-এর কাছে পুরস্কৃত হয়, তাঁর সন্তোষ লাভে সক্ষম হয়, তাহলে তাদের আন্দোলনকে কামিয়াব বলতে হবে। মনে রাখতে  হবে আল্লাহ পাক-এর ভাষায় এটাই সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ কামিয়াবী। বলাবাহুল্য, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলাই বর্তমান যামানায় এর পরিপূর্ণ মেছদাক।  মহান আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে তাঁর নেক ছায়াতলে কবুল করুন,  গায়েবী মদদ করুন ও কামিয়াব করুন। (আমীন)

 -মুহম্মদ জিশান আরিফ, ঢাকা।

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮

‘ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’- একটি সূক্ষ্ম ও গভীর ষড়যন্ত্রের প্রক্রিয়া অথচ নিশ্চুপ তথাকথিত খতীব, মহিউদ্দীন, আমিনী ও শাইখুল হাদীছ গং তথা তাবত ধর্মব্যবসায়ীরা- (১)

মওদুদীর নীতি থেকেও যারা পথভ্রষ্ট সেই জামাত- জামাতীদের জন্যও ভয়ঙ্কর মুনাফিক॥ আর সাধারণের জন্য তো বলারই অপেক্ষা রাখেনা

প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২