বার শফিক রেহমান। মুরতাদ তসলিমা ঘরানার লোক। আলোচিত সমালোচিত হতে যিনি খুব পছন্দ করেন। যিনি হাজার বছরের পুরনো বাঙ্গালী তথা মুসলিম ঐতিহ্যের এদেশে পশ্চিমা রীতি আমদানী ও প্রচলনের সোল এজেন্টরূপে গর্ববোধ করেন। তিনি নিজেকে অজ্ঞ, অবুঝ, হুজুগে মাতাল এ জাতিকে পশ্চিমা রীতি শেখানোর কর্ণধার হিসেবে ভাবতে পছন্দ করেন।
গত ২মে/২০০৬ ঈসায়ী তারিখে প্রকাশিত যায়যায়দিনে ২৯ পৃষ্ঠায় তার বক্তব্যঃ দুর্ঘটনার স্থানে ফুল দেয়ার পশ্চিমা রীতিটা বাংলাদেশেও চলে এসেছে। হয়তো জানাযার সময়ও ফুল নেয়া যাবে। মঈন ভাবলো।
মূলতঃ এসব বক্তব্যের দ্বারাই যে শফিক রেহমান খুব সূক্ষ্মভাবে পশ্চিমা ক্রেজটা এদেশে বাজারজাত করছেন তা অন্ততঃ আল বাইয়্যিনাতকে ফাঁকি দেয়া যাবেনা।
শফিক রেহমান নিজেকে খুব কড়া মাপের আঁেতল ভাবেন। ভাবেন তার এসব ভণ্ড আতঁলামি, বাদরামি ধরার মত লোক নেই। তিনি ভ্যালেন্টাইন ডে’র চলের মতই এ প্রক্রিয়ায় একের পর এক উৎরে যাবেন।
একশন এইড-এর বাংলাদেশ শাখার কান্ট্রি ডিরেক্টর নাসরিন হকের দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও জানাযা নিয়ে শফিক রেহমান উক্ত কলামটি লিখেছেন।
কিন্তু তাতে ওকালতি করেছেন সুচতূরভাবে। এটা যে খুব উদ্দেশ্য প্রণোদিত তা কয়েকবারই তার লেখায় খোলামেলাভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
“এই প্রথম বাংলাদেশে প্রকাশ্য স্থানে নারী-পুরুষ সমবেতভাবে জানাযা পড়লেন।” “আর ভাবছিলো আরেকটি ধর্মীয় সংস্কার ও সামাজিক বিপ্লব ঘটে গেলো এই গাজীপুরে।”
যে ধর্মীয় সংস্কার এবং সামাজিক বিপ্লবের পক্ষে শফিক রেহমান নির্লজ্জ ওকালতি করছেন তার পর্যায়ক্রমিক বর্ণনা হলোঃ
১. দুর্ঘটনাস্থলে ফুল দেয়া।
২. ইসলাম ওহীর দ্বারা আরোপিত নয় বরং মানুষের দ্বারা বানানো সে কথার প্রচার করা। যার শ্লোগান হলো, ‘ধর্মের জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য ধর্ম’- তা প্রচার করা ও লেখা।
৩. জানাযায় পুরুষের পিছনে কাতারে নারী এমনকি হিজরাদেরও কাতার করা।
৪. কফিনে পুষ্পাঞ্জলি (?) দেয়া।
৫. মুনাজাতের পর নারীদের ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন
এই বাটে …. তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে … নাইবা আমায় ডাকলে..” এই রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া।
৬. কবর দেয়ার সময় নারীরা উপস্থিত থাকা।
৭. মৃতকে ঘিরে কুরআন শরীফের পর গীতা, ত্রিপটক ও বাইবেল পাঠ করা।
উল্লেখ্য, নাসরিন হকের মৃত্যুতে বিভিন্ন ধর্মাবলাম্বী, তার সহকর্মী নারীরা, গায়িকারা উপস্থিত থাকায় বিচ্ছিন্নভাবে উপরোক্ত ঘটনাবলী ঘটলেও সেগুলিকেই মনের মাধুরী মিশিয়ে সুবিন্যস্তভাবে সাজিয়ে পশ্চিমা রীতির আলোকে একটা নতুন ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কারের প্রবর্তনের প্রয়াসে প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন জোট সরকারের খুদকুড়া সংগ্রহকারী, স্নেহধন্য শফিক রেহমান।
জোট সরকারের নেক দৃষ্টির সুবাদে ও তাদের রক্ষার কলম সেনাপতি নিযুক্ত হবার বদৌলতে শফিক রেহমান ইসলাম বিরোধীতায় মুরতাদ তসলিমাকে অতিক্রান্ত করার পরও তথাকথিত শাইখুল হাদীছ ছাহেব, মুফতী আমিনী ছাহেব, ইজহার ছাহেব, খতীব ছাহেব, নিজামী-মুজাহিদ ছাহেব ইত্যাদি ইসলামী রাজনীতির তল্পীবাহকরা কেউই টু’শব্দ করছে না।
অথচ বিষয়টি কত মারাত্মক। একজন মুসলমানের সবচেয়ে বড় স্পর্শকাতর ও স্বকীয় মণ্ডিতের সময় তার মৃত্যু ও মৃত্যু সংক্রান্ত অনুষ্ঠানাদি। যে মুসলমান সারাজীবন একবারও নামায পড়েনা, মুখে আল্লাহ পাক-এর নাম নেয়না তার মৃত্যুর পরেও ইসলাম নির্ধারিত অনুষ্ঠানাদি করে মুসলমান হিসেবে তার সর্বশেষ পরিচয় ও অবস্থান জ্ঞাপন করা হয়।
আর পশ্চিমা এজেন্ট, মুরতাদ শফিক রেহমান এখন মুসলমানের সেই শেষ পরিচয় ও অবস্থানটুকু নিশ্চিহ্ন করতে সক্রিয় হয়েছে। সে মৃত্যুর পর এখন কুরআন শরীফের পাশে বাইবেল, ত্রিপটক, গীতা পাঠের ওকালতি করছে। জানাযায়, কবরে মহিলাদের ব্যাপক অংশগ্রহণের সুপারিশ করছে। দোয়ার পরিবর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ার প্রেসক্রিপশন দিয়েছে।
জোট সরকারের গৃহপালিত নামধারী আলিম-উলামারা জোট সরকারের খাছ ফরমাবরদার হওয়ায় তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেনা এমনটি ভেবেই সে এই সুযোগটি নিতে চাইছে। এবং সত্যিই আশ্চর্য্য, জোট সরকারের সমর্থক হওয়ায় ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ‘ছূ’রা তাকে অবাধে সে সুযোগটিই দিয়ে যাচ্ছে।
নচেৎ কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে যারা হাম-তাম করে, তসলিমার বিরুদ্ধে যারা গর্জে ফুঁসে উঠে কিন্তু কট্টর নাস্তিক ও ইসলাম বিরোধী শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে তারা নিশ্চুপ কেন?
অথচ এই শফিক রেহমান তার পত্রিকার ‘দিনের পর দিন’ কলামের শেষে এক গল্পে পুরুষাঙ্গকে ‘ওয়াও’ এবং ‘আলিফের’ সাথে তুলনা করেছেন। (নাউযুবিল্লাহ)
কিন্তু তারপরেও নিশ্চুপ জোট সরকারকে ইসলাম পক্ষের, ইসলাম রক্ষার দল বলে ঢেরা পেটানো তথাকথিত শাইখুল হাদীছ, মুফতী, মাওলানা, খতীব গংদের জন্য। মূলতঃ তাদের মেকী ও স্বার্থপ্রবণতাযুক্ত ইসলামী আন্দোলনের অসাঢ়তা তথা মুনাফিকীই মুরতাদ শফির রেহমানকে এতটা স্পর্ধা যুগিয়েছে।
শ্বাশত ইসলাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাধ্যমে ওহীর দ্বারা নাযিলকৃত ইসলামে মুরতাদ ও পশ্চিমা এজেন্ট শফিক রেহমান এখন পশ্চিমা রীতি ঢুকিয়ে সবাইকে আবার অমুসলমান করতে চাইছে। আল্লাহ পাক ইরশাদ ফরমান, “ইহুদী-খ্রিস্টানরা চায় তোমরা মুসলমান হবার পর আবার অমুসলমান হয়ে যাও।”
-মুহম্মদ আলম মৃধা, ঢাকা।
{পুনশ্চঃ শফিক রেহমান নিজেকে আতেল সাংবাদিক ঠাউরে ধরাকে সরা জ্ঞান করতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তার এ আত্মমূল্যায়ন যে খুবই মেকী তা সমঝদাররা সবাই জানেন। যেমনটি তারা নাসরীন হকের মৃত্যু সংবাদ কাহিনী জানার সাথে সাথেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়। এর মধ্যে কারসাজি রয়েছে। বড়ই দুঃখজনক যে, আতেল সাংবাদিক সে বিষয়ে আদৌ আচ করতে পারলেননা, তার লেখায় কোন্ ইঙ্গিত দিতে পারলেননা। কি দ্বীন আর কি দুনিয়া, তিনি সত্যিই বড় করুণার পাত্র বৈকি।}
বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫